#অনুভূতি
#Roja_islam
#last part
এতোক্ষনে সবাই কিছু পরার আওয়াজ পেয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখে বেলা পরে আছে। তাদেখে সবার চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।
হঠাৎ সবাই এক সাথে হো হো করে হেঁসে দিলো বেলা’র অবস্থা দেখে।
.
.
বেলা’র জ্ঞেন আসতেই দু’হাতে মাথা চেপে ধরে উঠে বসলো।
– উফফফ,এমন কেনো লাগছে কেমন জানি ব্যথা ব্যথা করছে হাল্কা।
.
হঠাৎ বেলা’র সব কিছু মনে পরে গেলো নিচে কি কি দেখছে বেলা। সাথে সাথে চোখে বৃষ্টি নেমে এলো। বেলার চোখ দিয়ে বৃষ্টি’র মতো পানি পরতে লাগলো। বেলা’র মাথা ব্যথাও গায়াব হয়ে গেলো এখন বেলা’র মনে’র ব্যথা টাই বেশী মনে হচ্ছে।
.
বেলা কাঁদছে এমন সময় রাহি এলো রুমে। রাহি’কে দেখে বেলা দৌড়ে গিয়ে রাহি’র হাত দুটি ধরে বলে।
– রা…..হি । –ভাঙা গলায়।
– জ্বী ভাবী বলো। কিছু বলবে??
– ইয়ে মা…….নে বর্ণ কি স…..ত্যি অ…..না কে বি…বিয়ে ক……রে ফেলেছে। — কান্না করতে করতে।
-উফফ কি একটা অবস্থা আমার ভাবী টার কেঁদে কেঁদে ইশশ মন চাইছে না কষ্ট দিতে কিন্তু আমার কিউট ভাবী আমাদের কম জ্বালাতন করে’নি তাই এতোটুকু শাস্তি’তো পাওনাই কিউট ভাবী এডভান্স সরি। — মনে মনে।
.
রাহি’কে চুপ থাকতে দেখে। বেলা’র টেনশন তো যেমন আরো বারছে। বেলা রাহি’কে আবার জিজ্ঞেস করে।
– কি হলো রাহি বলছো না কেনো?
– হ্যা ভাবী বিয়ে হয়ে গেছে!
.
এই কথা শুনে বেলা আর দারায় না রুমে দৌড়ে নিচে যায়। গিয়ে দেখে বর্ণ বেলা’র বাবা’র সাথেই কথা বলছে। দৌড়ে ওখানে গিয়েই সবার সামনে বর্ণ ওর কলার চেপে ধরে বসা থেকে দাঁড়করায়।
– এই হনুমান লুচু। লেজ টাকা ইদুঁর তোর সাহস কি করে হলো অন্য কাউকে বিয়ে করার।বল বল বলছি? — চেঁচিয়ে বলছে বেলা কথা গুলো।
.
বর্ণ বেলা’র কথা শুনে রাহি’র দিকে তাকায় আর দেখে রাহি মুখ টিপে হাসছে। সবাই ও বুঝতে পারে রাহি মিথ্যা কথা বলেছে তাই বেলা এরকম করছে তাই কেউই অবাক হয় বা বেলা’র কথা শুনে।সবাই ইনজয় করছে ব্যাপার টা।
.
– চুপ করে আছিস কেনো বল। — রেগে।
.
এবার বর্ণ বলে।
– ওমা তুমি না আমার কাছে ডিভোর্স চাও তুমি না নিয়ান কে ভালোবাসো??
তাই আমি বিয়ে করে ফেলেছি তাতে তোমার কি তুমি কাঁদছ কেনো???
– হনুমান বেশ করেছি ডিভোর্স চাইছি। কিন্তু তুই ডিভোর্স এর পর ও বিয়ে করতে পারবি না। — চেঁচিয়ে।
– মানে কি আমি কি সাড়া জীবন বউ ছাড়া থাকবো নাকি তোমার জন্য। আর শোনো অনা রাগ করবে তুমি এভাবে আমার সাথে কথা বলো না। অনা কই তুমি।
– এই তো বেবি আমি এখানে। – আদুরে স্বরে বলে অনা।
.
বর্ণ ও অনা’র কাছে যাওয়া ধরলে। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা বেলা। বর্ণ কে যেতে না দিয়ে দুহাঁতে ঝাপটে ধরে জড়িয়ে নেয় বর্ণ কে।বেলা সবার সামনেই বলে।
.
– ভালোবাসি তো আমি বর্ণ খুপ খুব ভালোবাসি আপনাকে। আমার অনুভূতি গুলা যে আপনাকে ঘিরে মনে’র মধ্যেও যে আপনারই বিচরণ। প্লিজ আমাকে ছেড়ে যাবেন না ঐইটের অনা কনার কাছে।
.
বর্ণ ওর চোখে পানি এসে যায়। বেলা’র মুখে ভালোবাসি কথাটা শুনে। রাহি,অনা খুশি হয়ে হাতে তালি দেয়। বেলা’র বাবা আর বেলা’র শ্বশুর ও হো হো করে হেসে দেয়। বেলা’কে জব্দ করতে পেরে তারাও বেশ খুশি মেয়েটা যে বড্ড পাজি।
.
সবার হাসি আর হাত তালিতে বেলা বর্ণ কে ছেড়ে দাঁড়িয়ে বলতে থাকে।
– আমি কোনো নিয়ান’কে ভালোবাসি না। যেটা ছিলো সেটা আবেগ। আর আমি তোমার কাছে ডিভোর্স চাইছি বাবা আমায় জোড় করে বিয়ে দিছে তাই জিদ করে চাইছি আর কিছুই না। আর আমি কলেজ গিয়েছিলাম নিয়ান কে মারতে আবেগ ঢুকাইয়া কেনো ভাগছে তার জন্য। আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলছিলাম এক নিয়ান আর বাবার সাথে জিদ এর কারনে বুঝতে পারছিলাম। আর আমার ভুলে জন্য সরি……..
.
আর কিছু বলতে না দিয়ে বর্ণ বেলাকে জড়িয়ে ধরে। আর বলে।
– আমি সব জানি। বাবা সব বলেছে। আর….
– তাহলে বিয়ে করেছেন কেনো ?? — কেঁদে কেঁদে বলে বেলা।
– কে বলেছে বিয়ে করেছি। বিয়ে তো এখন করবো!
— হেসে হেসে।
– কিহহহ।
— অবাক হয়ে।
.
বেলা এবার রাগী ফেইস নিয়ে রাহি’র দিকে তাকায়। রাহি অন্য দিক ফিরে নখ কামড়াচ্ছে। বেলা আর রাহি কে দেখে বর্ণ আর অনা হেসে কুটিকুটি হচ্ছে। বেলা এতোক্ষনে সব বুঝতে পেরে ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে কেঁদে বলে।
– আমার মতন নিষ্পাপ একটা ফুলের মতো বাচ্চার সাথে তোমরা সবাই মিলে এরকম টা করতে পারলা???
এতো বড় প্লান???
.
বেলা’র কথা শুনে সবাই হাসতে হাসতে যেমন গড়াগড়ি খাচ্ছে অবস্থা। রাহি হাসতে হাসতে বলে।
– কেনো কিউট ভাবী আমার নিষ্পাপ ভাইটাকেও তো কম জ্বালাও নি তারি প্রতিশোধ নিলাম আর কি।
.
– হয়েছে সব এখন বিয়েটা সারতে হবে।
.
বেলা দেখলো ঐ সময়ের মহিলাটা। মহিলাটা বেলা’র কাছে এসে বললো।
– আমি বর্ণ এর ফুপ্পি। বর্ণ ওর মা নেই।তাই তুমি আমাকে মা বলেই ডাকবে ওকে?
– আচ্ছা।
— খুশি হয়ে।
– যাও এখন রাহি আর অনা তোমাকে রেডি করায় দিবে আর হ্যা। অনা আমার মেয়ে মানে তোমার আর একটা ননদ বুঝেছো! এখন যাও।
.
বেলা খুশি হলো অনা বর্ণ ওর বোন হয় তাই। কিন্তু বেলার খারাপ ও লাগলো বর্ণ ওর মা নেই শুনে। বেলা আগে জানতো না সেটা।
.
.
.
.
তারপর তাদের বিয়েটা আবারো হয়ে যায় পারিবারিক ভাবে।
সবাই অনেক খুশি।
বিয়ে শেষ হলে বেলা’র বাবা বর্ণ ওর হাত ধরে বলে।
– আমি কোনো সময় বেলা কে আদর, ভালোবাসা দিতে পারিনি। সব সময় শাসন টাই বেশি করেছি। আমি বেলা কে কত টা ভালোবাসি তা বুঝতে দেই নি মেয়েটা কে তাই সব সময় আমাকে ভয়ই পেয়েছে। মনে করেছে আমি ভালোবাসি না তাকে। কিন্তু বেলা জানে না আমার কলিজার টুকরা আমার বেলা আর আমি আজ তোমাকে তার সব দায়িত্ব তুলে দিচ্ছি। আমার সাইকো মেয়েটা কে যেনো আমার সাইকো জামাই সামলে নিও বুঝেছো।
.
বেলা কাঁদছে বাবার কথা শুনে এই কথা সে কতই না শুনতে চেয়েছে।ঝাপটে ধরে বাবা কে বেলা। আজ আরো একটা সম্পর্ক এর ভালোবাসা প্রকাশ পেলো।
.
বর্ণ ওর সব ভালো লাগলেও তাকে শ্বশুর সাইকো বলেছে সেটা ভালো লাগেনি। তাই বর্ণ বললো।
– বাবা সব ঠিক আছে কিন্তু আমি সাইকো??
— ভ্রু কুচকে।
.
রাহি মাঝখান থেকে বলে উঠলো।
– বাবা এক কাজ করি। এই দুই সাইকো কে হানিমুনে পাবনা পাঠিয়ে দেই। ওখান থেকে হানিমুন্টা সেরে আসবে সাথে সাইকো থেকে নরমাল ও হয়ে যাবে।
.
এই কথা শুনে রাহি কে বেলা আর বর্ণ পুরো বাড়ি দৌড় করিয়েছে।
.
.
.
.
.
সব শেষে বেলা কে বর্ণ ওর সাজানো রুমে বসিয়ে দিয়ে যায় রাহি।বেলা বসে অপেক্ষা করছে বর্ণ ওর জন্য। অনেক ভালো লাগার অনুভূতি কাজ করছে বেলার মনে। শান্ত পরিবেশ এ অদ্ভুত শান্তি অনুভব করছে বেলা।নিঃসন্দেহ আজকের দিন বেলা’র জীবনের সব চেয়ে ভালো দিন। বাবা’র আর বর্ণ ওর ভালোবাসায় আজ পরিপূর্ণ লাগছে তার।
ফুল দিয়ে সাজানো ঘরটায় চোখ বুলিয়ে দেখে প্রথম দিনের কথা মনে পরতেই হাসি পায় বেলা’র। কি আজীব ব্যবহারই না করেছিলো বেলা।
.
ঐ সময় বর্ণ রুমে ঢুকে বর্ণ দেখে বেলা মুচকি মুচকি হাসছে। বর্ণ গিয়ে বেলা’কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে। বেলা এক্টু কেপে উঠে বলে।
– আওয়াজ করে আশাযায় না?
– না, কি ভাবছিলে?
– কই না তো!
– আমি জানি তুমি প্রথম দিন এর কথা ভাবছিলে।
.
বলেই বর্ণ বেলা’র ঘাড়ে মুখ ডুবায়। বেলা কেপে উঠে বলে।
– লুচু আপনি ভালো হবে নাহ!
.
বর্ণ বেলা কে নিজের দিকে ফিরিয়ে বেলার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট চেপে ধরে। কিছুক্ষন পর ছেড়ে বলে।
– নাহ, আমি ভালো হবো। আমি আমার বউ এর লুচু তোমার কি??
আর আজ লুচু কাকে বলে তার পুরো চেপ্টার বুঝিয়ে দিবো আমার বউ’টা কে।
.
বলেই বেলা’কে কোলে তুলে নেয়। আর বেলা লজ্জায় বর্ণ ওর বুকে মুখ লুকায়। বর্ণ বেলা নিয়ে ভালোবাসার অন্য রাজ্যে পাড়ি দেয়।
.
.
.
.
পাচঁ বছর পর বর্ণ অটির সামনে দারিয়ে আছে। পাশে বাকি সবাই বসে আছে। সবার মুখেই চিন্তার ছাপ। প্রায় ১ ঘন্টা পর হঠাৎ একটা নার্স বেরিয়েই বর্ণ ওর কলে একটা সদ্যজন্ম নেওয়া বেবি কলে দিয়ে দিয়ে বলে
– মেয়ে হয়েছে আআপনা।
.
বর্ণ যেমন বোবা হয়ে যায় শুধু তাকিয়ে আছে বেবিটার মুখের দিকে। আনমনেই বর্ণ বলে ফেলে।
– আমার ধানিলংকা টু।
.
সবাই এই কথা শুনে হেসে দেয়।
বর্ণ চোখ দিয়ে টুপ টুপ করে পানি পরছে খুশিতে।
তারপর মেয়ে’কে কোলে নিয়েই।নার্স কে জিজ্ঞেস করে।
– আমার ধানিলংকা ঠিক আছে?
.
নার্স বড় বড় চোখ করে তাকায় থাকে পাশ থেকে রাহি বলে।
– মানে বাচ্চার না ঠিক আছে?
— হেসে।
.
নার্স এবার মাথা নাড়িয়ে বলে।
– হ্যা আপনারা ওনার সাথে দেখা করতে পারেন। কেবিনে দেওয়া হয়েছে।
.
বর্ণ মেয়েকে নিয়ে দৌড়ে যায় বেলা’র কাছে।
সবাই পিছন পিছন আসে।
বেলা টিপটপ করে চেয়ে আছে বেডে শুয়ে। শরীল এখনো অবশ প্রায়। বর্ণ তার মেয়ে নিয়ে দেখাতে থাকে বেলাকে।
– সি বেলা একদম তোমার মতো হয়ে আমার ধানিলংকা নাম্বার টু।
.
বেলা শতো কষ্ট ওর মাঝেও হেসে দেয়।বর্ণ ওর কথা শুনে। বেলার হাসি দেখে বর্ণ বেলা’র কপালে চুমু এঁকে দিয়ে বলে।
– অনেক ধন্যবাদ তোমাকে আজ আমাকে পরিপূর্ণ করার জন্য।
ভালোবাসি আমার ধানিলংকা।
– ভালোবাসি আমার লুচু হনুমান।
.
তারপর দুজনি মেয়ের দিকে তাকিয়ে হাসে।
মেয়ে ও টিপটপ করে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।
.
সমাপ্ত…
[ কেমন হইছে জানি না কিন্তু গল্পটা আমি অনেক খুশি হয়ে লিখছি আর চাইছি আপনারাও গল্পটা পরে এক্টু হাসেন কতটুকু পারছি জানি না তবে আমি খুশি খুশি লিখছি আমার মন মতো। কেমন লাগছে পুরাগল্প টা জানবেন। ধন্যবাদ। ভুল ত্রুটি ক্ষমা’র চোখে দেখবেন।]