বাসরঘরে হাত-পা বাধা অবস্থায় নিচে পরে আছে বেলা। আর বর্ণ সোফায় বসে হাতে বেল্ট নিয়ে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে বেলার দিকে।
.
আর বেলা জানপ্রান দিয়ে কৈ মাছের মতো ছুটাছুটি করছে আর প্রান প্রণ চেস্টা করছে হাতের বাঁধন খুলতে।যা দেখে বর্ণ এর রাগ দীগুন বাড়ছে।তাই সে বেলার সামনে থেকে চলে এলো বেলকুনিতে।
.
খুব খুব রাগ লাগছে তার। বেলার সাথে একপ্রকার জোর করে বিয়ে দিয়েছে বর্ণ এর বাবা বর্ণ কে। এই বলে বিয়ে দিয়েছেন যে যদি বেলা কে বিয়ে না করে তো প্রপার্টির কানা করিও দিবে না তাকে।
.
তাই বাধ্য হয়ে বিয়ে টা করেছে এই ভেবে।বেলা কে পরে ডিভোর্স দিয়ে দিবে।কিন্তু তার আগেই বর্ণ কে অবাক করে দিয়ে বেলা যা করলো।
.
কিছুক্ষন আগে।
বর্ণ এর বাবা বর্ণ কে যতো রকম থ্রেট ছিলো সব দিয়ে বাসরঘর এ পাঠায়।বর্ণ ও সব চুপচাপ শুনে বাবার কথা মতো নিজের রুমে ডুকে কিন্তু রুমে ডুকেই যে এমন কিছু দেখবে বুঝতে পারেনি বর্ণ।
.
বেলা বর্ণ এর ওয়াইফ। যে কিনা সাজানো বাসরঘর এর অবস্থা লন্ডবন্ড করে সেন্টার টেবিলের উপর বসে আছে তাও। ছোট একটা টি শার্ট আর ঢুলাঢালা পেলাজু পরে। হাতে কিসের জেনো একটা বোতল।
.
যা দেখেই বর্ণ এর মাথা আগুন লেগে গেলো।
বর্ণ তেড়ে গেলো বেলার দিকে।
– এই ফাজিল মেয়ে।কি করেছো আমার রুম এর তুমি?
.
বেলা যে কিনা বর্ণ কে দেখেও বিন্দু পরিমাপ ভ্রুক্ষেন নেই তার। সে উত্তর দিলো।
– সবেতো তোর ঘর লন্ডবন্ড করেছি।আমাকে ডিভোর্স না দিলে তোকে কুচিকুচি করে কেটে লবণ ছাড়া রান্না করে। আমি আমার বিলাই কে খাওয়াবো।
.
এবার তো বর্ণ এর রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে। একে তো জোর করে বিয়ে দিয়েছে তার উপর মেয়ে এমন বেয়াদব। বিয়ে করা হ্যাসবেন্ড কে তুই তুকারি করছে। রেগে বেলার পাশে যা ছিলো সব ভাংচুর করতে লাগলো।
.
বর্ণ এর রাগ দেখে বেলা কিছুটা ভয় পেলো তাও থেমে নেই বেলা।
– ঐ আপনি কেনো এগুলা ভাংছেন। ভাঙবো তো আমি। আমায় তোর জন্য শুনেছিস তোর জন্যওও জোর করে ৩ দিন আটকিয়ে রেখে বিয়ে দিছে। খেতে ও দেই নি আমার হারামি বাবা। সব তোরে জন্য। তোরে আমি।
.
বর্ণ যে কিনা রেগে সব ভাঙতে ব্যস্ত। বেলা কথা গুলি বলেই গিয়ে। বর্ণ এর কলার চেপে ধরলো।
.
এবার বর্ণ কষে চড় বসিয়ে দিলো বেলার গালে। বেলা এমন চড় খেয়ে নিচে পরে গেলো। আর কাঁদতে লাগলো ভ্যা ভ্যা করে। বর্ণ এর আর সহ্য হলো না এই ড্রামা। বর্ণ খুঁজে গিয়ে কাপড় এনে বেলার মুখ বেধে দিলো।
.
বেলা হাত দিয়ে খুলে ফেলতে চাইলে হাত-পা ও বেধে দিলো।এবার বেলা শুধু কৈ মাছের মতো লাফাচ্ছে।
.
বর্ণ তাকিয়ে আছে হাত মুখ বাধা বেলার দিকে। নিস্বন্দেহে বেলা সুন্দরী খুব বেশিই সুন্দরী যাকে বলে।হরিণের মতো বড় বড় টানা টানা চোখ। গোলগাল চেহারা। নাক টা বুচা কিন্তু কিউট লাগছে খুব বেলাকে।এতোই সুন্দর বেলা যে চড় দেওয়ার কারনে পুরু মুখটাই লাল হয়ে গেছে।চুল গুলিও অনেক বড় যা আপাদত বেলার চোখে মুখে পরে বিচরণ করছে। বর্ণ এর যেমন ঘোর লেগে যাচ্ছে।সুন্দরী বেলার এলোমেলো চুল কাদার কারনে নাক টা হাল্কা লাল হয়ে আছে।
– এই মেয়ে কে তো কেউ বিয়ে করে ডিভোর্স দিবে না স্বপ্নেও। ভাবতেই ভালো লাগছে এমন সুন্দরী বউ আমার।আমি তো আগে খেয়ালই করিনি এই ফাজিল মেয়ে কে।-মনে মনে
.
বর্ণ এর এতোক্ষনের রাগ নিমেষেই যেমন চলে গেলো বেলা কে পর্যবেক্ষন করে।
.
কিন্তু বেলার বর্ণ এর এমন ড্যাবড্যাব করে তার দিকে তাকিয়ে থাকা দেখে বিরক্তি লাগলো আর দিলো পা দিয়ে এক লাথি।-
– আউউউউচ
লাথিখেয়ে ঘোর কাটে বর্ণ এর।
– ছিঃ ছিঃ ছিঃ বর্ণ এই মেয়ে তাও কিনা সুন্দরী জীবনেও না পেত্নী মেয়ে একটা।বর কে লাথি মারে এর সাথে জীবনেও থাকতে পারবোনা আমি।ডিভোর্স দিবো ডিভোর্স কিন্তু মন তো চাইছেনা সুন্দরী বউ হাত ছাড়া করতে। – মনে মনে
.
বেলা এবার লাথি দিতেই আছে দু পা দিয়ে আর উম্ম উম্ম…. করছে কথা বলতে পারছে না। বর্ণ রেগে একটু পিছিয়ে গিয়ে নিজের পেন্টের বেল্ট খুলে গিয়ে সোফায় বসলো।
তারপর বেল্ট টা দিখিয়ে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে বেলা কে বলতে থাকে….
– দেখছিস এটা বেয়াদব মেয়ে। এটা দিয়ে পিটিয়ে লাল করে ফেলবো। চুপচাপ পরে থাকো এখানে।আর হ্যা ডিভোর্স দিবো কি দিবো না সিয়োর না।আর এসব করার জন্য আজকে ক্ষমা করে দিলাম কিন্তু আজকের মতো ব্যবহার আর করলে তোর কি হাল করবো আমি নিজেও জানিনা……
.
এখন
বর্ণ দারিয়ে আছে বেলকুনিতে
– কই ভাবছি গ্রামের মেয়ে টেয়ে হবে ভালো ভদ্র হবে। বুঝালে বুঝবে সব কিন্তু। না এই মেয়ে তো ধানিলংকা কী ব্যবহার আল্লাহ কে জানি মানুষ করছে একে। মন চাচ্ছে ইচ্ছা মতো পিটাতে।কতো বড় দূর সাহস বর্ণ কে তুই তুক্কারি করে এই মেয়ে।দেখে নিবো এই ফাজিল মেয়ে কে দিবো না ডিভোর্স হুহ…..
.
এইদিকে বেলা বর্ণ কে মনে মনে হাজার গালি দিচ্ছে।
– ছাড়বো না তোকে দেখিস তোর জীবন ত্যনাত্যানা না করছি তো। আসছে বিয়ে করে বাসর করতে।
বাবা তোমার কাছে এতোই বোঝা ছিলাম এমন একটা হনুমান এর কাছে বিরে দিলে। সালা ইতর আমায় বেধে রাখছে।
একবার ছাড়া পাই দেখিস কি করি তোর সালা হ্যাসবেন্ড…. -মনে মনে
.
কিছুক্ষন পর বর্ণ রুমে আসে নিজের চুল ঠিক করতে করতে। একবার বেলার দিকে তাকিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।
.
– গাঁ জ্বলে যাচ্ছে আমার আম্মুউউউউউউ।
ওহ শিট আমার তো আমুউউ নাই। আব্বুউউউউউউউউ।
না বাবা ও তো আমায় বাঁচাবে না। নিজেই তো বিয়ে দিছে এই হনুমান এর কাছে। কে বাঁচাবে আমায় এর হাত থেকে- মনে মনে
.
কিচ্ছুক্ষন পর বর্ণ বেড়িয়ে দেখে বেলা নড়াচড়া করছে না। তাই গিয়ে হাত মুখ খুলে দেয়।
– এই মেয়ে?
–……..
– এ তো দেখি ঘুমায় গেছে।
.
বর্ণ বেলা কে কোলে করে এনে বেডে শুয়িয়ে দিয়ে। বেলার দিকে তাকিয়ে থাকে বর্ণ আস্তে আস্তে নজর যায় বেলার গোলাপি ঠোঁটের দিকে যা খুব টানছে বর্ণ কে।
-আল্লাহ না না… কি ভাবছি আমি।এই ধানিলংকা জানতে পরলে না জানি কি করে আল্লাহ মাবুদ জানে…..
ছিঃ ছিঃ বর্ণ তুই তোর বউ কে ভয় পাচ্ছিস…..
না না মোটেই না।কেনো ভয় পাবো আমি আমি ওর বর। কিন্তু ঘুমের মধ্যে কাউ কে এসব করা ঠিক না।
আর আমায় তো বাবা জোড় করে বিয়ে দিছে। আমি ডিভোর্স দিয়ে দিবো।
.
তারপর হাজার চিন্তা করে বেলার পাশে শুয়ে বেলা কে দেখতে দেখতে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে গেলো।
.
বর্ণ এর নিয়ত খারাপ হচ্ছে। না কি অনুভূতি তৈরী হচ্ছে বেলার জন্য বর্ণ এর মনে।
.
.
সকালে
– আম্মুউউউ
.
চলবে……
#অনুভূতি
#Roja_islam
#part 1