#অনুভবের_প্রহর
#অজান্তা_অহি (ছদ্মনাম)
#পর্ব____০৪
জীবনে প্রথম বারের মতো তার কল্প পুরুষের ভেজা বুকে মুখ লুকাল প্রহর। অনুভবের শীতল শরীরটা উষ্ণ এক স্পর্শে ভরে গেল। বুকের গহীনে কোথাও প্রশান্তি অনুভব করল। প্রহর তার পিঠের কাছের শার্ট খামচে ধরে আরো গভীর ভাবে আঁকড়ে ধরলো। মুহূর্তে হুশ ফিরলো অনুভবের। অকস্মাৎ চোখ দুটো লাল হয়ে গেল। পায়ের রক্ত মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো। এক টানে প্রহরকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নিল সে। প্রহরের কাঁধ চেপে ধরে ধাক্কা দিয়ে কিছুটা দূরে সরিয়ে দিল। ধমকে বলল,
‘হোয়াট ননসেন্স? কি করছো তুমি? মাথা খারাপ হয়ে গেছে?’
দূরে দাঁড়িয়ে প্রহর নিজের বাহুতে হাত বুলাল। একটু আগে করা কাজের জন্য নিজেই লজ্জা পেল। লজ্জায় মুখটা নিচু করে রইলো। বেশিক্ষণ মাথা নিচু করে থাকতে পারলো না। চোখ তুলে অনুভবের দিকে তাকালো।
‘কথা বলছো না কেন তুমি? মাত্র কি করলে এটা? অসভ্যতামি করছো কেন?’
অনুভবের ছটফটানি ভাব প্রহরের চোখ এড়াল না। সে সহজ গলায় বলল,
‘এত অভাররিয়েক্ট করছেন কেন? একটু তো জড়িয়েই ধরেছিলাম৷ আপনি যে মোটকু সিমরানের কোমড় চেপে ধরেছিলেন তার বেলা? সেটা অসভ্যতামি নয়?’
কড়া কিছু বলতে নিয়েও শেষ মুহূর্তে নিজেকে সামলে নিল অনুভব। এই মেয়ে সহজ পাত্র নয়। এক কথা বললে হাজার কথা বলবে। মুখে মুখে তর্ক করা এর স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। হার মেনে প্রহরের চোখের আড়াল হওয়ার জন্য দরজার দিকে হাঁটা শুরু করলো। দরজা অবধি পৌঁছানোর আগেই ঠাস করে কিছু পড়ার আওয়াজ কানে এলো। সেই সাথে প্রহরের আর্ত চিৎকার। পা থেমে গেল অনুভবের।
পেছন ঘুরে তাকিয়ে থমকে গেল সে। প্রহর ডান পায়ের গোড়ালি চেপে মেঝেতে বসে আছে। মুখে স্পষ্ট যন্ত্রণার ছাপ। এক দৌঁড়ে অনুভব এগিয়ে গেল। প্রহরের সামনে বসে পড়লো। তাকে টেনে উঠানোর চেষ্টা করলো। হন্তদন্ত হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
‘পড়লে কিভাবে?’
প্রহর চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
‘বৃষ্টির পানি দিয়ে ফ্লোর ভিজিয়ে রেখেছে কে? একটু তাড়াহুড়ো করে হাঁটতে নিয়ে পড়ে গেলাম। আমার পা বোধ হয় প্যারালাইজড হয়ে গেছে।’
প্রহর মুখ দিয়ে ব্যথার আর্তনাদ করলো। অনুভবের মুখটা অপরাধ বোধের ঘন মেঘে ঢেকে গেল। কেন যে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বাড়ি ফিরলো! এর চেয়ে মোড়ের দোকানে অপেক্ষা করলে পারতো। তাহলে এত অঘটন ঘটতো না। প্রহরের সাথে দেখাটাও হতো না! সে প্রহরের হাত চেপে ধরে দাঁড় করানোর চেষ্টা করলো। বলল,
‘তাড়াহুড়ো করে হাঁটতে বলে কে? হুঁ?’
‘আপনি তো ভারী নিমকহারাম। নিজের দোষ আমার উপর চাপাচ্ছেন? আপনাকে ফ্লোর ভেজাতে বলেছিল কে?’
‘আমার বাড়ি আমার ঘর। মন চাইলে ফ্লোর শুকনো রাখবো, আবার ভিজিয়ে রাখবো, প্রয়োজনে পায়খানা করে রাখবো। তোমার সমস্যা আছে কোনো?’
‘ইয়াক!’
বলে প্রহর নাক সিঁটকালো। তার নাক সিঁটকানো কে পাত্তা না দিয়ে অনুভব তাকে টেনে তোলার চেষ্টা করলো। হালকা করে প্রহরের হাত স্পর্শ করে আছে সে। এই মেয়ের সাথে কোনো প্রকার গভীর স্পর্শে সে যেতে চায় না। তাহলে আরো জেঁকে ধরবে। সে পুনরায় প্রহরের হাত টেনে তোলার চেষ্টা করলো। ব্যর্থ হলো। এবারে কপাল কুঁচকে বলল,
‘উঠছো না কেন? হাত ধরে উঠে পড়ো।’
‘আপনার কি মনে হয় আমি ইচ্ছে করে পড়ে আছি? ইচ্ছে করে উঠছি না?’
‘তা নয় তো কি?’
‘উঃ মাগো! বাবা গো। ব্যথায় মরে গেলাম গো।’
অনুভবকে অবাকের শীর্ষে রেখে প্রহর সত্যি সত্যি কেঁদে দিল। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছে সে। অনুভব কোলে না তোলা পর্যন্ত সে ফ্লোর থেকে উঠবে না। পায়ে ততটা আঘাত না পেলেও সে মুখ দিয়ে যন্ত্রণার শব্দ করলো।অনুভবের হাতটা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে পা চেপে ধরলো। নাঁকি সুরে আবার বলল,
‘এই পা কেটে ফেলতে হবে। এই পা দিয়ে আর কোনো আশা ভরসা নেই। ও আর হাঁটতে পারবে না গো! আম্মু গো!’
অনুভব প্রচন্ড পরিমাণে ভড়কে গেল। মুখটা চিন্তাক্লিষ্ট। প্রহরকে দেখে মনে হচ্ছে না অভিনয় করছে। সত্যি সত্যি ব্যতা পেয়েছে মেয়েটা। সে প্রহরের বাম পায়ের গোড়ালিতে হাত ছোয়াঁতে প্রহর দ্বিগুণ চিল্লিয়ে বলল,
‘মা গো। মরে গেলাম গো মা।’
অনুভব কি করবে বুঝতে পারছে না৷ মাথাটা শূন্য শূন্য মনে হচ্ছে। সে দরজার দিকে তাকিয়ে চিন্তিত কন্ঠে ডাক দিল,
‘মা? মা? এদিকে আসো তো।’
দরজার আড়ালে থাকা ফাতেমা কিছুটা চমকে উঠলেন। তিনি ছেলের রুমের ভেতরের কোনো দৃশ্য না দেখলেও তাদের বেশ খানিকটা কথোপকথন শুনেছে এবং এটা বুঝতে সক্ষম হয়েছে যে রূপবতী ওই মেয়েটা সোনার চামচ মুখে নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে। আরো বুঝতে পেরেছে, ওই ধনীর দুলালী মেয়েটা তার গরিব ছেলেকে ভালোবাসে। এত সুন্দর রূপবতী, গুণবতী একটা মেয়ে তার ছেলেকে পছন্দ করে। মা হিসেবে তার অঢেল খুশি হওয়ার কথা। কিন্তু তিনি খুশি হতে পারেননি। উল্টো সত্যিটা জানার পর বিষাদে বুক ভরে গেছে। তার ছেলের জন্য যে কাউকে ভালোবাসা নিষিদ্ধ। এই মুহূর্তে তার বুক পুড়ছে। তার ছেলের জন্য। ভালোবাসার মতো চমৎকার একটা বিষয় তার দুয়ারে হাতছানি দিচ্ছে। অথচ তা ছুঁয়ে দেওয়া বারণ।
দ্বিতীয় বারের মতো অনুভবের ডাকে তিনি চোখ মুছলেন। যথাসম্ভব নিজেকে স্বাভাবিক করলেন। রুমের ভেতর ঢুকে চিন্তার সহিত বললেন,
‘অনুভব কি হয়েছে মেয়েটার?’
‘পড়ে গেছে মা। পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা পেয়েছে।’
অনুভবের কথা কেড়ে নিয়ে প্রহর বলল,
‘শুধু ব্যথা পাইনি আন্টি। গোড়ালি ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। আমি আর কোনোদিন হাঁটতে পারবো না।’
ফাতেমা, অনুভব দুজনে প্রহরের দিকে তাকালো। ফাতেমা প্রহরের চোখ মুখ নতুন করে পরখ করলেন। একটা দীর্ঘশ্বাস লুকিয়ে বললেন,
‘অনুভব ওকে বিছানায় বসা। আমি বরফ নিয়ে আসছি।’
ফাতেমা বরফ কুচির জন্য ঘর থেকে বের হতে অনুভব সাবধানে প্রহরকে কোলে তুলে নিল। প্রহর দু হাতে তার গলা জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করলো। অনেক কষ্টে নিজের হাসি ভাব লুকিয়ে রাখলো। এই টুকুই সে চেয়েছিল। অনুভবের কোলে উঠা! আজ কার মুখ দেখে তার ঘুম ভেঙেছিল? অনুভবের সাথে এত চমৎকার সময় কাটছে। তার মুখের তেঁতো ভাবটা কেটে গেছে অনেক আগে। মুখ জুড়ে এক ধরনের মিষ্টান্নতা। সে জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট যুগল ভিজিয়ে নিল। মনে মনে ভাবলো, এই সুযোগে অনুভবকে একটা চুমু খেলে কেমন হয়? তার ভাবনার মাঝে অনুভব কঠিন গলায় বলল,
‘গলা ছাড়ো!’
ধপ করে চোখ খুলল প্রহর। দেখলো যে সে অনুভবের বিছানায়। অনুভব নিজে থেকে তাকে বসিয়ে দিয়েছে। ভেতরে ভেতরে কেমন পুলকিত অনুভব করলো সে। অনুভবের বিছানায় বসতে পেরে নিজেকে কেমন ধন্য মনে হচ্ছে। সে চোখ তুলে অনুভবের কুঁচকানো মুখের দিকে তাকালো। অনুভবের রাগী মুখ ছাপিয়ে তাকে এত কাছে পেয়ে শিহরণ বয়ে গেল মনে। হার্টবিট বেড়ে গেল। অনুভব গলা জড়িয়ে রাখা হাত দুটো ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে ধমক দিয়ে উঠলো। বলল,
‘গলা ছাড়ছো না কেন?’
প্রহর সঙ্গে সঙ্গে মুখ দিয়ে যন্ত্রণার শব্দ করলো। কিন্তু গলা ছাড়লো না।
গলা ছাড়লো দরজার ওপাশে পায়ের শব্দ হতে। গলা ছেড়ে পায়ের গোড়ালি চেপে ধরলো। ফাতেমা একটা বাটিতে বরফ কুচি আর এক টুকরো কাপড় নিয়ে এলেন। অনুভবের ভেজা শরীর দেখে চিন্তিত কন্ঠে বললেন,
‘কতবার বলবো তোকে বৃষ্টিতে ভিজবি না? যা গোসল সেরে আয়।’
অনুভব কিছু বলল না৷ শুকনো কাপড় হাতে নিয়ে এক পলক প্রহরের দিকে তাকালো। প্রহরের চোরা চোখ তার উপর নিবদ্ধ সেটা বুঝতে অসুবিধা হলো না। ছোট্ট একটা শ্বাস টেনে চুপচাপ বের হয়ে গেল। এখানে নয়, মায়ের রুমের ওয়াশরুমে গোসল সেরে নিবে সে।
অনুভব চলে যেতে ফাতেমা কাপড়ের টুকরোটাতে বরফের কুঁচি পেঁচিয়ে নিলেন। প্রহরের দিকে আর একটু এগিয়ে গেলেন তিনি। প্যাঁচানো বরফের কুঁচি প্রহরের পায়ের কাছে এগিয়ে নিতে প্রহর তার হাত চেপে ধরলো। বাঁধা দিয়ে তার দিকে তাকাল। অপরাধী কন্ঠে বলল,
‘স্যরি আন্টি। আমি খুবই দুঃখীত। আপনাকে অনেক গুলো মিথ্যে বলেছি। পায়ে তেমন ব্যথা পাইনি। আর আমি অনুভবের ক্লাসমেট নই। আসলে আমি উনাকে পছন্দ করি।’
ফাতেমা হাতটা সরিয়ে নিল। কাপড়ের টুকরোটি বাটিতে রেখে মাথা নিচু করলো। প্রহর ব্যতিব্যস্ত হয়ে ফাতেমার হাত চেপে ধরলো। বলল,
‘আন্টি প্লিজ ক্ষমা করে দিন আমাকে। আর কখনো মিথ্যে বলবো না। আমি সত্যি অনুভবকে ভালোবাসি। আমি উনার ভার্সিটির জুনিয়র। দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছি। কিন্তু অনুভব ভাই প্রতিবার আমাকে রিজেক্ট করেছে। অনেক ঘুরেছি তার পিছনে পিছনে। তবুও আমাকে মেনে নেয়নি, কখনো দু চারটে ভালো কথা বলেনি। বাধ্য হয়ে আজ আপনার বাসা পর্যন্ত এসেছি। আন্টি আপনি প্লিজ একটু বলুন তো। আমাকে কেন উনি এতটা অপছন্দ করেন?’
ফাতেমা কোনো কথা খুঁজে পেল না। প্রহরের হাত ছাড়িয়ে উঠে দাঁড়ালো। নরম গলায় বলল,
‘প্রহর মা। এখনকার বাচ্চাদের মন মানসিকতা, তাদের পছন্দ অপছন্দ সম্পর্কে আমরা বয়স্করা বুঝে উঠতে পারি না। এই যেমন তোমার মতো শিক্ষিতা, সুন্দরী, বড়লোক বাবার মেয়ে অনুভবের মতো বাউন্ডলে একটা ছেলেকে পছন্দ করেছে। এটার সমীকরণ যেমন মেলাতে পারছি না, তেমনি অনুভব কেন তোমাকে অপছন্দ করছে সেটাও বলতে পারবো না। দেখো মা বিয়ে, সংসার কোনো ছেলে খেলা নয়। অনেক কিছু, অনেক দিক, পারিপার্শ্বিক অনেক বিষয় বিবেচনা করে কাউকে পছন্দ করতে হয়। কারো দিকে পা বাড়াতে হয়। তোমাকে দেখে মনে হয় বড় ঘরের কোনো মেয়ে তুমি। আমাদের সাথে তোমাদের খাপ খায় না। এখানেই থেমে যাওয়া সমীচীন হবে।’
প্রহর মাথা নিচু করে আছে। ঠোঁট কামড়ে সে কান্না থামানোর চেষ্টা করলো। অনুভবের মাও ঠিক তাদের ধনী-গরিব বৈষম্যটা টেনে তুলল। এটাকে বাঁধা হিসেবে দাঁড় করাল। সে বুঝতে পারছে না, ধনী পরিবারে জন্ম নেওয়া তার অপরাধ। নাকি ধনী হয়ে গরিব কোনো ছেলেকে ভালোবাসা অপরাধ!
ফাতেমা বরফের বাটিটা হাতে তুলে বলল,
‘বাইরে এসো। আমি চা, নাস্তা রেডি করছি। নাস্তা করে মায়ের বুকে ফিরে যাও।’
ফাতেমা বাটি হাতে নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলেন। তিনি চলে যেতেই প্রহর মুখ ঢেকে কেঁদে ফেলল। সে ভেবেছিল, অন্তত অনুভবের মা তাকে দেখে পছন্দ করবে। তাকে সাপোর্ট করবে। তিনি অন্তত রাজি হবে। কিন্তু ঘটনা উল্টো হলো। তিনিও ছেলের মতো মুখ ফিরিয়ে নিলেন।
খুব দ্রুত নিজেকে সামলে নিল প্রহর। সে কান্না করার মতো মেয়ে নয়। মনকে দ্রুত শক্ত করে নিল। সাথে নিজের ভালোবাসাকে। সে খুব করে জানে, এই জীবনে অন্তত আর কাউকে নিজের স্বামীর আসনে বসানো সম্ভব নয়। সম্ভব নয় আর কাউকে ভালোবাসার। এই মানুষটাকে নিয়ে যে যে তার কল্পনার শহর সাজানো শেষ। এই মানুষটার হাত ধরে কল্পনায় বার্ধক্যের শহর দেখা শেষ। এক জীবনে আর কতজনের হাত ধরবে সে?
উঠে দাঁড়িয়ে ওয়াশরুমে গেল সে। চোখে মুখে পানি দিয়ে বের হলো। রুমে মুখ মোছার জন্য কিছু চোখে পড়লো না। আলনার দিকে এগিয়ে গেল। অনুভবের একটা টিশার্ট দিয়ে মুখ মুছে নিল। মুচকি হাসলো সে। টিশার্টটা নাকে চেপে তার ঘ্রাণ শুঁকলো। তারপর আলনা থেকে মেরুন রঙের শার্টটা হাতে নিল। এই শার্টটা সে অত্যধিক বার অনুভবের শরীরে দেখেছে। শার্টটা মুচড়িয়ে সে ওড়নার আড়ালে লুকাল। সাইড ব্যাগটা বসার ঘরে রয়ে গেছে।
চোখ মুখ ঠিক করে, মাথার চুল ঠিকঠাক করে মৃদু হাসলো সে। যে যাই করুক, যত যাই বলুক, সে বেঁচে থাকা অবধি অনুভবকে ছাড়ছে না। এ দেহে যতদিন প্রাণ থাকবে, অনুভব নামটা রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঠিক থেকে যাবে।
আলতো পায়ে বসার ঘরে ঢুকলো প্রহর। চেয়ারের উপর ব্যাগটা এখনো রাখা। অনুভব বোধ হয় তখন খেয়াল করেনি। সে চেয়ারের দিকে এগিয়ে এলো। রান্নাঘরে দরজা দিয়ে আন্টির শাড়ির আঁচল চোখে পড়ছে। সেদিকে তাকিয়ে সে দ্রুত অনুভবের শার্টটা ব্যাগে পুড়লো।
‘ব্যাগে লুকিয়ে কি রাখলে? কিছু চুরি করেছ?’
অনুভবের কন্ঠ কানে এলো প্রহরের। চমকে পেছনে তাকাল। দেখলো অনুভব এলোমেলো চুলে দাঁড়িয়ে আছে। পরণে সাদা টিশার্ট আর ট্রাউজার। সদ্য শাওয়ার নেওয়া মানুষটার স্নিগ্ধ মুখের দিকে চেয়ে আরেক দফা প্রেমে পড়লো তার। শুকনো ঢোক গিলল সে। পরক্ষণে চোখ সরিয়ে বলল,
‘আমাকে আপনার চোর মনে হয়? এত অবহেলা? শেষমেশ চোর বানিয়ে দিলেন?’
অনুভব মাথার ভেজা চুলে হাত দিয়ে নাড়া দিল। হঠাৎ মনে পড়তে বলল,
‘তোমার পায়ের কি অবস্থা? ব্যথা নেই? সেরে গেছে?’
‘সারেনি। একটু, একটুখানি কমেছে।’
‘বৃষ্টি থেমে গেছে। তাড়াতাড়ি বিদেয় হও।’
ফাতেমা বেগম নুডলসের বাটি হাতে নিয়ে এগিয়ে এলেন। বললেন,
‘প্রথমবার বাড়িতে এসেছে। নাস্তা করুক। নাস্তা শেষ হলে অনুভব রিকশায় তুলে দিয়ে আয়। একা একটা মেয়ে মানুষ।’
ফাতেমার কথায় প্রহরের মুখে হাসি ফুটে উঠলেও অনুভব বিস্ফারিত কন্ঠে বলল,
‘অসম্ভব!’
(চলবে)
আসসালামু আলাইকুম। টানা দুই মাসের মতো নির্ঝর আর তরী লিখতে লিখতে ওদের নাম চলে আসে বার বার। এতবার রি-চেইক করার পরো ভুলটা চোখে পড়ে না। কেউ বানান ভুল বা এমন ভুল দেখলে সস দিয়ে একটু দেখিয়ে দিবেন প্লিজ। কারণ আমি পুনরায় রি-চেইক করার পরো ভুলটা খুঁজে পাই না। পরিশেষে, ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো।🧡