আমার_গল্পে_তুমি ২৮_পর্ব

আমার_গল্পে_তুমি ২৮_পর্ব
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)

,
পরদিন ইয়ানা অফিসে গেলে সবাই ওর দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে ছিলো আর মেয়েগুলো তো আরো বেশি করে তাকিয়ে ছিলো কেননা কালকে আর্দ্র যে কাজটা করেছে সেটা দেখে অফিসের মেয়েগুলোর তো চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম ওরা সবাই ইয়ানার উপর সেই ক্ষেপে আছে, ইয়ানা একবার সবার দিকে দেখে নিজের ডেস্কে চলে গেলো,, ব্যাপারটা কি সবাই আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছে কেনো যেনো মনে হচ্ছে আমি বড় কোনো ভুল করে ফেলেছি,, ইয়ানার ভাবনার মাঝেই ওর ডেস্কে কয়েকটা মেয়ে আসলো,

এই তুমি কি মনে করো নিজেকে হুম?? ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খেতে চাইছো?? একদম সেই চেষ্টা করবা না বুঝলে??

মানে কি বলছেন আপনারা এসব আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা,।

কচি খুকি তুমি কিছুই বোঝো না, তুমি কি ভেবেছো কালকে আর্দ্র স্যার তোমায় কোলে নিয়েছিলো বলে এটা ভেবো না যে ওনি তোমায় পছন্দ করে,, আর্দ্র স্যার কোনো মেয়ের দিকে তাকায় না ইভেন কোনো মেয়েকে পাত্তাই দেয় না,, আর শোনো একদম আর্দ্র স্যারকে হাত করার চেষ্টা করবেনা ওকে।

মেয়েগুলোর কথা শুনে ইয়ানার তো হেবি রাগ হচ্ছে এই মেয়েগুলো কি ভেবেছে আমি ওদের আর্দ্র স্যারের পিছনে ঘুরি? এই শুনেন আপনারা আর্দ্র স্যার বলতে পাগল হতে পারেন কিন্তু আমি নয় আর হ্যাঁ কালকে আমি একটা প্রবলেমে পড়েছিলাম তাই ওনি আমায় হেল্প করেছে তবে সেটা আমি করতে বলিনি ওনি নিজের ইচ্ছেই আমায় কোলে নিয়েছিলো ওকে।

সে যায় বলো আমাদের বিশ্বাস হয় না, তুমি নিশ্চয়ই এমন কিছু করেছিলে যে আর্দ্র স্যার তোমায় কোলে নিতে বাধ্য হয়েছিলো, তবে এখন থেকে আর্দ্র স্যার এর থেকে দূরে থাকবে বুঝেছো,, এই চলো সবাই।

ইয়ানার কেনো যেনো ভীষণ রাগ হচ্ছে, মেয়ে গুলোর কত বড় সাহস ওকে বলছে ওর বরের থেকে দূরে থাকতে মন চাইছিলো এখনি বলে দিই যে তোমাদের আর্দ্র স্যার আমার বর হয় কিন্তু নাহ এটা অফিস এখানে প্যারসোনাল জিনিস আনার কোনো মানেই হয় না।

মিস ইয়ানা এখনি আমার কেবিনে একটু আসুন, কালকে যে ফাইলটা আপনাকে দিয়ে ছিলাম সেটা নিয়ে।

ওকে স্যার আসছি,, ফোনটা রেখে ডেস্ক এর উপর থেকে ফাইলটা নিয়ে ওনার কেবিনে নক করলাম,, মে আই কামিং স্যার??

ইয়েস,,,

এই নিন আপনার ফাইল, ঠাস করে ফাইলটা টেবিলের উপর রেখে।, কি ব্যাপার বলো তো এতো রেগে আছো কেনো?? আর বাই দ্যা ওয়ে তুমি এখনো ঠিক আছো, না মানে একটু আগে দেখলাম সবাই তোমার ডেস্কে যেভাবে গেলো আমি তো ভেবেছি তুমি এতোক্ষণ কান্না কাটি শুরু করে দিয়েছো।

মানে??

মানেটা খুব সহজ তুমি ওদের সবার ক্রাশ আর্দ্র চৌধুরীর কোলে উঠেছো ওদের তো রাগ হবেই,, আর আমি আসোলে কাউকে পাত্তা দিই না বুঝেছো সে যেই হোক না কেনো, তোমাকে কালকে কোলে নিয়েছি এটা তোমার ভাগ্য এই আর্দ্র চৌধুরীর কোনো মেয়ের প্রতি ইন্টারেস্ট নেই,, দাও ফাইটা দাও।

ওনার নিজের প্রতি ওনার এতো অহংকার এতো আ্যাটিটিউড,, ওনার এই ভাব যদি আমি না ছুটাই তবে আমার নাম ও ইয়ানা নয় শুধু আজকে একবার বাড়িতে জান তারপর দেখবো আপনার এই অহংকার, আ্যাটিটিউড কোথায় যায়,।

বিকেলের দিকে অফিস শেষে ইয়ানা বাড়ি চলে গেলো আর যাওয়ার আগে শপিং মল থেকে ওর প্লান অনুযায়ী জিনিসপত্র কিনে নিয়ে গেলো,, আজকে বুঝবে মিস্টার আর্দ্র প্লেন কত উপর দিয়ে যায়। অফিস শেষে সন্ধ্যার একটু পর আর্দ্র আর অনিক বাসায় চলে গেলো,, সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে উঠতে আর্দ্র একবার চারপাশে দেখে নিলো ইয়ানাকে কোথাও দেখতে পেলো না তারপর পরশের রুমে উঁকি দিয়ে দেখল ওখানেও নেই তাহলে গেলো কথায় মেয়েটা, এসব ভাবনার মাঝেই আর্দ্র নিজের রুমে চলে আসলো তারপর সামনে দিকে তাকিয়েই ওর চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেলো যেনো এখনি কোটোর থেকে বেরিয়ে আসবে কেননা সামনে ইয়ানা দাঁড়িয়ে আছে আর ইয়ানার পরনে পাতলা একটা শাড়ি যেটা সামনে দিয়ে একদম গুছিয়ে নিয়েছে যার দরুন ইয়ানার ফর্সা পেট আর নাভি দেখা যাচ্ছে, আর হাতা কাটা ব্লাউজ পড়েছে পিছনে পিঠ পুরোটাই দেখা যাচ্ছে শুধু দুটো হুক দিয়ে ব্লাউজ টা আটকানো আছে,, আর ইয়ানার ফর্সা পিঠ পুরোটাই বিদ্যমান ,, ইয়ানাকে এই সাজে দেখে আর্দ্রর হালুয়া টাইট, কেনো যেনো অনেক গরম লাগছে হাত দিয়ে গলার টাই টা ঢিলে করে উপর থেকে কোর্টের বোতাম খুলে শার্টের উপরের দুটো বোতাম খুলে নিলো আর্দ্র কেননা ইয়ানাকে অনেক বেশিই আবেদনময়ী লাগছে,, ইয়ানা আস্তে করে কমর দুলিয়ে হেঁটে আর্দ্রর কাছে গিয়ে আলত সরে বলল,, দিন?

ক,,,কি দেবো,, ইয়ানার এভাবে কাছে আসায় আর্দ্র শুকনো একটা ঢোক গিলল তারপর বলল।

কি আবার আপনার ব্যাগটা দিন আর গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসুন যান.

আর্দ্র যেনো পুরাই রোবট হয়ে গেছে মাথা কাজ করছে না কেমন হাং হয়ে গেছে, ইয়ানার কথামতো আর্দ্র ব্যাগটা ইয়ানার হাতে দিয়ে ওর দিকে তাকিয়েই ওয়াশরুমের দিকে গেলে আর গিয়েই ওয়াশরুমের দরজার সাথে টকাস করে একটা ধাক্কা খেলো,, আউচ,, আর্দ্র সামনে তাকিয়ে দেখলো দরজা তারাতাড়ি করে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে গেলো,, ওদিকে আর্দ্রর এমন অবস্থা দেখে ইয়ানা তো হাসতে হাসতে শেষ , খুব তো অফিসে বলেছিলো ওনার নাকি কোনো মেয়ের উপর ইন্টারেস্ট নেই কত্ত বিশ্বাস নিজের উপর এখন কি হলো, দিয়েছি মাথা খারাপ করে এখন দেখি মিস্টার আর্দ্র আপনি কি করেন। আজকে যদি আপনার ইজ্জত হরণ না করি তবে আমার নামও ইয়ানা নয়।

ওদিকে আর্দ্র দরজার সাথে হেলান দিয়ে বুকের বাঁ পাশে হাত রেখে জোরে জোরে শ্বাস নিতে নিতে বলল, এটা কি দেখলাম আমি এ তো দেখি পুরাই আগুন সুন্দরী, এই জন্যই হয়ত বলে ঘরের বউ এর সাথে কোনো পাঙ্গা নিতে হয় না নয়ত অকালে ফেঁসে যেতে হয়,, না না আর্দ্র এভাবে হেরে গেলে চলবে না ফোকাস, ফোকাস নিজেকে কন্ট্রোল কর তুই দেখিয়ে দে যে তুই ও আর্দ্র চৌধুরী এভাবে কোনো মেয়েকে দেখে গলে গেলে চলবে না, কিন্তু আসলেই ইয়ানাকে সেই লাগতেছিলো, আর্দ্রর ভাবনার মাঝেই ইয়ানা ওকে ডাকলো,, শুনুন না যলদি আসুন আমিতো অপেক্ষা করছি না কি।

আবার ডাকতেছে কারে, সুন্দরী বউ এর এই রূপে দেখলে আমি কেনো বড় বড় মহা পুরুষ রাও গলে যাবে,, নিজেকে অনেক ভাবে বুঝিয়ে আর্দ্র চোখে মুখে পানি পানি দিয়ে নিজেকে শক্ত করে গম্ভীর মুখ করে বাইরে বেরোলো,, কিন্তু ইয়ানাকে আবার এই রূপে দেখে ও ভিতরে ভিতরে আইসক্রিম এর মতো গলে গলে পড়ছে, ইয়ানা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কিছু একটা করেছে যার দরুন ওর ফর্সা খোলা পিঠটা দেখা যাচ্ছে, আর্দ্র যেনো একটা ঘোরের মধ্যে চলে গেছে আলতো পায়ে ইয়ানার কাছে গেলো পিছন থেকে একদম ইয়ানার গায়ের সাথে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে নিজের মুখটা ইয়ানার ঘাড়ের কাছে নিয়ে জোরে একটা শ্বাস নিলো,, কি সুন্দর একটা ঘ্রাণ, আর্দ্রর ঠোঁট টা যখনি ইয়ানা পিঠে লাগবে লাগবে ভাব তখনি ফট করে ইয়ানা ঘুরে গেলো ওমনি আর্দ্র সটান করে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে গেলো যেনো স্কুলের পিটিতে দাঁড়িয়েছে একটু নড়লেই স্যার মারবে।

একি আপনি এখানে কি করছেন?? আর আমার এতো কাছে এসেছেন কেনো? কি চাই।

ক,,কই কিছুতো না আমি আসলে দেখছিলাম তুমি কি পারফিউম লাগিয়েছো আসলে স্মেইল টা অনেক সুন্দর , কোন ব্রান্ড??

হ্যাঁ??

ব,,বলছি কোন ব্রান্ড, নাম কি??

হুম কোন ব্রান্ড, আসলে কি বলুন তো আমি কোনো পারফিউম লাগায়ইনি তাহলে আপনি স্মেইল পেলেন কীভাবে??

এইরে ধরা পড়ে গেলাম নাকি,, না আসোলে আমি সুন্দর একটা স্মেইল পেলাম তো তাই ভেবেছি তুমি হয়ত কোনো পারফিউম লাগিয়েছো,, কন্ট্রোল আর্দ্র কন্ট্রোল।

একি আপনি এমন ভাবে ঘামছেন কেনো? আর কি সব বিরবির করছেন, এসিটা কি একটু বারিয়ে দেবো??

এখন আমি যেটা করবো তার জন্য আমার কিন্তু কোনো দোষ নেই সব দোষ তোমার আমি কিছু জানি না।

মানে আপনি কি,,,, ইয়ানা আর কিছু বলতে পারলো না তার আগেই আর্দ্র ইয়ানার খোলা কমরে ওর হাত দিয়ে শক্ত করে চেপে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো তারপর ইয়ানার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট মিলিয়ে দিলো,,

চলবে,,,,,??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here