আমার পুতুল বর পর্ব : (৩+৪)

আমার পুতুল বর পর্ব : (৩+৪)
#লেখিকা: আরশি জান্নাত ( ছদ্মনাম)

৩।

মা ও মা!! খাবার কি আজকে পাবো?? খুব খিদে পেয়েছে ।।। ও মা! কোনো সাড়া না পেয়ে এবার সূর্য নিজেই গেলো রান্নাঘরে ওর মায়ের কাছে। অহনা জামান সূর্যর উপস্থিতি বুঝতে পেরে ও কিছু বললেন না। নিজের কাজ করতো থাকলেন। সূর্য মাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।
~ আমার মা কি তার নক্ষত্রের উপর বেশি রেগে আছে?? ও মা! ভুল হয়ে গেছে তো সরি।
~ ( সূর্যর থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে) তোর কথা আমি কেনো শুনবো? তুই আমার কথা শুনিস? কতবার না করেছি এসব ছাই পাস খেয়ে বাসায় আসতে ? তাও আসিস আর কথা আমাকে শুনতে হয়।
~ আচ্ছা সরি মা। আর এগুলো খেয়ে বাসায় আসবো না!
~ ( তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে) তার মানে বাইরে খাবি?
সূর্য কিছু বলার আগেই বাইরে থেকে সুরাজ জামানের আওয়াজ এলো।
~ যা টেবিলে বস গিয়ে আমি জলদি খাবার নিয়ে আসছি। এই মুনি( কাজের মেয়ে) চালু হাত লাগা।
সূর্য টেবিলে গিয়ে দেখলো সুজানা ও তার বাবা বসে আছে। তাদেরকে ছোট করে গুড মর্নিং বললো। কেউ কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালো না। সূর্য ও উত্তরের আসা না করে বসে পড়লো। খাবারের সময় আর কোনো কথা হয়নি। কারণ এই বাড়ির নিয়ম খাবারের সময় কোনো দরকারি কথা ও হবে না। খাবার শেষে সূর্য উঠতে নিচ্ছিলো তখন সুরাজ জামান বললেন ওনার কিছু কথা আছে। বাকিদের ও বসতে ইশারা করলেন।
~ আমরা আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশে যাচ্ছি।
~ তোমরা চলে যাবে?? কিন্তূ কেনো??( সূর্য)
~ কারণ এখানে যে কাজে এসেছিলাম তা শেষ হয়ে গেছে। তোমার আপু এখন সুস্থ। আর আমরা না তুমিও আমাদের সাথেই যাচ্ছ।
~ কি বলছো বাবা? আমার এখানে ভার্সিটি। আর আমি এখান থেকে ইস্টাবলিশ হতে চাই।
~ ( গম্ভীর ভাবে তাকিয়ে) এর আগেও তুমি বাংলাদেশ থেকে এখানে পড়া শুরু করেছো এবার ও তাই করবে। শুধু মাস্টার্স কমপ্লিট করা বাকি ওটা বাংলাদেশ থেকেও করা যাবে। কারো কোনো সমস্যা আছে?( স্ত্রী ও মেয়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন)
~ দুজনেই মুচকি হেসে না বললো।
~ কিন্তূ বাবা…
~ আর কোনো কথা না। তোমার ট্রান্সফারের ব্যাবস্থা আমি করে দিবো। কথাটা বলে তিনি উঠে চলে গেলেন।

সূর্য রাগ করে গাড়ির চাবি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।

~ বেব!! তুমি এভাবে একা এখানে বসে আছো কেনো?(ন্যান্সি)
~ হোয়াটস আপ ব্রো!!( রিক)
~ গাইস প্লিজ ডোন্ট ইরিটেট মি নাও।
~ হোয়াট হ্যাপেন্ড?(রোজ)
~ আজকে বাবা বললো আগামী সপ্তাহে আমরা বাংলাদেশে ব্যাক করছি
~হোয়াট!!!
~হোয়াট!!!
~হোয়াট!!!
~উফফ তোরা চেঁচিয়ে আমার কান খাস না। আমি অলরেডি অনেক টেনশন এ আছি।
~ বাট ইয়ার তুই কদিনের জন্য যাবি?
~ মে বি ওখানেই সেটেল করবো।
~ বেব কি বলছো এসব?? আমার কি হবে?(নেকামো করে)
সবাই ন্যান্সির দিকে তাকাতেই ও কিছুটা থতমত খেয়ে যায়।
~ আব আমি বলছিলাম আমাদের কি হবে?( মেকি হাসি দিয়ে)
সূর্য, রিক, রোজ, আর ন্যান্সি বেশ ভালো বন্ধু। ন্যান্সির যে সূর্যের প্রতি দুর্বলতা আছে আর সেটা বাড়াবাড়ি রকমের এটা সবাই জানে। সূর্য ও জানে কিন্তূ ওর মতে ন্যান্সি খারাপ মেয়েনা ও মন থেকে অনেক ভালো তাই কিছু বলেনা।
সূর্য ন্যান্সির কথার জবাব দিলো না। কেউ ই আর কিছু বললো না। বন্ধুমহল হঠাৎ থমথমে হয়ে গেলো।

আরশি, আরশ খেতে আয়, জলদি। দুজনেই এক প্রকার ছুটে এলো। আরিয়া দিলো এক ধমক।
~ এভাবে ছুটছিস কেনো? ব্যাথা পাবি না?
~ ( দুজন এক সাথে) সরি মা।
আফিফ হাসান ও এসে গেছেন ততক্ষনে। খাওয়ার মাঝে হঠাৎ তিনি বললেন–” শুনছো আরিয়া , সুরাজ ভাইরা আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশে ব্যাক করছেন।
কথাটা শুনে আরশির গলায় খাবার আটকে গেলো।
আফিফ জলদি পানি দিলেন।
~ আস্তে খাও।।
আরশি মাথা নাড়লো।~ কি বললে আপা রা ফিরে আসছে?? কখন জানালো তোমাকে? কে জানালো?এতকাল তো কথাই হয় নি তাদের সাথে।।
~ হ্যা আজ ভাই ফোন দিয়ে জানালেন।
~ আরিয়া চোখে পানি নিয়ে হেসে দিলেন। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানালেন । আরশি আস্তে করে উঠে চলে গেলো।
আর আরশ বোকার মতো তাকিয়ে আছে। আরশ ওর খালামনির পরিবারদের শুধু ছবিতে দেখেছে। সামনাসামনি কখনো দেখে নি। এবার সামনাসামনি দেখবে।

আরশি ঘরে গিয়ে আলমারি থেকে একটা পুতুল বর বের করলো।
~ ( পুতুল টাকে জড়িয়ে ধরে) সত্যি কি সে আসছে? তবে কি আমার অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে?
আচ্ছা!! তার কি আমাকে মনে আছে? নাকি তার স্মৃতির পাতা থেকে হারিয়ে গেছি?
বিছানায় শুয়ে পুতুল টাকে তার পাশের বালিশে রাখলো। বির বির করে বললো~ পুতুল বর জলদি এসো তোমার বউ টা যে বড্ড একা । তার কিছুই ভাল লাগেনা। তুমি এসে সব ঠিক করে দাও। বলতে বলতে আরশি ঘুমিয়ে গেলো l

কেনো এই কথা গুলো আমার কানে বাজে?? কে বলে এই কথা? এই পুতুল বউ তুই কিছু জানিস? তুই জানবি কি করে!! কিন্তূ কথাগুলো….. আরশি??( আস্তে করে)
ওর তো এমন পুতুল বর বউ খেলার শখ ছিলো। আর আসার আগে তোকেও আমায় দিলো কি কি বললো বুঝলাম না। হয়তো তোকে মিস করছে। আচ্ছা ওর কি আমার কথা মনে আছে?? না থাকার সম্ভাবনা বেশি অনেক বছর হলো। কথা ও হয় নি। কেমন দেখতে হয়েছে তাও জানিনা। শেষ ওর ভাই হওয়ার পর কথা হয়েছিল। আগে তো ছোট্ট ডলের মতো ছিলো এখন ও কি ওমন ই আছে? নাকি পাল্টে গেছে? সেই পিচ্চি ডল থাকলেই ভালো হবে। আমার ডল। আগে তো আমাকে ভয় পেতো, ( আরশির ভীতু মুখটা মনে করে হালকা হাসলো) এখন দেখা হলে আবার ভয় পাবে? ওকে সত্যি অনেক মিস করি। কেমন বোকা বোকা কথা বলতো আর সবসময় পুতুল নিয়ে থাকতো। ওদের বিয়ে দিতে চাইতো। ( হেসে দিয়ে)
(পুতুল টাকে ধরে )ঐ কথাগুলোর জন্য তো ঘুমোতে পারিনা। যাই এখন চেষ্টা করি। আর পুতুল বউ তুই ও ঘুমা। গুড নাইট। কথাগুলো বলে সূর্য ঘুমোতে চলে গেলো।

#চলবে

আমার পুতুল বর
লেখিকা: আরশি জান্নাত (ছদ্মনাম)
পর্ব:৪

~ আরশি!!
~ হুঁ ( চমকে উঠলো)
~ কি ভাবছিস এতো? ডাকছি কখন থেকে শুনছিস না।
~ না তেমন কিছুনা।
~ হেই গায়েস!! হোয়াটস আপ??
~ এতোক্ষণ ভালো ছিলাম ভাইয়া কিন্তূ এখন বোধয় থাকবো না।( আড় চোখে রেহানের দিক তাকিয়ে) রেহান ও মিহির দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে।
~ উহুম উহুম ( কেশে মনোযোগ আকর্ষণ করে) যে কারনে আমরা এসছিলাম সেই কারনটা বলি?( অভ্র কে খুঁচিয়ে)
~ আব হ্যা। আচ্ছা তোমরা তো জানো নেক্সট সপ্তাহে আমাদের ভার্সিটির ৭০ বছর পূর্তিতে অনুষ্ঠান করা হবে। সেখানে নাচ গানের ও ব্যাবস্থা করা হবে। তোমাদের ক্লাস এ গেছিলাম তোমাদের পেলাম না। তোমরা এখানে কেন্টিনে বসে আছো। তা তোমাদের ক্লাস থেকে বেশ কয়েকজন নাম দিয়েছে নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তি তে। তোমরা কে কোনটায় দিচ্ছ ??(মিহি ও আরশি দিকে তাকিয়ে)
~ ভাইয়া আমি কিছুটা পার্টিসিপেট করবো না।(আরশি)
~ কেনো? করবিনা কেনো??(মিহি)
~ হ্যা আরশি কেনো করবে না?( অভ্র)
~ ভাইয়া আমি কিছুই পারিনা কি দিবো?
~ এই মিথ্যুক তুই চুপ থাক!! ভাইয়া ও অনেক ভালো গান ও নাচ পারে।
অভ্রর চোখ জ্বলজ্বল করে উঠলো।~ সত্যি?? তাহলে তো তুমি দুটোতেই পার্টিসিপেট করবে। নাম লিখে দিচ্ছি তোমার।
~ আরে ভাইয়া না ও বাড়িয়ে বলছে। আপনি লিখবেন না প্লিজ।
~ওতো নাচ গান ভালো পারে তুমি কি পারো?( কিছুটা কটাক্ষ করে)
মিহির সারা গায়ে যেনো আগুন জ্বলে উঠলো কথাটা শুনে।
~ এইইইই!! কি বললেন আপনি ? কি বুঝাতে চাইলেন আমি কিচ্ছু পারিনা??
~ কই শাখ??
~ ইউউউ!! আপনি আমার সিনিয়র না হলে না বুঝিয়ে দিতাম এই মিহিকা রহমান কি জিনিস হুহ!
~আচ্ছা হয়েছে এবার থামো তোমরা।( নাহিদ)
~ না হয় নি আপনি আমার নাম নাচে ও কবিতা আবৃত্তি তে লিখুন। আর আরশির গান ও নাচে।
~ আরেহহহ! আবার আমি কেনো?
~ কিচ্ছু শুনতে চাই না। তুমি দিচ্ছ মানে দিচ্ছ। এই সুযোগে আমিও তোমার নাচ দেখতে ও গানের গলা শুনতে পাবো।( বেশ উৎসাহ নিয়ে)
আরশি আর মিহি অবাক হয়ে তাকাতেই অভ্র হকচকিয়ে গেলো।
~ আরে মানে আমরা সবাই তোমার গুণাবলি দেখতে পারবো, হেহেহে।( বোকা হেসে)।

আরশি আর মিহি দুজনেই মুখ গোল করে বলল– ওহ আচ্ছা!!
~ এই নাহিদ, অভ্র চল যা করতে এসছিলি তাতো শেষ এখান থেকে দ্রুত গেলেই ভালো।
মিহি কটমট করে রেহানের দিকে তাকিয়ে আছে। রেহান ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বেড়িয়ে গেলো কেন্টিন থেকে। ওর পিছু পিছু নাহিদ ও গেলো। অভ্র ওদের দিকে তাকিয়ে হালকা হেসে বিদায় জানিয়ে চলে গেলো।
~ দেখলি কেমন বজ্জাত লোক। খোচা মারা ছাড়া কথা বলে না।
~ আচ্ছা বাদ দে।
~ এই তোর হয়েছে কি বলতো?? কিছু একটা মনে করে। অরেহহহ!!! কি করে ভুলে গেলাম কালতো তোর পুতুল বর আর তার পরিবার আসছে। কিন্তূ তোর তো খুশি হওয়ার কথা। এমন ছ্যাকা খাওয়া ভাব নিয়ে বসে আছিস কেনো??( ডান ভ্রু উচু করে)
~ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে।তুই বুঝতে পারছিস না এত বছরে কতো কিছু পাল্টে গেছে মানুষ পাল্টে গেছে, আমি বড়ো হয়ে গেছি, পরিস্থিতি ও পাল্টে গেছে। এখন আর সেই পুতুল খেলার বয়স নেই। তাকে আমি কোনদিন বলিনি যে সে আমার পুতুল বর। মনে মনে তাকে আমি আমার পুতুল বর মানতাম। তার উপর আমার কোন অধিকার নেই। উনার জীবনে হয়তো কেউ না কেউ চলে এসেছে এতো বছরে ( ছল ছল চোখে )।
~নেগেটিভ কথা কেন ভাবছিস?? এমনও তো হতে পারে উনার তোর কথা মনে আছে কিন্তু উনি সেটা প্রকাশ করেন না?
~আরশি চোখ তুলে মিহির দিকে তাকালো। সত্যিই কি এমন কিছু??
~শোন দোস্ত এত প্যারা নিস না! আগে ওদের আসতে দে , দেখ ওনার মতিগতি।
~ (ছোট্ট করে জবাব দিল) হু।
~আচ্ছা আরশি আমাকে একটা কথা বল !! তোর মনে হয় না অভ্র ভাইয়া তোকে পছন্দ করে??
~( চোখ বড় বড় করে ) এসব কি বলছিস তুই?? এমন কেনো হতে যাবে? ওনার সাথে তুই আমাকে কেনো মেলাচ্ছিস আজব তো!!!
~ আমাকে দোষ দিবি না!! উনার হাবভাব দেখে তো তাই মনে হয়! সব সময় তোর প্রতি একটু এক্সট্রা কেয়ারিং থাকেন উনি। মনে নেই তোর হাত কেটে যাওয়া তে কি করেছিলেন উনি?? কতটা অস্থির আর ব্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন?? আর আজ তোর গান-আর-নাচ পাড়া নিয়ে ও তো কতটা উৎসাহ দেখালেন।
~তুই একটু বেশি ভাবছি সেটা তো উনি মানবিকতার খাতিরে করেছিলেন। আর নাচ-গান পাড়া নিয়ে উৎসাহ কোথায় তেমন একটা তো হন নি!!!
~ উফফ আরশি তোকে কিছু বোঝানোই বেকার। বাদ দে চল বাসায় চলে যাই গরমে আর ভাল লাগছে না।
~হুঁ চল।

~আপু তোর সব গোছানো শেষ??
~ হ্যা। তুই আজ হঠাৎ আমার ঘরে। তাও এই সময় এ।( অবাক হয়ে)
~ কেন আসতে পারি না??
~না তা কেনো পারবি না কিন্তু তুই তো এই সময় বাইরে থাকিস।
~হ্যাঁ আজ জলদি চলে এসেছি। আচ্ছা আপু আমাদের কি বাংলাদেশে ফেরাই লাগবে??
~ (সূর্যের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকল) কেন তুই ফিরতে চাস না?? ওই দেশে তোর কম স্মৃতি তো নেই? নাকি এই দেশ এতটাই ভাল লেগেছে যে এটাকে ছাড়তে তোর এত দ্বিধা হচ্ছে??
~ এমন কিছু না।
~ আচ্ছা সূর্য তোর আরশির কথা মনে আছে?
~(সূর্য খানিকটা চমকে উঠলো) হা… হ্যা মনে আছে। না থাকার কি আছে ওর দেওয়া পুতুল টা কে দেখলেই ওর কথা মনে পরে।
~তোর কি মনে হয় ও তোকে পুতুলটা কেন দিয়েছিল??
~ কেন আবার মনে হয় ভাল লাগেনি তাই দিয়েছিল!!( কিছুটা কনফিউজড হয়ে)
~ তোর তাই মনে হয়?? আমার তো মনে হয় না। ওই বর বউ এর জোড়া টা ওর খুব পছন্দের ছিলো। কাউকে ছুঁতে দিত না। ওদের গায়ে যে জামা কাপড়গুলো ছিল এগুলো অনেক কষ্টে অদক্ষ হাতে বানিয়েছে ও। কাউকে বানাতে দেয়নি। সেই পুতুল এত অনায়াসে ও তোকে দিয়ে দিল??( আড় চোখে সূর্যর হাবভাব পরখ করে)
~ এখন কেন দিয়েছ সেটা ওই ভাল জানে আমাকে কেনো জিজ্ঞেস করছো? আমার মাথায় কিছু ঢুকছে না!
~ভাই তুই এত গাধা কবে হলি বলতো??(উঠে বাইরে চলে গেল)
~আরে আমি কি বললাম যে ওর আমাকে গাধা মনে হলো।😐

সূর্য নিজের ঘরে চলে এলো। ব্যালকনিতে তাকাতেই সেই পুতুল বউ টার দিকে নজর গেল। সেদিকে এগিয়ে গেল। আপু বলল তুই নাকি আরশির অনেক প্রিয়??
তাহলে তোকে আমায় কেন দিলো ও?? এখানে আসার আগে ও কিছু কথা বলেছিল আমাকে?? সামথিং দায়িত্ব-কর্তব্য এগুলো নিয়ে।। যদিও কথা গুলো মনে নেই। কিন্তূ ঐটুকুন ই মেয়ে দায়িত্ব-কর্তব্যের কথা কি করে বুঝবে? যদিও দেশে যেতে ইচ্ছে করছে না কিন্তু তোর মালকিনকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে। আমাকে তো জানতেও হবে সে তার পছন্দের পুতুল আমাকে কেন দিল?? ট্রিং ট্রিং ট্রিং ট্রিং।। সূর্য ফোন হাতে নিয়ে দেখলো ন্যান্সি ফোন করেছে।
~ হ্যালো হ্যাঁ ন্যান্সি বল!
~সূর্য বলছি কি তুই তো কালকে চলে যাবি আমাকে কি নিয়ে যাবি তোদের সাথে??
~ মানে?( অনেকটা অবাক হয়ে ) তুই!! বাংলাদেশে যাবি তাও আমাদের সাথে??
~হ্যাঁ মানে কোন সমস্যা?? একটু ঘুরে আসতাম আরকি!
~তার যেতে পারিস কিন্তু আগে বলতিস।
~কি করব হঠাৎ করে ইচ্ছে জাগলো ড্যাড কে বললাম – বলল ওদের বলে দেখো যদি নিয়ে যেতে চায় তাহলে যাও!! এখন তুই কি বলিস??
~ কিছুটা ভেবে আচ্ছা আমি বাবাকে বলে দেখছি বাবা কি বলে!
~(এক্সাইটেড হয়ে) থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ সো মাচ!
~ আগে বাবা রাজি হোক দেন থ্যাংক ইউ বলিস। এক কাজ কর বাকিদের বলে দেখ ওরা যদি যেতে চায় তাহলে সবাই মিলে একটা ট্যুর হয়ে যাবে।
~কথাটা শুনতেই ন্যান্সির মুখ মলিন হয়ে গেল সে তো একা যেতে চেয়েছিল সূর্যের সাথে।
~আচ্ছা বলব।
~ঠিক আছে রাখছি বাই।
~ বাই।
সূর্য মোবাইল হাতে আরো কিছুক্ষণ পুতুলটার দিকে তাকিয়ে রইল। তারপর বাবার সাথে কথা বলার জন্য তার রুমে গেল।

আজ সকাল থেকেই আরশির বুক ধুকপুক করছে। সেই আকাঙ্খিত মুখ দেখার জন্য উৎসুক হয়ে বসে আছে সে। অপেক্ষা করছে সে কাঙ্খিত মুখটি দেখার কিন্তু মনে হচ্ছে অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছেই না।।
কখন আসবে তারা। ছাদের এপাশ থেকে ওপাশে হাঁটাহাঁটি করছে আর বিড়বিড় করে চলেছে সে। হঠাৎ নিচ থেকে গাড়ির হর্নের আওয়াজ পেয়ে দ্রুত নিচে তাকালো। দুটো সাদা গাড়ি তাদের বাড়ির নিচে এসে থেমেছে। মুচকি হেসে এক দৌড়ে নিচে চলে গেল। প্রথম তারিখ থেকে তার মামনি, আংকেল আর জাদু আপ্পি বেরিয়ে এলো। আরশি পর্দার পিছনে দাঁড়িয়ে দেখছে দ্বিতীয় গাড়ি থেকে কে বেরোয় তা দেখার আশায় তার চোখ দুটো কৌতুহলী হয়ে আছে। ওর মা আর মামনি একে অপরকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে। আরশির অপেক্ষার প্রহর এর সমাপ্তি ঘটিয়ে দ্বিতীয় গাড়ি থেকে একজোড়া লোফার জুতা পরিহিত পা বেরিয়ে এলো। আরশি আরেকটু মাথাটা বের করে উকি দিলো। কিন্তূ আফসোস তার কালো প্যান্ট, নীল ব্লেজার , আর কালচে বাদামি চুল ছাড়া কিছুই দেখা যাচ্ছে না কারণ তার সামনে আফিফ হাসান দাঁড়িয়ে। আরশি পুনরায় হতাশ হলো।।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here