আঁধারের_গায়ে_গায়ে তমসা_চক্রবর্তী পর্ব-১৯

আঁধারের_গায়ে_গায়ে
তমসা_চক্রবর্তী
পর্ব-১৯

।।৪৯।।
একদৃষ্টে ডঃ প্রধানের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে রাইমা।’কৃষের মাথা কি দুলল সামান্য!’ – বুঝতে পারল না রাইমা।শুধু প্রিয় বন্ধুর চোখে চোখ রেখে আর্দ্র স্বরে প্রশ্ন করল,

-“প্রেয়সি!”

-“হ্যাঁ রাইমা,প্রেয়সী। আপনি হয়ত কখনো উপলব্ধি করেননি, কিন্তু আপনার বন্ধু আপনাকে সেই ছোটবেলা থেকেই ভালোবাসতেন। ওনার বদ্ধমূল ধারনা ছিল যে আপনিও ওনার প্রতি একই মনোভাব পোষন করেন।তাই বন্ধুত্বের আড়ালে আপনার প্রতি ওনার একটা অতিরিক্ত অধিকারবোধ সবসময়ই কাজ করতো। আপনার ব্যাপারে উনি এতোটাই কনফিডেন্ট ছিলেন, যে লন্ডনে যাওয়ার আগে বা পরে কোনো সময়েই আপনাকে আলাদা করে প্রোপোজ করার কথা ওনার মনে হয়নি। ভেবেছিলেন, ফিরে এসে সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব রাখবেন আপনার সামনে।

কিন্তু উনি ভুলে গিয়েছিলেন ‘আমি যেটা ভাবছি সেটাই যে সামনের মানুষটাও ভাববে তা সবসময় নাও হতে পারে।আমি তাকে ভালবাসি বলেই সেও যে আমাকেই ভালোবাসবে, সব সমীকরণের এতটা সরলীকরণ সবসময় সম্ভব নয়। কিন্তু ভালোবাসার সমীকরন সরলরেখায় না চললেই যে বন্ধুত্বের সমীকরণটাও নষ্ট হয়ে যাবে এমনটা তো নয়।তাই জীবনের একটা সময়ে এসে মানুষকে ছাড়তে শিখতে হয়। ভালোবাসার মানুষটাকে তার স্পেসটা দিতে হয়। বুঝতে হয় যে জীবনে এমন কিছু সম্পর্ক থাকে যাদের বেশি আঁকড়ে ধরতে চাইলে সম্পর্কের মাধুর্য নষ্ট হয়।’

ডঃ প্রধান প্রথম ধাক্কাটা খেয়েছিলেন হিমাংশু রায়ের সাথে আপনার সম্পর্কের কথাটা জানতে পেরে।তাই আপনার জন্মদিনের বাহানায় উনি তড়িঘড়ি কলকাতায় ফিরে আসেন। আপনাদের সম্পর্কের সত্যতা যাচাই করতে। কিন্তু কলকাতায় আসার পরপরই ঘটনাক্রম, সমতার সাথে আলাপ, হিমাংশু বাবুর চরিত্রের শংসাপত্র, সমতার অসহায়তা এবং সর্বোপরি প্রিয় বন্ধুর প্রতি আপনার উদাসীনতা, সবকিছু দিনের পর দিন সমতার প্রতি ওনার দুর্বলতাকে বাড়িয়ে তুলছিল। প্রথমদিকে উনি আসলে আপনাকে দেখিয়ে দিতে চেয়েছিলেন,আপনাকে ছাড়াও উনি ভালো থাকতে পারেন। কিন্তু যখন কাছ থেকে সমতাকে চিনতে থাকলেন,জানতে থাকলেন,সব ভুলে, উনি নিজেকে উজাড় করে দেন সমতার কাছে।”

-“কি যা তা বলছেন আপনি! কৃষানুর সাথে আমার এরকম কোনো সম্পর্ক নেই।মিথ্যে অপবাদ দেওয়া বন্ধ করুন আপনারা!”

চোখ লাল করে উত্তেজনায় কাঁপতে কাঁপতে সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়াতেই পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা লেডি কনস্টেবল এসে সমতার কাঁধে হাত রাখল।

-“উত্তেজিত হয়ে কোনো লাভ নেই ম্যাডাম। চুপচাপ নিজের জায়গায় বসে পড়ুন!”

ফ্যালফ্যাল করে ঘরের সবার মুখের দিকে একঝলক তাকিয়ে নিয়ে ধীরগতিতে নিজের জায়গায় বসে পড়ল সমতা।

-“এখনও তো কিছুই বলিনি, তাতেই এতো উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছেন!সত্যের অনাবৃত চেহারাটা আসলে বড্ড অসহনীয়, তাই না সমতা” – কথার হুলে বিধ্বস্ত সমতাকে আপাদমস্তক জরিপ করতে থাকে মিলি।নত মস্তকে সোফার হাতল খামচে ধরে আছে সমতা।খড়স্রোতা নদী যেন হঠাৎই তার গতি হারিয়েছে।

-“রাইমা আপনি হয়ত জানেন না, আপনাদের বাগানে যে আউট হাউসটা দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে পড়ে আছে, ডঃ প্রধান তিন তিনটে রাত সেখানে কাটিয়ে দিয়েছিলেন, শুধুমাত্র সমতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।”

-“কৃষ!আউট হাউসে!কি বলছেন আপনি!” – বিস্ময়ে হতবাক রাইমা অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে ডঃ প্রধানের মুখের দিকে।রাইমা কিছুতেই বিশ্বাস করে উঠতে পারছে না,তার অন্যতম বিশ্বস্ত সহচর, জীবনের লক্ষ্যে তার এতদিনের সহযোদ্ধা সে কিনা!! বুকের ভেতরে যেন কেমন জ্বালা অনুভব করছে।

লজ্জায় মাথা হেঁট করে বসে আছেন ডঃ কৃষানু প্রধান। মুখে রা কাটছেন না।

-“কি হলো ডঃ প্রধান, বলুন!আমি ভুল বলছি কিছু!”

-“আমার কাছে আর কোনো উপায় ছিল না, বিশ্বাস করুন।” – হেরে যাওয়া সৈনিকের মতোই হঠাৎ আত্মসমর্পণ করলেন ডঃ কৃষানু প্রধান।

-“আমি শুধু সমতাকে প্রোটেক্ট করতে চেয়েছিলাম ম্যাডাম।তাই সেদিন সুযোগ বুঝে আউট হাউসের চাবিটা এবাড়ি থেকে সরিয়ে নিয়েছিলাম।আসলে আউট হাউসের জানলা থেকে সমতার ঘরটা পরিস্কার দেখা যায়। তাছাড়া আমি যে আউট হাউসে থাকছি সেটা সমতাকে জানিয়ে রেখেছিলাম।ওকে বলেছিলাম,কোনো অসুবিধা হলে যেভাবেই হোক আমার নম্বরটা যেন ডায়াল করে..”,

-“এসব কি বলছেন আপনি কৃষানু! – সমতার শিরদাঁড়া দিয়ে উঠে আসছে দুরন্ত থরথরে কাঁপুনি।

– “এসব কথার মানে কি!” – বিদ্যুৎ বেগে মিলির দিকে চোখ ঘুরিয়ে নিল সমতা।

-“কৃষানুর আউট হাউসে থাকার ব্যাপারে আমি কিছুই জানতাম না ম্যাডাম।বিশ্বাস করুন, আমি সত্যিই কিছু জানতাম না”!

কথার মাঝেই ফোঁস করে একটা শ্বাস ছেড়ে সমতার চোখে চোখ রাখলেন ডঃ প্রধান।

-“সত্যিকে বেশিক্ষন লুকিয়ে রাখা যায় না সমতা। আমাকে বলতে দাও!” – ডঃ প্রধানের গলার স্বর ক্রমশ জোড়াল হয়ে উঠলো।

-“ম্যাডাম”, – মিলির দিকে তাকালেন ডঃ প্রধান। -“সেই তিনরাত আমি সাড়ে নয়টা নাগাদ বাড়ির পিছনের দিকের ভাঙা পাঁচিল পেরিয়ে চুপিসারে আউট হাউসে ঢুকে যেতাম।প্রথম দু’দিন কোনো অসুবিধা চোখে পড়েনি। কিন্তু তৃতীয় দিন রাত দশটা নাগাদ আমার ফোনটা বেজে উঠলো।সমতার ফোন।দুবার ডায়াল হয়েই কেটে গেল। তখনই বুঝলাম কিছু অসুবিধা আছে। প্রথমেই জানলার কাছে ছুটে যাই।সমতার ঘরের জানলাটা খোলাই ছিল। ঘর অন্ধকার।মনে হলোনা ঘরের ভেতর কেউ আছে বলে!
চিন্তায় পড়ে গেলাম।গেল কোথায় মেয়েটা।সন্তর্পনে নিজের ব্যাগটা নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসি। দেখলাম স্টাডির আলোটা জ্বলছে। সমতাকে ফোন করি তখষ। হাঁপাতে হাঁপাতে ফোনটা ধরে সমতা বলে, একতলার স্টাডিরুমে হিমাংশু ওকে আবার ধরেছিল। কিন্তু সমতা যখন নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছিল, তখন হঠাৎই হিমাংশু কেমন যেন টলমল করতে করতে ওকে ছেড়ে টেবিলে গিয়ে বসে পড়ে।আর সমতা সেই সুযোগে পালিয়ে যায় সেখান থেকে।”

-“মিথ্যে কথা।কৃষানুবাবু সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা বলছেন ম্যাডাম।” – সমতা কিছু বলার আগেই চিৎকার করে উঠলেন অনিমেষ বিশ্বাস।সাথে সাথে‌ সবাই চোখ ঘোরাল অনিমেষ বিশ্বাসের দিকে।এতক্ষন চুপচাপ সবার কথা শুনতে থাকা অনিমেষ বাবু যেন উত্তেজনায় কাঁপছেন।

।।৫০।।

আড়চোখে মিলির মুখের দিকে তাকাল উজান। ঠোঁট কামরাচ্ছে মিলি।উদ্বেগের ছায়া চেহারায় স্পষ্ট।

-“মারা যাওয়ার দিন সকালেও হিমাংশু বাবু সমতাকে অফিসে উক্তত্য করতে গিয়েছিলেন।আমি তখন সমতার কেবিনেই ছিলাম। হিমাংশু রায় কেবিনে এসেই আমাকে বাইরে যেতে বলেছিলেন।”

-“তারপর”!!

-“সেদিন সমতার এক অন্যরূপ দেখেছিলাম আমি।আমায় বলেছিল, ‘দুমিনিটের মধ্যে যদি এই লোকটা আমার কেবিন থেকে না বেরিয়ে যায়, আপনি প্লিজ পুলিশ ডাকবেন।আর সাথে রাইমা ম্যাডামকেও খবর দেবেন!’

সমতার গলায় সেদিন কিছু একটা ছিল ম্যাডাম, হিমাংশু রায় সুরসুর করে ওর কেবিন ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। কিন্তু যাওয়ার আগে হুমকি দিয়ে গিয়েছিল,’পালিয়ে আর যাবে কোথায়!ফিরতে তো তোমায় সেনবাড়িতেই হবে।তখন দেখব কে বাঁচায়’!”

-“ডঃ প্রধানও কিন্তু সত্যি কথাই বলছিলেন অনিমেষ বাবু। সেদিন সকালের ওই ঘটনা সমতা জানিয়েছিলেন ডঃ প্রধানকে, হোয়াটসঅ্যাপ করে।চ্যাট ডিটেলেস আছে আমাদের কাছে। আর তারপরেই তো ডঃ প্রধান হিমাংশু রায়ের অধ্যায়টাকে চিরতরে শেষ করে ফেলার মোক্ষম প্ল্যানটা করেছিলেন। প্রতীক্ষা করছিলেন শুধু সঠিক সময়ের।সঠিক সময়ে এলো সমতার মিসকল।প্রায় রাত দশটার পর।আউট হাউস থেকে বাইরে এসে সমতাকে রিং ব্যাক করেন ডঃ প্রধান।আর সমতার থেকে যখন জানতে পারলেন যে হিমাংশু রায় অসুস্থবোধ করছেন, বিন্দুমাত্র কালবিলম্ব না করে সমতার সাহায্য নিয়ে উনি স্টাডিতে পৌঁছে যান।

স্টাডিতে তখন ঘুমের ওষুধের প্রভাবে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হিমাংশু রায়। টেবিলে মাথা গুঁজে পড়ে আছেন।নিঃশ্বাস প্রশ্বাস চলছে কিনা চট করে একবার পরীক্ষা করে নিয়ে ডঃ প্রধান দেখেন পালস বেশ স্লো। সেই সময় যদি অ্যাড্রিনালিনের ডোজটা দিয়ে দেওয়া যায় হিমাংশু রায়ের ভবলীলা চিরদিনের মতো সাঙ্গ হয়ে যাবে। কিন্তু গোল বাঁধলো অন্য জায়গায়। টেবিলে দুহাতের ওপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে গেছেন হিমাংশু রায়।তাই খানিকটা অসাবধানতাবশতই ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জটা মুহুর্তের জন্য ধরতে দেন সমতাকে।আসলে প্রফেশনাল খুনি নন কিনা! তাই হয়তো এতোটা ভাবতে পারেননি।

ডঃ প্রধানের হাতে গ্লাভস থাকলেও সমতার হাতে ছিল না।তাই সিরিঞ্জে ফুটে উঠল সমতার ফিঙ্গার প্রিন্ট। আরও একটা মোক্ষম ভুল ওনারা করে ফেলেছিলেন, সিরিঞ্জটা বাড়ির ওয়েস্ট বিনে ডিসপোস করে।আমাদের সৌভাগ্য যে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে হলেও আমরা ওই সিরিঞ্জ থেকে সমতার ফিঙ্গার প্রিন্ট ট্রেস করতে পারা গেছে।তবে বাকিটা জানার জন্য অবশ্য আমাদের খুব বেশি পরিশ্রম করতে হয়নি।সমতা আর রাইমার কললিস্ট ঘেঁটে ডঃ প্রধানকে ট্রেস করতেই উনি আমাদের কাছে সবটাই স্বীকার করে নিয়েছিলেন।”

-“নাহ্ নাহ্, নাহ্!!আমি বিশ্বাস করি না!আপনি বানিয়ে বানিয়ে মনগড়া কাহিনী বলছেন।সমতা এসব কিছুই করেননি।ওকে আপনারা মিথ্যেই কালপ্রিট বানাচ্ছেন।” – মিলির মুখের কথা শেষ হওয়ার আগেই অনিমেষ বিশ্বাস চাপা গলায় হিসহিসিয়ে উঠলেন। উত্তেজনায় হাত পা রীতিমতো কাঁপতে বছর পঞ্চান্নোর অনিমেষ বাবুর। গলা থেকে ঝরে পড়ছিল একরাশ ধিক্কার।

পাশে বসে সমতা বাজপাখির তাড়া খাওয়া চড়ুইয়ের মতো উদভ্রান্ত চোখে মিলি আর ডঃ প্রধানের দিকে তাকাচ্ছে।তীব্র অপমান, হতাশা আর বিস্ময়ে বাক্যস্ফুর্তি হচ্ছে না তার। উল্টোদিকের সোফায় বসা রাইমারও সেই একই অবস্থা। বিস্ময়ের স্থির অভিব্যক্তি ফুটে উঠেছে প্রত্যেকের চেহারায়।কিন্তু মিলি এসবের তোয়াক্কা না করে অনিমেষ বাবুর দিকে তাকিয়ে নিরস গলায় বলল,

-“আপনার বিশ্বাস অবিশ্বাসে কিছুই যায় আসে না অনিমেষ বাবু।” – হাত বাড়িয়ে উজানের হাত থেকে ফরেনসিক রিপোর্টটা নিয়ে অনিমেষ বাবুর হাতে চালান করলো মিলি। – ” ভালো করে পড়ে দেখুন।এই রিপোর্ট আর ডঃ প্রধানের স্বীকারোক্তিই যথেষ্ট অপরাধীদের অ্যারেস্ট করার জন্য। তাছাড়া ..”,

-“রাখুন আপনার প্রমান!একজন ভিকটিমকে অপরাধী সাজানোর নোংরা খেলাটা বন্ধ করুন আপনি।” – মিলিকে তীব্র ভৎর্সনা করে রাইমার দিকে ফিরলেন অনিমেষ বিশ্বাস। – “বিশ্বাস করুন ম্যাডাম, সমতা কিচ্ছু করেনি।ও নির্দোষ। পুলিশ আর ডঃ প্রধান মিথ্যে বলছেন।” অনিমেষ বাবুর গলায় করুন আকুতির ছোঁয়া। দুশ্চিন্তায় তোলপাড় হওয়া চোখে অনিমেষ বিশ্বাসের মুখের দিকে তাকায় রাইমা।

-“পুলিশের মুখে ঘটনাগুলো শুনলে হয়তো আমিও বিশ্বাস করতাম না কাকাবাবু। কিন্তু কৃষকে আমি চিনি।ও সত্যি গোপন করতে পারলেও মিথ্যে বলতে পারে না।তাই কষ্ট হলেও অবিশ্বাসের যে কোনো জায়গা নেই।” – গলা ধরে আসলো রাইমার।কোনমতে নিজেকে সামলে আবার বলে, -” তাছাড়া যেখানে কৃষ নিজের মুখে তার অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছে সেখানে আপনি এতো সিওর হচ্ছেন কিভাবে, যে সমতা নির্দোষ!!”

-“কারন আমি জানি মেয়েটা নির্দোষ। বিশ্বাস করুন ম্যাডাম,ডঃ প্রধান মিথ্যে বলছেন।” – ফোঁস করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন অনিমেষ বিশ্বাস।

-“আইন আপনার কথায় নয় মিস্টার বিশ্বাস, প্রমানে বিশ্বাস করে।সব ঘটনা, সমতার ফিঙ্গার প্রিন্ট, রাইমা আর ডঃ প্রধানের স্বীকারোক্তি যে চিৎকার করে করে ডঃ প্রধান আর সমতার দিকেই আঙুল তুলছে মিস্টার বিশ্বাস।” – পুলিশের সহজাত গাম্ভীর্যে কাটা কাটা স্বরে কথাগুলো বলতেই উজানকে থামিয়ে দিয়ে দপ করে জ্বলে উঠলেন অনিমেষ বাবু।

-“মিথ্যে..”,

-“কোনটা মিথ্যে কাকাবাবু” – রাইমা নড়েচড়ে বসেছে।

-“সেদিন রাতে আমি নিজের হাতে সিরিঞ্জ সহ অ্যাড্রিনালিনের শিশি কর্পোরেশনের ডাস্টবিনে ডিসপোজ করে দিয়েছিলাম ম্যাডাম,তাহলে…”
কথাটা বলেই আচমকা থেমে যান অনিমেষ বিশ্বাস।দৃশ্যতই অপ্রস্তুত।

-“মামা!!” – অসহায় চোখে অনিমেষ বিশ্বাসের মুখের দিকে তাকাল সমতা। চোখের পাতায় কুচি কুচি জল।

পলকে স্নায়ু টানটান হয়ে উঠলো মিলির। উত্তেজনার বশবর্তী হয়ে অনিমেষ বাবু যে এমন আত্মঘাতী মন্তব্য করে বসতে পারেন তা আগেই আন্দাজ করেছিল মিলি। ঠোঁটের কোনে সুক্ষ্ম হাসি টেনে বলল,

-“সন্দেহ আপনাকে আমার প্রথমদিনই হয়েছিল অনিমেষ বাবু। সেই সন্দেহটা আরোও গেঁথে যায় অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ দেখার পর”!!
#ক্রমশ

/*কমেন্ট বক্সে আগের পর্বগুলির লিংক শেয়ার করা আছে*/

© আমার ভিনদেশী তারা-amar bhindeshi tara-কলমে তমসা চক্রবর্তী
#AmarBhindeshiTara
#TamosaChakraborty
# ভালো লাগলে লেখিকার নাম সহ শেয়ার করবেন 🙏।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here