আঁধারের_গায়ে_গায়ে তমসা_চক্রবর্তী পর্ব-১৮

আঁধারের_গায়ে_গায়ে
তমসা_চক্রবর্তী

পর্ব-১৮

।।৪৬।।

রাইমার দিকে অবাক চোখে একঝলক তাকিয়ে আবার মাথা নামিয়ে নিল সমতা।চোখ ছাপিয়ে মুখ চুঁইয়ে পড়ছে নোনতা গাঢ় অশ্রুধারা।লজ্জায়, আতঙ্কে তার অসহায় শরীরটা বারবার কেঁপে উঠতে থাকল। পাশে বসা অনিমেষ বাবু তাকে স্বান্তনা দেওয়ার ভাষা খুঁজতে ব্যস্ত। উল্টোদিকে মিলির পাশের সোফায় বসা উজানের শরীরের সমস্ত স্নায়ুপেশী উত্তেজিত হয়ে উঠল। নড়েচড়ে বসল সে। মস্তিস্কে আয়লার প্রচন্ডিকা। তবুও গলার স্বর নিস্পৃহ।

-“মানে, আপনি সব জানতেন!সবটা জেনেও চুপ করেছিলেন..!!”

উজানের প্রশ্নের আকস্মিকতায় ঘরে ছড়িয়ে পড়ল গভীর নৈঃশব্দ্যতা।

-“নাআআআ..চুপ করে থাকিনি আমি অফিসার। হিমাংশুকে ভালোবেসে একটা সময় লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছিলাম ঠিকই কিন্তু তার মানে এই নয় যে, মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা মানুষটার আসল চেহারা দেখার পরও এতবড় একটা অন্যায়কে প্রশ্রয় দেব, প্রতিবাদ করব না।এটা সত্যি কথা, আমি দিশাহারা হয়ে পড়েছিলাম। সেই মুহূর্তে কি করনীয়, বুঝতে পারছিলাম না; তাই হিমাংশুকে কয়েকটা দিন ঝিমিয়ে রাখাটাই আপাত দৃষ্টিতে আমার কাছে সোজা সলিউশন ছিল।সেইজন্যই মালতিকে দিয়ে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ছিলাম হিমাংশুর কফিতে। ওষুধের এফেক্টে ও গাঢ় ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে থাকলে, সমতাও সেফ থাকত আর আমিও একটু সময় পেয়ে গিয়েছিলাম, মাথা ঠাণ্ডা করে পরবর্তী পদক্ষেপ ভেবে নেওয়ার জন্য।”

উত্তেজিত রাইমা একটু থেমে একটা লম্বা নিঃশ্বাস নিয়ে অসহায়ের মতো উজানের চোখে চোখ রেখে আবার বলতে থাকল।

-“মানুষের ভেতরটা যে কতটা কদর্য হতে পারে সেটা আপনাদের কল্পনাতীত অফিসার। হিমাংশুর ওপর কয়েকদিন নজর রাখতেই বুঝে গিয়েছিলাম, আমি নিমিত্ত মাত্র।ওর আসল উদ্দেশ্য তো ছিল এই বিশাল সম্পত্তি আর টাকা পয়সা।সাথে এটাও বুঝেছিলাম যেকোনো হঠকারি সিদ্ধান্তে আমার লাইফ রিস্কও হতে পারে।তাই ঠান্ডা মাথায় দু চারটে দিন একটু ভেবে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু হিমাংশুর মনের কদর্যতা সম্পর্কে তখনো আমি পুরোপুরি অবগত হতে পারিনি।লোভ,দম্ভ আর কামুকতা যে মানুষকে কতটা নিচে নামিয়ে আনতে পারে হিমাংশু রায়ের সাথে পরিচয় না হলে এই জ্ঞান অধরাই থেকে যেত।
আমি ওর কামুকতার শিকার হইনি,কারন তাতে ওর লোকসানই লোকসান ছিল। কিন্তু সমতা!বসের সাথে বিছানা শেয়ার করার ঘটনা তো আজকাল আখছাড় ঘটছে।সমতা চাইলেই হিমাংশুর এই কামুকতার সুযোগ নিতে পারত।অর্থের বিনিময়ে ইজিলি হিমাংশুর সাথে হাত মিলিয়ে আমার সাথে প্রতারণা করতেই পারত। কিন্তু ও সেটা করেনি,করতে চায়ও নি। বরং
নিজের শালীনতা বজায় রেখে চাকরিটুকু বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিল। কিন্তু বদলে কি পাচ্ছিল!! প্রতিনিয়ত হিমাংশুর কাছে অত্যাচারিত হচ্ছিল।কখনো মানসিকভাবে তো কখনো শারিরীকভাবে। এই সত্যিটা জানার পর আমি মাথা ঠিক রাখতে পারছিলাম না অফিসার।” – চাপা উত্তেজনায় হাঁপরের মতো ওঠানামা করতে থাকল রাইমার বুক।

-” সমতার সাথে হওয়া অন্যায়ের কথা আপনি কিভাবে জানতে পেরেছিলেন মিস সেন!সমতা কিছু বলেছিলেন আপনাকে!” – কাটা কাটা স্বরে প্রশ্নটা করল উজান।

-“নাহ্!সমতা যদি প্রথমদিনই আমায় সরাসরি কথাগুলো জানাতো অফিসার,তাহলে হয়ত এত আমার এতো লস হতো না। ঠাম্মিকেও হয়ত হারাতাম না।”- রাইমার বুক চিরে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে।

-“তাহলে!” – উজানের ভ্রূ জোড়া কুঞ্চিত হয়ে উঠলো।

-“হিমাংশু মারা যাওয়ার দিন চারেক আগের ঘটনা। সমতার মামাতো বোনের বিয়ে ছিল। ও আমাকে আগেই বলে রেখেছিলো সেদিনের কথা।আগের দিন অফিস করে বাড়ি যাবে। পরেরদিন বিয়েবাড়ি মিটিয়ে রাতে ফিরে আসার কথা ছিল।সেই মতোই বিয়েবাড়ি শেষে রাত সাড়ে দশটা নাগাদ এই বাড়িতে ফিরে আসে সমতা।নিজের ঘরে যাওয়ার আগে আমার সাথে একবার দেখাও করে যায়।নীল রঙের একটা কাঞ্জিভরম শাড়িতে কি অপূর্ব যে দেখাচ্ছিল ওকে, বলে বোঝানো যাবে না। কিন্তু আমি তো প্রশংসা করতে অপারগ।তাই দু একটা কথাবার্তার পর ও নিজের ঘরে চলে গেলে আমিও দরজা বন্ধ করে শুয়ে পড়ি।

কতক্ষন শুয়েছিলাম মনে নেই। তবে সবেমাত্র চোখটা লেগেছে,এমন সময় হঠাৎই একটা চাপা শব্দ কানে এলো। ইতিমধ্যেই বাড়ির দু দুজন সদস্য গভীর চক্রান্তের শিকার, এমত অবস্থায় আমার মনের অবস্থাটা কি হয়েছিল আশা করি বুঝতে পারছেন! তাও সাহস করে নিঃশব্দে দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে আসি। মনে হল আওয়াজটা সমতার ঘরের দিক থেকে আসছে।তাই পা টিপে টিপে ওর ঘরের দিকে এগতে থাকলাম।এমন সময় হিমাংশুর গলা কানে আসতেই থমকে গেলাম। দরজার ফাঁক দিয়ে উঁকি মেরে দেখলাম…

।।৪৭।।

-“তোমার এই সতীপনা আর কদ্দিন চলবে ডার্লিং!ধরা যে তোমাকে দিতেই হবে।” -নোংরা হাসি ঠোঁটের কোনে ঝুলিয়ে ভূমিকা করে উঠল হিমাংশু।

-“একি! এতো রাতে আপনি আমার ঘরে কেন এসেছেন হিমাংশু বাবু!প্লিজ এখান থেকে যান!” হিমাংশুকে নিজের ঘরে দেখে ভূত দেখার মতো চমকে উঠলো সমতা।

-“যাব বলে কি আর এসেছি ডার্লিং।” – পায়ে পায়ে সমতার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে হিমাংশু।

-‘আপনি কিন্তু সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছেন হিমাংশু বাবু”! – ঝলসে উঠতে চাইল যেন সমতা।

-“সীমা!” – চাপা গলায় ঠোঁটে বক্র হাসি ঝুলিয়ে বলে উঠলো হিমাংশু। – “ভালোবাসার কি কোনো সীমা থাকে!আর আমি কি এমন চেয়েছি বল তো!আমি তো শুধু তোমাকে একটু কাছে পেতে চেয়েছি,একটু ভালোবাসতে চেয়েছি, একটু আদর করতে চেয়েছি মাত্র।তাতে এতো আপত্তি করছো কেন বলতো ডার্লিং।” – হিমাংশুর গলায় চোয়ারে আবেগ ফুটে উঠেছে।খপ করে সমতার হাতটা চেপে ধরে বলল,
– “আমার বুকে হাত দিয়ে দেখ একবার। তাহলে হৃদপিন্ডের লম্ফঝম্ফটা ঠিক টের পাবে”!

এক ঝটকায় নিজের হাতটা সরিয়ে নিল সমতা।সহসা মনে শক্তি সঞ্চয় করে গলা না চড়িয়ে তীব্র স্বরে বলে ওঠে,
-“দিনের পর দিন রাইমা ম্যাডামকে ভালোবাসার নামে ঠকিয়ে যাচ্ছেন, আমার জীবনটাকে নরকের থেকেও খারাপ বানিয়ে তুলেছেন,এত রাতে একজন মহিলার ঘরে ঢুকে তাকে কুপ্রস্তাব দিচ্ছেন, এরপরেও আপনি হৃদয়ের কথা বলছেন!লজ্জা করে না আপনার!নোংরামিটা এবার দয়া করে বন্ধ করুন হিমাংশু বাবু।আমি এতদিন চুপ করেছিলাম, কিন্তু আর নয়। আপনি যদি এই মুহূর্তে এই ঘর থেকে বেরিয়ে না যান,তাহলে কিন্তু আমি চিৎকার করতে বাধ্য হবো” – সমতার গলার স্বর ক্রমে কঠোর হয়ে উঠল।

-“বটে!” – মুহূর্তে বদলে গেল হিমাংশুর গলার স্বর। -“ভয় দেখাচ্ছ আমাকে! নতুন চাকরি জুটিয়ে সাপের পাঁচ পা দেখেছে,অ্যাঁ! – চিবিয়ে চিবিয়ে কথাগুলো শেষ করে কুৎসিতভাবে ভ্রূ নাচিয়ে সমতাকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত জরিপ করতে থাকে হিমাংশু।

কেউ যেন সটান একটা চাবুক মারল সমতাকে।বিস্ময়ে মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেছে তার।
‘চাকরি একটা পেয়েছে ঠিকই, কিন্তু নতুন চাকরির কথা হিমাংশু রায়ের তো জানার কথা নয়! তাছাড়া জয়েনিংও তো তিনমাস পর। এরমধ্যে যদি সেন পাবলিকেশন থেকে কোনো খারাপ রিপোর্ট নতুন কোম্পানি পায় তাহলে তো জয়েনিং আটকে যাবে।’
আর ভাবতে পারছে না সমতা। হিমাংশু রায় লোকটার নোংরামি কি তাকে সারা জীবন বয়ে চলতে হবে! ভাবলেই গা টা ঘিনঘিন করে উঠছে সমতার।আতঙ্কে তার গলা শুকিয়ে কাঠ। একরাশ কান্না দলা পাকিয়ে উঠে আসছে গলার কাছে।ধীরে ধীরে মস্তিস্ক বিবশ হয়ে আসছে সমতার। একোন নরকে বন্দী হয়ে যাচ্ছে সে!

সমতার আতঙ্কিত চেহারার মজা নিতে নিতে হঠাৎই হিমাংশু সমতাকে টেনে জড়িয়ে ধরল।ভূমিকাহীনভাবে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিল সমতার ঠোঁটে। তৃষ্ণার্ত চাতকের মতো ঠোঁট জোড়া শুষে নিতে থাকে সমতার যৌবনের অনাঘ্রাত স্বাদ। পিঠ ছাপিয়ে শাড়ির ভাঁজ উপেক্ষা করে কোমর থেকে বুক সর্বত্র খেলতে থাকে হিমাংশুর কামুক হাত। সমতার সব বাধা উপেক্ষা করে ব্লাউজের কাপড়ে টান লাগতেই আঁচল ছিঁড়ে বুক থেকে খসে পড়ল। আরও বেপরোয়া হয়ে উঠল হিমাংশু।একটানে ব্লাউসের আবরণ সরিয়ে অন্তর্বাসের ওপর থেকেই মুখ নামিয়ে আনলো সমতার স্তনবৃন্তে।

কাকুতি মিনতিতে ব্যর্থ সমতা নিজেকে মুক্ত করার আপ্রান চেষ্টায় যখন হিমাংশুর বাহুবন্ধন ছাড়িয়ে পালাতে সমর্থ হল, ব্লাউজের আর একটিমাত্র হুক অবিচ্ছন্ন, শাড়ি অবিন্যস্ত।কোনমতে পা দুটো টেনে ঘর থেকে বেরিয়ে দোতলার কমন বাথরুমে ঢুকে দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে হাঁপাতে থাকে সমতা।চোখের সামনে ঝাপসা হয়ে যেতে থাকে পৃথিবীটা।

।।৪৮।।

রাইমার জবানীতে সেদিন রাতের বিভীষিকা সবার চোখের পর্দায় জীবন্ত হয়ে উঠছিল।সামনের সোফায় বসা সমতা নিশ্চল, কিংকর্তব্যবিমূঢ়। দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে রেখেছে ঠোঁটটা।কান্নাটাকে আটকানোর প্রবল চেষ্টা।এ লজ্জা, এই যন্ত্রনা কোথায় লুকাবে, কাকে বলবে!

-“লজ্জায় অপমানে সেদিন মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছিল। জীবনের এতগুলো বছর একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে ব্যয় করার পর, শেষে কিনা নিজের এমন অধঃপতন। হিমাংশু রায়ের মতো এক নর রাক্ষসকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পছন্দ করেছিলাম! ঠাম্মি,দাদান,সমতা সবার এই দুর্বিষহ পরিনতি তো শুধু আমার জন্যই।পাপবোধে ছেয়ে গিয়েছিল মনটা।” – রাইমার গলাটা ধরে এলো।
-“সেদিন অন্ধকারে দরজার আড়ালে আমায় খেয়াল করেনি সমতা।ও ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরই আমি হিমাংশুর চোখ বাঁচিয়ে নিজের ঘরে ফিরে আসি।রাগে যন্ত্রনায় আমার গোটা শরীর কাঁপতে থাকে। দিশেহারার মতো কতক্ষন বসেছিলাম মনে নেই। হুঁশ ফিরতে দেখলাম, বাইরে চারিদিকে আবছা অন্ধকার,ভোর হতে তখনও বেশ কিছুটা সময় বাকি। ফোনটা তুলে নিয়ে কৃষের নম্বরটা ডায়াল করলাম।”

অনেকক্ষন ধরে কথা বলে হাঁফিয়ে উঠেছিল রাইমা।শ্বাস নেওয়ার জন্য একটু থামতেই ডঃ প্রধান বলে উঠেন,

-“সেদিন রাত তিনটে নাগাদ রাইয়ের ফোনটা আসে।” – এতক্ষন ধরে রাইমার কথা শুনতে শুনতে বাকরুদ্ধ হয়ে উঠেছিল সবাই।ডঃ প্রধানের গলা পেয়ে সম্বিৎ ফিরে পেল সবাই। রাইমার থেকে চোখ সরিয়ে ওনার মুখের দিকে তাকালো।

-“খুব ডিস্টার্ব লাগছিল ওকে।আমি বারবার জিজ্ঞেস করলেও রাই ভেঙে বলল না কিছুই। শুধু বলেছিল, ‘রাতে একদম ঘুমোতে পারছে না।তাই শরীর খুব খারাপ লাগছে। সকালে এসে একবার চেক করে যাস’। সেইমতো পরেরদিন সকালে এসে ওকে চেক করার পরই বুঝতে পারি, অ্যাংজাইটি থেকেই রাইয়ের শরীরটা খারাপ হচ্ছে।তাই একটা লো ডোজের স্লিপিং পিল প্রেসক্রাইব করেছিলাম। কিন্তু রাইয়ের মাথায় যে তখন অন্যকিছু ঘুরছে সেটা সত্যিই বুঝতে পারিনি।”

-“রাইমা না হয় সেদিন আপনার কাছে নিজের সমস্যার কথা ভেঙে বলেননি, কিন্তু আগের রাতে ঘটে যাওয়া সেই ঘটনার আভাস তো আপনি সেদিন এই সেন বাড়িতে এসে পেয়েছিলেন ডঃ প্রধান!তাই না!” – মিলির কথায় জোর নাড়া খেল উপস্থিত সবাই। কেঁপে উঠলেন ডঃ প্রধান।

‘কৃষানু সব জানতো! কিন্তু কিভাবে?’ – রাইমার মাথায় কেউ যেন হাতুড়ির বাড়ি মারল।

নিজেকে একটু সামলে নিয়ে নতমস্তকে অস্ফুটে জবাব দিলেন ডঃ প্রধান।

-“হ্যাঁ, জানতাম। সেদিন সকালে যখন এ বাড়িতে আসি, সমতার সাথে দেখা করতে ওর ঘরে যাই।দেখি ও ব্যাগপত্র গুছিয়ে বাড়ি ছাড়ার জন্য তৈরি হচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করায় শুধু বলেছিল, ‘এখানে থাকা আমার পক্ষে আর সম্ভব নয়।তাতে যদি আমার পরিবারকে না খেয়ে মরতে হয়,তাই সই। কিন্তু এখানে আর নয়।’
তখনই আন্দাজ করেছিলাম আগেরদিন রাতে হয়ত ভয়ঙ্কর কিছু ঘটেছে ওর সাথে। সমতা হয়ত সেদিন চলেও যেত, যদি অসুস্থতার কারণে রাই ওকে আর দু তিনটে দিন থেকে যেতে না বলতো। রাইয়ের অনুরোধ ফেলতে না পেরেই সমতা রবিবার পর্যন্ত এই বাড়িতেই থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু..”,

-“কিন্তু কি ডঃ প্রধান! আপনার মনে কু ডেকেছিল, তাই তো! আপনি সেদিনের পর সমতাকে বা টু বি ভেরি প্রিসাইজ, নিজের প্রেয়সীকে এবাড়িতে একা ছেড়ে যেতে ভয় পেয়েছিলেন তাই তো!!”
সবাইকে চমকে দিয়ে মিলি প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিল ডঃ প্রধানের দিকে।সবাই চোখ ঘুরিয়ে সমতার দিকে তাকাতেই জোর ধাক্কা খেল সে।কথাটা যেন ঠিক গিলতে পারলো না সমতা।

একদৃষ্টে ডঃ প্রধানের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে রাইমা।’কৃষের মাথা কি দুলল সামান্য!’ – বুঝতে পারল না রাইমা।শুধু প্রিয় বন্ধুর চোখে চোখ রেখে আর্দ্র স্বরে প্রশ্ন করল,

-“প্রেয়সি!”

#ক্রমশ

/*কমেন্ট বক্সে আগের পর্বগুলির লিংক শেয়ার করা আছে*/

© আমার ভিনদেশী তারা-amar bhindeshi tara-কলমে তমসা চক্রবর্তী
#AmarBhindeshiTara
#TamosaChakraborty
# ভালো লাগলে লেখিকার নাম সহ শেয়ার করবেন 🙏।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here