দক্ষিণ -পূর্ব ইউরোপের যাজিয়ান এবং আয়নীয় সমুদ্র জুড়ে হাজার হাজার দ্বীপ নিয়ে গ্রীস গঠিত।পাহাড় ঘেরা বরফে ঢাকা এক ঐশ্বরিক দেশ।নয়ন ভুলানো যার সৌন্দর্য।প্রাচীনকালে অনেক প্রভাবশালীদের জন্য এটিকে সভ্যতার প্যাঁচা বলা হত।
আরচোয়া এখানেরই ৯৫০মি. উচ্চতায় পার্নাসসোর্সের পাদদেশে অবস্থিত একটি পার্বত্য গ্রাম।পাহাড় গুলো থেকে বহমান ঝর্না যে কারো মন আনন্দে ভরিয়ে তুলবে।পাহাড়ের পাশঘেসেই রয়েছে একেবেকে যাওয়া রাস্তা।রাতে এর সৌন্দর্য দ্বিগুন বেড়ে যায়।আর তা উপভোগ করার জন্যই প্রফেসর ভাসিত এন্চটা তার চোখের মনি তার নাতনিকে নিয়ে পাহাড় ঘেরা আরাচোয়ার সরু রাস্তা দিয়ে হেটে চলছেন।
চাদেঁর জোস্নায় আর দুরে তালগাছের মতো দাঁড়িয়ে থাকা লাইট হাউসের আলোয় দিব্যি পথ দেখা যায়।ভাসিত এন্চটা হাটছেন সাথে তার নাতনি।দুজনের নিরবতা ভেঙে তার নাতি তাকে প্রশ্ন করলেন-(গ্রীস ভাষায়)
“পাপপোস,জোউন জোয়া সে আফতিন তি গি একতোস আপো তোন আনথ্রোপো?(দাদাজি,এই পৃথিবীতে মানুষ ছাড়া কি অন্য প্রাণি বসবাস করে?)”
“নায়(হ্যাঁ )”
“পোউ জোউন?(তারা কোথায় থাকে?)
“ইইনায় মেটকসি্ মাস(তারা আমাদের মাঝেই থাকে।)
“পোস তা এনাগনোরিজোউমি?(আমরা তাদের কিভাবে চিনবো??”)
ভাসিত এন্চটা কিছু বলার আগেই দেখতে পেলেন তার আশেপাশে চার পাঁচটি ছায়া অবয়ব।আবছা অন্ধকারে তাদের জ্বলন্ত হলুদ চোখগুলো জানান দিচ্ছে ভয়ংকর কিছু হতে চলেছে।তিনি প্রশ্ন করলেন–
“পইওস ইইসাই?(কারা তোমরা?)
কিছু বুঝে উঠার আগেই এক নিমিশে একটি ছায়া অবয়ব তার নাতনির সামনে চলে যায়।ঠিক তখন তার নাতনি ছায়া অবয়বটির ভয়ংকর চেহারা দেখে,,,,,,
“মাম্মা,,,,,,,,,আআআআআ
বলেই ঘুম থেকে উঠে জোরে জোরে হাপাতে থাকে দ্বিধা।মূহুর্তেই দৌড়ে আসে পারিজা ইরাম আর ইরাজ ইরাম।
” আর ইউ অলরাইট মাই ডল?”উদ্বিগ্ন ভরা কন্ঠে প্রশ্ন করলেন পারিজা ইরাম।
“ইয়েস,আই অ্যাম ওকে”।
“সব ঠিক হয়ে যাবে,,,মাই প্রিন্সেস। আমরা তোমার সাথে আছি।ইওর পাপা,অলওয়েজ উইথ ইউ।”
“আই নো,পাপা।আমি জানি তোমরা আমাকে খুব ভালোবাসো।”
দ্বিধা আর তার ফ্যামিলির আদিনিবাস আমেরিকার একটি ছোট শহরে।কোনো এক কারণবশত দ্বিধার যখন আট বছর বয়স তখন তারা কাউকে কিছু না জানিয়ে বাংলাদেশে পাড়ি জমায়।বিগত দশ বছরে তারা বাংলা অনেকটা শিখে নিয়েছে।পাড়া প্রতিবেশীদের তারা বাংলাতেই কথা বলে।আর এই ভয়ংকর স্বপ্ন দ্বিধা প্রায়ই দেখে যখন থেকে তার ১২ বছর পূর্ন হয়েছে।
,
,
,
“কিরে মুড অফ কেনো??”(দ্বিধার বেস্টফ্রেন্ড রিপ্তি।)আজও কি ওই স্বপ্ন দেখেছিস??”
“হ্যাঁ ”
“বুঝিনা বাপু এইসব কি স্বপ্ন দেখিস।আমি তো শুধু হ্যান্ডসাম ছেলেদেরই স্বপ্নে দেখি।”(লজ্জায় গদগদ হয়ে)
“উফ,,,তুই চুপ করবি।তোর কি এছাড়া আর কোন চিন্তা নেই??”
“না,,রে।আমার তো শুধু একটাই আশা,একটা হ্যান্ডসাম ছেলেকে বিয়ে করে দুই তিনটা বাচ্চা পয়দা করে আরামসে জীবন কাটাবো।”
“ও গড!দিজ গার্ল ইজ ফুললি ক্র্যাজি।”
“এই দ্বিধা,,শুনেছিস,ভার্সিটি তে একটা নতুন ছেলে এসেছে।হি ইজ সো হ্যান্ডসাম।”
“আবার শুরু করলি??”
“আরে সত্যি বলছি।যখন থেকে ও ভার্সিটিতে এসেছে সবাই ওর কথাই বলাবলি করছে। আরে,আরে দেখ ওই ছেলেটা।”
রিপ্তি আর দ্বিধা ক্যান্টিনে বসেই কথা বলছিল।নতুন আসা ছেলেটি ঠিক ওদের ৩টা টেবিল পরে কর্নারে একা বসে এক দৃষ্টিতে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে।যেখানে একটি পাখি আনমনে ঘাসের ভিতর তার খাবার খুজে বেরাচ্ছে।দ্বিধা পিছন ফিরে ছেলেটির দিকে তাকায়।কালো জিন্স প্যান্ট,কালো টি শার্ট তার উপর কালো রঙের জ্যাকেট।চোখে কালো সানগ্লাস।এক আজব অঙ্গভঙ্গি তার। দ্বিধা,রিপ্তির আরেকটু কাছে গিয়ে বলল-
“ছেলেটা কি পাগল নাকি??এই গরমে কেউ জ্যাকেট পড়ে??আর ক্যান্টিনের ভিতরে সানগ্লাস,,,,হাউ রিডিকুলাস!!!
#অন্ধকার_মানব (The unpredictable love)
#পর্বঃ১
লিখাঃতাজরিয়ান খান তানভি
চলবে,,,