#আমার_গল্পে_তুমি ২৫_পর্ব
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)
,
সারা রুম জুড়ে পিনপিন নিরবতা আর্দ্রদের ডয়িং রুমে সবাই আছেন ওখানে ইয়ানার মা সহ সুহাগ এর বাড়ির লোকেরাও আছে,, লিজা তো অঙ্গান হয়ে সোফায় পড়ে আছে যখন শুনেছে আর্দ্র ইয়ানাকে বিয়ে করেছে তখনি অঙ্গান হয়ে গেছে আর এলিনা বেবি বেবি করে ডেকে ওর ঙ্গান ফিরানোর চেষ্টা করছে,, ইয়ানা সোফার এক কোণে জড়োসড়ো হয়ে নিজের শাড়ি মুট করে ধরে দাঁড়িয়ে আছে মুখটা নিচের দিকে করে আর ওদিকে আর্দ্র সোফায় বসে আপেল খাচ্ছে আর পরশের সাথে দুষ্টামী করছে,, এতোবড় একটা কান্ড করার পরেও কোনো হেলদুল নেই,, রোজা গিয়ে ইয়ানার পাশে দাঁড়িয়ে ওর কাঁধে হাত রাখল, সমস্ত নিরবতা ভেঙে কবির বলল,,, তোর যখন ইয়ানাকেই পছন্দ ছিলো তাহলে আগে কেনো বললি না এই বিয়ের করার নাটক টা করার মানে কি??
ইয়ানা তোর থেকে আমি এমনটা আশা করিনি,, আমিতো তোকে বিয়ে করার জন্য জোর করিনি তুই নিজের ইচ্ছেই এই বিয়েটা করতে রাজি হয়েছিলি তাহলে এমনটা করার কারণ কি??
ইয়ানা করুন চোখে ওর মায়ের দিকে তাকালো সব দোষ ওই মিস্টার ইগো ওয়ালা লোকটার, দেখো কেমন করে বসে আছে যেনো কিছুই হয়নি মন চাইছে ধরে কয়েকটা দিই ,,।
কি হলো আর্দ্র আমি তোর সাথে কথা বলছি।
কি বলবো আমি বাবা আচ্ছা তোমরাই বলো আমি কি একবার ও বলেছি যে আমি লিজাকে বিয়ে করবো?? তোমরা বলেছো বিয়ে করতে হবে তাই আমিও বলেছি যে ওকে বিয়ে করবো কিন্তু একবারও তো বলিনি যে লিজাকেই বিয়ে করবো।
সেদিন যখন বললাম যে লিজার সাথে তোর বিয়ে ওর বাবা মাকে আসতে বলেছি তখন তো একবার ও বললি না যে তুই লিজা কে নয় বরং ইয়ানাকে বিয়ে করবি।
আচ্ছা বাবা লিজার সাথে বিয়ে তোমরা ঠিক করেছো আমি নয়, আর আংকেল আন্টি তো আসতেই পারে আমার বিয়েতে তাই নাহ??তোমরা বিয়ে করতে বলেছিলে করেছি এখানে তো আর কোনো কথা বলার কারণ দেখছি না।
আচ্ছা বাবা যা হওয়ার হয়ে গেছে এই ব্যাপারটা এখানেই মিটমাট করে নেওয়াই ভালো, আর আন্টি আপনি প্লিজ লিজাকে নিয়ে রুমে যান।
এতো কিছুর পরেও তোমার কি মনে হয় অনিক যে আমরা আর এখানে থাকবো?? কখনোই নাহ আমরা আজকেই এখনি এখান থেকে চলে যাবো,, উঠো বেবি।
আহ এলিনা হচ্ছে কি, দেখছো তো এখানে একটা সম্যসা হয়েছে এভাবে কথা না বলে চুপ থাকো। আলম সাহেব খুবি শান্তশিষ্ট লোক কিন্তু বউকে ভয় পাই।
তুমি চুপ থাকো আমি এখানে আর এক মহুর্তো থাকবো না, তুমি গাড়ি বার করো,,, আলম সাহেব বউয়ের উপর কথা বলতে পারলে না অগত্যা সবার থেকে বিদায় নিয়ে সেই রাতেই বেরিয়ে গেলো।
এবার আমাদের ও যেতে হবে, চল সুহাগ,,।
আম্মু আমিও যাবো প্লিজ তুমি রাগ করো না আমার কথাটা তো শুনো,৷,, কিচ্ছু শোনার নেই আমার সুহাগ আমি যাচ্ছি তুই আয় এই বলে ইয়ানার মা বেরিয়ে গেলো সুহাগ বেরিয়ে যাওয়ার আগে ইয়ানার সামনে দাঁড়িয়ে বলল,৷ এরকম টা না করলেও পারতি ইয়ানা,, সত্যিই কি আমি এই অপমানটার প্রাপ্য?? আচ্ছা তুই বল আমি কি কখনোই তোকে বলেছি যে আমি তোকে বিয়ে করতে চাই বল বলেছি?? কেনো এমনটা করলি কেনো এভাবে আমাদের ডেকে এনে এমন অপমান করলি?? জানি তুই উত্তর দিবি না কেননা তোর কাছে এর কোনো জবাবই নেই,, আসি ভালো থাকিস কথাটা বলে সুহাগ চলে গেলো, পুরোটা সময় ইয়ানা অপরাধি চোখে সুহাগের দিকে তাকিয়ে ছিলো।
আচ্ছা যা হওয়ার হয়েছে অন্তরা যাও ইয়ানাকে নিয়ে রুমে যাও অনেক রাত হয়েছে।
ঠিক আছে মা,, ইয়ানা চলো, ইয়ে আজ থেকে কিউটিপাই আমাদেরকে সাথেই থাকবে ইয়ে মজা মজা পরশ লাফাতে লাফাতে ইয়ানার আগে আগে চলে গেলো।
,,,,,,,,,,,,,,
আর্দ্রর রুমে ইয়ানা বসে আছে বলতে গেলে আর্দ্রর সাথে ঝগড়া করার জন্য অপেক্ষায় আছে আজকে ওনাকে আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে ওনি কেনো এমনটা করল আজকে শুধু মাএ ওনার জন্য আম্মু আমায় ভুল বুঝলো সুহাগ ভাই ভুল বুঝলো,, আম্মু আজকে অনেক কষ্ট পেয়েছে যে করেই হোক আম্মু কে বোঝাতেই হবে যে আমি কিছুই করিনি যা করার সব মিস্টার আর্দ্র করেছে।
ইয়ানার ভাবনার মাঝেই আর্দ্র রুমে ঢুকলো আর্দ্র রুমে ঢুকার সঙ্গে সঙ্গে ইয়ানা খাট থেকে নেমে আর্দ্রর সামনে গিয়ে কমরে হাত রেখে দাঁড়ালো, ইয়ানার এভাবে দাঁড়ানো দেখে আর্দ্র ভ্রুঁ কুঁচকে চোখের ইশারায় জিগাস করলো যে কি চাই?? ব্যাস ওমনি শুরু হয়ে গেলো ইয়ানার কথার ঝুলি।
এই এই যে মিস্টার আপনি নিজেকে কি মনে করেন হ্যাঁ এভাবে গুন্ডাদের মতো আমাকে তুলে আনার মানে কি হ্যাঁ?? কেনো করলেন এমনটা, আজকে শুধুমাত্র আপনার জন্য সবাই আমাকে ভুল বুঝলো, আমি জানি আপনি ইচ্ছে করে এমনটা করেছেন যাতে সবাই আমাকে ভুল ভাবে এখন আমি কি করবো,,, ইয়ানার এভাবে বকবক করা দেখে আর্দ্র হাত দিয়ে ইয়ানাকে থামিয়ে দিয়ে সোজা ওয়াশরুমে চলে গেলো, আর্দ্রর এহেন কাজে ইয়ানা তো পুরাই টাস্কি,, আরে এটা কি হলো, আমি ওনার সাথে কথা বলছিলাম আর ওনি আমায় পাত্তা না দিয়ে চলে গেলো? ধ্যাত।
সেদিন পুরো রাতটাই প্রায় ইয়ানার আর্দ্রর ঝগড়া করেই কাটলো, ঝগড়া বললে ভুল হবে ইয়ানা শুধু বলেছে আর আর্দ্র কানের উপর বালিশ দিয়ে শুয়ে ছিলো শেষে ইয়ানা না পেরে ও আস্তে করে আর্দ্রর পাশে শুয়ে পরলো।
,,,,সকালে,,
শুনেছি নতুন ক্যাপেলদের বিয়ের পরের দিন সকাল টা শুরু হয় তার বরের বুকের উপর বউ এর মুখ দেখে আর আমার ভাই আর তার বউ রুমের দরজা হাট করে খোলা রেখে দুজন দুদিকে মুখ করে ঘুমিয়ে আছে আর মাঝ খানে বালিশ, সত্যি আমার ভাইকে আমায় দেখে শিখা উচিত যে বউকে কীভাবে কন্টোল করতে হয়।
কি বললে??
আব, আরে আমি বললাম যে আমার ভাই এর আমাকে দেখে শিখা উচিত যে কীভাবে বউকে ভালো বাসতে হয়।
হুম অনেক ভালোবাসাবাসি হয়েছে এখন ওদের ডাকি চলো, কাল অনেক রাতে হয়ত দুজন ঘুমিয়েছে, রাতে মনে হয় বিশাল ঝড় হয়েছে ঘুমানো স্টাইল দেখেই বোঝা যাচ্ছে।,, ইয়ানা এই ইয়ানা উঠো, অন্তরার ডাকে ইয়ানা চোখ কচলে উঠে বসে পরল অনিক কে দেখে তারাতারি করে মাথায় কাপড় দিলো আর মনে মনে আর্দ্রকে রাগ করতে লাগল যে রাতে দরজা দিই নাই কেনো,।
তা আমার দেবর কে পেয়ে এতই খুশি হয়েছো যে রাতে রুমে দরজা দিতেই ভুলে গেছো??
অন্তরার কথায় ইয়ানা ভিষণ লজ্জা পেলো কেননা এখানে অনিক আছে, ইয়ানাকে এভাবে লজ্জা পেতে দেখে অনিক বলল,,আরে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই আমি তো তোমার ভাই আচ্ছা সরো দেখি আমি আর্দ্র কে ডাকি অনেক বেলা হলো তো।
এই যা কত বেলা হয়ে গেছে আর আমি বাড়ির নতুন বউ হয়ে এখনো বিছানায় পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিলাম ছি, কি মনে করবে সবাই,, মনে মনে বলল ইয়ানা।
এই আর্দ্র ভাই আমার উঠ অনেক বেলা হয়েছে অফিসে যেতে হবে তো আরে উঠ না?? তুই তো এমন ছিলি না, আজকে সকালে তো জগিং এও গেলি না।
উফ ভাইয়া ঘুমাতে দে তো কাল রাত ওই চুড়েল টার জন্য একটু ও ঘুমাতে পারিনি প্লিজ এখন বিরক্ত করিস না,, ঘুম ঘুম গলায় কথাটা বলে আর্দ্র আবার ঘুমিয়ে গেলো, আর এদিকে তো ইয়ানা ভিতরে ভিতরে রাগে ফেটে যাচ্ছে কত্তো বড় সাহস লোকটার আমাকে চুড়েল বলছে।
বলছি কি ভাইয়া ওনার ঘুম এভাবে ভাঙ্গবে না ওনার ঘুম ভাঙ্গানোর জন্য অন্য ব্যাবস্হা আছে,, কি??,, একটু দাঁড়ান আমি এখনি আসছি, ইয়ানা ওয়াশরুমে গিয়ে মগে করে পানি নিয়ে এসে আর্দ্রর গায়ে ছুঁড়ে মারল৷
আরে এটা কি করলে আমি কিছু জানি না অন্তরা চলো আমরা যাই এরা যা ইচ্ছে করুক, এদের মাঝে থেকে অকালে প্রাণটা খোয়াতে চাই না।
চলবে,,,,??
(কি লিখেছি নিজেই জানি না অনেক তাড়াতাড়ি করে লিখেছি ভুল ক্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন)