#অনুভূতি
#Roja_islam
#part 7
.
বেলা ওয়াশরুমে দারিয়ে আছে। বলতে গেলে লুকিয়ে আছে। আর বারবার লাফ দিয়ে দিয়ে উঠছে ভয়ে।কারন বর্ণ রুমে সব ভাংচুর করছে।যার ভয়ংকর আওয়াজে বেলা ভয় পাচ্ছে। কারন টা বেলাই তাই। ওয়াশরুমে লুকিয়ে আছে।
.
কিছুক্ষন আগের কথা। বর্ণ বেলার জন্য একগাদা শপিং করে বাসায় ফিরে। তারপর নিজের রুমে গিয়ে দেখে বেলা ঘুমিয়ে আছে। হাত-পা মেলে একদম।
বর্ণ মুচকি হাসি দিয়ে। শপিং ব্যাগ গুলি বেডে রেখে। সামনের সোফায় বসে। বেলা কে দেখতে থাকে।
– উফফ, কি কিউট লাগছে এই মেয়ে কে ঘুমন্ত অবস্থায়। আর যখন জেগে থাকে মাথা খারাপ করে দেয় এলিয়েন দের মতো কাজ করে। ঐ সময় মন চায় ২ টা দিতে কানের নিচে। কিন্তু এখন মন চাইছে ২ টা পাপ্পি দিতে।
.
এক্টু পরে আবার নিজেই বলে বর্ণ।
.
স্যাট আপ বর্ণ।একা একা কি বলছিস এগুলা। এই মেয়ের সাথে ১ দিন থেকে তুই ও পাগল হয়ে গেছিস।বাচ্চা দের মতো কথা বলছিস।
.
বর্ণ বিড়বিড় করছিলো। এর মধ্যে বেলা ঘুম থেকে উঠে। দেখে পুরা বেডে শপিং ব্যাগ। সামনে তাকিয়ে দেখে বর্ণ তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।এটা দেখেই বেলার মেজাজ বিগড়ে যায়।
– আপনার সাহস কি করে হয়। আমার দিকে তাকিয়ে থাকার। কি পেয়েছেন আপনি আমায় আটকে কেনো রেখেছেন?
বলুন?
.
বর্ণ বেলার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বলে।
– শপিং করে এনেছি তোমার জন্য দেখো পছন্দ হয় কিনা?
.
বেলা বর্ণ এর কথা শুনে রেগে। গিয়ে বর্ণ এর কলার চেপে ধরে বসা থেকে উঠিয়ে বলে।
– এই কি পেয়েছিস তুই হ্যা।তুই যা বলবি আমার তাই করতে হবে। না আমি করবোনা। তোর কথা শুনবো না।
– বেলায়া, কলার ছাড়ো।- রেগে।
– না ছাড়বো না আমি।- রেগে।
.
বর্ণ বেলার হাত ধরে কলার ছাড়ানোর জন্য।
আর বেলা রেগে বসিয়ে দেয় বর্ণ এর গালে এক চড়।বেলা এতো রেগে ছিলো যে সে কি করছে বুঝেনি। কিন্তু চড় দিয়ে বর্ণ এর দিকে তাকিয়ে বেলা দু তিন পা পিছিয়ে যায়।
বর্ণ এর সুন্দর চেহারা যেমন মুহুর্তে ই হিংস্র হয়ে গেছে। বর্ণ নিজের হাত নিজেই শক্ত করে মুঠি বদ্ধ করে নেয়। বর্ণ নিচে তাকিয়েই বেলা কে বললো।
– আমার সামনে থেকে যাও।-থতমত গলায়
– স…সরি।
– আমার সামনে থেকে যাও এক্ষুনি।- বিষণ রেগে চিল্লিয়ে বলে বর্ণ।
.
বেলা দৌড়ে ঐ যে ওয়াশরুমে ঢুকে একনো ঐ খানেই দারিয়ে। আর বর্ণ সেই সময় থেকে সব ভাংচুর করে যাচ্ছে।বেলা বক বক করেই যাচ্ছে।
– আল্লাহ প্লিজ। আমার বর এর রাগটা কমিয়ে দাও প্লিজ। আমি আর কখনো এমন করবো না। আর করলে, অম্ম করলে হাত টা কেটে দিও প্লিজ এখন শান্ত করে দাও বর টা কে প্লিজ প্লিজ।
.
বাচ্চাদের মতো দু হাত মোনাজাত এর মতো করে বলছে বেলা।
.
বর্ণ ভাংচুর করে ক্লান্ত হয়ে।ওয়াশরুমে ঢুকে বেলার কথা শুনে ফেলে।
আর বর্ণ এর রাগ গায়াব হয়ে যায়। বেলার কথা শুনে।
তাও রাগ দেখিয়ে বলে।
– কি বলছো তুমি এসব? – চিল্লিয়ে।
.
বেলা লাফ দিয়ে পিছনে ফিরে দেখে বর্ণ দারিয়ে আছে।
– আপনি?
.
বর্ণ রেগে বললো।
– আউট, আমি ফ্রেস হবো।- চিল্লিয়ে।
– আমি সরি। – করুন কণ্ঠে
– সরি মাই ফুট, আউট। – বিষণ রেগে।
– প্লিজ……
.
বর্ণ এবার রেগে বেলা কে টান দিয়ে নিজের সাথে মিসিয়ে নেয়।
আর বেলার ঘাড়ের চুল সরিয়ে খুব জরে একটা কামর দেয় ঘাড়ে।
– আউউচ,কি করছেন ছাড়ুন।
– কেনো বলেছিলাম না।চলে যেতে এখন কেনো ছাড়বো।- রেগে।
– প্লিজ
। কাঁদকাঁদ হয়ে।
.
বেলা ব্যথায় কান্না করে দেয় দেখে বর্ণ মৃদু ধাক্কা দিয়ে বেলা কে ছেড়ে দেয়।
– যাও আমার সামনে থেকে।- চিল্লিয়ে।
.
বেলা আর কিছু না বলে দৌড়ে বেরিয়ে যায় ওয়াশরুম থেকে।বর্ণ আয়নার সামনে দারিয়ে নিজে নিজেই বলতে থাকে।
– ইউ হেভ টু লাভ মি বেলা।আমার মনে তোমার জন্য যেমন অনুভূতি। সেটা তুমিও করবে খুব তাড়াতাড়ি।
আমি তৈররী করেই ছাড়বো।তোমার ছোট মনে আমার জন্য অনুভূতি।
.
বলেই বর্ণ মুখে পানি ছিটায়।
.
বেলা রুমে এসে আয়নায়। কামড়ের দাগ দেখছে।
– কেমন রাক্ষস রে বাবা। কত টা লাল হয়ে গেছে। আমাকে কি আটকিয়ে রেখেছে আমার রক্ত খেতে?
তাই মনে হচ্ছে। আস্তা। হনুমান লুচু। এখন রাক্ষস যোগ হইছে। ফাজিল বর।
কে বর আমি মানি না বর।হুহ। ১ দিনেই কত রুপ দেখাচ্ছে। সাড়া জীবন থাকলে সাথে না জানি কি করে বেলা তোর। – কাঁদতে কাঁদতে বলছে আর ঘাড়ে হাত বুলাচ্ছে।
.
পিছন থেকে বর্ণ বলে উঠলো।
– থাকতে হবে না। আমি ডিভোর্স এর ব্যবস্থা করছি। তোমায় ডিভোর্স দিয়ে দিবো।
.
কথা টা শুনেই বেলা পিছন ফিরে থমকে যায়। বর্ণ আবার বলে।
– কিন্তু আমার কিছু শর্ত আছে সে গুলা শুনতে হবে।
– কি। – আস্তে করে বলে বেলা।
– ডিভোর্স হয়ার আগপর্যন্ত এই বাড়িতে থাকতে হবে এন্ড আমি যা বলি তাই করতে হবে। ওকে?
– হুম। – দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।
– গুড। তো এখন নিচে চলো খাবে।
– হু, আপনি যান আমি আসছি।
– ওকে।
.
বর্ণ চলে গেলে বেলা ফুঁপিয়ে কেঁদে দেয়।
– আমি কাঁদছি কেনো।খুশিতে নাকি অন্য কিছু। কিন্তু আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। কেনো হচ্ছে?
.
১০ মিনিট পর বেলা নিচে গিয়ে দেখে। বর্ণ না খেয়ে তার জন্য বসে আছে। বেলার কেনো যেনো ভালো লাগে ব্যাপার টা। বেলা মুচকি হেসে খেতে বসে।
.
বর্ণ বেলার হাসি দেখে রাহি কে ফোন দেয়।
– হ্যালো,
-………………………
– তুই বাসায় আসবি না খেতে?
-…………………………………
– না, আমি তো আরো তোর জন্য ওয়েট করছিলাম। আচ্ছা ঠিক আছে তুই খেয়ে নে।আমি ও খাচ্ছি। বাই।
.
বর্ণ ওর ফোন আলাপ শুনে বেলার চোখ ভরে আসে কেনো বেলা নিজেও বুঝতে পারছে না।
বেলা ভেবেছিলো তার জন্য বসে আছে বর্ণ কিন্তু না এমন টা হয়নি।
তাই বেলার খারাপ লাগছে।
.
বেলার দিকে তাকিয়ে বর্ণ মুচকি হাসে।
– অনেক ভালো করে বুঝিয়েছি। আর না এখন আঙুল বাঁকাতেই হবে।- মনে মনে।
.
বর্ণ খুশিতে গাপুসগুপুস খাচ্ছে। বেলা কষ্ট পাচ্ছে তার জন্য তাই খুশিতে ইচ্ছে মতো খাচ্ছে।
আর বেলা অজানা কস্টে খাবার পেটে ঢুকছে না। ভাত আঙুল দিয়ে নাড়াচ্ছে শুধু।
বর্ণ দেখছে কিন্তু কিছু বলছে না।
.
দুজনি কোনো রকম খেয়ে উপরে চলে যায়।
এর পরে আর কথা হয়নি তাদের ভিতর।
.
রাতে ১২ টা বাজে বেলা বাদান্দায় দারিয়ে ভাবছে। বর্ণ তাকে ভেতোরে গিয়ে শুতে বলবে কিন্তু না। বর্ণ ১ ঘন্টা আগেই শুয়ে পরেছে নরছেও না মানে ঘুমিয়ে গেছে বর্ণ।
কিন্তু বেলার ব্যাপার টা খারাপ লাগছে।
– শুবো না আমি। কিন্তু কেনো? জানি না আমি। পাগল আমি?
– এই মেয়ে কি আনাপ সানাপ বকছো?
.
বর্ণ এর গলা পেয়ে বেলা খুশি হয়ে। পিছনে তাকিয়ে বলে।
– আপনি?
– হ্যা তো আর কে হবে। ঘুমাও নি কেনো?
.
বেলা খুশি হয়ে বলে।
– এখুনি যাচ্ছি।
বলেই বেলা রুমে গিয়ে বেডে শুতে নিলে।
বর্ণ বলে।
– এই তুমি বেডে কেনো শুচ্ছো?
– তো কোথায় শুবো? – অবাক হয়ে।
– সোফায় শুয়ে পরো। – হাত দিয়ে দেখিয়ে।
– কেনো,এতো বড় বিছানা তো আছে তবে?
– লিসেন, আমাদের ডিভোর্স হয়ে যাবে।
তাই আমি তোমার সাথে শুতে পারবো না।
.
চলবে…