অজানা_অনুভূতি #পর্বঃ ২৪

#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ২৪
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি

আদ্রিতা আর আলো কলেজের গেইটের সামনে নামলো। আদ্রিতা কলেজের সামনে যাদের দেখলো তাদের দেখে ভয়ে আলোন হাত খামছে ধরলো।

কি হলো? (আলো)

আদ্রিতা সামনের ছেলেদের ইশারায় দেখিয়ে বললো,
ওদের কালকে ওদেখেছিলাম বাসের সামনে। ওদের নজর ঠিক লাগছে না। (আদ্রিতা)

এরকম ছেলেরা রাস্তায় থাকে। ওদের দেখে ভয় পেলে ও বুঝতে দেওয়া যাবে না যে ভয় পেয়েছিছ। তাহলে ওরা আর ও বিরক্ত করবে। সব সময় সাহসের সাথে চলতে হবে। (আলো)

হয়েছে হয়েছে আর ভাষণ দিতে হবে না। এমনি অনেক স্টুডেন্ট এসে পড়েছে। ভিতরে চল। (আদ্রিতা)

তারপর তারা কলেজের ভেতর ডুকে গেলো। কালকে বাসের সামনে যেই ছেলেগুলোকে দেখেছিলো তাদের কলেজের সামনে দেখে আদ্রিতা কিছুটা চমকে উঠেছিলো।

আরিয়ান কাজ করছে এমন সময় দেখতে পেলো, আদ্রিতা আর আলো কথা বলতে বলতে ভিতরে আসছে। আরিয়ান তার প্রিয়তমাকে দেখে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। এতো সুন্দর লাগছে তার প্রিয়তমাকে যা বলার বাইরে। অবশ্য ভালোবাসার মানুষটির সব কিছুই সুন্দর। আরিয়ান আনমনে বলে উঠলো, ডুবেছি আমি তোমার চোখের অনন্ত মায়ায়। আরিয়ানের ইচ্ছে হচ্ছে পারলে এখনি তার প্রিয়তমাকে জড়িয়ে ধরতে। আদ্রিতার কথায় আরিয়ানের ধ্যান ভাঙলো,

স্যার আসসালামু আলাইকুম (আদ্রিতা)

আরিয়ান সালামের জবাব দিলো। তোমরা ঠিক সময় এসেছো। একটু পরেই অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হবে। আর প্রধান অতিথির আসার সময় ও হয়ে যাচ্ছে। প্রধান অতিথি যখন কলেজের ভিতর আসবে তখন তাদের উপর ফুল ছিটানো শুরু করবে। তারপর তাদের জন্য আলাদা রুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে সেখানে তাদের বসতে বলবে। আর হাল্কা কিছু নাস্তা দিবে। যত্নের যেনো কিনো এুটি না থাকে।এর সাথে আমাদের কলেজের সম্মান জড়িত রয়েছে। আশা করি সব বুঝতে পেরেছো। (আরিয়ান)

জ্বি স্যার। (আলো)

ওকে এখন যেয়ে দেখো ডেকোরেশন সব ঠিক আছে কি না। (আরিয়ান)

ওকে স্যার আমরা যাচ্ছি। (আদ্রিতা)

তোমাদের সাথে তানহা আর আবির কই? (আরিয়ান)

স্যার ওরা আসতেছে। (আলো)

ওকে (আরিয়ান)

আলো আর আদ্রিতা সেখান থেকে চলে আসলো।

প্রিয়তমা তোমাকে একবার জড়িয়ে ধরতে খুব ইচ্ছে করছে। দেখো আমাদের পছন্দতে ও অনেক মিল। মুচকি হাসলো আরিয়ান।

*******

শাড়ি পড়তে পারিছ না আবার পড়িস কেনো? (আবির)

আরে দাড়া না একটু আস্তে যা আমার দ্রুত হাঁটতে পারছি না। (তানহা)

না করেছিলাম শাড়ি পড়তে। শুনলি না আমার কথা আর এখন তোর জন্য আমার দেড়ি হচ্ছে। (আবির)

এতো দেড়ি হলে দাঁড়াতে হবে না চলে যা। (তানহা)

আরে ম্যাডাম রাগ করেছে নাকি এই বলে আবির তানহার গাল টিপে দিলো।

এই কি করছিছ ছাড় আমার মেকআপ নষ্ট হয়ে গেলো।(তানহা)

আবির হেসে উঠলো। একটু তাড়াতাড়ি কর। দেড়ি হয়ে যাচ্ছে। (আবির)

একটি রিক্সা নে (তানহা)

কতোক্ষণ রিকশার জন্য দাঁড়ালাম কোনো রিকশা নেই। (আবির)

তাহলে আর কি এখন আমার জন্য আস্তে আস্তে হাঁটতে থাক। (তানহা)

আলো আর আদ্রিতা মনে হয এতোক্ষণে পৌঁছে গেছে।(আবির)

হুম মনে হয়। (তানহা)

আবির কালো শার্ট পড়েছে আর তানহা বেগুনি কালার শাড়ি। চুল গুলো খোলা অনেক অসাধারণ লাগছে তানহাকে। আর আবিরের পাশে একটু বেশি মানিয়েছে।

********

আর একটু পরই আমার ক্রাশ এসে যাবে। নিশ্চয়ই আমাকে দেখে ফিদা হয়ে যাবে। (নওশিন)

হযেছে খবর শুনেছিছ? (রাইসা)

কিসের খবর? (নওশিন)

সাজ্জাদের জন্য নাকি আলাদা রুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। (রাইসা)

বাহ তাহলে ত ভালোই হয়েছে। সেখানে গিয়ে আলাদা ভাবে একটু কথা বলার সুযোগ পাবো। (নওশিন)

হ্যাঁ কিন্তু দেখ তোর আগে আদ্রিতা যেনো না পৌঁছে যায় সেখানে। (রাইসা)

ওই আদ্রিতার খেলা ও আজকেই শেষ হবে। (নওশিন)

কিন্তু আমার ভয় করছে যদি আমরা ফেঁসে যাই। তখন কি হবে? (রাইসা)

না চিন্তা করিছ না আমাদের কিছুই হবে না। যা হবে আদ্রিতার হবে। (নওশিন)

হুম আমাদের কিছু না হলেই বাঁচি। (রাইসা)

তারপর ওরা একসাথে হেঁসে উঠলো।

*******

সামিরা রেডি হয়েছে নীল শাড়ি পড়েছে। চুলগুলো খোলা। বেশি মেকআপ করে নি। হালকা সাজের মধ্যে অনেক ভালো লাগছে সামিরাকে। সামিরার মনে অনেক ধরনের চিন্তা ভাবনা কাজ করছে। সব কিছু বাদ দিয়ে সামিরা কলেজে যাওয়ার উদ্দেশ্য বেরিয়ে পড়লো।

*******

ওইতো তানহা আর আবির চলে এসেছে। (আদ্রিতা)

তোরা এতো দেরি করলি কেন?(আলো)

আরে ওকে বলেছিলাম শাড়ি না পড়তে একে ত সামলাতে পারে না আবার পড়েছে। ৫ মিনিটের রাস্তা ৩০ মিনিট লেগেছে ওর জন্য। (আবির)

একটু দেরি হয়েছে আর কথা শুনাচ্ছে। (তানহা)

হয়েছে হয়েছে আর ঝগড়া করতে হবে না। (আদ্রিতা)

দোস্ত তোকে এই শাড়ি অনেক মানিয়েছে কবে কিনলি? (তানহা আদ্রিতার উদ্দেশ্য কথাটি বললো)

কালকে। (আদ্রিতা)

আলো মুচকি হাসলো। কিছু বললো না।

অনেক সুন্দর হয়েছে। (তানহা)

তোরা থাক আমি ওদিক থেকে একটু ঘুরে আসছি। একথা বলে আবির চলে গেলো।

বাকিরা ওদের গল্পের ফুলঝুরি শুরু করে দিলো।

*******

সাজ্জাদের গাড়ি এসে থেমেছে কলেজের সামনে। সাজ্জাদ আর স্বাধীন নামলো গাড়ি থেকে। দু’জনকে ফরমাল ড্রেসে খুব অসাধারণ লাগছে। কলেজের প্রিন্সিপাল এসে তাদের এগিয়ে নিলেন। সাজ্জাদ আর স্বাধীন ভেতরে ডুকছেন। পিছনে তাদের গার্ডরাও আছেন। সব স্টুডেন্টরা দাতের উপর ফুল ছিটিয়ে কলেজে প্রবেশের শুভেচ্ছা দিচ্ছে। আদ্রিতা এগিয়ে আসলো। পিছনে আবির। আদ্রিতাকে দেখে সাজ্জাদ চমকে উঠলো। দুধে-আলতা গায়ে কালো শাড়িটি যা মানিয়েছে বলার বাইরে। ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক। গোল্ডেন হিজাব পড়া। সাজ্জাদ আদ্রিতার থেকে চোখ ফেরাতেই পারছে না। সাজ্জাদ ও আদ্রিতার সাথে মিলিয়ে কালো ব্লেজার পড়েছে। তার উপর গোল্ডেন কাজ সেখানে লেখা AS। সাজ্জাদকে দেখে অনেক মেয়ে ফিদা হয়ে গেছে। তবু ও সাজ্জাদ কারোর দিকে একবার ফিরে ও তাকাচ্ছে না।

আদ্রিতার হাতের ফুলের তোড়াটি আদ্রিতা সাজ্জাদের হাতে দিলো। আবির ফুলের তোড়াটি স্বাধীনকে দিলো। অন্যদিকে সাজ্জাদকে দেখে নওশিন আরেক দফা ক্রাশ খেলো।

আরিয়ান এগিয়ে এসে আদ্রিতাকে বললো, উনাদের জন্য যেই রুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে সেখানে নিয়ে যাও।

ওকে স্যার (আদ্রিতা)

আপনারা আমার সাথে আসুন। (আদ্রিতা সাজ্জাদ আর স্বাধীনের উদ্দেশ্য বললো)

স্বাধীনও সাজ্জাদ আদ্রিতার পিছন পিছন গেলো। সাথে আবির ও আছে। আর সাজ্জাদ এবং স্বাধীনের গার্ড।
এর মধ্যে সাজ্জাদ স্বাধীনকে একটি মেসেজ দিলো। স্বাধীন তা দেখে মুখ টিপে হাসলো।

আপনারা রুমে বসুন। একটু রেস্ট নিন। একটু পরেই অনুষ্ঠান শুরু হবে। (আদ্রিতা)

আমি ফ্রেশ হবো ওয়াশরুম কোথায়? (স্বাধীন)

আমার সাথে আসুন আমি দেখিয়ে দিচ্ছি। (আবির)

ওকে (স্বাধীন)

আবির আর স্বাধীন রুম থেকে চলে গেলো।

রুমে শুধু সাজ্জাদ আর আদ্রিতা রয়েছে গার্ডরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। এই রুমটি একটু কিনারে। তাই এখানে সাধারণত কেউ আসে না।

আপনি বসুন আমি আসছি। (আদ্রিতা)

আমি কি তোমাকে যেতে বলেছি? (সাজ্জাদ)

আমি এখানে কি করবো? (আদ্রিতা)

বলছি কি করবে। কথাটি বলে সাজ্জাদ রুমের দরজা বন্ধ করে দিলো।

********

স্বাধীন আর আবির হেঁটে যাচ্ছে। এর মধ্যে সামিরাকে দেখে স্বাধীন থমকে দাঁড়ালো।

******

কি হলো দরজা বন্ধ করলেন কেনো?(আদ্রিতা)

সাজ্জাদ আর কিছু না বলে আদ্রিতার কোমর জড়িয়ে ধরলো।

কি করছেন ছাড়ুননন এইটা কলেজ। (আদ্রিতা)

এতো সুন্দর করে সেজেছো কেনো? ছাড়তে ইচ্ছে করছে না। (সাজ্জাদ)

ছাড়ুননন কেউ এসে পড়বে।(আদ্রিতা)

কেউ আসবে না বাইরে আমার গার্ড আছে।

সাজ্জাদ একটি টেবিলে বসে টান দিয়ে আদ্রিতাকে সাজ্জাদের কোলে বসিয়ে নিলো।

ছাড়ুনননন (আদ্রিতা)

সাজ্জাদ আদ্রিতার কোমর জড়িয়ে ধরলো। আদ্রিতার কথা না শুনে বরং আদ্রিতার ঠোঁট নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।

#চলবে

[ AS মানে কি? একটু রোমান্টিক করার চেষ্টা করেছি। পরের পর্বেতে ও কি রোমান্টিক চান? নাকি এখানেই রোমান্টিক সিন শেষ করে দিবো? 🫣 ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here