গল্পের_নাম : #অভ্রভেদী_প্রণয় পর্ব : ৪( #crazy_for_you )
Writer : #Mimi_Muskan🖤
||||
🍂…….
নিশি আজ প্রথম দিন অনেক কাজ করল । বেচারি এই প্রথম এতো কাজ করছে। নিশান তাকে লাঞ্চ ও করতে দেয় নি ঘুমিয়েছিল বলে। নিশি তো নিশান”কে বকতে বকতে শেষ।
নিশি : রামছাগল নিজেও খায়নি আমাকেও যেতে দিচ্ছে না। ( নিশানের দিকে তাকিয়ে বির বির করে বলতে লাগল। )
.
নিশান নিশি”র দিকে তাকাতেই নিশি চোখ সরিয়ে ফেলে। নিশান বিষয়”টা বুঝতে পারে। সে বুঝতে পেরে”ই হেসে দিয়ে মনে মনে বলে…..
– ইস্ আজ প্রথম দিন”ই আমার জান পাখি”টাকে আমি জ্বালিয়ে মেরেছি। বেচারি না কালকেই resign নিয়ে নেয়। না তাহলে কি করে হবে। ওকে দেখার আমার এতো দিনের তৃষ্ণা আমি মেটাবো কিভাবে….? কতো দিন অপেক্ষা করলাম তোমার জন্য। শুধু তোমার জন্য। তোমাকে আমি আমার করেই ছাড়বো জান পাখি।
.
নিশান নিশি দিকে এক ধ্যান”এ তাকিয়ে থাকে। নিশি কাজ শেষ করে নিশানের দিকে তাকাতেই নিশান চোখ সরিয়ে নেয়।
নিশি : স্যার কাজ শেষ…!
নিশান : ওকে আমাকে চেক করতে দাও…!
নিশি : আমি ই-মেইল করেছি আপনি দেখে নিন…!
নিশান : ( চেক করে ) ঠিক আছে।। আপনি এখন যেতে পারেন।
নিশি : জ্বি স্যার ( উফ বাঁচলাম )
.
নিশি অফিস থেকে বের হয়ে গেল। নিশান কাকে জানো ফোন করে বলল নিশি”র ওপর নজর রাখতে।
অনেকক্ষণ পর নিশি ফোন”টা ধরল। দেখে জিসানের অনেক কল। কিন্তু ওর এখন কোনোমতে কারো সাথে দেখা করতে মন চাচ্ছে না।আজ অনেক কাজ করেছে সে।
.
রাস্তায় আনমনে হাঁটছে আর নিশানের কথা ভাবছে। আজ একসাথে কতো কিছুই না হলো তার সাথে। এমন সময় একটা গাড়ি এসে ওর সামনে থামল। গাড়ি”টা জিসানের। জিসান গাড়ি থেকে বের হয়ে নিশি”কে হাত টেনে গাড়িতে বসাল…!
নিশি বুঝতে পেরেছে জিসান ভালো”ই রেগে আছে।
দু”জনেই চুপচাপ…! নিশি বলে ওঠল….
– জিসান আমার ক্ষুধা লেগেছে লাঞ্চ করেনি এখনো
– ( গাড়ি থামিয়ে নিশি”র হাত ধরে তার ঘড়ি চেক করে বলল ) কয়”টা বাজে…!
– ৫ টা…!
– দেবো একটা। এখন কেউ লাঞ্চ করে..!
– আরে ইয়ার আজ অনেক কাজ করেছি…
– আজ তো আপনি ভার্সিটিতে আসেন নি। তারমানে তো অনেক কাজ করেছেন। তা কি কি করলেন।
– তুই জানিস ওই রামছাগল আমাকে খেতে দেয় নি.।।
– ওয়েট ..! কি বললি..? রামছাগল…!
– আরে আমার অফিসের বস..!
– অফিস।। তুই জব করিস…!
– আরে আজকেই প্রথম।।।
– আর আমি জানি না। কি বেস্টু।
– আমিও কাল রাতে”ই জেনেছি…!
– হুহ।
– আরে এমন করছিস কেন।
– আচ্ছা তো অফিসে লাঞ্চ টাইম ছিলো না।
– ছিলো তো..!
– তাহলে…
– আরে আমি একটু ঘুমিয়েগেছিলাম তাই…!
– প্রথম দিন”ই 🤣🤣🤣
– আরে ইয়ার আমি একটা বাচ্চা মানুষ…!
– হ্যা তুই তো বাচ্চা। তাই তো স্কুলে”র মতো অফিসে গিয়ে ও ঘুমাস..!
– এই জিসান ভালো হচ্ছে না কিন্তু…!
– 🤣🤣
– 🤬
– আচ্ছা চল আগে তোকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে যাই। কিছু খা তারপর শক্তি হলে আমাকে মারিস…!
– ভালো বুদ্ধি চল….!
।।
পরের দিন____
নিশি আজ একটা লাল খয়েরী রঙের থ্রি – পিস পরে এসেছে। এই রঙের কিছু পরলেই সাজতে মন চায় । এই রঙের মানে টাই আলাদা। তাই নিশি ও আজ একটু সাজলো। বেশি কিছু না হালকা করে কাজল আর ঠোঁটে লাল রঙের হালকা লিপস্টিক। কপালে একটা খয়েরী রঙের ছোট্ট টিপও দিলো। তার সাথে খয়রি রঙের চুড়ি পরল। চুল গুলো ছেড়েই রাখল। আর ওড়না”টা কুচি করে গলায় গুজে দেয়। এটা ওর ভালো লাগে। হাতের দু”পাশে ওড়না থাকে না আর তা দিয়ে সে হেলেদুলে কতোক্ষণ নাচে। কিন্তু জামা”র গলাটা বড়ো হওয়ায় তার গলার নিচে”র তিল”টা দেখা যাচ্ছে।।
.
নিশি হেলেদুলে নিশানের আগে”ই আজ অফিসে আসল। অফিসে”র সবাই নিশি”কে দেখে অবাক। দিয়া তো নিশি”র দিকে তাকিয়ে আছে….
– কিরে মামদো ভুত”র নাতনি এভাব তাকিয়ে আছিস কেন..?
– তুই আমার নানা”কেও টেনে আনলি..!
– আরে তা না..!
– কিন্তু তোকে আজ সেই লাগছে নিশি।
– সত্যি…! ( লাগতে তো হবেই আজ জিসানের সাথে যে দেখা করবো।ও বলেছে আজ আমাকে ড্রপ করবে হি হি ধিনাক ধিনাক..! )
– কিরে কোথায় ডুবে গেলি…?
– কিছু না স্যার এসেছে।
– না এই আসবে।
– ওহ্
.
এর মধ্যে”ই রকি আসলো….
– আরে নিশি…
– হুম।
– তোমাকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে..!
– ধন্যবাদ ( শুরু হইলো)
– তা আজ এভাবে ঘুরতে যাবার কোনো প্ল্যানিং…!
– হ্যাঁ। বফ”র সাথে…
– তোমার বফ আছে…!
এর মধ্যে”ই নিশান আসলো। এসেই নিশি”র দিকে নজর গেলো। শুধু এক নজর তাকিয়ে”ই চোখ ফিরিয়ে নিল।
সবাই বলল : গুড মর্নিং স্যার…!
নিশান : গুড মর্নিং…!
তারপর রকি কে বলল…..
– মিঃ রকি আমার কেবিনে আসুন। ( রকি”র দিকে তাকিয়ে..!)
কিন্তু রকি”র নজর অন্যদিকে। রকি নিশি সেই তিলের দিকে তাকিয়ে আছে। নিশান”র মাথা গরম হয়ে গেল। সে রকি’কে ধমক দিয়ে বলল….
– মিঃ রকি…!
– ইয়েস স্যার।
– কেবিনে আসুন।
– আসছি স্যার।
.
নিশানের এমন ধমকে নিশি আর দিয়া ভয় পেয়ে যায়।
নিশি : স্যার এর মুড মনে হয় আজ ভালো না…!
দিয়া : মনে তো হয়……
নিশি : এই রাগ না আমার ওপর ছাড়ে….
দিয়া : দেখ কি হয়… আজ পারলে কালকে”র মতো ঘুমিয়ে পরিস…!
নিশি : দিয়া…..
দিয়া : 😁
নিশি : মামদো ভুত”র নাতনি…😒
.
এদিকে রকি নিশানের কেবিনে গেলে নিশান রকি”কে অনেক কাজ দেয়। বলে এক্ষুনি সব কাজ করে আসতে।
রকি নিশানের ধমক খেয়ে বের হয়। নিশি দেখে বুঝতে পারে রকি”র ওপর ঝর গেছে এখন তার ওপর টনের্ডো তো যাবেই। এর মাঝে”ই নিশি”র ডাক পরল। নিশি ভয়ে ভয়ে নিশানের রুমের দিকে যেতে থাকে।
.
নিশান রাগের কারনে স্যুট”টা খুলে চেয়ারে ছুঁড়ে ফেলে। হাত দিয়ে গলায টাই লুজ করছে। বার বার মাথায় হাত দিচ্ছে। তার নিশি”র দিকে কেউ এভাবে তাকিয়েছে সে এটা মেনে নিতে পারছে না।
.
নিশি কেবিনের সামনে এসে নক করে…..
– স্যার আসবো…!
– ( নিশি”র আওয়াজ শুনে নিশান একটু ঠান্ডা হয়। তারপর টেবিলে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে বলে….) আসো।
– স্যার আমাকে ডেকেছেন।।
– ( নিশি”র দিকে তাকাতেই ওর তিল চোখে পরল ) হুম…!!
– জ্বি স্যার….
নিশান টাই”টা আবার ধরে লুজ করে শার্টে”র হাতার বোতাম খুলে ফ্লোট করতে করতে নিশি”র কাছে আসতে লাগল। নিশি দেখল নিশানের চোখ দুটি রাগে লাল হয়ে আছে। নিশানের সামনে আসা”তে নিশি পিছুতে লাগল।
নিশি”র পিছাতে দেখে নিশান বলল….
– পিচ্ছাচ্ছ কেন…?
– আপনি আগাচ্ছেন কেন..?
– তাই বলে তুমি পিছাবে..!
নিশি দেওয়ালের সাথে আটকে গেল। পেছনে যাওয়ার আর জায়গা নেই। কিন্তু নিশান তাও আগাচ্ছে। নিশি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে।
.
নিশান এক হাত দেওয়ালে রাখে আর আরেক হাত নিশি”র দিকে আগাতে থাকে। নিশি ভয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়। নিশি”র হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে। হঠাৎ নিশানের হাত নিজের কপালে ছোঁয়া লাগলে নিশি চোখ খুলে দেখে নিশান ওর কপালের টিপ খুলছে।
নিশানের ছোঁয়া পেয়ে নিশি”র শরীর শিউরে উঠে। নিশি কথা বলা”র শক্তি হারিয়ে ফেলে। হুট করেই নিশান নিশি”র গলা থেকে ওড়না”টা নিয়ে নেয়। নিশি অবাক হয়ে যায়।
নিশি : স্যার……
কিন্তু নিশান”র কানে যেন কথা যায় না।
.
নিশান ওড়না”র ভাজ”টা খুলে নিশি”র গায়ে আবার বিছিয়ে দেয়। যাতে নিশি”র পুরো শরীর ঢেকে যায়। তারপর নিশি”র হাত ধরে টেবিলের কাছে নিয়া নিয়ে। নিশি খেয়াল করে নিশান ওর হাত শক্ত করে ধরে আছে। সেটা যে রাগে এটাই বোঝাই যাচ্ছে। নিশি হাতে ব্যাথা পেয়ে কুঁকড়ে ওঠলে নিশান ওর হাত ছেড়ে দেয়। নিশান টেবিল থেকে কয়েকটা টিস্যু নিয়ে নিশি”র মুখ”টা হালকা করে চেপে ধরে। নিশি নিশানের হাত ধরে। নিশান আস্তে আস্তে নিশি”র ঠোঁট”র লিপস্টিক মুছতে থাকে। নিশি নিশানের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে।।
চলবে……🖤
( কেমন লাগলো জানাবেন । আর প্লিজ সবাই গঠন মূলক কমেন্ট করবেন। )