গল্পঃ #অন্তরালের_অনুরাগ
লেখনীতেঃ #নাহিদা_নীলা
#পর্বঃ ৩০ ❤🔥❤
[ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যতিত না পড়ার অনুরোধ রইল। ]
নতুন বর-কনেকে নিয়ে সবাই এবার হইচইে মেতে উঠল। সমবয়সী থেকে ছোটরা সবাই ইতিমধ্যে বাসর জাগা নিয়ে সব প্ল্যান-ট্যান করে নিয়েছে। প্রিয়তীর কপাল গড়িয়ে নাকে এসে অর্ণবের দেওয়া সিঁদুর লেপটে রয়েছে। আর অর্ণব পাশ থেকে মুগ্ধ চোখে সেটা পরখ করছে। তার এখন এইসব নিয়মের বেড়াজালে আটকে থাকার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে হচ্ছে না। সে যে এখন নিজের সদ্য বিবাহিত বউকে কাছে চায়। নিজের একান্ত কাছে। এতদিনের জমিয়ে রাখা নিজের সবটুকু ভালোবাসা উজার করতে চায়। কিন্তু এত ইচ্ছা-শক্তি থাকা সত্বেও সে পারছে না। সামাজিক যতসব নিয়মের বেড়াজালে সে শক্তপোক্তভাবে আটকা পড়েছে। বুক চিড়ে এই কঠিন নিয়মের বিরুদ্ধে তার তপ্তশ্বাস বেড়িয়ে আসছে৷ আহা রে নিয়ম! প্রেমিক পুরুষের মন কি এসব নিয়ম-নীতি বুঝে? সে তো কেবলমাত্র প্রেম বুঝে।
প্রিয়তীর আচমকা অর্ণবের দিকে চোখ পরতেই সে তার নেশালো আঁখিযুগল দেখতে পেল। এতদিন সে প্রেমিক ছিল। কিন্তু আজ থেকে যে এই ছেলেটা তার সবটা জুড়ে বিচরণ করবে৷ তার অধিকার পুরোপুরিভাবে পুষিয়ে নিবে। এসব ভাবতেই প্রিয়তীর বুকটা ধক করে উঠল। সে দ্রুত চোখ সরিয়ে নতজানু হলো। অর্ণব ঘটে যাওয়া সবটাই পরখ করেছে। তাই সেও এবার ঠোঁট কামড়ে নিঃশব্দে হাসতে লাগল।
.
বাসর জাগার জন্য আলাদা একটা বড় রুম সাজানো হয়েছে। পুরো রাত আড্ডা-মাস্তি করার জন্য গানের আসর সহ সবধরনের ব্যবস্তা ইতিমধ্যে করে নেওয়া হয়েছে। প্রিয়তী আর অর্ণবকে নিয়ে সবাই এবার সেদিকে ছুটল। নীলাও সবার পিছু পিছু ঐদিকে যেতে লাগল। কিন্তু আচমকা একটি ছোট পিচ্চি মেয়ে এসে তার হাত চেপে ধরল। নীলা ঘাড় ফিরিয়ে পিছনে তাকাতেই বাচ্চা মেয়েটিকে দেখতে পেল। মুখে হাসির রেখা নিয়েই সে হাঁটু গেড়ে নিচে বসল। আলতোভাবে গালে হাত রেখে জানতে চাইল,
— ‘ কি হয়েছে আপুনি? কিছু দরকার? ‘
— ‘ তোমাকে। ‘
পিচ্চি মেয়ের সরাসরি এমন বড়দের মতো কথা শুনে নীলা আবারও হাসল। আস্তে করে গালটা টেনে দিয়ে বলল,
— ‘ বুড়ি। আমাকে দিয়ে কি কাজ? ‘
— ‘ আমার কাজ নেই। আমার কাজের জন্য চকলেট পেয়ে গিয়েছি। দেখ কতগুলো চকলেট। ‘
বলেই বাচ্চা মেয়েটা নীলাকে তার ছোট ব্যাগ থেকে দুইহাতবর্তী করে চকলেট দেখাল। নীলা পাল্টা কিছু বলবে তার আগেই বাচ্চা মেয়ে ঝড়ের গতিতে গায়েব। নীলা ফ্যালফ্যাল করে তার গমনপথের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। কি থেকে কি হয়ে গেল সবটা তার মাথার উপর দিয়ে গেল।
সে এবার পিছনে তাকালো। সবাই ইতিমধ্যে প্রিয়তীদের নিয়ে রুমে চলে গিয়েছে। পিচ্চি মেয়েটার জন্য নীলা পিছনে পড়ে গেল। ছোট্ট একটা শ্বাস ফেলে সে আবারও সামনে যাবার জন্য পা বাড়াল। কিন্তু এবারও বিফল। কিন্তু এবার আর বাচ্চা-কাচ্চা নয়। নীলার সমস্ত অস্তিত্বেজুড়ে বসবাসকারী ব্যক্তিটি তার সামনে বিদ্যামান। সাদিদ ডানহাতে নীলার কব্জিতে ধরে আছে। কেউ কোনো বাক্য উচ্চারণ করল না। কেননা সেই সময়টুকু দেওয়া হয়নি। নীলা এখন সাদিদের উষ্ণ আলিঙ্গনে আবদ্ধ। কিন্তু পাজোড়া তার মাটিতে অবস্থিত নয়। কেননা সাদিদ তাকে ইতিমধ্যে পাঁজাকোলে তুলে নিয়েছে। নীলা কিছু বলতে চায়ছে। কিন্তু কন্ঠস্বর যেন আটকে রয়েছে। কিছুতেই গলা দিয়ে শব্দ উচ্চারণ করা সম্ভব হচ্ছে না। কেননা নীলা যে সাদিদের ঘোলাটে আঁখিযুগলের সম্মুখীন হয়েছে। এই চোখজোড়া নীলাকে শব্দহীন করে তোলে। কিন্তু তারপরও সে সাহস সঞ্চয় করে নিচুস্বরে বলল,
— ‘ কি করছেন? কেউ দেখবে। ‘
সাদিদ তাকে কোলে নিয়ে হাঁটারত অবস্থাতেই তার মুখপানে একপলক তাকালো। কিন্তু নিজের প্রতিউত্তর জানানো না। নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে সামনে হাঁটা দিলো। আশেপাশে কে দেখল আর কে না দেখল সাদিদের সেদিকে আপাতত খেয়াল নেই। সে যে এখন অস্থির হয়ে রয়েছে। আর তার মধ্যকার এই অস্থিরতা কমাতে অতি শীঘ্রই ঔষধ চায়। আর যেটা নীলা ব্যতিত অপর কারও কাছে নেই। তাই নিজের অস্থিরতা কমানোর জন্য সাদিদ এখন নীলাঞ্জনা নামক ঔষধ নিয়ে ব্যস্ত। বাদবাকি কোনোকিছুর তোয়াক্কা করার সময় তার এখন আছে নাকি?
সাদিদ তাকে নিয়ে সোজা নিজের জন্য বরাদ্দকৃত রিসোর্টের রুমে আসলো। রুমে প্রবেশ করা মাত্রই সে দ্রুত নীলাকে নিচে নামালো। এবং চোখের পলকে দরজাটা লক করল। এবং চোখের পলকে নীলার হাতে হেঁচকা টান দিয়ে দরজার সাথে তাকে চেপে ধরল। এবং চোখের পলকেই নীলা নিজের অধরযুগলে সাদিদের উষ্ণ অধরের ছোঁয়া পেল। সবগুলো কাজই এত দ্রুত তার সহিত ঘটেছে যে নীলা তাতে পুরোপুরি হতভম্ব। সে নিজের হুঁশ ফিরে পায় অধরযুগলে সাদিদের রুডলি আদরে। নীলা মৃদু ব্যাথা পাচ্ছে। কিন্তু সাদিদের সেদিকে হুঁশ নেই। দুইহাত নীলার কানের পিছনে রেখে সে তাকে নিজের আরও কাছে টেনে আনল। বিরামহীনভাবে ঠোঁট আদর দিতে লাগল।
নীলার এতক্ষণ আবেশে চোখজোড়া বন্ধ থাকলেও এবার প্রায় শ্বাস আটকে যাবার অবস্থা। কিন্তু সাদিদের সেসব দিকে বিন্দুমাত্র খেয়াল নেই। সে এখন নীলাতে মত্ত। নীলা না পেরে চোখ খোলে সাদিদের দিকে তাকালো। সাদিদের আঁখিদ্বয় পূর্বেকার ন্যায় বন্ধ রয়েছে। চোখ বন্ধ রেখে সে নীলার কোমল ঠোঁটজোড়া নিজের ওষ্ঠদ্বয়ের মধ্যে নিতে ব্যস্ত। নীলা এই মুহূর্তে ঠিক কি করবে সেটা বুঝে উঠতে পারছে না। সাদিদকে মৃদু ধাক্কা দিয়ে দূরে সরাতে গেলে সে উল্টো নীলাকে আরও চেপে ধরল। সে এবার বাম হাতটা কানের পিছন থেকে সরিয়ে এনে শাড়ি বেধ করে নীলার কোমড় চেপে ধরল।
ইশশ ঠোঁটে ব্যাথা কোমড়ে ব্যাথা, এই ছেলেটা আজকে সবকিছু ব্যাথায় ভরিয়ে দিচ্ছে। নীলার পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু লজ্জায় সে সাদিদের সাথে রেসপন্সও করতে পারছে না। সে কখনই সাদিদের এসব আদরে নিজে রেসপন্স করে না৷ সাদিদ নীলাকে বুঝতে পারে। তাই এই নিয়ে কখনও তাকে জোর করে না৷ যখন নীলা নিজ থেকে চাইবে তখনই তাকে আদর করবে। সাদিদ অধির আগ্রহে সেই সময়ের জন্য অপেক্ষা করে। কিন্তু কখনও নীলাকে বুঝতে দেয় না। এমনকি জোরও করে না। থাক না কিছু না বলা কথা। না বলা চাওয়া-পাওয়ার সংখ্যা। ততদিন পর্যন্ত না হয় নিজের আদর-সোহাগেই নীলাকে পরিপূর্ণ রাখুক। দোষ কি তাতে? সাদিদ কি কোনো অংশে কম? দুইজনের আদর সে একাই পুষিয়ে নিতে পারে। বরং নীলার জন্য তাকে একা সামলাতেই হিমশিম খেতে হয়।
নীলা আবারও একপলক সাদিদের মুখপানে তাকালো। লজ্জা লাগছে ভীষণ। কিন্তু এইমুহূর্তে কিছু না করলে শ্বাস বোধহয় তার চিরতরে আটকে যাবে।
সাদিদ যখন নীলার ঠোঁটে মত্ত হয়ে নিজের ঠোঁটের আদর দিচ্ছে তখন হুট করে নিচের ঠোঁটে শক্ত কামড় অনুভব করলো। সে এতক্ষণে চোখ খুলল। এবং নীলার থেকে নিজেকে আলাদা করে তার মুখপানে তাকালো। নীলা ততক্ষণে ঘাড় ফিরিয়ে লজ্জায় নতজানু হয়ে মুখ লুকালো। সাদিদ হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে নিজের ঠোঁট মুছে নিলো। কেননা নীলার দেওয়া লাল রঙা লিপস্টিক সাদিদের ঠোঁটেও খানিকটা লেগে গিয়েছে। সাদিদের নিঃশ্বাস দ্রুত উঠানামা করছে। নীলাও এতক্ষণ পর রেহাই পেয়ে জোরে জোরে শ্বাস টানছে।
সাদিদের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে নীলা এবার মুখ উঠিয়ে তার দিকে তাকালো। সে ভেবেছিল সাদিদ বোধহয় জোরে কামড় দেওয়াতে রাগ করেছে। অনুতপ্ততাবোধ নিয়ে চোখ উঠিয়ে তাকাতেই সে আবারও একটা বড়সড় ধাক্কা খেল।
সাদিদ রাগ করবে কি? সে এতক্ষণ নিজের কাজে ব্যস্ত ছিল। পাঞ্জাবিটা খোলে ফেলাতে সাদিদের লোমশ বুকটা নীলার চোখের সামনে উন্মুক্ত হলো। অনেকবারই সাদিদকে এই অবস্থায় সে দেখেছে। তারপরও কেন যেন খুব লজ্জা লাগে। যেমনটা এখনও লাগছে। নীলার চোখ-মুখ, ঠোঁট সব তরতর করে কাঁপছে। তারউপর লজ্জার লাল আভা মুখে যেন আলাদা এক সৌন্দর্য বহন করে চলেছে। সাদিদ নিষ্পলক প্রাণপাখির সৌন্দর্যেভরা মুখশ্রীতে পলক বুলিয়ে আচমকা হেঁচকা টানে তাকে কাঁধে নিয়ে নিলো।
নীলার চোখ বেড়িয়ে আসার জোগাড়! কি হচ্ছে কি এসব? আর সবথেকে বড় কথা সাদিদের কি হয়েছে? এমন পাগল-উন্মাদের ন্যায় আচরণ করছে কেন?
নীলার হতবিহ্বল দৃষ্টির মধ্যেই সাদিদ তাকে নিয়ে বিছানার কাছে চলে আসলো। নীলাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে সাদিদ নিজের ভরটুকু তার উপর দিলো। আবারও হালকা ব্যাথায় নীলা ব্যাথাজনক শব্দ করল। সাদিদ নীলার দিকে তাকিয়ে নিজের মুখটা তার গলায় নিয়ে গেল। গুটিকয়েক উষ্ণ স্পর্শ দিয়ে নেশালো তীক্ষ্ণ কন্ঠে বলে উঠল,
— ‘ আমাকে এত পুড়িয়েও তোর শান্তি হয় না? আমি যে জ্বলে পুড়ে কয়লা হচ্ছি সেটা তোর নজরে আসে না? এত কষ্ট দিয়ে আরও কষ্ট দিতে চাস! এতো নির্দয় কেন তুই? এতটা প্রাণনাশিনী না হলে কি হতো না? আমি যে মরে যাচ্ছি পাখি। তুই আমাকে নিজের জন্য পুরোপুরি মেরে দিচ্ছিস। দেখ আমি নিজের মধ্যকার অস্থিরতা কমাতে পারছি না। ভিতর থেকে ছটফট করছি। তুই আমার একি সর্বনাশ করলি? আমি যে এখন তোকে ছাড়া একটা সেকেন্ডও কল্পনা করতে পারি না। ‘
বাক্যটুকু সমাপ্ত করেই ভালোবাসার শাস্তিস্বরূপ সাদিদ নীলার গলার একপাশে নিজের ধারালো দাঁত ছুঁয়ালো। এতক্ষণের নিস্তব্ধতার পর সাদিদের থেকে এমন ভয়ংকর কথাবার্তা শুনে নীলার ভয়ে ভিতর পর্যন্ত শুকিয়ে কাঠ৷ তারউপর সাদিদের তুই বলে সম্বোধন করা। নীলা যে নিজেকে সামলাতে পারছে না। তার কাছে সবটাই ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস বলে মনে হচ্ছে। শরীরটাতে যেন ইতিমধ্যে ভূমিকম্পের ন্যায় অনুভব হচ্ছে। নিজেকে সামলাতে সে বিছানার চাদর শক্ত হাতে খামচে ধরল। কিন্তু তারপরও যেন ঠিকঠাক সামলাতে পারছে না। থেকে থেকে কেঁপে উঠছে।
নীলার এমন করুণীয় অবস্থার মধ্যেই সাদিদ নীলার একটা হাত বিছানার সাথে শক্ত করে চেপে ধরল। নিজের অপর হাতটা নীলার কাঁধে রেখে আবারও নেশাক্ত স্বরে বলল,
— ‘ কিন্তু এর জন্য তোকেও যে শাস্তি পেতে হবে। ভালোবাসার ভয়ংকর যন্ত্রণাময় শাস্তি। আমি শুধু কষ্টে ব্যাথিত হবো এমনটা তো ঠিক নয়। তোকেও যে আমার ভালোবাসায় কষ্ট ভোগ করতে হবে। তবেই না হিসাব বরাবর হবে। ‘
নিজের হিসাবনিকাশের পাঠ পূর্ণ করে সাদিদ নীলার শাড়ির আঁচলটা বুক থেকে সরিয়ে দিলো। লজ্জায় কুঁকড়ে গিয়ে সাথেসাথেই সাদিদকে মৃদু সরিয়ে নীলা উল্টো ঘুরল।
সাদিদ নীলার লজ্জামাখা আচরণ দেখে এতক্ষণে ঠোঁট কামড়ে হাসল। কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অটল থেকে নীলার দিকে এগিয়ে গেল। নিষ্পলক কিছুক্ষণ প্রাণপাখির দবদবে সাদা পিঠের দিকে তাকিয়ে থেকে ব্লাইজের খোলা অংশে নিজের বলিষ্ঠ হাতটা স্থাপন করল। স্বামীর আদরমাখা স্পর্শে নীলার পিঠটা সাথেসাথেই খানিকটা কুঁচকে এলো। সাদিদ ক্রমশ নিচু হয়ে নীলার পিঠের উন্মুক্ত অংশে নিজের ঠোঁটদ্বয় স্পর্শ করল। সঙ্গে সঙ্গেই নীলা চোখ খিঁচে বন্ধ করে চাদর খামচে ধরল। নীলার শরীরে বহমান কম্পন সাদিদও অনুভব করতে পারছে। যা তাকে নীলার প্রতি আরও আকর্ষিত করছে। সাদিদ পিছন থেকে একপলক নীলার একপাশের দৃশ্যমান মুখশ্রীতে নজর বুলিয়ে ব্লাউজের ফিতাটা খোলে দিলো। নীলার অবস্থা সূচনীয়। সাদিদের এমন অত্যাচারে তার দম আটকে আসছে।
বাহিরে এখনও আবছা অন্ধকার রয়ে গিয়েছে। ভোরের আলো ফুটতে আরও কিছুটা সময় বাকি। তাই ডিমলাইটের হালকা আলোতে পরিবেশটা যেন পরিস্থিতির সঙ্গে পুরোপুরি মিলিয়ে গিয়েছে।
সাদিদ অনবরত নীলার উন্মুক্ত পিঠে নিজের উষ্ণ ঠোঁটের স্পর্শ বিলিয়ে দিতে লাগল। নীলা এবার সহ্য করতে না পেরে আটকে যাওয়া কন্ঠে বলে উঠল,
— ‘ প্লিজ ছে..ড়ে দিন। সহ্য ক..রতে পার..ছি না। ‘
— ‘ এতো তাড়াতাড়ি? এখনও যে পুরো হিসাবটাই বাকি রয়েছে জান। সহ্য করতে না পাড়লেও যে করতে হবে। আমাকে পুড়িয়ে কয়লা বানিয়ে নিজে আরামে ঘুরে বেড়াবে সেটাতো হতে দেওয়া যায় না। তোমাকেও আমার ভালোবাসার আগুনে পুড়ে কয়লা হতে হবে। তার আগে নো ছাড়াছাড়ি। অনলি কাছে আসা-আসি হবে। ‘
বলেই সাদিদ নিজের গাল দিয়ে নীলার পিঠে হালকা ঘষা দিলো। ধারালো খোঁচা দাঁড়ির আঘাতে মৃদু ব্যাথায় নীলা ব্যাথাজনক আওয়াজ করে উঠল,
— ‘ আহ্। ‘
সাদিদ বুঝতে পেরে ব্যাথার জায়গায় মলম দেওয়া শুরু করল। ঠোঁটের আদরে প্রিয়তমার সমস্ত পিঠ পূর্ণ করতে লাগল।
ক্রমশ শিহরিত হয়ে শাড়িতে মোচড়ামুচড়ি করতে থাকা নীলাকে সাদিদ এবার নিজের দিকে ফিরাল। সে নতজানু হয়ে শাড়ির আঁচল ধরতে গেলেই সাদিদ নিঃশব্দে ঠোঁটের কোণে দুষ্টু হাসি ঝুলিয়ে নিয়ে তাকে নিজের কাজে বাঁধা প্রধান করল। নীলা লজ্জায় কুঁকড়ে গিয়ে চোখ পিটপিট করছে। দুষ্টু সাদিদ তাকে আরও লজ্জায় ফেলতে কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে উঠল,
— ‘ আমার সামনে এতো ঢেকে রাখার কি আছে? আমি কি তোমার পর না-কি? ‘
নীলা উত্তর দেওয়ার সাহস খোঁজে পেল না। বরং আবারও শাড়ির আঁচলে ধরতে গেলে সাদিদ তার হাত নিজের মুঠিতে পুরে নিলো। বয়ঃসন্ধিতে বেড়ে উঠা নীলার শরীরের কার্ভে সাদিদের উষ্ণ ঠোঁটের পরশ পরতেই নীলা আরও লজ্জা পেল। তার ইচ্ছে হচ্ছে এখনই নিজেকে নামহীন অচেনা জায়গায় লুকিয়ে ফেলতে। যেখানে অন্ততপক্ষে সাদিদের চোখাচোখি তাকে হতে হবে না।
অপরদিকে নীলার বর্তমান অবস্থা দেখে সাদিদ আবারও নিঃশব্দে হাসল। আরেকবার নিজের উষ্ণ ঠোঁটের পরশ বুলিয়ে দিয়ে সে ফিচেল কন্ঠে বলল,
— ‘ আর তাছাড়া তোমার তো এসব ঢেকে রাখার আরও কারণ নেই। কেননা আমি শুনেছিলাম বিয়ের পর নাকি স্বামীদের বলিষ্ঠ স্পর্শে স্ত্রীদের এই মূল্যবান সম্পদের আকার পরিবর্তন হয়। ড্যাবেলপ বলা যায় আরকি। কিন্তু আমার বউয়ের তো এখনও সব বাঁচা বাঁচা-ই রয়ে গিয়েছে। ‘
ইশশ এই ছেলের মুখ মাশাল্লাহ দিলে বাংলার পাঁচ। চরম মাত্রার অসভ্য। নীলা রুদ্ধশ্বাস কন্ঠে আটকে যাওয়া গলায় বলল,
— ‘ অসভ্য লো..ক। ‘
— ‘ অসভ্য আর হতে দিলে কোথায়? ছোঁয়ার আগেই তো লজ্জায় জড়সড় হয়ে যাও। তাইতো সব বাচ্চাই রয়ে গেল৷ এই ক্ষেত্রে কিন্তু সম্পূর্ণ দোষ তোমার। এত লজ্জা কোথায় থেকে পাও জান? আমি তো তোমার লজ্জা ভাঙতে ভাঙতে কাহিল৷ তারপরও তোমার লজ্জার শেষ সীমানা খোঁজে পাই না৷ ‘
— ‘ ছাড়ুন বলছি। যতসব অশ্লীল কথাবার্তা। ‘
— ‘ ছাড়ার জন্য ধরেছি নাকি? নাকি বিয়ে করেছি সাধুসন্ন্যাসী হয়ে থাকার জন্য? ‘
দুষ্টু সাদিদ কথাটুকু বলেই শক্ত হাতে নীলার কোমড়ের একপাশে জোরে চাপ দিলো।
— ‘ আউচ। ব্যাথা পাই না বুঝি? হাত তো নয় যেন লোহা৷ ‘
সাদিদ নীলার কথায় মৃদু হাসল। নাকে নাক ঘষে ঘোরলাগা কন্ঠে বলল,
— ‘ এখনও তো কোনো ব্যাথা-ই দেয়নি৷ তোমার অপরাধের শাস্তি সবটুকুই এখনও বাকি রয়েছে জান। সুদেআসলে সবটুকু ফিরিয়ে দিব। ‘
বলেই সে ঠোঁট কামড়ে দুষ্টু হাসি হাসতে লাগল। নীলা কথার সারমর্ম বুঝতে পেরে তার উন্মুক্ত বুকে মৃদু ধাক্কা দিয়ে লজ্জারাঙা মুখে বলল,
— ‘ প্লিজ ছাড়ুন। সবাই হয়তো আমাদের খোঁজ করছে। না পেলে মন্দ ভাববে৷ ‘
সাদিদ নীলার কথার ধার ধারল না। বুক থেকে নীলার হাতটা তুলে নিয়ে নিজের মুখের সামনে আনলো। আবছা আলোতেও নীলার আলতা রাঙা হাতটা সাদিদের চোখের সামনে ঝলঝল করছে। সে প্রিয়তমার আলতা রাঙানো হাতের আঙ্গুলে চুমু খেল। হাতের তালুতেও চুমু খেয়ে নীলার মুখপানে তাকিয়ে মুগ্ধতায় ভরা চোখ নিয়ে প্রশ্ন করল,
— ‘ পায়েও দিয়েছ? ‘
নীলা লজ্জা পেল খুব৷ নতজানু হয়ে উত্তর জানাতে নিঃশব্দে মাথা উপর নিচ করল। সাদিদ উত্তর বুঝতে পেরে তার উপর থেকে সরে এসে এবার পায়ের কাছে আসলো৷ শাড়ি টুকু একটু উপরে তুলতেই প্রিয়তমার আলতা রাঙানো পাগুলোও চোখের সামনে দৃশ্যমান হলো। সাদিদ আলতো হাতে নীলার পায়ে হাত বুলাতেই সে পা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে দ্রুত বলল,
— ‘ কি করছেন আপনি? প্লিজ পায়ে হাত দিবেন না৷ ‘
অবাধ্য সাদিদ এবারও তার বারণ শুনলো না। মাথা নিচু করে প্রিয়তমার পায়েও চুমু খেল। নীলা শিহরিত হয়ে বারবার পা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় রয়েছে। কিন্তু সাদিদের কাছে বারবার হার মানতে বাধ্য। অবশেষে অজস্র চুমু খেয়ে সাদিদ নিজের ঠোঁটজোড়া নীলার পায়ের থেকে সরিয়ে আনলো। কিন্তু উঠল না। শুধু মাথা উঠিয়ে নীলার মুখপানে একবার তাকালো। নীলা চোখ-মুখ খিঁচে বন্ধ করে রয়েছে। সাদিদ ঠোঁট কামড়ে নীলার শাড়িতে হাত দিলো। উপরে উঠাতে নিলেই নীলা দুর্বল হাতে তাকে বাধা দিলো।
সাদিদ এবারও তার কথা না শুনে উল্টো নিজের ঠোঁট স্পর্শ করল।
ইশশ নীলা বোধহয় আজ মরেই যাবে। সাদিদ কি তাকে মেরে ফেলার জন্য এমনটা করছে?
সাদিদ নীলার শাড়িটা হাঁটু পর্যন্ত উঠিয়ে থামল। উন্মুক্ত পায়ে গুটিকয়েক উষ্ণ চুমু খেয়ে একটু উপরে এসে নীলার পেটে হাত রাখল। উন্মুক্ত পেটেও আলতো হাত বুলিয়ে দিতে লাগল। নীলা এমন অত্যাচারে অনবরত কাঁপছে।
কিন্তু সাদিদ যে আজ থামবে না। তার আচরণে এমনটাই পরিলক্ষিত হচ্ছে। সে নীলার সমস্ত পেটসহ নাভির আশেপাশে অসংখ্য চুমু খেল। নীলা এবার দাপাদাপি শুরু করেছে। সাদিদও তার দিকটা বুঝতে পারছে৷ তাই এখন যন্ত্রণার পাঠ চুকিয়ে ফেলতে চাইল৷ সে উন্মুক্ত পেটে গভীর একটা চুমু খেয়ে নীলার মুখোমুখি হলো। তার গালে নিজের বলিষ্ঠ হাত আলতো করে রেখে আবারও ঠোঁট আদর করল।
কিন্তু এবার রুডলি নয়। বরং খুব সফটলি প্রিয়তমার অধরযুগলে নিজের অধর ছুঁয়ে দিতে লাগল। নীলার শরীরে কম্পন বয়ছে। কিন্তু আবেশে তার হাতদুটো নিজ থেকেই সাদিদের উন্মুক্ত পিঠ আঁকড়ে ধরল। সেখানে গুটিকয়েক নখের আঁচড়ও লাগল। যা সাদিদকে নীলাতে আরও মত্ত করে তুলল। নিজের অস্তিত্বের সাথে প্রিয়তমা স্ত্রীকে পুরোপুরি মিশিয়ে নিতে সাদিদ তাকে আরও কাছে টেনে নিতে লাগল।
রাতের শেষ প্রহর চলছে। কিন্তু ভালোবাসাময় কাপলের জন্য যেন নব্য সূচনা। সদ্য ভালোবাসায় জড়িত হওয়া কাপলযুগলের ন্যায় তারা আজ একে অপরকে ভালোবাসা বিলিয়ে দিতে ব্যস্ত। একে অপরের ভালোবাসার রঙে নিজেদের পরিপূর্ণ করতে ব্যস্ত। ব্যস্ত তারা, জীবন নামক সুখপাখিটাকে ভালোবাসার রংধনু রূপে সাজিয়ে তুলতে।
#চলবে…
[ প্রিয়পাঠক, অপেক্ষার প্রহরের জন্য আবারও ক্ষমাপ্রার্থী।🙏🐦 আজকের অংশটাতে নতুন কিছু সংযুক্ত করা হয়েছে। রোমান্টিক গল্পের আলোকে এই নতুন সংযোজন নিয়ে আপনাদের মন্তব্যটুকু আমাকে অবশ্যই জানাবেন। খারাপ লেগে থাকলে পরবর্তীতে আমি সেটার খেয়াল রাখব৷ ]