আমার_গল্পে_তুমি ১৪_পর্ব
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)
,
মিস ইয়ানা এই সোমবার তোমাকে আমার সাথে বান্দরবান যাওয়া লাগবে, কেননা ওখানের আমাদের কোম্পানির নতুন কাজ শুরু হয়েছে সেটা দেখতে প্লাস তাদের কে ইন্সট্রাকশন দেওয়ার জন্য সো তুমি সেই অনুযায়ী পেপারেশন নিয়ে রাখো, এখন যাও এখান থেকে।
এটা কেমন কথা যাও বললেই তো আর যাওয়া যায় না আর হুট করে এভাবে কিভাবে আমি একা একটা মেয়ে আপনার সাথে যাবো, বলা তো যায় না যদি আপনি আমার সুযোগ নেন তাহলে।
হোয়াট,, আমি সুযোগ নেবো?? তাও আবার তোমার?? কি আছে আছে তোমার মাঝে?? আর তাছাড়া তোমাকে চাকরির আগেই বলা হয়েছে যে কাজের প্রয়োজনে তোমাকে আমার সাথে যেতে হবে,, আর মোটেও আমরা দুজন যাচ্ছি না আমাদের সাথে ম্যানেজার সাহেব ও যাচ্ছে,,।
আমার প্রবলেম আছে আমি যেতে পারবো না।
সেটা বললে তো হবে না মিস ইয়ানা,, তোমাকে তো যেতেই হবে, চাকরি নেওয়ার সময় কিন্তু তুমি এইসব শর্ত মেনেই চাকরিতে জয়েন করেছিলে সো এখন পিছুপা হলে চলবে না,, তোমার অফিস আওয়ার শেষ এখন যাও বাড়ি গিয়ে বান্দরবান যাওয়ার প্রেপারেশন নাও,, আউট।
আমি,,,ধ্যাত কিছু বলবোই না সব সময় ওনি যা বলবে সেটাই হবে নাকি, মাকে এভাবে একা রেখে আমি যাবো কি করে কিন্তু সেটা তো এই গাম্বাট রাগী মার্কা লোক বুঝবে না কি আর করার। এখন মাকে কীভাবে বোঝাবো সেটাই দেখার বিষয় মনে হয় না মা রাজি হবে।
,,
আরে ওই তো ইয়ানা চলে আসছে, ইয়ানা দেখ কারা এসেছে তোর খালামানি,, সেই কখন এসেছে তোর জন্যই অপেক্ষা করছিলো।
বাব্বাহ আমার দেখা সেই ছোট্ট ইয়ানাটা কত্তবড় হয়ে গেছে আয় আমার কাছে আয় বস,, তা কি করছিন এখন।
এই ছোটখাটো একটা জব করি আর একটা টিউশনি করি,,, আচ্ছা তোমরা কথা বলো আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি ওকে??
আচ্ছা ঠিক আছে যা।
ওফফ বাপরে অনেক কাজ করেছি আজকে মনে হচ্ছে এখনি শুয়ে একটা লম্বা ঘুম দিই বড্ড ক্লান্ত লাগছে,, বিছানায় সটান হয়ে শুয়ে বলল ইয়ানা।
আরে সরি সরি তুই এসে গেছিস আমি ঠিকই পাইনি নক না করেই রুমে আসার জন্য সরি।
আপনি তো অলরেডি রুমেই ছিলেন কিন্তু বারান্দায়,, কে আপনি আর এখানে কি করছেন,, শুয়া থেকে উঠে বসে বলল।
সিরিয়াসলি তুই আমাকে চিনতে পারিসনি?? আর পারবিও কীভাবে সেই কবে আমাকে দেখেছিস আসোলে আমিও প্রথমে তোকে চিনতে পারিনি পরে ছবি দেখে চিনেছি,, হায় আমি সুহাগ তোর মায়ের চাচাতো বোনের একমাএ ছেলে।
ওহ আপনি সুহাগ ভাইয়া?? আমিতো চিনতেই পারিনি,, বসুন ।
তোকে না বলেই তোর রুমে এসে গেছিলাম ভাবলাম তোকে সারপ্রাইজ দেবো তারপর দেখি টেবিল ভর্তি উপন্যাস তাই এখান থেকে একটা নিয়ে বারান্দায় বসে পড়ছিলাম,, তা এতো উপন্যাস কেনো প্রেমে টেমে পড়েছিস নাকি।
কি যে বলেন আমি আর প্রেম এটাও সম্ভব নাকি,, আচ্ছা আপনি বসুন আমি ওয়াশরুম থেকে আসছি একটু পড়ে আবার পড়াতে যেতে হবে।
বাবা এতো পরিশ্রমী ভালো ভালো।
জীবনে ভালো থাকতে হলে একটু পরিশ্রম তো করতেই হবে,, কেউ তো আর এসে বলবে না যে এই নাও টাকা তোমরা কিছু কিনে খেয়ো।
তোর সাথে যু্ক্তিতে আমি পারবো না তুই বরং ফ্রেশ হয়ে তৈরি হয়ে নে আমিও তো বাড়ি যাবো যাওয়ার পথে তোকে নামিয়ে দিয়ে যাবো।
ওকে।
,,,,,,,
আরে আমাদের ইয়ানা চলে এসেছে যে এসো ভিতরে আসো।
আপু তুমি এই শরীল নিয়ে আবার দরজা খুলতে গেলে কেনো বাড়িতে কি আর কেউ নেই??
আরে কেবল তো পাঁচ মাস আমি এখনো অনেক স্টং,, আর এই সময় বেশি হাঁটাহাটি করতে হয়, যখন তুমি পেগনেন্ট হবে তখন বুঝবে।
নানা আমি বিয়েই করবো না পেগনেন্ট তো দূরের কথা, তা আমার স্টুডেন্ট কোথায় রুমে নিশ্চয়ই।
ও রুমে থাকা মানুষ,, বান্দা দেখো গিয়ে আর্দ্র রুমে বসে গেম খেলছে, একটু পর আর্দ্র চলে আসবে তার আগেই ওকে ওই রুম থেকে বার করে নিয়ে আসো নইলে আর্দ্র এসে ভীষণ রাগ করবে।
হুম সে আর আমি জানি না,, আচ্ছা আমি যাচ্ছি।
,,,,,,
নানা কিউটিপাই এটা করো না চাচ্চু দেখলে ভীষণ রাগ করবে,,।
,,আরে এতো ভয় পাচ্ছো কেনো আমি আছি তো কিচ্ছু হবে না আর ওনি তো জানতেই পারবে না যে ওনার ছবিতে গোঁফ টা আমিই এঁকেছি।
,,,ওহ রিয়েলি আমি জানতেই পারবো না??
,,এইরে হয়ে গেলো,, আমি গেলাম তুমি আসো,, এই বলে পরশ ফুরুত করে দৌড়ে চলে গেলো।
,,,আরে এই চাম্প দাঁড়াও যাহ চলে গেলো,, এখন তোর কি হবে ইয়ানা সময় থাকতে পালা।
ইয়ানা আর্দ্রর বিছানা থেকে নেমে যেই দৌড়ে বাইরে যেতে যাবে তখনি আর্দ্র ইয়ানার হাত মুচড়ে পিছনে ধরলো ইয়ানার পিঠ আর্দ্রর বুকের সাথে লেগে আছে।
আহ,, আরে কি করছেন ছাড়ুন আমার লাগছে তো ছাড়ুন বলছি।
,,লাগার জন্যই তো ধরেছি,, তোমাকে বলেছি না যে আমার জিনিসে হাত দেবে না তবুও তুমি এটা করার সাহস পেলে কীভাবে।
আসোলে আমি পরশকে ডয়িং শিখাচ্ছিলাম তাই আর কি।
তোমাকে রাখা হয়েছে চাম্পকে পড়ানোর জন্য ডয়িং শিখানোর জন্য অন্য কেউ আছে আর তাছাড়া ডয়িং করার জন্য বোর্ড কাগজ সব কিছুই আছে তাহলে আমার ছবিটা নষ্ট করলে কেনো??
সরি, আমার হাত ছাড়ুন।
গুড,, ফারদার যদি কখনো তোমাকে আমার জিনিসে হাত দেওয়া দেখি তাহলে তোমার খবর আছে আর এটা তোমার লাস্ট ওয়ার্নিং বুঝেছো, এবার যাও আউট।
ওনি সব সময় আমাকে বেথ্যা দেন কষ্ট দিয়ে কথা বলে আরে আমি কি মানুষ নয়,, এরপর থেকে আর ওনার সাথে কথায় বলবো না ওফ আমার হাত।
,,,,,
কিউটিপাই চাচ্চু কি তোমাকে মেরেছে??
কেনো?? মারবে কেনো আর আমি তোমার চাচ্চুকে ভয় পাই নাকি।
তাহলে তুমি তোমার মুখটা অমন করে রেখেছো কেনো, আচ্ছা যাও আমি চাচ্চুকে বকে দেবো।
নিজেরি ওনাকে দেখলে প্যান্ট খারাপ হয়ে যায় সে নাকি আবার বকে দেবে,, আচ্ছা ঠিক আছে এখন পড়ো।
পরশকে পড়ানোর শেষ করে ইয়ানা পরশের রুম থেকে বার হয়ে কেবলি নিচে নামবে তখনি আর্দ্রর বুকের সাথে ধাক্কা খেলো,,ধাক্কা লাগার পরেও ইয়ানা কিছু না বলে চলে যাচ্ছিলো তখনি আর্দ্র বলল,,,সূর্য আজকে কোন দিকে অস্ত গেলো মিস বকবক আজকে এতো চুপ কই গেলো তার এতো বকবকানি,, আর্দ্র কথার কোনো প্রতিবাদ না করে ইয়ানা চলে যেতে গেলে আর্দ্র আবারও বলল,,যাক এতো দিনে আমার কানটা বাঁচলো,,এবার নিশ্চয়ই বুঝে গেছো যে আর্দ্র চৌধুরী সাথে লাগতে এসে কতটা ভুল করেছো,, এখন থেকে এভাবেই চুপ থেকে আমায় সম্মান দিবে ওকে আর এরপর থেকে আমার পিছে লাগতে আসবে না এখন যাও ভিতু একটা।
এবার আর ইয়ানা নিজেকে চুপ রাখতে পারলো না আর্দ্রর দিকে তেড়ে গিয়ে মুখোমুখি দাঁড়ালো যদিও ইয়ানা আর্দ্র বুক অবধি তবুও মুখের উপর আঙুল তুলে বলল,,এই এই আপনার সম্যসাটা কি হ্যাঁ আমি চুপ আছি এটা সহ্য হচ্ছে না?? আর হবেই বা কীভাবে আপনি তো আস্ত একটা অসহ্য আর হ্যাঁ আমি মোটেও ভিতু নয় আমার কোনো ইচ্ছেই নেই আপনার সাথে কথা বলার বুঝেছেন মিস্টার আর্দ্র চৌধুরী,,, রেগে একসাথে এতো গুলো কথা বলায় ইয়ানা হাঁপিয়ে গেছে।
আরে রিলাক্স আস্তে এতো বেশি রাগ ভালো নয় চুপচাপ বাড়ি চলে যাও রোজ রোজ আমি তোমার ড্রইভার গিরি করতে পারবো না ওকে।
চলবে,,,,,,,???