অনুভূতিতে তুমি 💖পর্ব-২৭

0
2618

#অনুভূতিতে_তুমি 💖
#মিমি_মুসকান
#পর্ব_২৭

নির্ঝর তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ডঃ রাহেলা’র দিকে। নির্ঝর কে অবাক করে দিয়ে ডঃ রাহেলা একটা সিগারেট ধরালেন। নির্ঝর কে শীতল গলায় জিজ্ঞেস করলেন,

“সিগারেট খাও তুমি!

নির্ঝর মাথা নেড়ে বলে,
“নাহ!

“ড্রিংক করো অথচ সিগারেট খাও না।

“যাদের স্ট্রেস বেশি, একাকিত্বে ভোগে, টেনশন বেশি তাদের জন্য সিগারেট প্রযোজ্য। আমার জীবনে এমন কিছু নেই তাই আমার দরকার পরে না। তবে হ্যাঁ ড্রিংক করি সেটা শখ বসত।

ডঃ রাহেলা হেসে বলেন,
“তোমাদের এই জেনারেশনের শখ ও অদ্ভুত। যদি তোমার বেশি অসুবিধা হয় তাহলে সিগারেট রেখে দিচ্ছি।‌

“না ঠিক আছে, আমার অসুবিধা নেই।

ডঃ রাহেলা সিগারেট’র একবার মুখে দিয়ে বলেন,
“এটা আমার শখ না, বলতে পারো একাকিত্বে’র সঙ্গী। দীর্ঘশ্বাস ১০ বছর সংসারের পর যখন সম্পর্কের ইতি হয়ে যায় সেই টান পোড়নে মানুষ খুব অদ্ভুত জিনিস কে নিজের সঙ্গী করে বসে।

নির্ঝর দীর্ঘশ্বাস ফেলল। ডঃ রাহেলা আবারো নিজ থেকেই শুরু করলেন,

“মেহেরিন একটু একটু করে গ্রোথ করতে লাগলো। হঠাৎ একদিন ওর মনে হলো নিরুকে খু/ন করা হয়েছে। আর এই খু/ন টা তার জিজু ছাড়া আর কেউই করে নি। পুলিশের ফাইলে নতুন এক কেস এলো। যা আ/ত্ন/হ/ত্যা বলে তারা বন্ধ করে দিয়েছিল সেই কেস রি ওপেন হলো আবার। আর এটা করল মেহেরিন। শুভ্র খান ততোদিনে এসব থেকে আগ্রহ উঠিয়ে নিলেন। অর্ণব কে নিয়েই নিজের সময় কাটাতেন তিনি। ধীরে ধীরে নিজেকে বন্দী করতে থাকলেন ঘরের কোনে।

অনেক চেষ্টা’র পরও কেস টা জিততে পারে নি মেহেরিন। যারা দুদিন আগেও মেহেরিন’র পক্ষে ছিল টাকার জোরে তার জিজুর পক্ষে রায় দিল তার। একটা কথা কিন্তু তোমার জানা নেই। মেহেরিন’র ক্ষমতা কিন্তু এখন অনেক তবে তখন তার জিজুর ক্ষমতার চেয়ে বেশি ছিল না। ক্ষমতা আর টাকার জোরে তখনকার জন্য কেস টা সেই জিতল। মেহেরিন’র মন আবারো ভাঙল। তবু সে দমে গেল না। নিজেকে তার জিজুর সমকক্ষ গড়ে তুলতে শুরু করল।

নির্ঝর কথার মাঝে বলে উঠে,
“মেহুর জিজু এখন কি দেশে আছে!

“না! আমি শুনেছিলাম শুভ্র খান মারা যাবার পরদিন’ই তার নিউ গার্লফ্রেন্ড’র সাথে দেশ ছাড়ল সে। মেহেরিন’কে আবারো একা করে দিয়ে শুভ্র খান চলে গেল। মেহেরিন এবার আগের থেকে বেশি একা হয়ে গেল। চোখ থেকে রাতের ঘুম হারিয়ে গেল। এদিকে খান কোম্পানির সমস্ত দায়িত্ব তার কাঁধে। দিনের কর্তব্য শেষে রাতের একাকিত্ব নিয়ে দিন কাটতে লাগলো। এর মাঝেই বড় হতে লাগল অর্ণব। যদিও অর্ণবের প্রতি কোন খামতি রাখতো না সে কিন্তু নিজের মন থেকে কারো খামতি’র অভাব কুঁড়ে কুঁড়ে খেত তাকে।

এর মাঝেই অর্ণবের সমস্যা দেখা দিল। কথা বলতে চায় না সে। বোবা না তবুও কথা বলে না।‌ অপরিচিত কাউকে দেখলেই দূরে সরে যায়। ভিড়ে থাকতে মোটেও পছন্দ না তার। যেই বয়সে ছেলেমেয়েরা হইহুল্লোড় করে সেখানে অর্ণব চুপচাপ। একটা বাচ্চা থাকার পরেও খান বাড়ি কেমন শ্মশান বলে মনে হতো। আদৌও কেউ এই বাড়িতে থাকতো কি না তা বোঝা দায়। তার এই অবস্থা অর্ণবের চেয়ে বেশি মেহেরিন’র উপর প্রভাব ফেলল। মা আর ছেলের দুজনের চিকিৎসা’র দায়িত্ব এবার আমার কাঁধে! মেহেরিন কে সবক্ষণ বোঝাতাম সে নিজে না সুস্থ হলে অর্ণবের গ্রোথ কোনভাবেই সম্ভব না..

বলেই ট্রেসটে তে সিগারেট নিভালো ডঃ রাহেলা। নির্ঝর ভ্রু কুঁচকে পুরো কথা টা শুনতে লাগল। ডঃ রাহেলা আবারো শুরু করলেন,

“তখন বর্ষাকাল, টানা তিন দিন ধরে বাইরে বৃষ্টি – বন্যা। টিভি তে দেখলাম কোথায় কোথায় পানি পুরো গ্রাম তলিয়ে নিচ্ছে। এর মাঝেই ১০ দিন ধরে জ্বরে ভুগছি আমি।‌ আমার খুব পরিচিত একজন মানুষের কাজ থেকে জানলাম ডঃ ফাহানের কথা। একজন ভালো সাইক্রেটিস কে খুব দরকার ছিল মেহেরিন’র জন্য। মনে হলো এই লোকটাই মেহেরিন’র জন্য ঠিক হবে।

তখন রাত্রি ৯ টা ২৩ মিনিট, বাইরে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে! ডঃ ফাহান হোসেন ফোন করে জানাল সে দেশে এসেছে। আমি বললাম ভালো কথা। তো কোন হোটেলে উঠবে। ফাহান হোসেন জানাল বাইরে এতো বৃষ্টির মাঝে তার হোটেল যাওয়া সম্ভব না। কারণ এয়ারপোর্ট থেকে হোটেল অনেক দূরে। তাই কাছে কোথায় ভালো কোন হোটেলে’র নাম জানা থাকলে তাকে দিতাম। আমি তাকে মেহেরিন’র ঠিকানা দিয়ে বললাম, এটা তোমার রোগীর বাড়ি। তাদের বাড়িতেই আজকের রাত টা কাটাও। আমি মেহেরিন কে কল করে জানিয়ে দিচ্ছি। সে দ্বিমত পোষণ না করে রওনা দিল মেহেরিন’র বাড়িতে..

অতীত…
বৃষ্টির কারণে মেহেরিন’র বাড়িতে যেতেও অনেক সময় লাগল ফাহানের। প্রায় রাত ১১ টা বেজে ৫ মিনিটে খান বাড়িতে প্রবেশ ঘটল তার। দাড়োয়ান তাকে কিছু জিজ্ঞেস না করেই সদর দরজা খুলে দিল। অবাক হবার কোন দরকার ছিল না কারণ ডঃ রাহেলা বলেছেন মেহেরিন কে সে বলে দিবে। মেহেরিন’র নাম উচ্চারণ করে নিজেই খানিকটা থতবত খেয়ে গেল। কোন একজনের নাম আধঘন্টা’র বেশি মনে রাখতে পারে না সে। এটা তার রোগ না। কারণ হলো তার ভাবনা। নিজের কল্পনায় অলৌকিক অনেক কিছুই ভাবে সে যার কারণে বাস্তবের সবকিছুই গুলিয়ে যায়। তবু সেখানে মেহেরিন কে মনে রাখতে পেরেছে বলে নিজে অসাধ্য সাধন করেছে বলে মনে হলো। পুরো বাড়ি এখনো আলোকিত। বাহ বৃষ্টির মাঝে এই আলোকিত বাড়ি দেখে ভালো লাগছে না হলে মনে মনে একটা ভূতের বাড়ি হবে বলেই ধারণা করেছিল সে। ভেবেছিল আঁধারে ডুবে থাকবে এই বাড়ি।

গাড়িতে বসেই সামনে কাউকে দেখতে পেল সে। নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বৃষ্টিতে কেউ। ফাহান বুঝতে পারল না কে সে আর কি’বা করছে। দেখে মনে হচ্ছে একটা মেয়ে। কিন্তু এতো রাতে একটা মেয়ে কি করছে এখানে। বৃষ্টিতে ভিজছে। কোন মেয়ে এভাবে চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে বৃষ্টিতে ভিজে বলে তার জানা নেই। মেয়েরা যখন বৃষ্টিতে ভিজবে তখন সে নাচবে,‌ লাফাবে। পুরো বৃষ্টি কে উপভোগ করবে সে। কিন্তু এ তো দেখছি…যাক গে, কিন্তু এখানে তার আশা ভঙ্গ করে দিয়ে গাড়ি থেকে নামতেই সব আলো নিভে গেল। দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফোনের আলো জ্বালিয়ে ছাতা নিয়ে বের হলো সে। বাড়ির কাছে না গিয়ে গেলো সেই মেয়েটার কাছে। ফোনের আলোয় দেখার চেষ্টা করল সেই মেয়ে কে।

“এই যে মিস!

বলতেই সেই হরিণী চোখ জোড়া স্থির ভাবে তাকাল ফাহানের দিকে। বৃষ্টির মাঝে এই ভাষা চোখ দেখে খানিকটা হতবাক হলো সে। তার ঠোঁট জোড়া কেঁপে উঠলো। মনে হচ্ছে কিছু বলবে। অপ্রত্যাশিত কিছু শুনে ভ্রু কুঁচকে গেল ফাহানের..

“ডঃ ফাহান হোসেন আপনি।

“জ্বি!

“ডঃ রাহেলা আমাকে বলেছে আপনার সম্পর্কে। আসুন ভিতরে আসুন!

বলেই পা বাড়াল মেয়েটি। ফাহান মেয়েটির পিছনে পিছনে পা বাড়িয়ে বলল,

“মেহেরিন কি তাহলে তুমি!

মেয়েটি কথা শুনল বলে মনে হলো না। তবুও নিশ্চুপতা কে উওর হিসেবে ধরে নিল সে।‌‌ বাড়ির ভেতরে যেতেই সম্মত আলো জ্বলে উঠলো। মেয়েটা তার শীতল কন্ঠে বলে উঠল,

“এতো বৃষ্টির কারণে মেইন সুইচ বোর্ড এ সমস্যা হয়েছিল। ঠিক করা হয়েছে।

মুহূর্তেই ফাহান একটা অবান্তর প্রশ্ন করে বসল,

“মেহেরিন, তুমি কি বৃষ্টিতে ভিজছিলে..

তার কথা মেহেরিন’র ওপর প্রভাব ফেলল। তার ফাহানের দিকে তাকাল। ফাহান এবার পুরোপুরি দেখতে পেল মেহেরিন কে। তার থিতুনি বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। মুখে বিন্দু বিন্দু পানির রেখা। মেহেরিন খানিকটা অবাক কন্ঠে বলল,

“আপনাকে আমার নাম বলেছি আমি..

ফাহান হেসে বলল,
“হুম বলেছিলে..

মেহেরিন কিছু জিজ্ঞেস করতে গিয়েও করল না। তার মুখ দেখে মনে হলো সে নিজেই সংশয় প্রকাশ করছে। সার্ভেন্ট এসে হাজির হলো দুজন। এক তোয়ালে নিয়ে মেহেরিন কে এগিয়ে দিল। অন্যজন কে মেহেরিন ফাহান কে উদ্দেশ্য করে বলল,

“তার রুম দেখিয়ে দাও..

বলেই আনমনে হেঁটে সিঁড়ির দিকে পা বাড়াল।

ফাহান ফ্রেস হয়ে খাটে এসে বসেছে। কিন্তু তার ঘুম আসছে না আর না ক্লান্তি লাগছে। মোটকথা ক্লান্তি লাগছে না বলেই ঘুম আসছে না কারণ ক্লান্তিতে মানুষের শরীরে নিস্তেজ হয়ে গেলেই তার ঘুম ঘুম পায়। কিন্তু ফাহানের এখন খুব ফ্রেস লাগছে। তার মন চাইছে এই সুন্দর বাড়ি টা কে একটু ঘুরে দেখবার। ঘর ছেড়ে বের হলো সে। পুরো বাড়ি আঁধারে ঢাকা। ফাহান হাতে ফোনের আলো নিয়ে ঘুরে বেড়াতে লাগল। তার ঘর ছেড়ে কয়েক পা এগিয়ে ডানে মোর নিল সে। অতঃপর সেখান থেকে বরাবর হাঁটতে লাগল।

কয়েক ঘর পেরিয়ে একটা ঘরের দরজা খোলা পেল। দরজায় উঁকি দিতেই দেখল বেলকনিতে কেউ দাঁড়িয়ে আছে। ফাহানের মন বলল এটা মেহেরিন। তার ঘরের ল্যাম্পশেডের আলো জ্বলছে। সেই আলোয় বিছনায় একজন কে শোয়া দেখছে সে। ডঃ রাহেলার কথা অনুযায়ী মেহেরিন তার ছেলের সাথে এক রুমে থাকে তবে এই কি তার সেই ছেলে। হঠাৎ করেই মেহেরিন এদিকে ফিরল। ফাহান সাথে সাথে সরে ফেলল। ইশ বেশ ভয় পেয়েছে সে! যদি দেখে ফেলতো তখন ভাবতো চুরি টুরি করতে এসেছে বোধহয়। না আর কোন কাজ নেই গিয়ে ঘুমিয়ে পড়াই বেশ ভালো বলে মনে হলো।

ফাহান এই নিয়ে দু কাপ চা শেষ করে তার সামনে টেবিলে রাখল। মেহেরিন সবে অফিসের জন্য তৈরি হয়েছিল। ফাহান তার কাছে খবর পাঠাতেই মেহেরিন তার কাছে এলো। মুচকি হেসে তার সামনে বসল। ফাহান তৃতীয় বারের মতো চায়ের কথা বলল। মেহেরিন হেসে বলল,

“চা হয়তো খুব পছন্দ আপনার!

ফাহান হেসে বলল,
“হ্যাঁ পছন্দ তবে , তোমাদের বাড়ির চা টা দারুন।

“আমার বাসা টাও দারুন।

“হ্যাঁ, তা অবশ্য ঠিক বলেছ। বাড়িটা সত্যি চমৎকার!

“রাতের অন্ধকারে কি ঠিক মতো ঘুরে দেখতে পেরেছিলেন?

ফাহান চমকালো না। মুচকি হেসে বলল,

“না দেখা হয় নি। একা একা কে দেখাবে বলো।

মেহেরিন দাঁড়িয়ে বলল,
“আসুন আমি দেখাচ্ছি!

হাঁটতে শুরু করল। ফাহানও তার পিছন পিছন হাটতে লাগল। মেহেরিন ফাহান কে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে তাঁদের স্টাডি রুমে গেল। বুক সেলফ এ অনেক ধরনের বই দেখতে পেল ফাহান। একটা বই ফাহান হাতে নিয়ে বলল,

“বই খুব পছন্দ!

“না, এতো না।

“তবে এতো বই যে..

“আমার বাবা আর নিরু দির খুব পছন্দ!

“ওহ আচ্ছা!
বলেই বই টা আবারো তার জায়গায় রেখে দিল। চা এসে হাজির। ফাহান চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বলল,

“তোমার সময় নষ্ট করবো না আমি, শুধু কয়েকটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করব।

“হুম করুন!

ফাহান চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বলল,
“তোমার মা মারা যায় কখন?

“আমার জন্মের সময়।

“তোমরা ভাই বোন কয়জন?

“আমি আর নিরু দি।

“এই বাড়িতে এখন কে কে থাকে?

“আমি আমার ছেলে আর বাড়ির সার্ভেন্ট।

দ্বিতীয় বারের চুমুক দিয়ে বলল,
“তোমার দি’র ছেলে কি জানি নাম?

“অর্ণব! আর অর্ণব আমার ছেলে।

ফাহান হেসে বলল,
“তোমার দি কোথায়?

“৩ বছর হলো মারা গেছে!

“আর তোমার বাবা!

“১ বছর?

“তোমার দি মারা গেল কিভাবে?

“সবাই বলে আত্ন/হত্যা করেছে কিন্তু আমি জানি দি কে মে/রে ফেলা হয়েছে!

“কে মেরে/ছে?

“আমার জিজু!

“তোমার দি’র লা/শ প্রথম কে দেখেছিল!

“আমি!

“কেন গিয়েছিলে সেখানে?

“দি কল করেছিল আমায়, আমি রিসিভ করতে পারিনি

“আর চলে গেলে!

“অনেকবার কল করেছিলো!

“গিয়ে কি দেখলে?

মেহেরিন একবার ফাহানের দিকে তাকাল। অতঃপর চোখ সরিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,

“দি’র মৃত/দেহ ফ্যানের সাথে ঝুলছিল আর..

“আর!

“অর্ণব নিচে হামাগুড়ি খাচ্ছিল!

“কাঁদছিল না?

মেহেরিন একবার চুপ করল। অতঃপর বলে উঠে,
“না!

ফাহান খালি চায়ের কাপ টা টেবিলে রাখল। হেসে বলল,
“তোমার বাবা মারা গেল কিভাবে?

“হার্ট অ্যাটাক!

“তখন তুমি কোথায় ছিলে?

“অফিসে!

“আর অর্ণব!

“বাপির ঘরে ঘুমাচ্ছিল।

“সে দেখে নি!

“দেখেছে, বাপি হার্টের ব্যাথায় পড়ে যেতেই অর্ণবের ঘুম ভেঙ্গে যায়। সে মিস মারিয়া কে ডেকে এনে দেখায়। মিস মারিয়া কল করে আমাকে জানায়। হসপিটালে আসার পর জানতে পারি বাপি মারা গেছে।

ফাহানের কপালে ভাঁজ পড়লো। সব কথাই স্বাভাবিক ভাবে বলছে সে। ফাহান বলে উঠে,
“হামম! তুমি এখন যেতে পারো। আমি একটু পরেই চলে যাবো আমার হোটেলে।

“আপনি চাইলে এখানে থাকতে পারেন। সমস্যা নেই!

“যখন দরকার পড়বে, তখন থাকবো।

মেহেরিন কিছু না বলে উঠে যায়। অতঃপর দরজার কাছে এসে ফাহানের দিকে তাকিয়ে বলে,

“ডঃ ফাহান! আমি পাগল নই আর না অস্বাভাবিক। তবুও কিছু লোক বলবে আমার মানসিক সমস্যা আছে।‌রাতের পর রাত জাগা কি মানসিক সমস্যা!

ফাহান হেসে বলল,
“মোটেও না।

মেহেরিন কিছু না বলে চলে গেল। ফাহান খালি চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বলল,
“তুমি অস্বাভাবিক নয়, তুমি আলাদা। তোমার কিছু একটা দরকার। যতটা স্বাভাবিক তুমি আমাকে দেখাতে চাইছো তুমি মোটেও এতো স্বাভাবিক না মেহেরিন!

অর্ণবের সাথে দেখা করার পর মেহেরিন চলে যায়। মেহেরিন চলে যাবার কিছুক্ষণ পরেই ফাহান বের হয় লাকেজ নিয়ে। নিচে নামতেই অর্ণব কে চোখে পড়ে তার। অর্ণব তাকে দেখেই দূরে সরে যায়। ফাহান তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করাতেই অর্ণব দৌড়ে এসে মিস মারিয়া’র পিছনে লুকায়। প্রথম দেখাতেই কেন জানি অর্ণব কে পছন্দ হয় না তার। কোথায় যেন অর্ণব কে নিয়ে মনে সংশয় লেগে যায় তার।

ফাহান এসে গাড়ি বের করে। গাড়ি ভেতর বসে গাড়ি স্টার্ট দেয় সে। গাড়ি চালাতে চালাতে ভাবে অর্ণবের কথা। মেহেরিন’র প্রিয় মানুষ টা যেখানেই মা/রা যায় সেখানেই এই ছেলের উপস্থিত। কোন কারণ কি জুড়ে আছে। তবে ছেলেটার উপস্থিত তার ভালো লাগলো না। কেন লাগলো না তার জানা নেই।

( দেরি হবার জন্য দুঃখিত! গল্পের মোড় ঘুরছে। অতীতের পর্ব এখনো শেষ করতে পারিনি, মনে হচ্ছে আরো দুই পর্ব অবদি যাবে। সবার কাছে গঠনমূলক কমেন্ট আশা করছি। ধন্যবাদ সবাইকে! ]

#চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here