গল্পের_নাম : #অভ্রভেদী_প্রণয় পর্ব : ৭ ( #crazy_for_you )
Writer : #Mimi_Muskan
পরদিন সকালবেলা___
নিশি যথারীতি সময়ে অফিসে চলে আসে। নিশান তখনো এসে পৌঁছায় নি। তাই নিশি একটু অফিস ঘুরতে থাকে।
নিশি : এই রামছাগল স্যারের জন্য এই অফিস”টা ঘুরতেই পারলাম না। আজ শান্তি মতো একটু ঘুরবো।
.
তখন রকি অফিসে আসে। নিশি”কে একা পেয়ে সে নিশি”র পিছনে যায়।
নিশি হাঁটতে হাঁটতে ঘুরতাছে আর দেখতাছে।
নিশি : ধুর এই দিয়া টাও এখনো আসলো না। একা একা ভালো লাগছে না।
রকি : ( পেছন থেকে ) আরে আমি আছি তো ।
নিশি : আপনি ( এই হারামি”টা এখানে )
রকি : হুম তোমাকে সঙ্গ দিতে আসলাম
নিশি : ওহ্ ( ধুর শালা তোর সঙ্গ কে চাইছে )
রকি : তা কি করছো
নিশি : আমার মনে হয় আমি হাঁটছি
রকি : হ্যাঁ তা বটে ( এই মেয়েটা দেখতে খুব সুন্দর )
নিশি : হ্যাঁ
রকি : তুমি জানো তুমি দেখতে খুব সুন্দর
নিশি : হ্যাঁ ( চলে এসেছে ফ্লাট করতে । শালা’র একটাই ডায়লগ )
রকি : তা তোমার বফ আছে
নিশি : হ্যাঁ আছে ( এবার ঘুরিস আমার পিছু পিছু )
রকি : না মানে কি বললা
নিশি : I have a bf .
রকি : ওহ্ আচ্ছা ( তা যাই থাকুক না কেন তুমি তো আমার”ই হবে )
নিশি : হুম
রকি : তাহলে আমরা কি ফ্রেন্ড হতে পারি
নিশি : ফ্রেন্ড
রকি : হ্যাঁ। কোনো সমস্যা?
নিশি : নাহ সমস্যা কেন থাকবে।
রকি : হুম। ( এখন দেখো তোমাকে কি ভাবে আমি নিজের করে নেই ।)
.
এমন সময় নিশান চলে আসে। নিশি চলে যায়। রকি তখন বাঁকা হাসি দেয়। নিশ্চয়ই ওর মনে কিছু চলছে কিছু একটা করবে সে।
নিশান কেবিনে যাওয়ার সাথে সাথে নিশি নিশানেল পিছন পিছন যায় ।
নিশি : good morning স্যার।
নিশান : হুম গুর্ড মনিং। তা মিস নিশি আজ কোন কোন মিটিং আছে।
নিশি : স্যার দু”ঘন্টা পর একটা মিটিং আছে। তারপর আমাদের নতুন প্রোজেক্ট”র সাইডে যেতে হবে। সেখানে আপনার যাওয়া”র কথা ছিলো আজ।
নিশান : হুম। মিস নিশি এক কাপ কফি নিয়ে আসুন আপনি। আমার মাথা”টা খুব ব্যাথা করছে।
নিশি : কেন স্যার কালকে আপনার ঘুম হয়নি। আমি তো তখন বাসায় গিয়ে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। তারপর আবার আজকে আপনার আগেও চলে এসেছি। আর আপনি আসলেন দেরি করে তারপর আবার আপনার ঘুমও হয়নি। ( হাতে কলম নিয়ে মাথায় নাড়তে নাড়তে আনমনে বলতে থাকে )
.
নিশান : মিস নিশি ( ধমকে )
নিশি : ( চমকে উঠে ) জ্বি স্যার।
নিশান : ফালতু বক বক বন্ধ করে যা করতে বলেছি তা করুন। আর বলতে গেলে আপনার এই ফালতু বক বক এর কারনেই আমার মাথা ব্যাথা করে।
নিশি : what the faww kota ( বির বির করে )
নিশান : কিছু বললেন?
নিশি : না স্যার ।
নিশান : তাহলে যান। আর আপনি বানিয়ে নিয়ে আসবেন।
নিশি : অ্যা…
নিশান : অ্যা না হ্যাঁ যান এখন
নিশি : শালা নিশ্চয়ই আবার গফ এর সাথে ঘুরতে গিয়েছিল। গফ এর বাসা তো আমার বাসা”র ওখানেই। তাই তো আমাকে দিয়ে আসল গফ এর সাথে দেখা করবে এই অজুহাতে । সারারাত গফ এর সাথে ঘুরে এখন মাথা ব্যাথা করছে আর তার জন্য কফি বানাবো আমি। কেন রে তোর গফ কি করে। তাকেই বলতে পারতি না। শুধু শুধু আমার মতো মাসুম বাচ্চা”কে ঘাটানোর বুদ্ধি ( বির বির করে বলতে বলতে বের হতে যাবে এমন সময় নিশান আবার বলে )
নিশান : মিস নিশি ব্লাক কফি without sugar.
নিশি : ওকে ( মুখ ভেংচি দিয়ে )
.
নিশি বের হওয়ার নিশান হেসে দেয়।
নিশান : হায়রে আমার জান পাখি। এখনই সামলাতে পারো না। বিয়ের পর কি করবে তুমি। যাই হোক বিয়ের পর তোমাকে আমি খুব জ্বালাবো ।
কিছুক্ষণ পর..
নিশি রেগে কফি নিয়ে আসে। নিশান নিশি’র দিকে তাকিয়ে থাকে। নিশি’কে দেখে মনে হচ্ছে যেন ও যুদ্ধ করে এসেছে। নিশি নিশান”কে এমন ভাবে দেখছে যেনো ওখনই তাকে কাঁচা খেয়ে ফেলবে।
.
নিশি ধপাশ করে কফি’র মগ’টা নিশানের টেবিলে রেখে….
– এই নিন।
– ( নিশান কফি’তে এক চুমুক দিয়ে বলে ) এতো মিষ্টি কেন। আমি তো বললাম without sugar .তাহলে..
– স্যার আমি তো চিনি দেয় নি। দেখি আমি একটু ( নিশানের হাত থেকে কফি নিয়ে নিজে খেয়ে ) স্যার আমার মনে হয় আপনার টেস্ট নষ্ট হয়ে গেছে। একটু ও চিনি নেই এখানে।
– দেখি ( নিশির হাত থেকে কফি নিয়ে নিজে খেয়ে ) হ্যাঁ ঠিক আছে এখন। আপনি এখন যেতে পারেন।
– হুহ ( ভাগ্যিস আমি টেস্ট টা করলাম। না হলে বলতো আবার বানিয়ে নিয়ে আসতে )
.
নিশি চলে যাবার নিশান মুচকি হেসে দেয়। এটাই চেয়েছিল সে । আবার জ্বালাবে নিশি”কে । তাই কিছুক্ষণ পর আবার ডাকল…
নিশি : স্যার ডেকেছেন আমাকে
নিশান : হুম । এই নাও এই ফাইল”টা চেক করো
নিশি : স্যার এটা কালকেই করেছি।
.
এমন সময় রকি এসে নক করে….
রকি : স্যার আসবো
নিশান : হুম
রকি : স্যার এই ফাইল”টা
নিশান : হুম দাও।
রকি : হুম স্যার
নিশান : তা মিস নিশি কি বলছিলাম
নিশি : স্যার এই ফাইল’টা কালকেই দেখেছি
নিশান : ৬ মাস আগের ফাইল গুলো নিয়ে আসো। সেগুলো চেক করবো।
.
রকি এই কথা শুনে ওর মাথায় একটা বুদ্ধি আসলো। সে নিশান’কে বলে কেবিন থেকে চলে গেলো। কিন্তু নিশি সেখানেই থেকে গেল..
নিশি : স্যার ফাইল গুলো কোথায় পাবো?
নিশান : পিয়ন”কে জিজ্ঞেস করো। উনি জানবেন।
নিশি : হুম। ( এই রামছাগল স্যার’টা আমাকে শান্তি’তে থাকতে দিবে না। এই ৬ মাস আগের ফাইল তার কেনো লাগবে। শুধু শুধু আমাকে ঘাটানো। ধুর ভাল্লাগেনা। )
.
রুম থেকে বের হয়ে নিশি পিয়নের কাছে গেলো। পিয়ন বলল সব স্টোর রুমে। নিশি নিজেই গেলো ফাইল গুলো আনতে।
স্টোর রুম গিয়ে খুঁজে পেতে নিশি’র অনেক সময় পার হয়ে গেল। তারপর সেখানে গিয়ে খুঁজতে লাগল। কিন্তু সে ফাইল গুলো খুঁজেই পাচ্ছে না।
.
প্রায় অনেকক্ষণ পর…
নিশি এখনও না ফাইল নিয়ে আসেনি তাই নিশান কেবিন থেকে বের হয়ে পিয়নের কাছে গেলো।পিয়ন জানালো নিশি স্টোর রুমে নিশান সেদিকে গেল।
.
রকি অনেক্ষণ ধরেই স্টোর রুমে’র বাইরে দাঁড়ানো। সেখানে হঠাৎ নিশানের উপস্থিত পেয়ে রকি সেখান থেকে পালিয়ে গেল।
.
এদিকে নিশি অনেক খুঁজে না পেয়ে দেখল একটা টুল আলমারির সামনে। আর আলমারির উপরে অনেক ফাইল। নিশি ভাবল হয়তো বা ফাইল গুলো ওখানেই থাকতে পারে। তাই সে টুল এ উঠতে লাগল। ঠিক তখনই নিশান রুমে ঠুকলো আর নিশি’র টুল ও নড়তে লাগল। কিছু বুঝতে পারার আগেই নিশি গিয়ে নিশানের উপর পরল। দুইজনেই মাটিতে পরে গেল।
.
নিশি নিশানের বুকের উপর পরে আছে। নিশির চুল গুলো সব ওর মুখের উপর। নিশান এক হাত দিয়ে চুল গুলো সরিয়ে দিল।দেখে নিশি ঠোঁটে উল্টে তাকিয়ে আছে।
নিশান : নিশি..!
নিশি : আমার পা..
নিশি’র কথা শুনে নিশান তাড়াতাড়ি করে ওঠে নিশি’কে কোলে তুলে নিল। সবার সামনে নিশি’কে কোলে করে নিয়ে কেবিনে আসতে লাগল। নিশি কে নিশানের কোলে দেখে সব স্টাফ দাঁড়িয়ে গেল। দিয়া আর রকি হা করে তাকিয়ে আছে । রকি দেখে মনে মনে বলতে লাগল….
– স্যার আজ রুমে না গেলে নিশি আমার কোলে থাকতো। ধুর..!
নিশি নিশানের দিকে তাকিয়ে আছে।
.
কেবিনে আসার পর নিশান নিশি’কে বসিয়ে তাড়াতাড়ি ওর পা ধরতে যাবে তখন নিশি নিশানের হাত ধরে ফেলল।নিশান নিশি’র দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকালে নিশি হাত ছেড়ে দিল। নিশান হাঁটু গেড়ে বসে হাটুতে নিশি’র পা রাখল। নিশি ব্যাথায় কুঁকড়ে ওঠে। নিশান দেখল নিশি’র পা লাল হয়ে গেছে। মনে হয় পা মুচকে গেছে। নিশান কিছু না ভেবে নিশি’কে আবার কোলে তুলে গাড়িতে গিয়ে বসাল। তারপর নিশি’র সিটবেল বেঁধে গাড়ি র্স্টাট দিলো।
.
পুরো গাড়িতে নিশি চুপচাপ বসে ছিল। কিছু বললো না । হঠাৎ করেই নিশান গাড়ি থামিয়ে নিশি’কে কোলে তুলে নিল। নিশি তাকিয়ে দেখল এটা হসপিটাল। নিশান নিশি’কে নিয়ে হসপিটালে গেল। তাড়াতাড়ি করে ডাক্তার’কে ডেকে নিশি’কে দেখাল।
.
ডাক্তার নিশি’র পা ধরলে নিশি নিশানের হাত ধরে ফেলে। কি মনে করে তাই নিশি আবার হাত ছেড়ে দিলো কিন্তু নিশান আবার নিশি’র হাত নিজের হাতের মুঠোয় নেয়। তারপর ডাক্তার নিশি’র পা দেখে ব্যান্ডেজ করে দেয় ।
.
নিশান : ডাক্তার বেশি কিছু হয় নি তো। পা ঠিক আছে তো ওর।
ডাক্তার : বেশি কিছু হয় নি মি: নিশান । আপনার স্ত্রী একদম ঠিক আছে।
ডাক্তার এর কথা শুনে নিশি চোখ বড় বড় করে নিশানের দিকে তাকাল। নিশানও নিশি’র দিকে তাকাল। নিশান নিশি’র এমন চাহনি’তে হেসে দিল
চলবে……..
আগের পর্বের লিংক
https://www.facebook.com/groups/371586494563129/permalink/381738876881224/