আমার_গল্পে_তুমি🍁🍁৪_পর্ব

আমার_গল্পে_তুমি🍁🍁৪_পর্ব
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)

,
আকাশে অর্ধগোলাকার চাঁদ উঠেছে বাইরে ঠান্ডা ঝিরিঝিরি বাতাস বইছে যেনো একটা রোমাঞ্চকর মুহুর্ত তখনি অন্ধকার থেকে কেউ আমার দিকে তার দুহাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল,,,ওগো মোর প্রিয়া তুমি কি জানো, তোমার ওই মাতাল দুচোখের চাহনিতে আমি বার বার ঘায়েল হই,, আর কত জ্বালাবে আমায় এই অধম কে এতো জ্বালাতে তোমার ভালো লাগে?? একটু আসো না আমার বুকে,, এবুকে মাথা রাখলে তুমি শুনতে পাবে হাজারও না বলা কথা,, শুনতে পাবে তুমি এক তৃষ্ণার্থ প্রেমিকের আর্তনাত যার জীবনের প্রতিটি পাতায় পাতায় শুধুই তুমি আছো,, প্রতিটি ধাপে ধাপে তুমি আছো,, আমার প্রতিটি গল্পে শুধুই তুমি আছো আর কারোর সেখানে বসবাস নেই,, আমার গল্পে শুধুই তুমি। এই বলে যুবকটি চলে গেলো আবার অন্ধকারের গহীনে।। তখনি ধপ করে ঘুম থেকে উঠে বসে বলল ইয়ানা,,, সত্যি কি আমার জীবনেও এমন কেউ আসবে?? যে শুধুই আমার হবে আর এভাবে আমাকে নিয়ে বলবে?? প্রায় দিনিই এই একি স্বপ্ন দেখি কিন্তু প্রতিবারের মতো এবারেও ছেলেটির মুখটা দেখতে পেলাম না,, কবে তুমি আমায় দেখা দেবে ওগো মোর স্বপ্ন পুরুষ,, এই বলে ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখলো আটটার বেশি বাজে,,, এই দেখে তড়িঘড়ি করে উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলো।

কিরে আজকে উঠতে এতো দেরি করলি কেনো?? আমি কেবলি তোকে ডাকতে যাচ্ছিলাম ।

কি জানি আজকে দেরি হয়ে গেলো,, শোনো না মা রাতে চাকরির কিছু বিঙ্গাপন দেখলাম অনেকগুলি কম্পানিতে চাকরির বিঙ্গাপন দিয়েছে তার মধ্যে কালকে একটার ইন্টারভিউ আছে,, যদিও আমি এখনো অর্নাস কম্পিলিট করিনি তাই ইন্টার পাশ এর সার্টিফিকেট দিয়েই চেষ্টা করবো, জানি হবে না তবুও চেষ্টা করতে দোষ কোথায়?? ,, খেতে খেতে বলল ইয়ানা।

হুম দেখ কিছু হয় কিনা,,

আচ্ছা আম্মু তুমিও খেয়ে নাও আমি গেলাম হ্যাঁ সাবধানে থেকো,, এই বলে ইয়ানা চলে গেলো।

মেয়েটা বড় হয়েছে এভাবে আর কতদিন এবার তো ওকে বিয়ে দিতে হবে,,, হুমম দেখতে হবে কোথায় ভালো ছেলে পাওয়া যায় কি।

,,,,,,,,,

ভার্সিটি শেষ করে ক্লান্ত শরীল নিয়ে রাস্তায় এসে দাঁড়ালো ইয়ানা এখন মোটেও পড়াতে যেতে ইচ্ছে করছে না, মন চাইছে বাড়ি গিয়ে লম্বা একটা ঘুম দিই,,, তবে আল্লাহ আল্লাহ করে যদি কালকে চাকরিটা হয় তবে এই টিউশনিটা বাদ দিয়ে দেবো,,, কোনোমতে ছোটখাটো একটা চাকরি হলেই হলো,,, তারপর ইয়ানা মাসুমকে পড়িয়ে বাড়ি চলে গেলো, একেবারে গোসল করে ছোটখাটো একটা ঘুম দিয়ে তারপর পরশকে পড়াতে যাবে,।

আর্দ্র আমাকে একটা কাজে কালকে চিটাগাং যেতে হবে তাতো তুই জানিস,, তাই কালকের ইন্টারভিউ টা তোকেই নিতে হবে,, কি বলিস।

হুম আচ্ছা ঠিক আছে,, কাজ করতে করতে বলল আর্দ্র।

আচ্ছা তাহলে এখন তো আর কোনো কাাজ নেই আমি তাহলে বাড়ি গেলাম সবকিছু প্যাকিং করতে হবে, আর অন্তরা কেউ বলা হয়নি,, তুই বরং পাঁচটার দিকে চলে আসিস ওকে।

আচ্ছা ঠিক আছে তুই যা,আমি সব ম্যানেজ করে নেবো, আর আমি জানি তো কেনো এতো তাড়াতারি
তুই যেতে চাইছিস আগামী দুইদিন তো ভাবিকে ছেড়ে থাকতে হবে আর কালকে ভোরে তোকে বেরিয়ে যেতে হবে তাই এখন গিয়ে নিশ্চয়ই ভাবির সাথে রোমাঞ্চ করবি,,, অনিকের দিকে তাকিয়ে বলল আর্দ্র।

সে কপাল কি আমার আছে,, একটা ছেলে আছে না,, আমার রোমাঞ্চ এর বারোটা বাজিয়ে দেবে,, ছেলে আমার কিন্তু পেয়েছে তোর স্বভাব,, অন্তরাকে ছুঁলেই বলে,, আব্বু তুমি জানো না চাচ্চু বলেছে মেয়েদের থেকে দূরে থাকতে আর তুমি আমার মাম্মাম এর কাছে কি করছো যাও সরো। এগুলা কি সয্য করা যায় বল,,, আর্দ্রর চেয়ারের হাতার উপর বসে বলল অনিক।

সর তো আমার চাম্প ঠিকি বলেছে,, আচ্ছা ঠিক আছে আমি গিয়ে পরশকে নিজের কাছে রাখবো,,, আর এমনিতেও আজকে আমার তারাতারি যেতে হবে ওই অভদ্র মেয়ে টাকে বোঝাতে হবে তো,, মনে মনে বলল আর্দ্র।

,,,,এই ঘুমটাও না ঠিক সময় ভাঙ্গতেই চাই না সময় ছাড়া অসময় ভাঙ্গে, কত দেরি হয়ে গেলো আজকে,, ওবাড়ির সবাই কি বলবে যে দুদিন নাই পড়াতেই এমন,, ম্যামের যদি সময় জ্ঞান না থাকে তাহলে ছাএের কি হবে,,,এসব ভাবতে ভাতবেই পরশদের বাসার সামনে চলে আসলো ইয়ানা,, রিকশা ভাড়া দিয়ে সোজা গেট দিয়ে ভিতরে গিয়ে কলিং বেল চাপল কিছুক্ষণ পর আর্দ্র এসে দরজাটা খুলে দিলো।

এই খাটাশটা এই সময় বাড়িতে কি করছে,, মনে মনে বিরবির করে বলল ইয়ানা।

কি হলো ওমন করে দাঁড়িয়ে না থেকে ভিতরে আসুন নয়তো দরজার বন্ধ করে দেবো।

ইয়ানা কথা না বলে সোজা দরজা দিয়ে ভিতরে চলে গেলো,, সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে পরশের রুমে যাওয়ার সময় আশেপাশে তাকিয়ে অন্তরাকে খুঁজতে লাগল কিন্তু ওকে পেলো না,, পরশের রুমের একপাশে আর্দ্রের রুম আর অপর পাশে অনিকের রুম তাই ইয়ানা ভাবলো পরশের রুমে যেতে গিয়ে হয়ত অন্তরার সাথে দেখা হবে৷ আপুটা খুব ভালো,, এই ভেবে ইয়ানা উপরে উঠে অন্তরার রুমের সামনে গিয়ে দেখলো দরজা ভিতর থেকে আটকানো।

ওরুমে ভাইয়া আর ভাবি আছে পরশের রুম পাশেরটা,,, উপরে উঠতে ইয়ানাকে অনিকের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলল আর্দ্র।

ইয়ানা লজ্জা পেয়ে,, আর্দ্রের দিকে না তাকিয়ে পরশের রুমে চলে গেলো,,, গিয়ে দেখলো পরশ বিছানায় বসে গেম খেলছে, ইয়ানা ওকে পড়ার টেবিলে বসিয়ে নিজেও বসলো,, তখনি আর্দ্র ল্যাপটপ নিয়ে পরশের রুমে এসে বিছানায় বসে বলল।

আমি এখানে কাজ করবো আমার সামনে পড়াও ওকে, এই বলে ল্যাপটপে কাজ শুরু করল।

এনি আমাকে কী ভাবেন মনে হয় আমি পড়াতে পারি না,, দেখতে এসেছে কেমন পড়ায় হুমম?? মনে মনে বলে পরশকে পড়াতে লাগল,, প্রায় বিশ মিনিট পর পরশ বলল,,,,ওফ্ফ আমার ভীষণ জোরে হিসি পেয়েছে আমি হিসি করে আসছি,, এই বলে রুম থেকে দৌড়ে বেরিয়ে গেলো।

আরে এই রুমেই তো বাথরুম আছে তাহলে বাইরে যাওয়ার দরকার কি,, এটা বলে আর্দ্র দাঁড়িয়ে আবার বসে পড়ল, কেননা নিচে মা আছে,, মায়ের কাছে গেলে মা ওকে হিসি করিয়ে দিবে,,, আর্দ্রের কিছু একটা মনে পড়ায় ও ল্যাপটপটা রেখে দাঁড়িয়ে ইয়ানা কে বলল।

এই শোনো এদিকে আসো।,, দুহাত পকেটে রেখে বলল আর্দ্র

ইয়ানা ভ্রু কুঁচকে চেয়ার থেকে উঠে আর্দ্রের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলল,, বলুন।

তুমি পরশকে ওসব কি শিখিয়েছো?? ভুলভাল।

কি আবার শেখাবো?? তারপর একটু ভেবে বলল,, ও আচ্ছা আপনি ওসব এর কথা বলছেন?? আরে পরশ তো ছোট আর আমাকে চেনেও না তাই আমি যদি প্রথমেই ওকে এসে পড়ানো শুরু করতাম আর কর্কশ গলায় কথা বলতাম তাহলে তো ও ভয় পেয়ে যেতো,, তাই জন্য ওর সাথে বন্ধত্ব করার জন্যই মজা করে ওসব বলেছি।

এখন থেকে আর ওসব ওকে শিখাবে না,, সাহস কতবড় ও তোমার জন্য আমাকে বলে আমি নাকি হাঁদা??

আর্দ্রের কথা শুনে ইয়ানা হাসা শুরু করলো,, ইয়ানার হাসা দেখে আর্দ্র রেগে ইয়ানার দু বাহু চেপে ধরে দেওয়াল এর সাথে লাগিয়ে বলল,,একদম হাসবে না আমি মোটেও কোনো হাসির কথা বলিনি ওকে।

আর্দ্র যে এভাবে এতো কাছে চলে আসবে ইয়ানা বুঝতে পারিনি, তাই চোখ বন্ধ করে রেখেছে তারপর কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,,, ছ,,ছাড়ুন আমায়।

কেনো ছাড়বো কেনো, আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও, বড্ড বেশি সাহস হয়ে গেছে তেমার,, একবার যদি হাতে পাই তাহলে দেখাতাম এই আর্দ্র কি।

ইয়ানা আগে কখনো কোনো ছেলের এতো কাছে আসিনি তাই শরীলের মধ্যে কেমন যেনো একটা অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে,,, আর্দ্র এতোক্ষণ রেগে কথাগুলি বললেও এবার ভালো করে ইয়ানার মুখের দিকে তাকাতেই দেখলো,, ইয়ানার চোখ বন্ধ আর ঠোঁট গুলি কেমন কাঁপছে এক গুছা চুল এসে ঠোঁটের উপর পড়েছে।

আচ্ছা এই ঠোঁট গুলি কি নরম?? নাকি শক্ত একবার ছুঁয়ে দেখবো?? এই ভেবে আর্দ্র ধীরে ধীরে ওর হাত ইয়ানার ঠোঁটের দিকে এগোতে লাগলেই তখনি পরশ বলল।

চাচ্চু তুমি কিউটিপাইকে ওভাবে ধরে রেখেছো কেনো?? কিউটিপাই কি করেছে??

চলবে,,,,,,,??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here