অজানা_অনুভূতি #পর্ব- ০৮

#অজানা_অনুভূতি
#পর্ব- ০৮
#লেখিকা – আদ্রিতা খান অদ্রি

মুচকি হেসে বেরিয়ে পড়লাম বাসা থেকে।

অন্যদিকে ~

S.R কোনোভাবে নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারছে না। কারন তার লোকেরা আদ্রিতাকে তুলে আনতে পারে নি। S.R বাংলাদেশে থাকা লোকটিকে বললো, যেহেতু সাজ্জাদ একবার আদ্রিতাকে রক্ষা করেছে আর বুঝতে পেরেছে তারা আমার লোক তাহলে এখন থেকে সাজ্জাদ সব সময় আদ্রিতাকে নজরে রাখবে। এখন আর আদ্রিতার কাছে যাওয়ায় দরকার নাই। তুই শুধু খবর রাখ ও কোথায় যাচ্ছে কখন কি করছে সব কিছুর ইনফরমেশন আমাকে দে।

ওকে বস। কথাটি বলে লোকটি ফোন কেটে দিলো।

অপরদিকে ~

অফিসে যাওয়ার আগে সাজ্জাদ আর স্বাধীন বের হয়েছে। স্বাধীন বললো কালকে রাতের লোকগুলো S.R এর লোক ছিলো। সাজ্জাদ বলৰো, হ্যাঁ ওরা আবার আদ্রিতার পিছু নিয়েছে। স্বাধীন জিজ্ঞেস করলো, আদ্রিতাকে সতর্ক কিভাবে করবি? ওকে কি সব বলবি নাকি আমরা আড়ালে থেকে আমাদের কাজ চালিয়ে যাবো?

সাজ্জাদ বললো, না আদ্রিতার মধ্যে এখনো যথেষ্ট ম্যাচুরিটি নেই। ও আবার S.R এর কথা শুনলে ভয় পেয়ে যাবে। যা করতে হবে আমাদের আড়ালে থেকেই করতে হবে।

স্বাধীন বললো, আদ্রিতা এখন বাসায় ও নিরাপদ না।

সাজ্জাদ বললো, আমি ওদের বাসায় আশে পাশে পুলিশদের ইনফরমেশন দিয়ে রেখেছি। বাসায় কোনো রকম সমস্যার মধ্যে পড়বে না। আর বাইরে আমি আছি আদ্রিতার সাথে সব সময়। একবার S.R কে ধরতে পারলেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

স্বাধীন বললো, আচ্ছা অফিসে যাবি এখন? চল

সাজ্জাদ বললো, না আর একটু পর আমি একটু আদ্রিতাদের বাসায় ওইখানে যাবো, তুই অফিসে চলে যা।

স্বাধীন বললো, কি ব্যাপার দোস্ত ভাবির সাথে দেখা করতে যাবি নাকি?

সাজ্জাদ বললো, ওদের বাসায় সব ঠিক আছে নাকি দেখতে যাবো।

স্বাধীন বললো, ও আচ্ছা একথা বলে স্বাধীন চলে গেলো।

অন্যদিকে ~

আমার বাসায় অনেক আয়োজনের ব্যবস্থা করছে মা। আমাদের কিছু আত্নীয় স্বজনদের ও আজকে আসতে বলেছে। বাড়িতে যেনো একটা বিয়ে বাড়ির ভাব এসেছে

অপরদিকে ~

সাজ্জাদের মা ও অনেক খুশি, ছেলের বিয়ে তারিখ ঠিক হবে দেখে। কিন্তু একটি ব্যাপারে দীর্ঘশ্বাস ফেললো। কারন সাজ্জাদের মা চেয়েছিলো আদ্রিতার সাথে সাজ্জাদের বিয়ে দিতে। কারন সামিরা অনেক শান্ত অনেক চুপচাপ থাকে। সাজ্জাদের মার কোনো মেয়ে নেই দেখে। সাজ্জাদের মা চেয়েছিলো এমন মেয়েকে তার ছেলের বউ বানিয়ে আনবে যে কিনা সব সময় বাসা মাতিয়ে রাখবে। সাজ্জাদের মা চেয়েছিলো বউ না একটি মেয়ে নিয়ে আসবে। কিন্তু যায় হোক সাজ্জাদের ভাগ্য সামিরা লেখা আছে তাই হয়তো সামিরার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে। সাজ্জাদের মা ও প্রস্তুতি শুরু করলো সামিরার বাসায় যাওয়ার জন্য।

এদিকে ~

রাস্তায় আলোর জন্য দাঁড়িয়ে আছি এমন সময় দেখলাম আরিয়ান স্যার আসছে আমি সালাম দিলাম। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললো,

কি ব্যাপার আদ্রিতা এখানে দাঁড়িয়ে আছো যে ১ সপ্তাহ কলেজে আসো নি আজকে ও কি আসবে না?

জ্বি, স্যার আসবো আলোর জন্য দাঁড়িয়ে আছি।

তার একটু দূরেই গাড়িতে সাজ্জাদ বসে আছে। আদ্রিতা আর আরিয়ানকে কথা বলতে দেখে অনেক রাগ হচ্ছে সাজ্জাদের।

আমার ফোন কেটে দিয়ে এখন রাস্তায় আরিয়ানের সাথে কথা বলা এতো সাহস ওর কিভাবে হয় (সাজ্জাদ)

এদিকে আলো এসেছে আলো ও স্যারকে সালাম দিলো।

আরিয়ান বললো কলেজেই ত যাবো চলো একসাথেই যায়।

আলো কিছু বলার আগে, আমি বললাম না স্যার আমরা ২ জন বাসে করে যাবো।

আরিয়ান স্যার বললো, আমি ও বাসে করেই যাবো। চলো একসাথেই উঠি।

সাজ্জাদ কথা শুনতে না পারলে বুঝতে পারছিলো আরিয়ান হয়তো ওদের সাথে যাওয়ার কথা বলছে।

স্যারকে কিছু বলার আগেই হঠাৎ সাজ্জাদ আসলো, এসে বললো আদ্রিতা, আলো গাড়িতে উঠো। আমি স্যারকে বললাম, স্যার আমরা সাজ্জাদ ভাইয়ার সাথে যাবো। কথাটি বলে, আলোকে নিয়ে গাড়িতে উঠে পড়লাম।

এদিকে আরিয়ান সাজ্জাদের উপর রেগে গেলো। মনে মনে ভাবতে থাকলো আমি যখনই ওর একটু কাছে থাকতে চাই। সাজ্জাদ চলে আসে। আচ্ছা এমন নয় ত যে সাজ্জাদ ও ওকে পছন্দ করে? কথাগুলো ভাবতে ভাবতে আরিয়ান কলেজের উদ্দেশ্য চলে গেলো।

এদিকে গাড়িতে আমরা চুপচাপ রইলাম কলেজের সামনে এসে তাকে ধন্যবাদ দিয়ে নেমে যেতে নিলাম তখন সাজ্জাদ বললো আদ্রিতা তোমার সাথে একটু কথা আছে। আমি আলোকে বললাম তুই রুমে যা আমি আসছি।

জ্বি, কি বলবেন? আর আপনি তখন গাড়ি নিয়ে হঠাৎ কোথা থেকে আসলেন?

এসব কথা আপাতত বাদ দেও। তুমি নিশ্চয়ই জানো সামিরার সাথে আজকে আমার বিয়ের দিন ঠিক করা হবে?

জ্বি, জানি এখন আমি কি করবো?

তোমার এ বিয়েতে কোনো আপওি নেই? (সাজ্জাদ)

যেইখানে আমার কোনো অধিকার নেই সেইখানে আপওি কেনো থাকবে?

তুমি ত আমাকে ভালোবাসো….. তোমার বোনের সাথে আমার বিয়ে মেনে নিবে কি? ( সাজ্জাদ)

ভালোবাসি না, ভালোবাসতাম, আপনি নিজেকে কি মনে করেন? আপনার কি মনে হয় সে দিনের অপমান আমি ভুলে গেছি? আপনার মতো মানুষের সাথে বাবা আগে থেকেই দির বিয়ে ঠিক করে রেখেছিলো শুধু মাএ এই জন্য দির সাথে আপনাকে মেনে নিচ্ছি না হলে কখনো দির সাথে আপনার বিয়ে দিতাম না।

কথা গুলো শুনে সাজ্জাদের খারাপ লাগলে ও কিছু বললো না। শুধু জিজ্ঞেস করলো, তাহলে এ বিয়েটা হচ্ছে?

হ্যাঁ, অবশ্যই হবে। আত্মীয় স্বজনরা সবাই জানে আপনার সাথে দির বিয়ে এখন এ বিয়ে হতেই হবে।

তুমি মেনে নিতে পারলেই হবে, দেখো আমার জন্য যেন তোমার বোনের সাথে তোমার সম্পর্ক খারাপ না হয়। কথাটি বলে সাজ্জাদ গাড়িতে উঠে পড়লো।

অন্যদিকে ~

সাজ্জাদের গাড়ি থেকে আদ্রিতা নামার সময় নওশিনরা দেখে ফেলে। নওশিন রেগে আগুন হয়ে যাচ্ছে। যেই যায়গায় নওশিন সাজ্জাদের নাম্বার পাচ্ছে না আর সেখানে আদ্রিতা সাজ্জাদের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

আমি রুমে যেতে নিলে, নওশিনরা সামনে আসলো এমনিতেই মন মেজাজ ভালো নেয়। তার উপর আবার ওরা, কিছু না বলে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলাম তখন নওশিন বলে উঠলো, ভালোই ত বড়লোকের ছেলে দেখে ফাসিয়ে দিয়েছিছ। তুই সাজ্জাদের গাড়ি দিয়ে আসলি কোন হিসেবে? কি দিয়ে বশ করেছিছ?

মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। মাঠে শুধু আমি আর নওশিনরা।
নওশিনকে বললাম নিজের লিমিট এর মধ্যে থেকো।

এদিকে ~

আদ্রিতা ভুলে তার ফোনটি সাজ্জাদের গাড়িতে ফেলে এসেছিলো। সাজ্জাদ ফোনটি দিতে এসে নওশিন এর কথা শুনে রাগের চরম পর্যায়ে চলে যায়। আর বুঝতে পারে হয়তো নওশিন তাকে পছন্দ করে এইজন্য আদ্রিতা আমার গাড়ি দিয়ে এসেছে দেখে নওশিন এমন করছে।

আমি আর কিছু নওশিন কে বলার আগেই, পেছন থেকে সাজ্জাদ বললো, এই মেয়ে তোমার সাহস কি করে হয় আদ্রিতার সাথে এইভাবে কথা বলার?

কথাটি বলে সাজ্জাদ যা করলো তার জন্য আমি মোটে ও প্রস্তুত ছিলাম না কারন সাজ্জাদ এগিয়ে এসে এক হাত দিয়ে আমাকে টান দিয়ে সাজ্জাদের সাথে জড়িয়ে ধরে ওদের উদ্দেশ্য বললো……

#চলবে

[ বসায় কিন্তু একটা বিয়ে বিয়ে ভাব জমে যাচ্ছে। সাজ্জাদের সাথে সামিরা কে কেমন মানাবে? ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here