গল্পের_নাম : অভ্রভেদী_প্রণয় পর্ব : ৫( #crazy_for_you )
Writer : #Mimi_Muskan🖤
||||
🍂…….
নিশি হাতে ব্যাথা পেয়ে কুঁকড়ে ওঠলে নিশান ওর হাত ছেড়ে দেয়। নিশান টেবিল থেকে কয়েকটা টিস্যু নিয়ে নিশি”র মুখ”টা হালকা করে চেপে ধরে। নিশি নিশানের হাত ধরে। নিশান আস্তে আস্তে নিশি”র ঠোঁট”র লিপস্টিক মুছতে থাকে। নিশি নিশানের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে।।
লিপস্টিক মুছে দু”জন দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকে। নিশান হাত নিশি”র ঠোঁটে”র ওপর রাখে। হঠাৎ করেই নিশি”র ঘোর ভাঙে। সে বলে ওঠে….
– স্যার…!
– ( নিশি”র কথায় নিশানের ঘোর ভাঙে । সে তাড়াতাড়ি হাত সরিয়ে নেয় । ) ।
– ( নিশি কোমরে হাত রেখে ) আপনি এটা কি করলেন। আমার সাজ কেন নষ্ট করলেন।
– ( নিশান রেগে নিশি”র বাহু চেপে ) তোমার সাহস কতো তুমি আমাকে প্রশ্ন করছো…? ( ধমকে )
– ( নিশি ভয় পেয়ে ) না না স্যার আমি তো শুধু জিজ্ঞেস করছিলাম ।
– যাও ওখানে বসে কাজ করো। Hurry up…! ( নিশি”কে ছেড়ে )
– জ্বি স্যার ।
.
নিশি চুপচাপ বসে পরে। কিন্তু কাজ করবে কি তা হলো তার সাথে তাতে তার অবস্থা খারাপ। এতো সাধ করে সাজলো ঘুরতে যাবে জিসানের সাথে আর এই রামছাগল কি না তার সাজ”ই নষ্ট করে দিয়েছে। নিশি ল্যাপটব নিয়ে বসে ভাবতে থাকে।
নিশি”র এরকম চুপচাপ অবস্থা দেখে নিশান নিশি”কে ধমক দেয়…!
নিশি লাফিয়ে ওঠে…!
– কি হচ্ছে মিস নিশি..! কাজ করছেন না কেন…?
– আর কাজ..!( বিরবির করে )
– কিছু বললেন…?
– না স্যার করছি….! ( রামছাগল একটা। আমার সাথে”র বারো”টা বাজিয়েদিছে। যদি একবার পাই তোকে দেখিস কি করি। কিন্তু উনি এমন”টা কেন করল..? জিজ্ঞেস করব..? থাক বাবা একবার ধমক খেয়ে সাধ মিটেনি আবার জিজ্ঞেস করলে আমাকে না আছাড় দেয়। আচ্ছা আমি অফিসের ড্রেস আপ করিনি তাই বলে কি এমন করল। হুহ 😤 আজকেই ড্রেস কিনবো ।।)
.
তখন নিশান বলে উঠল……
– মিস নিশি….! অফিসের ড্রেস আপ আপনার পরা লাগবে না। আপনি এইভাবেই আসবেন প্রতিদিন। এভাবেই মানে এখন যেমন লাগছে ঠিক সেরকম got it…!
– ওকে স্যার । ( শালা রামছাগল।🤬)
নিশি আজ সারাদিন”ই নিশানের কেবিনে ছিল। একবারের জন্যও বের হতে দেয় নি নিশান ওকে। লাঞ্চ টাইমেও তাকে কেবিনে বসিয়ে খাইয়েছে। যার কারনে রকি আর নিশি”কে দেখতে পায় নি। নিশান যত”ই নিশি”র সাজ নষ্ট করুক নিশানের কাছে তাও নিশি”কে আজ বিশ্ব সুন্দরী লাগছে। তার ভয়ে নিশি”কে আজ বের হতে দেয় নি। শুধু কাজে”র ওপর রেখেছে…!
.
অফিস শেষ হবার পর নিশি আর জিসানের সাথে দেখা করেনি। জিসান”কে কল করে না বলেছে।
এদিকে জিসান নিশি”র এতো ইগনোর সহ্য করতে পারছে না। তাই ও ভাবে কিছু একটা করবে…!
।।
রাতে নিশি’র বাসায়……
রায়হান : মামনি…
নিশি : হুম বাপি…
রায়হান : কাজ কেমন লাগছে তোমার..?
নিশি : ( আর কাজ আমার লাইফের তেরো”টা বাজিয়েছে) ভালো বাপি..!
রায়হান : অসুবিধা হচ্ছে না তো..?
নিশি : না বাপি…!
রায়হান : আচ্ছা মন দিয়ে কাজ করো..!
নিশি : হুম।
তখন জিসানের কল আসে। নিশি ফোন নিয়ে রুমে চলে যায়…….
– হুম বল..!
– কাজ”টা কি হলো…?
– কোনটা..?
– আজ দেখা করার কথা ছিল ভুলে গেলি….?
– আরে না তা না।..
– তাহলে আসলি না কেন..? তুই কিন্তু এখন আমাকে সময় দিস না…
– আরে সেরকম কিছু না। অনেক কাজ ছিল রে আজ তাই..! বিশ্বাস কর …
– রাখ তুই..!
– আরে জিসান শোন তো…?
– কিছু শোনার মুড নাই..!
– ওকে ভাবছিলাম এই Friday সারাদিন তোর সাথে ঘুরবো…..!! কিন্তু তোর ইচ্ছা না থাকলে ঠিক আছে…!
– আরে আরে শোন তো।।।
– হুম..!
– সত্যি তুই আসবি তো..!
– আরে বাবা হ্যাঁ আসবো।
– promise কর।।।
– promise.
– ওকে তাহলে আমি সবাই”কে বলি অনেক আড্ডা দিবো।
– হুম। বলিস…! সারাদিন আড্ডা দেবো আমরা..!
– আচ্ছা ঠিক আছে..!
– হুম…!
নিশি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে নিচে তাকিয়ে নিশানের গাড়ি দেখতে পায়।
– জিসান আমি রাখছি পরে কথা হবে হুম।
– ওকে।
নিশি : আরে এই রামছাগলের গাড়ি এখানে…! কি করছে..! আচ্ছা আশেপাশে উনার গফ এর বাসা নেই তো আমি আবার। দেখা করতে আসেনি তো আবার। হি হি..! যাই দেখে আসি।
.
আসলে নিশান নিশি”কে দেখতে এসেছে। এতোক্ষণ বেলকনিতে নিশি”কে দেখছিলো। কিন্তু নিশি চলে যাবার পর নিশান ভাবে নিশি হয়তো ঘুমিয়ে গেছে। তাই নিশান গাড়ি থেকে বের হয়। নিশি”র রুমের গ্রিল বেয়ে নিশি”র রুমে যেতে থাকে।
ও
এদিকে নিশি নিচে নেমে এসে গাড়ি”তে নিশান”কে খুঁজতে থাকে। কিন্তু নিশান”কে পায় না। সে তো জানেই না নিশান ওর ঘরে।
নিশি : আরে এই রামছাগল”টা গেলো কোথায়..? আচ্ছা গফ এর বাসায় যায় নি তো..! কি করি..! চলে যাবো..! এতো কষ্ট করে নিচে আসলাম আর এই রামছাগলের রামছাগলনি না দেখে চলে যাবো। আমার মনে হয় গফ কে নিতে গেছে। নিশ্চয়ই ঘুরতে যাবে এখন। আমি বরং এখানে একটু দাড়িয়ে থাকি। দেখি আসে কি না।।
.
নিশান নিশি”র রুমে যেয়ে নিশি”কে খুঁজতে থাকে। কিন্তু তাকে পায় না।
নিশান : আমার জান পাখি”টা গেলো কোথায় এতো রাতে…!!
নিশান পুরো রুম চেক করে এসে বেলকনিতে দাঁড়ায়। দেখে নিশি ওখানে দাঁড়িয়ে আছে…!
নিশান : বাহ্ । আমি জান পাখি”কে দেখতে এখানে আসলাম আর আমার জান পাখি আমার কাছে”ই গেলো। কিন্তু এতো রাতে এই মেয়ে ওখানে কি করে…! কিছু না কিছু তো করতেই গেছে। জানতে হবে।
.
নিশি : এই রামছাগল স্যার এতোক্ষণ ধরে কি করছে…! আজব তো। এতো দেরি লাগে নাকি গফ’কে আনতে। ইশ্ দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে আমার মাসুম পা দুইটা ব্যাথা করছে। তার মধ্যে এখন ভয়ও লাগছে। কি রকম শব্দ আসছে আশপাশ থেকে। দাঁড়া তোর ঘুরতে যাবার শখ আমি বের করছি..!
.
নিশি নিশানের গাড়ির টায়ার পাংচার করতে যায়। কিন্তু পরে কি ভেবে গাড়ি”র পেট্রোলের ঢাকনা বের করে দেয়।।
নিশি : হি হি হি। গাড়ি পাংচার করলে কি হবে। এক্সট্রা টায়ার তো আছে। কিন্তু এক্সট্রা পেট্রোল তো নেই । এখন সেই হবে…! মাঝ রাস্তায় গাড়ি থেমে যাবে। আর আল্লাহ প্লিজ প্লিজ প্লিজ তখন যেন শাকচুন্নী এসে স্যারের গফ’কে ভর করে। ইশ্ কতো মজা হবে।।🤣🤣
স্যারের রোমান্সের বারো”টা ধুরি তেরো”টা বেজে যাবে। ভালো করেছিস নিশি এই হলো আজকে আমার সাজ নষ্ট করার revenge.
.
ওখানে নিশান বেলকনিতে গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নিশি’কে দেখছে আর হাসছে।
– আমার জান পাখি”টার কি বুদ্ধি। কি করেছে এইসব..! কিন্তু জান পাখি এখন তোমার জালে তুমি নিজেই ফাসবে। দেখো তুমি…!
.
এরমধ্যে কোথা থেকে কতোগুলি কুকুর আসে। নিশি কুকুর”কে প্রচুর ভয় পায়। কুকুর গুলো নিশি”কে দেখে ঘেউ ঘেউ করতে শুরু করে।
নিশি : হায় আল্লাহ এখন কি করি।। য..যদি এই কুকুর গুলো আমাকে কামড়ে দেয়। ত..তত..তখন কি হবে। এগুলো তো সরছেও না । আমি যাবো কিভাবে..?
কুকুর গুলো নিশি”র আরো কাছে আসতেই নিশি ভয়ে নিশানের গাড়িতে ওঠে পেছনের ছিটে বসে পরে।
নিশি : ইয়া আল্লাহ এবারের মতো বাঁচাও দাও। আর জীবনে কারো পিছনে লাগবো না।। ( বলেই নিশি কানে হাত দিয়ে বসে থাকে । আর আল্লাহ আল্লাহ করতে থাকে )
.
কিছুক্ষণ পর নিশান এসে কুকুর গুলো”কে কিছু বিস্কুট দেয়। তারা সেগুলো খেতে থাকে। নিশান তাদের আদর করে একটা বাঁকা হাসি দেয়।
তারপর গাড়িতে বসে পরে গাড়ি স্টার্ট দেয়।
.
নিশি : আমার কেন মনে হচ্ছে ভুমিকম্প হচ্ছে। ইয়া আল্লাহ ভূমিকম্প”র সময় তো গাড়িতে থাকে না। আমি তো তাহলে মরে”ই যাবো..!
( বলেই গাড়ির দরজা খুলতে যাবে কিন্তু তখন দেখে গাড়ির দরজা লক করা ) গাড়ি”র দরজা লক করা কেন…? আমি যখন ওঠেছিলাম তখন তো ঠিকই ছিলো। এখন এমন”টা কি করে হলো..?
নিশান : আমি করেছি তাই। ( গাড়ির সামনে আয়নায় তাকিয়ে )
নিশি : আপনি…..!!!!!! ( চেঁচিয়ে )
নিশান : চেঁচাও কেনো..! চুপ..!
নিশি : আ…আপ….আপন…আপনি এখানে…!!
নিশান : আমার গাড়িতে তো আমিই থাকবো না..!
নিশি : মানে…!! ( নিশি বাইরে তাকাল। ) এই তার মানে ভূমিকম্প হচ্ছে না গাড়ি চলছে…! তার মানে আমি বেঁচে গেছি…! 😇
নিশান : পাগলের মতো কিসব বলছো….?
নিশি : আরে না না কিছু না..! তা আপনার গফ কোথায়..? দেখছি না তো..!
নিশান : ( গাড়ি থামিয়ে পেছনে তাকিয়ে ) গফ মানে..!
নিশি : আপনি তো আপনার গফ”র সাথেই দেখা করতে এসেছন না..! তো কোথায় সে…!
নিশান : তোমার মাথায়…!
নিশি : কিহহহহ……!!!
নিশান : আবার চেঁচাও। আচ্ছা এটা কি তোমার অসুখ নাকি।কথায় কথায় চেঁচিও।
নিশি : না মানে আমি তো ভাবলাম আপনি আপনার গফ”র সাথে দেখা করতে এসেছেন।
নিশান : হ্যাঁ এসছি..!
নিশি : সত্যি…!! ( নিশি পেছন থেকে বেরিয়ে সামনের সিটে নিশানের সামনে বসে ) কোথায় সে….??
.
নিশান কথা না বলে নিশি”র কাছে যায়। নিশানের এমন আগানো দেখে নিশি”র হার্টবিট বাড়তে থাকে। সে চোখ বন্ধ করে নেয়। নিশান নিশি”র সিট বেল বেঁধে বলে…
– গাড়িতে বসলে সবসময় সিট বেল বাধবে বুঝলে…!
– ( নিশি মাথা নাড়িয়ে ) হুম।
নিশান নিশি”র থেকে কিছুটা দূরে চলে যায়। নিশি এবার একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়। তারপর আবার বলা শুরু করে….
– তাহলে বলুন আপনার গফ কোথায়….?? কেমন দেখতে সে..?? অনেক সুন্দরী না। তা তাকে আনলেন না কেন…? আমিও একটু দেখতাম। কতো ইচ্ছা ছিলো দেখার। এতোক্ষণ এইজন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম জানেন। ( বলেই জিহ্বা কামড় দেয় )
– ( নিশান ড্রাইভ করতে করতে নিশি”র দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বলে ) কি বললা তুমি…!
চলবে……🖤
( কেমন লাগলো জানাবেন । কালকে কয়েকজন”র কমেন্ট অনেক ভালোলাগল। সতিই কমেন্ট গুলা অনেক সুন্দর ছিলো। ধন্যবাদ তাদের 😘 )
আগের পর্বের লিংক
https://www.facebook.com/groups/371586494563129/permalink/380227263699052/