আঁধারের_গায়ে_গায়ে তমসা_চক্রবর্তী পর্ব-১৩

আঁধারের_গায়ে_গায়ে
তমসা_চক্রবর্তী
পর্ব-১৩

।।৩৪।।

-“কাল অনেক রাত অবধি মিসেস অনুসূয়া সেনের ডায়েরিটা পড়েছি বুঝলে।কিন্তু খুব আশ্চর্য ব্যাপার জানো! মিসেস সেন কিন্তু রেগুলার ডায়েরি লিখতেন না। শুধুমাত্র খুব দুঃখ পেলেই একমাত্র লিখতেন জানো। এমনকি ওনার ডাইরিটাও বহু পুরাতন।প্রায় বছর তিরিশেক আগের।কিছু টুকরো টুকরো ঘটনা বিক্ষিপ্তভাবে লিখে রেখেছেন।যেমন, একই ছাদের তলায় থাকা সত্ত্বেও প্রতিনিয়ত শুভেন্দু বাবুর সাথে বাড়তে থাকা দূরত্বের কিছু ঘটনা। সৃঞ্জয় সেন যতটা বাবাকে অনুসরণ করতেন, মায়ের প্রতি ঠিক ততটাই উদাসীন ছিলেন। মিসেস সেনের ডায়েরিটা পড়লেই বোঝা যায় জানো, ভিতরে ভিতরে উনি ঠিক কতটা গুমরে থাকতেন।প্রতিনিয়ত অবহেলা, অসম্মানের কি ভীষন একটা কষ্ট যে নিজের মধ্যে বয়ে চলতেন,সেটা ওনার লেখা না পড়লে বুঝতেই পারা যেত না।১৯৯০ সাল থেকে ১৯৯৫ অবধি মোটামুটি সব এন্ট্রির বিষয়বস্তুই ছিল ওনার সাথে চলতে থাকা অপমান। কিন্তু ১৯৯৫’র শেষ এন্ট্রিটা ছিল চোখে পড়ার মতো।

ব্যাগ থেকে মিসেস সেনের জরাজীর্ণ ডায়েরিটা বের করল মিলি।ডায়েরির পাতায় রাখা বেশ কিছু রঙীন পেজ মার্ক।তার মধ্যে থেকেই একটা পাতা খুলে পড়তে শুরু করল মিলি।

‘আরো একটা মেয়ের জীবন নরক বানিয়ে তোলার খেলায় মেতেছে শুভেন্দু।সঞ্জুটা তো বাবার কার্বন কপি।সে তো কখনো ভালোবাসতেই শেখেনি।বিয়ে করছে শুধুমাত্র বংশের উত্তরাধিকারী পাওয়ার আশায়।কি যে আছে মেয়েটার কপালে কে জানে! এবাড়িতে আমার তো কিছু বলা বা করার অধিকার নেই।তবুও চেষ্টা করব এই নরকে মেয়েটাকে অন্তত একটু সঙ্গ দিতে। যার সব থেকেও কিছুই নেই,নিঃসঙ্গতার ব্যাথা তার ভালো আর কে জানবে’!

এরপর বছর পাঁচেক আর কোনো এন্ট্রিই নেই। পরবর্তী এন্ট্রি আবার ২০০৪ সালে।

‘কয়েকদিন ধরেই দেখছি শুভেন্দু, সঞ্জুর ওপর সাংঘাতিক চাপ তৈরি করছে – দ্বিতীয় সন্তানের জন্য।অদ্ভুত মানুষ একটা!এমন ফুটফুটে একটা নাতনি থাকা সত্ত্বেও সেই একই গোঁ ধরে বসে আছে। মেয়েরা নাকি বংশের উত্তরাধিকারী নয়।তাই নাতি চাই।নাতি ছাড়া নাকি বংশের প্রদীপ জ্বলবে না। যত্তসব বাজে মানসিকতা।কিন্তু আমার ভয় তো অন্য জায়গায় ঠাকুর।এরপর যখন শুভেন্দু জানতে পারবে সন্তানধারণের কারনে সৌমির জীবন সংশয় হতে পারে বলে ওরা আর কোনো সন্তান চাইছে না,তখন ও কি করবে!অনেক বছর পর আবার সেই ভয়টা ভীষনভাবে আঁকড়ে ধরছে’।

পরের এন্ট্রি ২০০৫ সালে। খুব সম্ভবত সৃঞ্জয় বাবুর মৃত্যুর কয়েকদিন পর।

‘হাসপাতালে বসে বসে শুধু ভেবেছি কি করে মেয়েটাকে বাঁচাবো।তবে মেয়েটার মনের জোর আমাকে স্তব্ধ করে দিয়েছে।এত যন্ত্রনা, তবুও কেমন হাসি মুখে সব সহ্য করে যাচ্ছে। হে ঈশ্বর, তুমি ওকে শক্তি দিও,যাতে জীবনের সব কষ্ট,দুঃখ, আঘাত এইভাবেই হাসিমুখেই সব সহ্য করতে পারে,সব সামলে উঠতে পারে’।

এরপরের পরের এন্ট্রি দিন দুয়েক পরের।

‘শুভেন্দু মনে হয় কাল রাতে বুঝতে পারেনি আমি দরজার বাইরে থেকে সবটাই শুনছি।তাই ফোনে কথা বলার সময় ও খুব একটা সচেতন ছিল না।দরজাটা বন্ধও করেনি।তাই ফোনের সব কথাগুলোই আমার কানে এসেছে।
‘শুধু বৌটাকে মারতে বলেছিলাম স্ক্রাউন্ডেল!তুই আমার ছেলেটাকে মেরে ফেললি’!

ওপ্রান্ত থেকে মনে হয় উত্তর এসেছিল,’সাইড এফেক্ট’!

শুভেন্দু চাপা গলায় চিৎকার করে উঠেছিল,
‘শাট আপ! তোকে আমি পুলিশে দেব কার্তিক’!

এটুকুই যথেষ্ট ছিল।সন্তর্পনে,আড়াল থেকে ওর কথা শোনার প্রবৃত্তি হল না আর!হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে আসছিল। নিজের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে এত নির্দয়,এত নির্মম কোনো মানুষ হতে পারে!!ও কি মানুষ!কার সাথে এতগুলো বছর ঘর করলাম ঈশ্বর!!
কাকে পুলিশে দেবে তুমি শুভেন্দু! কি বলবে পুলিশকে!পারবে বলতে, আমি বৌমাকে মারার জন্য যাকে সুপারি দিয়েছিলাম,সে আমার ছেলেটাকেও মেরে ফেলেছে! শুধুমাত্র বংশের উত্তরাধিকারীর জন্য একটা মানুষকে মেরে ফেলার আগে ছোট্ট বাচ্চাটার কথা একবারও ভাবলো না! মা মরা মেয়েটা কি করে বাঁচবে সেটাও ভাবল না!!

আমার ছেলে বৌমার হত্যাকারীদের তুমি ক্ষমা করো না ঈশ্বর।আমি প্রতিজ্ঞা করছি, এবার সময়ের চাকা উলটো দিকে ঘুরবেই শুভেন্দু সেন।আমার এই নাতনিই তোমার সমস্ত কৃতকর্মের উপযুক্ত শাস্তি তোমাকে দেবে।ওকে আমি সেইভাবেই তৈরি করে তুলবো – ইস্পাত কঠিন।যার জীবনের প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য হবে, শুভেন্দু সেনকে আর্থ-সামাজিকভাবে ধ্বংস করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া’।

-“সাংঘাতিক’!! অভিজিৎ মজুমদারের চোখে মুখে বিস্ময়ের ছাপ।

-“হুম। সাংঘাতিক তো বটেই।এরপর বহু বছর আর সেরকম কোনো এন্ট্রি নেই জানো।খুব সাদামাটা কিছু কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনার উল্লেখ আছে মাত্র। কিন্তু আমাদের প্রয়োজনীয় এন্ট্রি আবার চোখে পড়ল এ বছরের গোড়ার দিকে”।

অনেকগুলো পাতা একনাগাড়ে পড়তে পড়তে হাঁফিয়ে উঠেছিল মিলি।তাই একটু থামল।মিসেস সেনের ডায়েরির পাতায় বন্ধ শব্দসমষ্টির অনুরণনে ইতিমধ্যেই তিন পুলিশ অফিসারের চোখ কপালে উঠেছে।

-“মাই গুডনেস!!এই কারনেই প্রিয়নাথ সাহা বলেছিলেন, সৃঞ্জয় সেনের মৃত্যুর পর থেকেই অনুসূয়া দেবী পুরোপুরি পাল্টে গিয়েছিলেন।সবাই ভেবেছিল একমাত্র ছেলে, একমাত্র বৌমাকে হারিয়ে উনি নাতনিকে আঁকড়ে ধরেছিলেন। কিন্তু উনি তো শুভেন্দু সেনকে ধনে প্রাণে মেরে ফেলার মারাত্মক প্ল্যান করেছিলেন।হোয়াট আ মাস্টার স্ট্রোক”!!

প্রিয়নাথ সাহার বিবরণ আর মিসেস সেনের লেখনী বিশ্লেষণ করতে করতে প্রায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ল উজান।

-“আর সাসপেন্স ক্রিয়েট করিসনা মিলি!পরের ঘটনাগুলো তাড়াতাড়ি শোনা প্লিজ”।

উত্তেজনা সংবরণে ব্যর্থ অরণ্যের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল মিলি।

-‘মেয়েটাকে বাইরে থেকে যতই কঠিন হোক, মনটা বড্ড নরম।আগে তবুও স্কুল কলেজে বন্ধুদের ব্যবহারে দুঃখ পেলে,কষ্ট হলে আমার কাছে বলে একটু হালকা হতো। কিন্তু এখন বড়ো হয়েছে তো,তাই রাতের অন্ধকারে একা একাই চোখের জল ফেলে। কাল রাতে বাথরুম যাওয়ার সময় রাইয়ের ঘরে একবার উঁকি মেরে দেখলাম,মেয়েটা বাবা মায়ের ছবির সামনে দাঁড়িয়ে নিঃশব্দে চোখের জল ফেলে চলেছে। খুব আশ্চর্য লাগলো।তাই আজ ওরা অফিস বেরিয়ে যাওয়ার পর রাইয়ের ঘরে গিয়েছিলাম। তখনই দেখলাম,ওর আঁকার খাতাটায় একটা নতুন ছবি এঁকেছে।এক সুপুরুষ যুবকের ছবি।ওর স্বপ্নের রাজপুত্র। কি সুন্দর আঁকার হাত মেয়েটার। নিজের সব মনের কথা,নিজের কল্পনা কেমন সুন্দর তুলির টানে কাগজে ফুটিয়ে তোলে।আমার মন বলছে, মেয়েটা নিশ্চই প্রেমে পড়েছে।

কিন্তু আমার ভালো লাগছে না।একদম ভালো লাগছে না।একটা অপরাধবোধ দুপুর থেকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে আমায়।আমার মধ্যে জ্বলতে থাকা প্রতিশোধের আগুন রাইয়ের জীবনটাকেই জ্বালিয়ে ছাড়খাড় করে দিচ্ছে না তো!সেই কোন ছোটবেলা থেকে মেয়েটা আমার প্রতিটা কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে এসেছে।শুভেন্দু সেনের সামনে দাঁড়ানোর জন্য একটু একটু করে নিজেকে তৈরি করেছে। নিজের সব সখ-আহ্লাদ বিসর্জন দিয়ে বরাবর লক্ষ্যে স্থির থেকেছে। দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছে, পড়াশোনা করেছে। কিন্তু আজ মনে হচ্ছে আমার জন্য, শুধু আমার জন্য মেয়েটার জীবনের সব ইচ্ছে, আকাঙ্খা, প্রতিভা অব্যক্তই রয়ে গেল।

ব্যবসা,টাকা, উত্তরাধিকারীর মোহে অন্ধ শুভেন্দু নিজের ছেলে আর বৌমাকে মেরে ফেলেছিল, কিন্তু আমি! আমিও তো সেই একই কাজ করছি। দীর্ঘ চোদ্দ বছর ধরে প্রতিশোধের নেশায় মত্ত হয়ে, আমিও তো রাইয়ের জীবনটাকে নরক বানিয়ে ফেলেছি।এই চোদ্দ বছরে,একদিনের জন্যও তো ভাবিনি, রাই কি চায়! ওকি করতে ভালোবাসে!

আজ মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে পারছি, শুভেন্দু সেনের সাথে আমার কোনো তফাৎ নেই। কোনো তফাৎ নেই’!

পড়া বন্ধ করে একবার চোখ তুলে সবার মুখগুলো জরিপ করে নিল মিলি।প্রত্যেকের মনের ভিতর চলতে থাকা অস্থিরতা চেহারায় চুঁইয়ে পড়েছে।

-“এরপরের এন্ট্রি এপ্রিল মাসের।

‘আজ নিজেকে অনেকটাই হালকা লাগছে। হিমাংশু আর রাইয়ের বিয়েটা মোটামুটি পাকা হয়ে গেল।তার থেকেও বেশি ভালো লাগছে, রাই আমার কাছছাড়া হবে না বলে।বিয়ের পর হিমাংশু এই সেন বাড়িতেই থাকতে রাজি হয়েছে।এখন চারহাত এক করে দিতে পারলেই আমার ছুটি।

হিমাংশু ছেলেটা বেশ ভালোই।রাইকে ভীষন আগলে রাখে।ভালোওবাসে খুব।তাই রাই আর আমি আজ ঠিক করেছি, হিমাংশুর সাথে কোনো প্রতারণা আমরা করব না। ওদের বিয়ের আগেই আমি আমার সব ভুল শুধরে নেব। কিন্তু শুভেন্দুর কাছে ব্যাপারটাকে সঠিকভাবে প্রতিস্থাপন করতে হবে। কিন্তু কিভাবে? একটু ভাবতে হবে”!!

।।৩৭।।

-“প্রতারণা!!মিসেস সেন আর রাইমা, হিমাংশু রায়ের সাথে আবার কি প্রতারণা করছিলেন? উল্টে হিমাংশু রায়ই তো ওদের সাথে প্রথম দিন থেকে প্রতারণা করছিলেন।এই অভিজিৎ দা, প্লিজ চা খাওয়ান তো। সব কেমন যেন ঘেঁটে ঘ গেল”!!

অরণ্যের করুন আর্তিতে অভিজিৎ মজুমদার মুচকি হাসলেন। থানার আর্দালিটিকে চার কাপ চা আনার নির্দেশ দিয়ে এবার সপ্রশ্ন চাহনিতে মিলির দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলেন,

-“অরণ্য কিন্তু খুব একটা ভুল বলেনি ম্যাডাম।কেসটা কিন্তু তীরে এসে পুরো ঘেঁটে গেল”!!

-“এখনো তো কিছুই ঘাঁটেনি মিস্টার মজুমদার।পরের পাতার এন্ট্রিটা শুনুন আগে”!

-“আরও আছে”!!

মিলির কথায় তিন পুলিশ কর্তার বিস্ময়ের সীমা অতিক্রান্ত হলো।চোখ টিপে সবাইকে একটা ফিচেল হাসি উপহার দিয়ে মিলি আবার শুরু করল।

-“এপ্রিল মাসের বাইশ তারিখের এন্ট্রি।

‘কথায় আছে না শেষ ভালো যার সব ভালো।
অবশেষে একটা উপায় পাওয়া গেল।প্রতিবারের মতোই এবারও ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলো সেই কৃষানু। অদ্ভুত ছেলে একটা।বছর দশেক আগে যখন কৃষানু সবটা জানতে পেরে গিয়েছিল, তখন আমি আর রাই কি ভয়টাই না পেয়েছিলাম।যদি কৃষানু আমাদের এই মিথ্যেটা সবাইকে জানিয়ে দেয়! অথচ কি আশ্চর্য দেখ, সেই ছেলেটাই এত বছর ধরে পদে পদে আমাদেরকে সবরকম সাহায্য করে গেল। সবরকম বিপদ থেকে রাইকে আগলেও রাখল।
কৃষানুর সাথে দিন দুয়েক আগে কথা হয়েছিল। বুদ্ধিমান ছেলে তো,তাই আমাকে পুরোটা বলতেও হলো না।আমি কি চাই ঠিক বুঝে নিয়েছে।আজ বিকেলে ও ফোন করেছিল শুভেন্দুকে। শুভেন্দু তো ওর অফারটা প্রায় লুফে নিয়েছে। জুন মাসে আমাদের লন্ডন যেতে হবে।কৃষানু সব ব্যবস্থা করে রাখবে।তবে যাব শুধু আমি আর রাই। হিমাংশু যদিও বারবার আমাদের সাথে যেতে চাইছে। কিন্তু ওকে আমি ঠিক সামলে নেব। আজ যে কি শান্তি পেলাম, কি বলব! আমার অপরাধের বোঝাটা এবার কিছুটা হলেও কমবে।

এর পরে আর একটাই এন্ট্রি আছে।সেটাই ডায়েরিতে মিসেস সেনের শেষ এন্ট্রি”।

মিলিকে মাঝপথেই থামিয়ে দিল উজান।

-“আবাআআর একটা নতুন ক্যারেকটার!!এই কৃষানু নামক ধুমকেতুটি আবার কোথা থেকে উদয় হলো ? সিরিয়াসলি মিলি, সব কেমন যেন মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে এবার”!

-“আচ্ছা,রাইমা সেনকে আরো একবার ইন্টারোগেট করলে হয়না!!উনি তো মনে হচ্ছে সবটাই জানেন”!!

-“জানেন তো উনি অনেক কিছুই। কিন্তু বলবেন না।আর তাছাড়া রাইমাকে বারবার ইন্টারোগেট করাটা মনে হয় তোর উজান স্যারের ঠিক পছন্দ নয়।তাই আমাকেও পারমিশন দেবে নারে”!!

অরণ্যের প্রস্তাব মিষ্টি করে নাকচ করে ভ্রু নাচিয়ে উজানের দিকে একটা দুষ্টু হাসি ছুঁড়ে দিল মিলি। অরণ্য আর সাব ইন্সপেক্টর অভিজিৎ মজুমদারের মুখেও ততক্ষনে ফুটে উঠেছে মিটিমিটি হাসি।

-“খুব মজা লাগছে না!ওসব ঠাট্টা এখন ব্যাগে ভরে রাখো”, – মিলির মশকরায় বেজায় চটে চোখ পাকালো উজান।

-“আর অরণ্য”, – উজানের ডাকে কোনোমতে হাসি সামলে অরণ্য বলে,

-“ইয়েস বস”।

-“মিসেস সেনের কল ডিটেলস বের করো। জানুয়ারি থেকে জুন অবধি।দেখি, নাটকের এই নতুন চরিত্রটিকে খুঁজে পাওয়া যায় নাকি”!!

-“এক্সিলেন্ট!!এই না হলে আই.পি.এস উজান রায়। বুদ্ধি দেখেছিস”!!

মিলি আবারো উজানকে নিয়ে মশকরা করতে করতেই অরণ্যের উদ্দেশ্যে বলে উঠলো,

-“তবে শুধু মিসেস সেনের কল ডিটেলস নয় ঋক, সবার কল ডিটেলস বের করিস”!

-“সবার মানে”!! – অরণ্য প্রশ্ন করল।

-” সবার মানে, মিস্টার সেন, মিসেস সেন,রাইমা, সমতা, হিমাংশু রায় আর কার্তিক মাঝি।সবার কল ডিটেলস চাই। সেটাও দুপুরের মধ্যেই”!!

-” বেশ আমি ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। কিন্তু মিসেস সেনের ডায়েরির শেষ এন্ট্রিটা শোনাবি না”!!

-“নাহ্” – মিলি এবার বেশ সিরিয়াস।ভ্রু জোড়া কিঞ্চিৎ কুঞ্চিত। আনমনেই উজানের উদ্দেশ্যে বলল,

-“প্রিয়নাথ সাহার সাথে আজ বিকেলেই একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট ফিক্স করো উজান। কিছু হিসেব মেলাতে হবে”!!

#ক্রমশ

/*কমেন্ট বক্সে আগের পর্বগুলির লিংক শেয়ার করা আছে*/

© আমার ভিনদেশী তারা-amar bhindeshi tara-কলমে তমসা চক্রবর্তী
#AmarBhindeshiTara

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here