#অজানা_অনুভূতি
#পর্ব_০৬
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
সাজ্জাদ আদ্রিতার চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে বললো, এতো দুর্বল কেনো তুমি? এতো ভয় পাও কেনো? এই ছোট একটা কারনে তোমাকে নিজের করে নিতে পারছি না। কথাগুলো বলে আদ্রিতাকে কোলে তুলে নিলো। আর সাজ্জাদের গাড়ির দিকে হাঁটতে থাকলো। গাড়িতে গিয়ে আদ্রিতাকে বসিয়ে দিলো। মুখের উপর পানি ছিটানো শুরু করলো। কতক্ষণ পর আদ্রিতার জ্ঞান ফিরে আসলো।
আস্তে আস্তে চোখ খুললাম। সেইদিন এর ঘটনা গুলো মনে পড়লেই আমার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। ঔইদিন যদি সাজ্জাদ না থাকতো কি হতো আমার ভাবতেই ঘা শিউরে উঠলো তার হাতটা চেপে ধরলাম।
আদ্রিতা ঠিক আছো তুমি?
হ্যাঁ, কথাটি বলে উঠি দাঁড়াতে নিলাম। আবার মাথা ঘুরে উঠলো। সাজ্জাদ আমাকে ধরে বসিয়ে দিলো।
সাজ্জাদ বললো, চুপচাপ গাড়িতে বসো। বাসায় যাবে এখন।
আর কিছু বললাম না। গাড়িতে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখলাম।
সাজ্জাদ জিজ্ঞেস করলো, তুমি কি কিছু খাবে?
আস্তে করে বললাম না।
তিনি ওকে বলে গাড়ি চালানো শুরু করলেন।
বাসার একটু আগেই তিনি আমাকে নামিয়ে দিলেন। আর বললেন নিজের একটু খেয়াল রেখো। আর ও শক্ত হতে হবে তোমাকে। অতীতের কথা গুলে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করো। ঔইটা শুধুমাএ একটি দুঃস্বপ্ন ছিলো আর কিছু না। বাসায় যাও ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নেও
অন্য সময় কথা গুলো বললে হয়তো আদ্রিতা সাজ্জাদকে কিছু কথা শুনিয়ে দিতো। কিন্তু আজকে কিছু বললো না। চুপচাপ কথাগুলো সহ্য করে নিলো। সাজ্জাদ ও বুঝতে পারলো আজকে একটু বেশি ভয় পেয়ে গিয়েছে।
এখন বাসায় যাও।
সাজ্জাদকে ধন্যবাদ দিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
সাজ্জাদ দীর্ঘশ্বাস ফেললো আবার ভয় ও পাচ্ছে যদি আদ্রিতার সাথে কেউ সাজ্জাদকে দেখে থাকে তাহলে আদ্রিতার ক্ষতি সম্ভাবনা থাকবে।
বাসায় আসার পরই শুনলাম মা নাকি গ্রামে গিয়েছে আর বাবা অফিস করে নাকি গ্রামে যাবে। হঠাৎ দাদু নাকি অসুস্থ হয়ে পড়েছে এই জন্য। বাসায় শুধু আমি আর দি।
আদুরি বাসায় আসতে এতো দেরি হলো কেনো? এতোক্ষণ কোথায় ছিলি?
দি আগে ফ্রেশ হয়ে নেয় তারপর বলছি। ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার আমি আর দি একসাথে খেয়ে নিলাম। তারপর দি কে সব কিছু বললাম।
সামিরা সব কিছু শুনে বললো, আদুরি আমার মনে হয় সাজ্জাদ তোকে ভালোবাসে। কিন্তু হয়তো কোনো কারনে স্বীকার করছে না।
কিন্তু দি এখন কিছু সম্ভব না তোর সাথে সাজ্জাদের বিয়ে ঠিক করা।
হুম কিন্তু যেইভাবেই হোক আমি বিয়ে ভেঙে দিবো। এ বিয়ে আমি করবো না। কথাগুলো বলে দি, দির রুমে চলে গেলো।
কি বলবো দেখি ফিউচারে কি হয়। ক্লান্ত লাগছে খুব, ঘুমিয়ে পড়লাম।
অন্যদিকে ~
রাইসার গ্রুপ একসাথে দাঁড়িয়ে আছে। নওশিন বললো সাজ্জাদের সাথে কিভাবে কথা বলবো? সাজ্জাদের ফোন নাম্বার ও নেই আমার কাছে।
রাইসা বললো কলেজের অনুষ্ঠানে ত আসবে তখন যেভাবেই হোক নাম্বার যোগাড় করতে হবে। বাকিরা ও সম্মতি দিলো রাইসার কথায়।
নওশিন রাগে বললো, সেই আদ্রিতার মধ্যে এমন কি আছে যে সাজ্জাদ নিজ থেকে আদ্রিতার সাথে কথা বললো।
রাইসা বললো, শান্ত হ আদ্রিতা ত বলেছে তার বাবার বন্ধুর ছেলে সেজন্য হয়তো কথা বলেছে।
নওশিন বলে উঠলো তাহলে ত আদ্রিতার কাছে সাজ্জাদের নাম্বার থাকবে। কিন্তু আদ্রিতার থেকে কি করে নাম্বার নিবো?
রাইসা বললো, অপেক্ষা করতে থাক দোস্ত সাজ্জাদের নাম্বার যোগাড় করে দিবো।
অন্যদিকে ~
সাজ্জাদের কোলে আদ্রিতা থাকা অবস্থায় যে ব্যাক্তি ছবি তুলেছিলো। সে ওই ছবিটি S.R কে পাঠিয়ে দিলো।
S.R ছবিটি দেখে রাগে নিজের সামনে থাকা গ্লাসটা ভেঙে ফেললো। মনে মনে রাগে প্রতিশোধে জ্বলে শেষ হয়ে যাচ্ছে। S.R ফোনের ব্যক্তিকে বললো, আজকে রাতের মধ্যে মেয়েটিকে আমার চাই।
কিন্তু বস আজকে কিভাবে? আর মেয়েটি একা না। মেয়েটির সাথে এখন সাজ্জাদ আছে। সাজ্জাদ মেয়েটিকে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে রক্ষা করার চেষ্টা করবে। আর মেয়েটির খোঁজ নিয়েছি। মেয়েটির বাসায় ওর মা বাবা আর বোন। কিন্তু আজকে রাতে বাসায় শুধু ও আর ওর আপু রয়েছে।
S.R বললো তাহলে কাজটি আর সহজ হয়ে যাবে। মেয়েটিকে তুলে আন দরকার হলে ওর আপুকে খু*ন করে ফেল। কিন্তু ওই মেয়েটির গায়ে যেনো একটি আচড় ও না লাগে।
ওকে বস কথাটি বলে লোকটি ফোন রেখে দিলো।
এদিকে ~
আরিয়ান সব কাজ করে রুমে শুয়ে আছে। আর ভাবেছে মেয়েটি শান্ত হলে ও প্রতিবাদী আছে। প্রথম দেখায় মেয়েটিকে এতো ভালো লেগে যাবে বুঝতে পারি নি। কিন্তু ওকে আমার করে নিবো কিভাবে? কালকে থেকে শুধু তোমার উপরই নজর থাকবে আমার। চিন্তা করো না কোনো ক্ষতি করবো না। তোমাকে বিয়ে করে আমার স্ত্রীর মর্যাদা দেবো তোমাকে। কথাগুলো বলে মুচকি হাসলো আরিয়ান।
অপরদিকে ~
সাজ্জাদ তার সব কাজ শেষ করে মাএ বাসায় ফিরেছে। এতোক্ষণ স্বাধীনের সাথে ছিলো। স্বাধীনকে বলেছিলো একটি মেয়ে তাকে পছন্দ করে। কিন্তু মেয়েটি যে আদ্রিতা সে কথা স্বাধীন জানে না। সাজ্জাদ ফ্রেশ হয়ে ডিনার সেরে নিলো। তার কম্পিউটার নিয়ে বসেছে। কাজের সব ফাইলগুলো একবার চেক করে নিচ্ছে। কাজের চাপ, সামিরার সাথে বিয়ে নিয়ে আবার আদ্রিতা সব কিছু নিয়ে অনেক চিন্তার ভিতর আছে সাজ্জাদ। হঠাৎ একটি কল সাজ্জাদের ফোনে আসলো। অপর পাশের কথা শুনে সাজ্জাদ তাড়াতাড়ি স্বাধীনকে ফোন করে রাতে ১১ টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে পড়লো।
এদিকে ~
আমি মাএ ঘুম থেকে উঠেছি সেই সন্ধ্যায় ঘুমিয়েছিলাম এখন উঠলাম। আমাদের বাসাটি ডুপ্লেক্স বিল্ডিং। নিচে গিয়ে দেখলাম খাবার টেবিলে সব খাবার সাজানো আছে। দির সাথে গল্প করতে করতে খাওয়া শুরু করলাম। হঠাৎ বাসায় গুলির শব্দ শুনে আমি আর দি অনেক ভয় পেয়ে গেলাম। আমাদের বাসার পিছনে বাগান থেকে কিছু লোক বাসার পিছনের দরজা ভেঙে বাসায় ঢুকে আসলো। সবার হাতে বন্দুক। আমি ভয়ে দির হাত ধরে রাখলাম। ৪ জন লোক বাসায় ঢুকেছে। সবাই কালো ড্রেস পড়া সবার হাতে বন্দুক। এর মধ্যে ২ জন লোক আমাদের দিকে আগাতে নিয়েছে ঠিক এমন সময়…………..
#চলবে
[ আজকের গল্পটি হয়তো একটু ছোট হয়েছে। আমার ইন্টারের ১ম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা চলতেছে তাই একটু ছোট হয়েছে। ৩ তারিখে পরীক্ষা শেষ। ৩ তারিখ থেকে গল্পের পর্ব গুলো বড় হবে।
আরিয়ান কাকে বিয়ে করতে চাই? আর কি মনে হয় শুধু কি আদ্রিতাই সাজ্জাদকে ভালোবাসে? নাকি সাজ্জাদ ও আদ্রিতাকে ভালোবাসে? ]