অসুস্থ_ভালোবাসা
লেখিকা: তিয়ানা তিথি
পার্ট_17
.
তিথি শান্তা থেকে অয়নের পছন্দের খাবার গুলো জেনে নিয়ে খুব যত্ন করে রান্না শেষ করলো কিন্তু সমস্যা হলো অয়নকে কীভাবে বাসায় আসতে রাজি করাবে।
“” শান্তা এখন কি করবো? তোমার স্যার তো আসে না।
“” ম্যাডাম আপনি স্যার রে ফোন কইরা কন আপনি স্যার না আসলে খাইবেন না। দেখবেন স্যার হাজির।
“” ঠিক বলছো তো?
“” আমার কি ঠ্যাকা পরছে বেঠিক কইতে যামু।
শান্তা রাগ নিয়ে কথা গুলো বলে চলে গেলো মেয়েটা এমনই অদ্ভুত তিথি কিছুক্ষন শান্তার চলে যাওয়া দেখে অয়ন কে কল করলো। রিং হচ্ছে কিন্তু অয়ন ধরছে না তিথিও ছারার পাত্রি নয় অনবরত কল দিয়েই যাচ্ছে…
“” হ্যালো..
“” এই তোমার ফোন ধরার সময় হলো? কখন থেকে কল দিচ্ছি।
“” কল দিয়েছো কেনো তুমি?
“” আমি তোমাকে কল দিতে পারিনা বুঝি?
“” তোমার সাথে ফালতু কথা বলার সময় আমার নেই।
“” তুমি এইটা বলতে পারলা?
“” এতো কথা না বলে কি বলবা বলে ফেলো?
“” বাসায় আসো একসাথে খাবো।
“” আমি আসতে পারবো না।
“” তুমি না আসলে আমি খাবো না বলে দিলাম।
“” যা খুশি তা করো রাখছি। আমাকে ডিস্টার্ব করো না।
“” হ্যালো…হ্যালো…..
অয়ন তিথিকে আর কথা বলার সুযোগ না দিয়ে কেটে দিলো। তিথি মোবাইলের দিকে একবার তাঁকালো টেবিলে রাখা খাবার গুলোর দিকে একবার তাঁকিয়েই কান্না করে দিলো। খুব কষ্ট হচ্ছে তিথির এতোটা খারাপ ব্যবহার করতে অয়ন কীভাবে পারছে সেইটা ভেবেই খুব কান্না পাচ্ছে।
.
তিথি না খেয়ে থাকবে এইটা কিছুতেই মানতে পারবেনা অয়ন তাই বাধ্য হয়ে বাসায় আসলো। এসে দেখে তিথি খাবার টেবিলেই গালে হাত দিয়ে বসে আছে। আজ তিথি লাল পারের কালো শাড়ি পরেছে, চুল গুলো ছেরে রেখেছে, নাকে নাকফুল, হাতে চুরি খুব সুন্দর দেখাচ্ছে তিথি কে অয়ন ঘোর লাগা দৃষ্টিতে চেয়ে আছে বেশিক্ষন তাঁকিয়ে থাকতে পারলো না চোখ নামিয়ে নিয়ে বলল..
“” তোমার জন্য আমার সব কাজ ফেলে আসতে হলো আর কখনো আমাকে অফিসে কল করে ডিস্টার্ব করবে না দাও খেতে দাও।
তিথি অয়নের কথায় চমকে উঠলো সামনে তাঁকাতেই দেখে অয়ন। এক গাল হেসে দিয়ে বলল…
“” আমি জানতাম তুমি আসবে। বসো আমি খাবার দিচ্ছি।
“” কি ব্যপার তুমি খেতে বসছো না কেনো??
“” আমি তোমার হাতে খাবো। তুমি নিজে খাবে আর আমাকে খাইয়ে দিবে।
“” আমি পারবো না তোমাকে খাইয়ে দিতে। ঢং করো না খেয়ে নাও নিজে।
“” খাইয়ে না দিলে খাবো না বললাম তো।
অয়ন আর কোনো উপায় না দেখে তিথি কে খাইয়ে দিচ্ছে আর নিজে খাচ্ছে….
“” কেমন হয়েছে রান্না? আজ আমি রান্না করেছি তোমার জন্য। সব তোমার পছন্দের খাবার।
“”…………
“” কি হলো বলছো না কেনো? বলো?
“” ভালো…
“” শুধু ভালো?
“” চুপ করে খাও তো আর আমাকেও খেতে দাও।
অয়ন তিথির মুখে খাবার দিতেই তিথি অয়নের আঙ্গুলে কামড় বসিয়ে দিলো অয়ন ব্যাঁথায় শব্দ করে উঠলো..
“” উফফ…..এভাবে কেউ কামড় দেয়?(রেগে গিয়ে)
তিথি কিছু না বলে হাসতে হাসতে খেতে লাগলো…
“” আমি তোমাকে খাইয়ে দিবনা।
“” উফফ…তুমিও না বউয়ের আদরও বুঝো না আমি তো তোমাকে একটু আদর করলাম।
বলেই আবার হাসতে শুরু করলো তিথি..
“” এইটা কে আদর বলে????
“” হুমম বলে তো…এতো কথা না বলে খাওয়াও তো।
অয়ন আর অফিসে গেলো না আজ। ফোন করে জানিয়ে দিলো। রুমে এসে পোশাক চেঞ্জ করছে অয়ন। তিথি রুমে ঢুকতেই দেখলো অয়ন খালি গায়ে দাঁড়িয়ে আছে তিথি একটা দুষ্টু হাসি দিয়ে অয়নকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।
“” অয়ন আমি সারাজীবন এইভাবে তোমাকে জড়িয়ে ধরে থাকতে চাই। তুমি জানো না তোমাকে আমি কতোটা ভালোবাসি।
“” ছারো তিথি..
অয়ন মুখে বলছে ঠিকই ছেরে দিতে কিন্তু মনে মনে চাইছে তিথি এইভাবেই ওকে জড়িয়ে ধরে রাখুক তিথির নরম হাত অয়নের বাহু জড়িয়ে আছে অয়নের শরীর যেনো শীতল হয়ে যাচ্ছে। অয়ন কিছুই বলতে পারছে না তিথি অয়নের পিঠে নাক ঘসতে ঘসতে বলল
“” উহু ছারবো না। রুমে ঢুকে তোমায় খালি গায়ে দেখে নিজেকে সামলাতে পারলাম না তোমার কাছে খুব টানছিলো আমায়…
অয়নের নিশ্বাস ভারী হচ্ছে তিথি অয়নকে ছেরে দিয়ে সামনে এসে দাঁড়ালো দুজন দুজনার দিকে পলকহীন ভাবে তাঁকিয়ে আছে তিথি পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের উপর ভর করে উঁচু হয়ে অয়নের ঘারে আলতো করে চুমু খেয়ে ঘারে নাক মুখ ঘসতে লাগলো। অয়ন আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে তিথিকে দেওয়ালে চেপে ধরে তিথির দুই গাল ধরে ঠোটে ঠোট ডুবিয়ে পাগলের মতো কিস করতে লাগলো তিথি অয়নের পিঠ আকরে ধরলো। অনেকক্ষন পর অয়ন তিথিকে ছেরে দিয়ে বিছানায় ধাক্কা মেরে ফেলে রুম থেকে চলে গেলো। তিথি অবাক হয়ে গেলো অয়নের ব্যবহারে বিশ্বাস করতে পারছে না অয়ন এমনটা করতে পারে। তিথি দুই হাটু মুরে হাটুতে মুখ গুজে কাঁদতে থাকলো..
.
সকালে অয়ন অফিসে যাওয়ার সময় বলে গেলো তিথি যেনো তৈরি থাকে রায়হান ওদের জন্য নাকি আজ সন্ধায় একটা পার্টি রেখেছে। তিথি তাই রেডি হচ্ছে খুব সুন্দর করে সাজলো আর মনে মনে ভাবলো আজ দেখবো তুমি আমাকে ভালোবাসো নাকি ভালোবাসো না মনের অজান্তেই বলে উঠলো মিঃ অয়ন রেডি থেকো আজকের ডোজ টা নেওয়ার জন্য…হি হি হি
চলবে……