অনুভূতিতে তুমি 💖পর্ব-৩৩

0
2891

#অনুভূতিতে_তুমি 💖
#মিমি_মুসকান ( লেখনিতে)
#পর্ব_৩৩

খাবার টেবিলে বসে অর্ণব একবার নির্ঝর কে দেখেছ আরেকবার মেহেরিন কে। একজনের ঘাড়ে ব্যান্ডেজ আরেকজনের হাতে। সে কিছুই বুঝতে পারছে না। মেহেরিন খাবার সবে মুখে দিয়েছে। অর্ণব বলে উঠল,
“মাম্মি!

আরেকবার নির্ঝরের দিকে তাকিয়ে বলল,
“ড্যাডি!

দু’জনেই অর্ণবের দিকে লক্ষ্য করল। নির্ঝরের হাতের ইশারায় দুজনকে দেখাল। মেহেরিন হেসে বলল,

“কিছু হয় নি অর্ণ সোনা, মাম্মি শুধু একটু ব্যাথা পেয়েছে?

ভ্রু কুঁচকে তাকাল নির্ঝরের দিকে। নির্ঝর হেসে বলল,
“ড্যাডিও ব্যাথা পেয়েছে!

অর্ণব দুই হাত বাহুতে গুঁজে নিল। তাদের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। মেহেরিন আর নির্ঝর বুঝে গেল অর্ণব তাদের কথা বিশ্বাস করছে না। দু’জনেই হাসল। মেহেরিন হেসে বলল,

“তোমার কি মনে হয় আমরা মারামারি করেছি!

অর্ণব মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলল। নির্ঝর বিষম খেলো। জুসের গ্লাস হাতে নিয়ে মিনমিনিয়ে বলল,

“ঠিক ধরেছে আমার ছেলে!

মেহেরিন ভ্রু কুঁচকে নির্ঝরের দিকে তাকাল। দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠল,
“আপনার মনে হয় না এই জন্য আপনি দায়ী!

নির্ঝর মুখ ভেংচি কেটে খাওয়ায় মনোযোগ দিলো। মেহেরিন উঠে অর্ণবের কাছে এলো। তার মাথায় হাত রেখে বলল,

“তোমার মনে হয় মাম্মি ড্যাডি ঝগড়া করেছে, তুমি দেখছ কখনো ঝগড়া করতে!

অর্ণব নির্ঝরের দিকে তাকাল। নির্ঝর মাথা ঘুরিয়ে না না করল। অর্ণবও মাথা নাড়িয়ে না না করল। মেহেরিন হেসে হাত বুলিয়ে বলল,

“তাহলে, এটা শুধু একটা এক্সিডেন্ট বুঝলে!

অর্ণব নির্ঝরের দিকে ফিরল। নির্ঝর হেসে মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলল। অর্ণবও মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলল। মেহেরিন ভ্রু কুঁচকে বলল,

“তুমি ড্যাডির নকল কেন করছো? আমার কথা বিশ্বাস করো না।

অর্ণব এবারও মাথা ঘুরিয়ে নির্ঝরের দিকে ফিরতে নিল। তার আগেই মেহেরিন অর্ণবের গাল দুটো ধরে নিজের দিকে ফিরল। বলে উঠল,

“এখানেই বলো, ওখানে তাকাবে না। মাম্মি কে বিশ্বাস করো না তুমি!

অর্ণব চোখের পাতা ফেলে তাকিয়ে রইল। মেহেরিন কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল। অর্ণব টু শব্দ করল না। নির্ঝর ফিক করে হেসে দিল। তার হাসির আওয়াজে অর্ণবও হেসে উঠল। মেহেরিন রেগে দাঁড়িয়ে বলল,

“গাড়ির কাছে ওয়েট করছি চলে আসো!

হন হন করে বেরিয়ে গেল সে। নির্ঝর আর অর্ণব দুজনে দুজনের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। হুট করেই ফিক করে হেসে দিলো দুজন!

অর্ণবের হাত ধরে বাইরে এলো নির্ঝর। মেহেরিন গাড়ির ড্রাইভিং সিটে। জন গাড়ির পাশে দাঁড়ানো। নির্ঝর জিজ্ঞাস করল,

“তুমি এখানে?

“ম্যাম আজ গাড়ি ড্রাইভ করবে।

নির্ঝর ঢোক গিলল। মেহেরিন’র দিকে তাকাল। রেগে গাড়ির হ্যান্ডেল ধরে আছে সে। মেহেরিন বলে উঠল,

“গাড়িতে উঠুন!

নির্ঝর পা পিছিয়ে বলল,
“না!

“কেন?

“রেগে গাড়ি ড্রাইভ করা ঠিক না, মরার শখ নেই আমার। নিজের ছেলের বিয়ে খাওয়া এখনো বাকি!

মেহেরিন ভ্রু কুঁচকালো। অর্ণবের দিকে তাকাল। সেও পিছিয়ে গিয়ে নির্ঝরের হাত ধরে মাথা নাড়িয়ে না না বলল। মেহেরিন হতাশ গাড়ির হ্যান্ডেলে মাথা রাখল!

—-

ল্যাপটবে কাজ করছে মেহেরিন, মাঝে মাঝেই উঁকি দিচ্ছে সামনের চেয়ারে। অর্ণব বসা আছে তার সামনে। নির্ঝর তার নিজ কেবিনে। তবুও অর্ণব এখানে কেন? কথাটা ভাবাচ্ছে মেহেরিন কে। অর্ণব এখন প্রায় বেশি সময় নির্ঝরের সাথেই থাকে। তার সাথে বেশ ভালো ভাবে মিশে যাচ্ছে। কিন্তু সমস্যা একটাতে আর তা হলো অর্ণবও নির্ঝরের মতো ব্যবহার করছে। এই না নির্ঝরের মতোই হয়ে যায় এই চিন্তা ভর করছে তার মাথায়। মেহেরিন ল্যাপটব বন্ধ করে অর্ণবের দিকে ফিরল। অর্ণবের মুখ মলিন। শীতল চোখে তাকিয়ে আছে মেহেরিন’র দিকে। মেহেরিন এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো জিজ্ঞেস করল,

“কিছু বলবে?

আগের বারের মতোই মাথা নেড়ে না বলল অর্ণব। তাকে কাছে ডাকল, এক হাত দিয়ে তার হাত দুটো ধরল। পরনে লাল রঙের একটা শার্ট আর কালো রঙের প্যান্ট। ফর্সা গায়ের রঙে এসব বেশ মানিয়েছে তাকে। ইশ! মেহেরিন’র ছেলেটা বেশ সুদর্শন হবে বড় হয়ে। একথা ভাবতেই মুখ টিপে হাসল মেহেরিন। অর্ণব বুঝতে না পেরে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে রইল। মেহেরিন অর্ণবের চুলে হাত দিল। চুল গুলো বেশ হয়ে গেছে। কেটে ছোট করা দরকার। চুল গুলো ঠিক করতে করতে বলল,

“ড্যাডি পাঠিয়েছে এখানে!

অর্ণব কিছু বলল না। চুপ করে ঢোক গিলল। মেহেরিন বলে উঠল,

“বাইরে যাবে তোমরা!

অর্ণব ধীরে ধীরে মাথা নাড়ল। মেহেরিন ভ্রু কুঁচকে বলল,
“কোথায় যাবে আর কেন যাবে!

অর্ণব তার ফোন হাতে নিতে চাইল। মেহেরিন তার হাত খপ করে ধরল। বলে উঠল,

“যদি মুখে বলতে পারো তাহলে যেতে দিবো।

অর্ণব মুখের ভঙ্গি করে তাকিয়ে রইল। মেহেরিন হেসে তার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
“বলতে যখন পারবে না তখন যাওয়া লাগবে না!

বলেই চেয়ারে সোজা হয়ে বসল। হঠাৎ করেই অর্ণবের দু শব্দ তার কানে এলো!

“ফরহাদের কাছে যাবো!

মেহেরিনের কপালে ভাজ পড়ল। সে অর্ণবের কাছে ফিরল। বলে উঠল,

“কথাটা তুমি বললে!

অর্ণব মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলল। মেহেরিন বলে উঠল,
“আরেকবার বল!

অর্ণব মুখ খুলল। মেহেরিন প্রত্যাশিত চোখে তাকিয়ে আছে সেখানে। অর্ণব ধীরে ধীরে বলল,
“ফরহাদের কাছে যাবো!

মেহেরিন মুচকি হাসল। মাথার চুলগুলো এলোমেলো করে চুমু খেল ললাটে। বলে উঠল,

“ফরহাদ আংকেল হবে। তিনি তোমার বড় বুঝলে!

অর্ণব মাথা নাড়ল। মেহেরিন বলে উঠল,
“সন্ধ্যার আগে চলে আসবো ঠিক আছে। ড্যাডি থাকতে চাইলে থাকবে না, বুঝতে পেরেছ!

অর্ণব ফিক করে হেসে দিল। মেহেরিন’র গালে চুমু খেয়ে বলল,
“ঠিক আছে মাম্মি!

বলেই এক দৌড়ে বের হয়ে গেল। নিরবের আগমন ঘটল তখন। অর্ণব কে দৌড়ে বের হয়ে যেতে দেখে বলে উঠল,

“বেশ খুশি বলে মনে হচ্ছে!

“বাইরে ঘুরতে যাবে খুশি হবে না।

“নির্ঝরের সাথে..

“আর নইলে কে আছে?

নিরব দম ফেলে মাথা নাড়ল!

—–
মিনি কফি হাতে নিয়ে বেঞ্চে বসল নির্ঝর। তার পাশে বসা ফরহাদ। দূরে ঈশান আর আরিফ বল খেলছে অর্ণবের সাথে। অর্ণবও খেলছে বেশ। ফরহাদ হাত গুটিয়ে বলে উঠে,

“তাহলে স্বীকার করছিস তুই মেহেরিন’র প্রেমে পড়ে গেছিস!

“মেহুর প্রেমে না বুঝলি একটা ডাইনির প্রেমে পড়েছি ডাইনি!

“ডাইনি কেন বলছিস!

নির্ঝর নিজের ঘাড়ের দিকে একবার তাকিয়ে ফরহাদের দিকে তাকাল। ফরহাদ একটু এগিয়ে এসে ঘাড়ে ব্যান্ডেজ দেখে হেসে ফেলল। বলে উঠল,

“এক দিনে এতো দূরে চলে যেতে নিলে উষ্ঠা খেয়ে পড়তেই হবে।

নির্ঝর ভ্রু কুচকালো! কফিতে চুমুক দিল। ফরহাদ হেসে বলে উঠল,
“ফাহানের কথা জানিস এটা বলেছিস মেহেরিন কে।

“না!

“যাক জীবনে একটা ভালো কাজ করেছিস!

বলেই নির্ঝরের হাতের কফি নিজে নিয়ে চুমুক দিল।‌ নির্ঝর রেগে বলে উঠে,
“আরে এটা আমার তো!

“তো নিয়ে আয় আরেকটা!

“ধ্যাত!

ফরহাদ হেসে উঠলো। নির্ঝর বলে উঠে,
“তুই এটা কেন বলছিস ঠিক কাজ করেছি আমি!

ফরহাদ দ্বিতীয় বারের মতো চুমুক দিয়ে বলল,
“কারণ, মেহেরিন খুব সেনসীটিভ পারসন। তুই যদি এখন ওর অতীত জানিস বলে দিস আর তারপর বলিস ওকে ভালো বাসিস তাহলেই কাজ হয়েছে। ও ভাববে তুই ওর প্রতি দয়া করছিস। সিমপ্যাথি দেখাচ্ছিস!

নির্ঝর ভ্রু কুঁচকে তাকাল। মাথা নেড়ে বলল,
“এভাবে তো কখনো ভেবে দেখে নি। আচ্ছা তুই এতো কিছু কিভাবে জানলি!

“গাধা! মেহেরিন’র ক্যারেক্টার’ই এমন। অর্ণবের জন্য তোকে বিয়ে করেছে কিন্তু ভেবে দেখেছিস কিভাবে জোর করে। নিজের কোম্পানির শেয়ার দিয়ে তারপর বিয়ে দিয়েছে। কেন পারতো না তোকে এসে অর্ণবের কথা বলে অনুরোধ করতে করেছে!

“যেই না এটিটিউড!

“তাহলে.. ভেবে দেখ যেই মেয়ে কারো দয়া নিতে চায় না তুই জেচে তাকে দয়া করলে সে মেনে নিবে!

নির্ঝর গালে হাত রেখে অর্ণবের দিকে তাকাল। ভলিবল খেলছে তারা। গম্ভীর স্বরে বলে উঠল,
“কি করতে বলছিস!

ফরহাদ হেসে বলল,
“যা তুই সবসময় করিস!

ফরহাদের কথায় হেসে দিল নির্ঝর। বল এসে পড়ল তার পায়ের কাছে। আরিফ হাত নেড়ে বল চাইছে। নির্ঝর বল হাতে নিয়ে ফরহাদের দিকে তাকিয়ে বলল,
“তাহলে খেলা শুরু হোক!

ফরহাদ উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
“আজ আমি জিতবো!

নির্ঝর হেসে দৌড়ে মাঠের কাছে গেল। ফরহাদ কফি মগ টা বেঞ্চেতে রেখে দৌড় দিল মাঠের কাছে!

—-

রান্না ঘরে খাবার তৈরি করছে মেহেরিন। হঠাৎ সেখানে উপস্থিত হলো নির্ঝর। ফ্রিজের কাছে এসে পানি বের করল ফ্রিজ থেকে। অতঃপর হাঁটতে হাঁটতে এসে দাঁড়াল মেহেরিন’র কাছে। মেহেরিন সবজি কাটছে। নির্ঝর দাঁড়িয়ে দেখতে লাগল মেহেরিন কে। মেহেরিন একবার নির্ঝরের দিকে ফিরে আবারো কাটায় মনোযোগ দিল। বলে উঠল,

“কিছু বলবেন!

“হাম না কিছু না!

মেহেরিন কিছু না বলে আবারো কাজ শুরু করল। হুট করেই নির্ঝর পিছন থেকে এলো। মেহেরিন অবাক হলো। কি চলতে ঘটেছে বোঝার চেষ্টা করল। নির্ঝর মিটিমিটি হেসে মেহেরিন’র হাতের উপর হাত রাখল। মেহেরিন ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল,

“আমি কি জিজ্ঞেস করতে পারি আপনি কি করছেন নির্ঝর?

“আমি তোমার হেল্প করছি!

“হেল্প!

“হ্যাঁ, নিজের বউয়ের এতো টুকু হেল্প তো আমিই করতেই পারি তাই না!

মেহেরিন কঠিন কিছু বলার জন্য প্রস্তুত নিল ঠিক তখন’ই অর্ণব হাজির হলো এখানে। মেহেরিন অর্ণবের দিকে ফিরল। নির্ঝর হেসে বলল,
“ড্যাডি সাহায্য করছে তোমার মাম্মি কে!

মেহেরিন কিছু না বলতে পেরে হেসে দিল। দাঁতে দাঁত চেপে তাকাল নির্ঝরের দিকে। নির্ঝর তার কানের কাছে বলল,

“তুমি এখন চাইলেও কিছু বলতে পারবে না।

“পরে এর শোধ আমি তুলব।

“আহ! আমিও এটার অপেক্ষায় থাকবো!

দুজন তাকিয়ে রইল দুজনের দিকে। মেহেরিন রেগে দাঁতে দাঁত চেপে আর নির্ঝর হেসে। দু’জনের সেই মুহূর্তে ক্যামারা বন্দি করল অর্ণব। ফোনের মাঝে তুলে রাখল সেই ছবি। মেহেরিন তার দিকে ফিরতেই দাঁত বের করে হেসে দৌড়ে চলে গেল। ব্যাপারটা মেহেরিন বুঝল না।

তবে অর্ণব যেতেই কনুই দ্বারা ঘুসি মারল নির্ঝরের পেটে। নির্ঝর পেটে হাত দিয়ে সরে গেল। মেহেরিন তার দিকে ফিরে বলল,

“হেল্প করতে এসেছেন না একটু তো ব্যাথা লাগবেই!

নির্ঝর ভ্রু কুচকালো। মেহেরিন হেঁসে বলল,
“নিন কাটুন এসব, ততোক্ষণে আমি রান্না বসাই। হেল্প করতে এসেছেন না!

মেহেরিন হেসে চুলোয় কড়াই বসাল। নির্ঝর ঘাড় একবার একপাশ আরেকবার ওপাশে ঘুরাল। ছুরিটা হাতে নিল। সবজি কিভাবে কাটতে হয় এটা তার ধারণার বাইরে। তবুও চেষ্টা করল। ধপাস করে ছুরিটা সবজিতে বসাইতেই তা উড়ে এসে পড়ল মেহেরিন’র গায়ে। মেহেরিন রেগে তার দিকে তাকাল। নির্ঝর দাঁত বের হেসে বলল,

“সরি মেহু!

খাবার খেতে বসে অর্ণব সবজির দিকে তাকিয়ে রইল। চামচ দিয়ে নেড়ে সবজি দেখছে সে। নির্ঝর নিজেও অবাক হয়ে দেখছে। মেহেরিন হেসে গ্লাসে পানি ঢালতে ঢালতে বলল,

“খেয়ে নাও অর্ণব সোনা, সবজি তোমার ড্যাডি কেটেছে।

অর্ণব নির্ঝরের দিকে তাকাল। নির্ঝর হেসে বলল,
“সরি অর্ণব!

অর্ণব মাথা নেড়ে কপালে হাত দিল! মেহেরিন ফিক করে হেসে দিল!

মেহেরিন ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে এসে দেখে দুজনে বিছানায় গড়াগড়ি করে করে। অর্ণব কুটকুটিয়ে হাসছে। নির্ঝর তাকে সমানে শুরশুরি দিয়ে যাচ্ছে। মেহেরিন এসে দাড়াতেই নির্ঝর থেমে গেল। অর্ণব হাসতে হাসতে এবার উঠে বসল। মেহেরিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াতে লাগল।‌ নির্ঝর মেহেরিন’র দিকে তাকিয়ে রইল। আয়নায় নির্ঝর কে দেখতে পেয়ে মেহেরিন ভ্রু কুঁচকালো। নির্ঝর উঠে একটা চোখ টিপ দিল তাকে। মেহেরিন থতবত খেয়ে গেল। নির্ঝর মুচকি হাসল। অর্ণব উঠে নির্ঝরের দু গালে হাত রেখে নিজের দিকে ফিরিয়ে দু চোখ একসাথে টিপ দিয়ে বলল,

“ড্যাডি!
নির্ঝর অবাক হয়ে হেসে দিল। অর্ণব আবারো দু চোখ একসাথে টিপ। নির্ঝর হেসে তাকে ধরে নিজের সামনে বসিয়ে বলল,
“এভাবে না অর্ণব সোনা, এভাবে!

বলেই অর্ণবকে চোখ টিপ দিল। অর্ণব দাঁত বের করে হেসে দিয়ে করার চেষ্টা করল। কিন্তু হলো না। সে আবারো চেষ্টা করল তবুও হলো না। অতঃপর এক হাত দিয়ে চোখ বন্ধ অন্য হাত খোলা রাখল। নির্ঝর ওর মাথায় হাত বুলিয়ে হাসতে লাগলো।

“আমার অর্ণব সোনা যখন বড় হয়ে যাবে তখন ঠিক পেরে যাবে।

মেহেরিন দুজন বাপ ছেলের কাহিনী দেখেও না দেখার ভান করল। অতঃপর আয়নার সামনে থেকে সরে যেতেই নির্ঝর অর্ণব কে শিখিয়ে দিল।‌ অর্ণব জোরে ডেকে উঠল,

“মাম্মি!

মেহেরিন তার দিকে ফিরল। অর্ণব দু চোখ একসাথে টিপ দিল। মেহেরিন ভ্রু কুঁচকালো। অর্ণব আবারো দু চোখ একসাথে টিপ দিল। মেহেরিন হেসে উঠলো। সে অর্ণবের দিকে তাকিয়ে এক চোখ টিপ দিল। অর্ণব চোখ বড় বড় করে ফেলল। নির্ঝর বুকে হাত রেখে বলল,

“হায়!

মেহেরিন’র কপালে ভাঁজ পড়ল। নির্ঝরের দেখাদেখি অর্ণবও বুকে হাত রেখে ধপাস করে নির্ঝরের কোলে পড়ে গেল। মেহেরিন হাসতে হাসতে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। নির্ঝর অর্ণবের গাল টেনে বলল,

“এটা তোমার মাম্মি অর্ণব, এতো সহজে পটবে না বুঝলে!

অর্ণব বুঝল আর না বুঝল তবুও মাথা নাড়ল!

#চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here