অনুভূতিতে তুমি 💖পর্ব-৪৭

0
3268

#অনুভূতিতে_তুমি 💖
#মিমি_মুসকান ( লেখনিতে)
#পর্ব_৪৭ ( #বোনাস_পার্ট )

“আমার সাথে এমন ভাবে কথা বলার মানে কি? এতোটা অবহেলা আমাকে, কেন? কিভাবে কথা বললো আমার সাথে এই মেয়ে। ভাবতেই অবাক হচ্ছে ওকে বিয়ে করতে আমি রাজি হলাম কিভাবে? পাগল হয়েছিলাম নাকি। না আর ভাবতে চাই না আমি। হাতে গোনা আর মাত্র ৯ দিন। অতঃপর চলে যাবো এই বাড়ি ছেড়ে। তখন শান্তি পাবো আমি! আর দেখে নেবো এই মেয়ে কে!

রেগে ঘরে ঢুকল নির্ঝর। বিছানার কাছে চোখ যেতেই তার চক্ষু চড়কগাছ। ভুল দেখছে না তো। এই মেয়ে কি করছে এখানে। দাঁতে দাঁত চেপে তাকিয়ে রইল বিছানার দিকে। রেগে বিছানার কাছে যেতেই থেমে গেল নির্ঝর। গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে মেহেরিন। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন সে। অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ঘুমন্ত মুখটার দিকে। এর আগেও দেখেছে এই মুখ সে। কিন্তু কোথায় দেখেছে।

মেহেরিন কে দেখতে দেখতে বিভোর হয়ে গেল সে। হঠাৎ করেই মাথায় আসলো কি করছে এসব সে। উল্টো পায়ে হেঁটে যেতে নিয়েও আবারো পিছিয়ে এলো। গায়ে চাদর টেনে দিল। লক্ষ্য করল তার গলার কাছে দাগটা। মনে হচ্ছে কেউ যেন গলা টিপে মা*রার চেষ্টা করেছে সে। কিছু একটা হয়েছে তো ওর সাথে নাহলে এমন হাল কেন থাকবে! হলে হয়েছে তাতে আমার কি? জিজ্ঞেস তো করেছিলাম বলেছে কি! আমার কিসের চিন্তা ওর জন্য!

বিরক্ত চোখে তাকাল মুখের দিকে। আবারো হারিয়ে এই মুখের মাঝে। কতোটা মুগ্ধতা মিশে আছে এই ঘুমন্ত মুখের মাঝে বলে বোঝানো যাবে না। কতোটা পরিচিত লাগছে এখন এই মুখ। মনে হচ্ছে এর আগেও অনেকবার দেখেছে এই মুখটা। সত্যি কি তাই! হাত বাড়িয়ে ছোঁয়ার চেষ্টা করল সে। হুট করেই ফোনটা বেজে উঠলো।

এতোক্ষণ পর মনে পড়ল ফোনের কথা। ফোনটা মেহেরিন যেখানে রেখে গিয়েছিল সেখানেই আছে। এখন অবদি একবার ছুঁয়ে দেখে নি নির্ঝর। কিন্তু এই ভোর বেলা কে ফোন করেছে তাকে।

হাতে ফোনটা নিল নির্ঝর। ফোনের স্ক্রিনে নিরব নামটা ভেসে উঠলো। কিন্তু মনে করতে পারল না এমন নামের আদৌও কি কাউকে চিনে সে? ফোন হাতে সরে গেল। রিসিভ করে কানের কাছে দিতে ওপাশ থেকে কোন আওয়াজ এলো না। নির্ঝর নিজেই বলে উঠল,

“কে ?

“আমি!

গলার স্বর চিনতে কষ্ট হলেও মনে হচ্ছে মেহেরিন’র সাথে থাকা ছেলেটা। তবুও নির্ঝর জিজ্ঞেস করল, এই আমি টা কে?

“আমি নিরব!

“কোন নিরব!

ওপাশ থেকে হাসির আওয়াজ এলো। নিরব হাসছে। নির্ঝর ভ্রু কুঁচকে নিল। নিরব বলল, যাকে তুমি ভাবছো সেই আমি!

“আমাকে কেন কল করেছ?

“কথা ছিল তাই ‌

“তোমার সাথে আমার কি কথা?

“অনেক কথা তুমি তো আমার জীবনটাই নষ্ট করে দিলে। যদি জানতাম কখনো তুমি সবকিছু ভুলে যাবে তাহলে কখনোই মেহু কে তোমার কাছে ছেড়ে আসতাম না আমি। আচ্ছা যাক বাদ দাও এসব..

নির্ঝর হাত মুঠো করে নিল। কানে শুধু মেহু নামটাই বাজছে তার। কেন জানি নিরবের মুখ থেকে মেহু নামটা সহ্য হচ্ছে না তার! শব্দ করে শ্বাস ফেল বলল,”কি কারণে কল করেছ তাই বলো !

“মেহু অসুস্থ, ওর উপর হা”মলা হয়েছিল। খানিকটা আঘাত ও পেয়েছে। এখন তুমি তো ওর খেয়াল রাখবে না তাই বলছি কষ্ট টা অন্তত দিও না।

“যদি তোমার কাছে মনে হয় আমার কাছে থাকলে ও কষ্টে থাকবে তাহলে আমার কাছ থেকে ওকে নিয়ে যাচ্ছো না কেন?

“কারণ মেহু তোমায় ভালোবাসে! আর ভালোবাসার মানুষটির সব কিছুই সহ্য করা যায় শুধু তাকে হারিয়ে ফেলা ছাড়া!

চোয়াল শক্ত করল নির্ঝর। কিছু বলার প্রয়াস করার আগেই ওপাশের কল টা কেটে গেল। নির্ঝর বেশ বিরক্ত হলো। নিরব ফোনটা বিছানায় রেখে ধপাস করে বিছানায় শুয়ে পড়ল। বিছানার ঠিক সামনে মেহুর একটা হাসি মাখা ছবি তার সাথে। খুব বড় ফ্রেম বাঁধিয়ে ঘরে টানিয়ে রেখেছে সে। যেন ঘুম থেকে উঠে মেহুর এই হাসি মাখা ছবি টা দেখতে পারে সে। এখনো সেই ছবির দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে। উঠে আসল ছবির কাছে। ইচ্ছে করেই নির্ঝর কে জ্বালাচ্ছে সে। আর যাই হোক কেউই তার ভালোবাসার মানুষকে অন্যের সাথে সহ্য করতে পারে না। হয়তো কাটানো স্মৃতি ভুলে গেছে কিন্তু মন তো বদলায় নি। ভালোবাসা সেখানেই জমা আছে। এখন শুধু অপেক্ষার প্রহর। কখন আবারো সেই ভালোবাসা মেহেরিন’র জীবনে রঙিন প্রজাপতি’র মতো উড়ে আসে!

দীর্ঘশ্বাস ফেলে রাগ নিয়ন্ত্রণ করল। ফোনটা কে শক্ত করে ধরতেই আলো জ্বলে উঠলো। এতোক্ষনে খেয়াল করল ফোনের স্ক্রিনে মেহেরিন, তার আর অর্ণবের ছবি! ভ্রু কুঁচকে গেল তার। এসব ছেড়ে ফোনের কন্টাক্ট নম্বরে ঢুকেই দেখল সবার নাম্বার আছে তবু অনামিকার নাম্বার খুঁজে পেল না সে। নাম্বার টাও মুখস্থ নেই তার। হঠাৎ একটা নামের মাঝে চোখ আঁটকে গেল তার। নাম্বার টা মেহু নামে সেভ করা। এই প্রথম “মেহু” ডাকটা মুখ ফুটে নিল সে। অস্থির লাগল তার কাছে। কানের কাছে বার বার এই নামটাই বাজতে লাগল তার। মাথায় অদ্ভুত যন্ত্রণা শুরু হলো। খুব তীব্র ছিল তা। রেগে ফোনটাকেই ছুঁড়ে মারল সে। দেওয়ালে আঘাত লেগে ভেঙ্গে গেল ফোনটা। আর দেখা হলো না তার আর মেহেরিন’র স্মৃতি গুলো। দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসে পড়ল সে। কি করে মেনে নিবে এইসব। সবার কাছে মেহেরিন তার স্ত্রী! অথচ তার মনে মেহেরিন’র জন্য কোন ভালোবাসার অনুভূতি পাচ্ছে না। শুধু মনে হচ্ছে অনামিকেই ভালোবাসতো সে। ভালোবাসা ছাড়া কিভাবে একজন মানুষের সাথে থাকবে সে। আর তাছাড়া কিভাবে ভুলে যাবে ওই কন্ট্রাক’র কথা। যদি ভালোই বাসতো তাহলে এই কন্ট্রাক’র কি দরকার ছিল। না কিছু ঢুকছে না তার মাথায়। সবকিছু কেমন ঝট পাকিয়ে খিচুড়ি হয়ে যাচ্ছে। মাথায় হাত রেখে চুপচাপ বসে পড়ল সে। না কানে আর এখন এই আওয়াজ বাজছে না তার। নির্ঝর শান্ত হলো। হুট করেই নিজ মুখ থেকে বলে উঠলো, “মেহু”!

—-

চমকে উঠল মেহেরিন! আশপাশ তাকাল সে। না কেউ নেই। মাথায় হাত রাখল সে। মনে হলো নির্ঝর তাকে মেহু বলে ডেকেছে। স্বপ্ন ছিল না তো! হতে পারে। বিছানায় হাত শোয়া অবস্থায় ঘড়ির দিকে তাকাল সে। ১০ টা বাজে! মেহেরিন লাফিয়ে উঠল। খেয়াল করল পাশে অর্ণব নেই। বুঝতে পারে না, এই ছেলেটা কি করে এতো সকালে উঠে পড়ে!

বিছানা ছেড়ে উঠলো মেহেরিন। বোধ হলো এটা নির্ঝরের ঘর। তবে কি এই ঘরেই রাত কাটালো সে। চোখ কচলাতে কচলাতে বের হলো নিজের ঘরের উদ্দেশে। হঠাৎ চোখ পড়ল করিডোরে সার্ভেন্ট কিছু পরিষ্কার করছে। মেহেরিন লক্ষ্য করল এটা নির্ঝরের ফোন। তবে কি তার ফোন ভেঙে ফেলছে সে। এতোটা রাগ ছিল তার প্রতি!

ফ্রেস হয়ে নিচে এলো মেহেরিন। নির্ঝর সোফার এক কোনে বসে আছে। নতুন ফোন তার হাতে। তার ঠিক বিপরীতে অর্ণব বসা। হাতের ট্যাপে গেইম খেলছে সে। অনেকটা অবাক হলো মেহেরিন। কিন্তু অবাক হয়ে লাভ নেই। আগের নির্ঝর হলে এমনটা করতো না সে। অর্ণব কে কখনোই গেইম’র প্রতি আসক্তি হতে দিত না। সারাক্ষণ তাকে অন্য কিছুতে ব্যস্ত রাখতো। কিন্তু এখন.. এখন আর তার কিছু যায় আসে না। সত্যি’ই কি আসে না!

দীর্ঘশ্বাস ফেলে রান্না ঘরের দিকে রওনা দিল। মিস মারিয়া রান্না করছে। তার হাতে সাহায্য করল সে। এর মাঝেই হঠাৎ ফোন আসল তার। কথা বলতে বলতে বাইরে চলে গেল সে। নির্ঝর উঁকি মেরে দেখল মেহেরিন কে বাইরে যেতে। অর্ণবের দিকে ফিরে বলল, অনেক হয়েছে গেইম খেলা, এবার বন্ধ করো এসব!

নির্ঝরের এক কথায় ট্যাপ রেখে দিল সে। এসে দাঁড়াল তার সামনে। নির্ঝর ভ্রু কুঁচকে বলল, কি?

অর্ণব হাতের ইশারায় তার ফোন দেখাল। নির্ঝর ভ্রু কুঁচকে বলল , আমি বড় আর আমার কাজও আছে। তুমি যাও, পড়তে বসো !

অর্ণব মুখ মলিন করে ফেলল। ছবি আঁকতে বসল সে। নির্ঝর একবার উঁকি দিয়ে দেখল সে কি করে! পেছন থেকে মেহেরিন এসে সোজা রান্না ঘরেই ঢুকল। শুধু একবার সোফার দিকে তাকিয়ে দেখল অর্ণব বসে আছে। মেহেরিন বলে উঠল, অর্ণব অনেক হয়েছে গেইম খেলা। এবার বন্ধ করো এসব!

মেহেরিন’র আওয়াজ শুনে কপালে হাত দিল অর্ণব! অতঃপর সোফায় দাঁড়িয়ে ডাক দিল। “মাম্মি!

মেহেরিন ফিরল। নির্ঝর খাতা টা উঠিয়ে দেখাল। মেহেরিন মুচকি হেসে আবারো কাজে মনোযোগ দিল। অফিস থাকা সত্ত্বেও আজ অফিস গেলো না সে।

—-

বসার ঘরে এক কোনে বসে ল্যাপটপে অফিসের কাজ করছে মেহেরিন। চোখ বুলাল নির্ঝরের দিকে। এখন শুইয়ে শুইয়ে ফোন টিপছে সে। মেহেরিন হতাশ হয়ে আবারো কাজে মনোযোগ দিল। হঠাৎ একটা ফুটবল হাতে অর্ণব হাজির হলো নির্ঝরের সামনে। বলে উঠল, “ড্যাডি!
নির্ঝর ভ্রু কুঁচকালো। অর্ণব আবারো বলল, “ড্যাডি!

নির্ঝর বিরক্ত হয়ে বলল, “আমি এখন এসব খেলবো না অর্ণব!

বলেই পাশ ফিরে শুয়ে পড়ল। অর্ণবের ছোট মন কষ্ট পেল। মেহেরিন উঠে আসল অর্ণবের কাছে। তাকে হাত ধরে খানিকটা দূরে সরে এসে বলল, “অর্ণব সোনা, ড্যাডির শরীর এখন ভালো নেই। তাই ড্যাডি খেলতে চাইছে না। তুমি তো আমার লক্ষী ছেলে। ড্যাডি কে জ্বালাতন করো না।

অর্ণব মাথা নাড়ল। মেহেরিন তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল, মাম্মি অর্ণব কে আজ দুইটা আইসক্রিম দিবে ঠিক আছে!

অর্ণব হেসে মাথা নাড়ল। ল্যাপটপ নিয়ে চলে গেল নিজের ঘরে। অর্ণব ফিরে তাকাল নির্ঝরের দিকে। অতঃপর বাগানের কাছে চলে এলো। একা একা বল নিয়ে খেলতে লাগল সে।

পুরো বাগানের দিকে একবার তাকাল। মনে পড়ল আগে কতো মজা করেই না ড্যাডির সাথে খেলতো সে। ড্যাডি সবসময় আদর করতো তাকে কিন্তু এখন আর ড্যাডি তাকে আদর করে না। ভালোবাসে না। মনে দুঃখ পেলো সে। বল হাতে নিয়ে ছুড়ে মারল। আবার নিজেই তা উঠিয়ে এনে আবারো মারল। রাগ হচ্ছে খুব, তাই এমনটা বার বার করছে সে। দৌড়াতে দৌড়াতে একসময় এই ছোট দুই পা খানা ব্যাথা হয়ে যায় তার। হাঁপিয়ে যায় সে। দাঁড়িয়ে শ্বাস নিতে থাকে। হঠাৎ করে দেখে গড়িয়ে বল টা তার কাছে চলে এসে। অর্ণব বল হাতে সামনে তাকিয়ে দেখে নির্ঝর দাঁড়িয়ে আছে। মুখে তার স্নিগ্ধ হাসি। নির্ঝর কে দেখে খুশিতে লাফিয়ে উঠে নির্ঝর। ড্যাডি ড্যাডি করতে করতে ছুটে আসে নির্ঝরের কাছে। খুশিতে আত্মহারা সে। আজ প্রায় অনেকদিন পর ড্যাডির সাথে খেলতে পেরে বেশ খুশি সে!

বাগানে দৌড়াদৌড়ি’র আওয়াজ শুনে জানালার কাছে আসে মেহেরিন। নির্ঝর আর অর্ণব কে খেলতে দেখে মুচকি হাসে সে। নির্ঝর দিব্যি খেলে যাচ্ছে অর্ণবের সাথে। ছোট এই মনটা কে কষ্ট দিয়ে শান্তি পায় নি সে। তাই বাধ্য হয়েই খেলতে এসেছে। আর যাই হোক বাচ্চার প্রতি তার ক্ষোভ দেখাবে না সে!

দু’জনে খেলে হয়রান হয়ে ঘরে আসে। সোফায় বসতেই সামনে আইসক্রিম দেখে হামলে পড়ে অর্ণব। নির্ঝর তৎক্ষণাৎ তার হাত থেকে কেড়ে নেয় তা। বলে উঠে, “বাইরে থেকে খেলে এসেছ, আগে হাত মুখ ধুয়ে আসো‌ তারপর খাবে যাও!

অর্ণব মুখ ভেংচি কাটে। মাথা নিচু হেঁটে চলে যায় সে। নির্ঝর হাতে থাকা আইসক্রিম বাটির দিকে তাকায়। এক চামচ মুখে দিয়ে সামনে তাকাতেই বিষম খায় সে। অর্ণব আড়াল হয়ে উঁকি দিয়ে তাকেই দেখছে। অর্ণব নাক ফুলিয়ে সামনে এসে দাঁড়ায়। চেঁচিয়ে বলে উঠে, “ড্যাডি!

নির্ঝর উঠে বলে, যাচ্ছি‌ যাচ্ছি!

অর্ণব দুই হাত বাহুতে গুঁজে পিছু পিছু যায় অর্ণবের। দূর থেকে সবটা দেখে মেহেরিন। মৃদু হাসে সে। আর যাই হোক বাপ ছেলের সম্পর্ক এতো সহজে হার মানবে না!

রাতে হুট করেই নির্ঝর খাবার টেবিল ছেড়ে উঠে পড়ে। খাবারের প্লেট হাতে নিয়ে চলে আসে সোফায়। টিভি অন করে খেতে শুরু করে সে। তার দেখাদেখি অর্ণবও হাজির। মেহেরিন ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে দেখতে থাকে সবকিছু। কিছু না বলে নিজের খাবার খাওয়াতে মনোযোগ দেয় সে।

নির্ঝর রিমুট হাতে টিভির চ্যানেল চেঞ্জ করতে করতে হঠাৎ এক চ্যানেলে আটকে যায় সে। মেহুর ছবি ছিল তাতে। ভ্রু কুঁচকে যায় তার। ব্রেকিং নিউজ হচ্ছে, মেহেরিন বর্ষা খান কে সম্পত্তি’র লোভে খু*ন করার চেষ্টা করে তার দুলাভাই বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রাফি মল্লিক। তদন্তে জানা যায় মেহেরিন বর্ষা খান’র বড় বোন নিরু খানকে হ*ত্যা আর বাবা শুভ্র খানের মৃত্যু’র পিছনে তার’ই হাত আছে। গতকাল রাতে এসব স্বীকার করে সে। তাকে আর তার দ্বিতীয় স্ত্রী রিতা মল্লিক কে গ্রেফতার করে পুলিশ। একসময় ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে পুলিশের এক কর্মকর্তা থেকে পিস্তল ছিনিয়ে সবার সামনে মেহেরিন কে হ*ত্যার চেষ্টা করলে তার দ্বিতীয় স্ত্রী তার দিকে গুলি তাক করে। ঘটনাস্থলে মারা যায় রাফি মল্লিক! রিতা মল্লিকের স্বীকারোক্তি তে জানা যায়, নিরু খান আর শুভ্র খানের মৃত্যু*র ব্যাপারে কিছুই জানতো না সে। এসব জানার পর রাফি মল্লিক’র প্রতি ঘৃণা জন্মে তার। অতঃপর মেহেরিন বর্ষা খান কে হ*ত্যা করে আরেক খু*নের অপরাধের হাত থেকে বাঁচাতে’ই গুলি করে তাকে। কিন্তু গুলি চালানো সম্পর্কে কোন জ্ঞান না থাকায় দুর্ঘটনা ঘটে যায়। ফলে রাফি মল্লিক মারা যায়!

নির্ঝর হতবাক হয়ে সবটা শুনে। এখন তার কাছে সবটা পরিষ্কার! গতরাতে হামলা তাহলে রাফি মল্লিক’ই করেছিল।‌ ওর একটা বড় বোন ও আছে। সবটা আবারো গুলিয়ে ফেলছে সে।

মেহেরিন খাবার বন্ধ করে সবটা শুনে। সবকিছু সত্য হলেও রিতা’র ঘটনা পুরোটাই সাজানো। মেহেরিন নিজেই এমনটা সাজানোর কথা বলেছে যাতে রিতা ছাড়া পায়। রিতার কাছে ঋণী সে, কারণ সে তাকে বাঁচিয়েছে।‌অর্ণব খাবার ছেড়ে উঠে টিভির কাছে আসে।

“মাম্মি!

বলে ডেকে টিভির দিকে ইশারা করে। মেহেরিন উঠে এসে বন্ধ করে দেয় টিভি! নির্ঝর অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে তার দিকে!

#চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here