আমি সেই চারুলতা পর্ব-২৮

0
1887

#আমি_সেই_চারুলতা
#Shuvra_Priya (স্নেহা)
#পর্বঃ২৮
_______________________

– রেডি হয়ে নিন চারুলতা। আপনাকে একটা জায়গায় নিয়ে যাবো।
সাজিদ ভেবেছিলো চারু জিজ্ঞেস করবে কোথায় যেতে হবে তবে সাজিদকে ভুল প্রমান করে দিয়ে চারু এ সম্পর্কে কিছুই জিজ্ঞেস করলো না। মেয়েটাকে আজও ঠিক বুঝে উঠতে পারলো না সাজিদ। সে চারুলতাকে একটা বোরকা দিলো যেনো চারুকে কেউ চিনতে না পারে। চারু কিছু না বলেই সেটা নিয়ে নিলো।
– গাড়ি বের করছি আমি, আপনি তৈরি হয়ে আসুন।
চারু সাজিদের কথার কোনো প্রত্যুত্তর করলো না। চুপচাপ বোরকা পরিধান করে নীচে নেমে গেলো যেখানে সাজিদ তার জন্য অপেক্ষায় আছে। চারু নিচে নেমেই গাড়িতে গিয়ে বসে পড়লো।
– আপনার কৌতুহল হচ্ছেনা আমরা কোথায় যাচ্ছি?
– অনুভূতিরা এখন মৃ*ত। তাই এইসব ছোট খাটো বিষয়ে আর কৌতুহল জাগেনা।
– বাহ! মাত্র উনিশ বছর বয়সেই অনুভূতিহীন হয়ে গেলেন। এইটা তো অনুভূতি জন্মানোর বয়স।
– আর পাঁচটা সাধারণ মেয়ের মতো হলে সম্ভবত, এই সময়টাতে অনুভূতি জাগতো।
– পাঁচটা সাধারণ মেয়ের মতো বাঁচতে চান?
– আমি চাইলেও আমার জীবন আর কখনো স্বাভাবিক হয়ে যাবেনা। আমার ভয়ানক অতীত বারবার সামনে চলে আসবে। তাছাড়া বেঁচে থাকার অনুভূতিটাও এখন আর তীব্র নয়। সবকিছুই খাপছাড়া মনে হয়।
– এতটা শক্ত হবেন না চারুলতা। জীবন এখনো শেষ হয়ে যায়নি।
– খুব শীঘ্রই হবে। পাঁচটা খু*ন করে জেল পালিয়ে যদি আরো একটা খু*ন করি তাহলে তো অচিরেই আমার ফা*সি অনিবার্য।
– আপনার কথাবার্তার ধরন খুব গম্ভীর। বয়সের তুলনায় অধিক ম্যাচুরিটি আপনার মাঝে।
– বয়স দিয়ে সবসময় সবকিছু হিসেব করা যায়না মি. এস.আই।
– হুম, তার সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ আপনি।
চারু কিছু না বলে রহস্যময়ী একটা হাসি দিলো। কে জানে কতটা রহস্য এই মানবীকে ঘিরে আছে। সেই রহস্যের চাদর কবে ভেদ হবে।
– আপনার কলিগরা কাল পার্টিতে এলো না?
– জেলে যেতে ইচ্ছে হয়েছে নাকি তাদের খোজ করছেন।
– আপনার জুনিয়রকে আমার বিরিয়ানি রান্না করে খাওয়ানোর ছিলো।
– আপনি হিমেলের পেছনে কেনো পড়েছেন বলুন তো? বেচারা খুবই ইনোসেন্ট।
– আজকাল সরলতার ভাত নেই। যে সয় তাকে আরো অনেক কিছু সহ্য করতে হয়। সে এখনো যোগ্য পুলিশ অফিসার হয়ে উঠতে পারেনি।
– সে যোগ্য নাকি অযোগ্য সেটা ঠিক করার যোগ্যতা এখনো আপনার হয়ে ওঠেনি চারুলতা। নিজের সীমায় থাকুন।
{গল্পের আসল লেখিকা শুভ্রা আহমেদ প্রিয়া}

– আমার সীমা আমি অনেক আগেই অতিক্রম করে ফেলেছি। এখন কারোর সাধ্য নেই আমাকে আবার সেই সীমারেখার গন্ডিতে আবদ্ধ করার।
– এতটা বেপরোয়া হবেন না চারুলতা। সামনে সারাজীবন পড়ে আছে।
– আমার জীবন তো শুধুমাত্র আর কয়েকটা দিন। তারপর আমার ফা*সি হবে আমি নিশ্চিত কিন্তু তার আগে আমি তাকে হ*ত্যা করে যেতে চাই। আরো হাজারো চারুলতার জীবন রক্ষা করতে চাই। আমার প্রতিশোধের আগুনে তাকে জ্বালাতে চাই।

সাজিদ চারুকে নিয়ে গেলো তার কলেজে। চারু কলেজ দেখেও কোনো বিশেষ প্রতিক্রিয়া দেখালো না। খুবই স্বাভাবিক ভাবে বললো,
– এখানে কেনো এসেছি আমরা?
– সামনেই আপনার পরীক্ষা। পড়াশোনা শুরু করে দেওয়া উচিত আপনার।
– কি হবে পড়াশোনা করে? আমি তো এমনিতেই ম*রে যাবো।
– আপনার কাছে আমি এমন উত্তর আশা করিনি চারুলতা। আপনাকে আমি খুবই প্রানবন্ত মনে করেছিলাম। আমি ভাবতাম আপনি শেখার জন্য পড়া শোনা করেন। জীবনের শেষ কয়েকটা দিন যদি শিক্ষা অর্জন করে কাটানো যায় তাহলে ক্ষতি কি?
চারু উত্তর দেয়না। নিজেকে কেমন যেনো শক্ত কোনো এক আবরনীতে ঢেকে ফেলেছে সে।
– আপনার জীবনের উদ্দেশ্য কি চারুলতা?
– আমার মৃ*ত্যুর আগে ওই পিশাচটাকে খু*ন করা।
– তেমন উদ্দেশ্য নয়। আমি বলতে চাইছি অনেকেরই তো ইচ্ছে থাকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, টিচার ইত্যাদি হওয়ার।
– আগে ইচ্ছে ছিলো ডক্টর হবো। এখন আর সে স্বপ্ন দেখি না। বাঁচবোই কয়দিন? অবশ্য স্বপ্ন দেখতে ক্ষতি কি? স্বপ্ন তো সবাই দেখে। তবে আমার চোখেই এখন আর কোনো স্বপ্ন আসেনা। স্বপ্নও আমাকে ফাকি দিয়ে আমার সাথে লুকোচুরি খেলে। ঘুমালেও স্বপ্ন আসেনা জেগে থাকলেও আসেনা।
– আপনার কথাবার্তায় আপনাকে বেশ ডিপ্রেসড মনে হয় চারুলতা।
– আমি মানুষটাই এমন হয়ে গেছি বুঝলেন! কেনো যেনো আর অনুভূতি কাজ করেনা।
– শিহাবের প্রতিও না?
– অনুভূতিরা প্রায় ঝিমিয়ে এসেছে। তবে তার প্রতি অনুভূতি না আনতে চাইলেও আমি অনুভূতি চাই। প্রতিহিং*সা ছাড়াও অন্যান্য অনুভূতি আমার প্রয়োজন। মৃ*ত্যুর আগে কিছু মানুষকে আমি ভালোবাসতে চাই। আমার ভাইকে ভালোবাসতে চাই। লতাকে ভালোবাসতে চাই। শাওন ভাইকে একটু ভালোবাসতে চাই। এই মানুষটা সারাজীবন শুধু আমাকে দিয়েই গেলো। তারও কিছু প্রাপ্য। শিহাবের প্রতি অনুভূতিহীন হতে চাই।
– হামিদকেও ভালোবাসেন না?
– খুব চেষ্টা করি৷ ভালোবাসাটা আসেনা।
– শিহাবকে ছেড়ে শাওনকে কেনো ভালোবাসতে চান? শাওন তো আর নেই। শিহাবের সাথে ভালোবাসা পরিনতি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও শাওনের সাথে তো সেই সম্ভাবনা শূন্য।
– এই জীবনে কাউকে জড়াতে চাইনা তাই শাওন ভাই-ই সর্বসেরা। সে মৃত্যুর আগেও আমার কাছে শুধু একটু ভালোবাসা চেয়েছে কিন্তু আমি এতটাই অনুভূতিহীন হয়ে গেছি যে আমি চেয়েও তাকে ভালোবাসতে পারিনি।
– তাকে ভালোবাসার ইচ্ছে ছেড়ে দিন। শিহাবকে ভালোবাসুন। আমি নাহয় আপনাকে আইনের হাতে তুলে দেবো না। সুন্দর মতো বেঁচে থাকবেন। আপনার সুখে থাকার অধিকার আছে চারুলতা।
– আমি মানুষটাই কষ্টের সাগরের মতো। আমাতে বিলিন হতে চাইলে যে সব সুখের আশা ত্যাগ করে দুঃখের সাগরে বিলিন হতে হবে।
– শিহাব তো পেয়েই আসছে এত বছর যাবত সেই কষ্ট। বিলিন হয়েছে আপনাতে।
– আমাতে বিলিন হলেই বিলিন হওয়া যায়না। কষ্টের সমুদ্রে জাহাজ ভিড়ানো এত সহজ নয়। দক্ষ নাবিক হতে হয়।

★★★

মাত্র চৌত্রিশ বছর বয়সে এত বড় একটা ব্যাবসা নিজ হাতে সামলানো ছেলেটির মতো শক্ত একজন ছেলের প্রতিরাতে বালিশ ভেজে অশ্রুজলে। প্রতিনিয়ত অপেক্ষা করে যায় তার স্বর্ণলতার জন্য। এই বুঝি একবার এলো, তাকে জড়িয়ে ধরলো। অনেক বেশি ভালোবাসা নিয়ে তার মনের সর্বস্ব দখল দিয়ে দিলো তাকে। কিন্তু এমন হয়না। স্বর্ণলতা আসেও না, তাকে ভালোও বাসেনা। চাতক পাখির মতো খুজে বেড়ায় একটু ভালোবাসা কিন্তু তার ভালোবাসার ঝুড়ি সে সম্পূর্ণই অন্য কারোর নামে করে দিয়েছে। ভালোবাসার ঝুড়ি শিহাবের নামে নেই এর চেয়েও বেশি কষ্ট হয় যখন শিহাবের মনে হয় সেই ঝুড়িটা অন্যকারোর নামে। সেই ভালোবাসার ঝুড়িটা কি একমাত্র শিহাবের হতে পারতো না? উত্তর মেলে না। নিস্তব্ধ রাত ছাপিয়ে নতুন ভোরের উদয় হয় কিন্তু শিহাবের অপেক্ষার প্রহর কাটেনা। তার জীবনে ভোর হয়না। তার স্বর্ণলতা ফিরে আসেনা। কি বিষণ্ণ লাগে সবকিছু! বাড়ির সাথে সকল সম্পর্ক অনেক আগেই শেষ করেছে কিন্তু আজও সব শেষ হয়নি। বাড়ির প্রতিটি মানুষ এখনো ভালোবেসে অপেক্ষা করে যায় তার জন্য। এতগুলো মানুষের ভালোবাসা পায়ে ঠেলা সম্ভব হয়না শিহাবের পক্ষে তাই আজ প্রায় দুই বছর পর বাড়ি ফিরে এসেছে শিহাব তবে বাড়িতে এসেই দরজায় খিল দিয়েছে। কারোর সাথেই কথা বলতে আর ভালো লাগছেনা। অনেক দিন পর শিহাব এগিয়ে গেলো সেই ড্রয়ারের সামনে। মাঝে পেরিয়ে গেছে চারটা বছর কিন্তু এই ড্রয়ারটা খোলা হয়নি। তালা খুলতে কিছুটা ঝামেলা হলো। চার বছর যাবত অকেজো হয়ে আছে এটি। তবে তালা খুলতেই বেড়িয়ে এলো চার বছর আগের কিশোরী চারুর সেই চিত্র যা নিজের হাতে অঙ্কন করেছিলো শিহাব। কচি কিশলয়ের মতো মুখখানি কি কোমল! এই ছবিটা শিহাব তখন একেছিলো যখন চারুর বয়স পনেরো। লজ্জাজনক ঘটনা তখন ঘটেছিলো যখন চারুর সামনে ধরা পড়ে গেলো। শিহাব যে কেমন অস্বস্তির মাঝে পড়েছিলো সেটা শুধু সে নিজেই জানে। খুব কষ্টে নিজেকে তখন শক্ত রেখেছিলো। যে চিত্রকর্মটি শিহাব চারুকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে সেটা দেখে অবাক নেত্রে চারু তাকিয়েছিলো শিহাবের দিকে। শিহাবের ইচ্ছে হচ্ছিলো,, কি যে ইচ্ছে হচ্ছিলো তা শিহাব নিজেও ধরতে পারেনি। কতদিন পর এই পুরোনো স্মৃতিরা আবার মাথায় এসে হানা দিলো। চারুর সাথে কাটানো এক মূহুর্তও শিহাব ভুলে যেতে পারেনা। কাঙ্ক্ষিত জিনিস পেয়ে গেলে যত না আনন্দ হয়ে, না পেলে তারচেয়েও অনেক বেশি কষ্ট হয়। পাওয়ার আনন্দ কিছুদিনের হলেও না পাওয়ার বেদনাটা সারাজীবনের। শিহাব এখনো ভেবে পায়না সে বেঁচে আছে কিভাবে! স্বর্ণলতা বিহীন শিহাবের অস্তিত্ব না থাকুক। দরজায় কড়া নাড়ার আওয়াজে শিহাবের ভ্রুযুগোল কুঞ্চিত হলো,
– কে?
– ভাই আমি জাবিন। বড় চাচি তোমারে নিচে যাইতে কইসে।
– আমার ক্লান্ত লাগছে। মা কে গিয়ে বল আমি এখন নিচে আসতে পারবো না।
– আসো ভাত খাইয়া যাও। খাওনের জন্য ডাকছে। তুমি না খাইলে বড় চাচিও খাইবো না।
শিহাব জানে এখন কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। জমিদার গিন্নি বড্ড জেদি।

★★★

– আপনার কাছে আমি আরো একবার কৃতজ্ঞ চারুলতা।
– কেনো?
– কাল রাতে সাইফুল এসেছিলো পুতুলকে নিতে। সায়মার ভাই ছিলো সে। আপনি সঠিক সময়ে না পৌছালে সম্ভবত আমার মেয়েটাকে আমি আর পেতাম না।
– পুতুল কি তাকে চিনতো?
– কয়েকবার ছবি দেখেছিলো তবে জ্ঞান হওয়ার পর সরাসরি দেখা হয়নি।
– তাই সম্ভবত সে কনফিউশানে ছিলো।
– চারুলতা আপনি কিছু মনে করবেন না আমি পুতুলকে আপনার সাথে মিশতে দিচ্ছিনা বলে। আসলে মেয়েটাকে আমি খুবই ভালোবাসি। কোনো ঝুকি নিতে ইচ্ছে হয়না। আপনার অতীত তো আপনি জানেনই। সত্যিই বলতে খুবই চিন্তায় থাকি আমি।
– আপনার কি মনে হয় আমি আপনার মেয়েকে খেয়ে ফেলবো?
– মনে করাটা কি খুব ভুল হবে?
– সম্ভবত না।
– তবে কালকের পর অনেকাংশেই সেই ভয় আমার কেটে গেছে। আপনিই আমার মেয়েকে বাচিঁয়েছেন। আমি আবারও কৃতজ্ঞ আপনার কাছে।
– আপনি পুতুলকে খুব ভালোবাসেন তাই না?
– হুম। প্রতিটা বাবার কাছেই তার মেয়ে রাজকন্যা। একজন বাবা সবচেয়ে বেশি তার মেয়েদের ভালোবাসেন।
– আমি কেনো বাবার ভালোবাসা পেলাম না বলতে পারেন? পেলে হয়তো আমার জীবনটা এমন হতো না। সুন্দর একটা জীবন পেতাম আমি।
– সৃষ্টিকর্তা হয়তো আপনার জন্য আরো ভালো কিছু ভেবে রেখেছেন।
– আর ভালো কিছু চাইনা আমি। আমি শুধু তাকে খু*ন করতে চাই।

{গল্পের আসল লেখিকা শুভ্রা আহমেদ প্রিয়া}

চারপাশে প্রচন্ড বাতাস। ওভারব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে আছে সাজিদ আর চারু। ইতিমধ্যেই পরিবেশ ভারি হয়ে এসেছে। পরিবেশ স্বাভাবিক করার জন্যই সাজিদ বলে উঠলো,
– দেখুন তো জায়গাটা চিনতে পারছেন কি না?
– আমি আগে কখনো এখানে আসিনি।
– গেস করার চেষ্টা করুন।
– পারছিনা।
– আচ্ছা সহজ করে দিচ্ছি। বলুন তো ব্রিজের নিচ দিয়ে কোন নদী প্রবাহিত হচ্ছে।
– নদীর নাম সম্পর্কে আমার তেমন ধারণা নেই। কবির ভাষায় তেরোশত নদীর দেশ বাংলাদেশ। তার মধ্যে হাতে গোনা বারো তেরো টা নদীর নাম আমি বলতে পারবো।
– কবির ভাষায় ১৩০০ নদীর কথা উল্লেখ হলেও বর্তমান বাংলাদেশে কিন্তু প্রায় ৯০০+ নদী আছে। যাই হোক, আপনি যেই বারো তেরো টা নদীর নাম জানেন তাদের মধ্যে একটা নদী-ই এইটা।
– আপনি কিভাবে জানলেন এই নদী আমার বারো তেরো টা নদীর নামের লিষ্টে আছে?
– জানি। আপনার পাঠ্যবই অনেকবার নদীটির নাম এসেছে।
চারু একবার ব্রিজ থেকে নিচের দিকে তাকালো। খুব বেশি উঁচু না হলেও নিচু বলা যাবেনা ব্রিজটাকে। নদীর পানি মনে হচ্ছে খুবই কালো এবং বাতাসে দুর্গন্ধ ভেসে আসছে। চারুর মুখে বাকা তীর্যক হাসি ফুটে উঠলো,
– এইটা বুড়িগঙ্গা নদী।
– ঠিক ধরেছেন। বলেছিলাম না আপনার জানা নদীর নামেই এই নদীটা আছে।
– পাঠ্যবইয়ে নামটা দেখতে দেখতে অনেকবার বুড়িগঙ্গা নদীটি দেখতে ইচ্ছে হয়েছিলো। কতবার পড়েছি এই নামটি। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা বুড়িগঙ্গার তীরে অবস্থিত। বর্তমানে, বুড়িগঙ্গা নদী দুষিত হয়ে গেছে। ইত্যাদি ইত্যাদি।
– নৌকায় উঠবেন নাকি? (সাজিদ)
– না।
– কেনো? সাতার জানেন না? মেয়েরা তো শুনেছি নৌকায় চড়ে ভাব দেখানোর জন্য পাগল থাকে।
– আমার বেড়ে ওঠা গ্রামাঞ্চলে। নদী, খাল, বিল, পুকুর এইসব হরহামেশাই দেখে এসেছি। নৌকায় চড়ায়ও কম হয়নি। সাতারও কেটেছি প্রচুর। আর বাকি রইলো ভাব, ভাব জিনিসটা কি সেটাই আজ অবধি বুঝে উঠতে পারলাম না।
– বাদ দিন। বাসায় যাওয়া যাক।
– আরেকটু থাকি?
সাজিদ উত্তর দিলো না তবে নিজেও দাঁড়িয়ে থাকলো। এইটা মৌন সম্মতির লক্ষণ। চারু মুচকি হেসে তাকিয়ে রইলো নদীর দিকে। কতদিন পর নিজের ভিতরে গভীর আবেগ অনুভূত হচ্ছে। অনুভূতিটা মন্দ না। সাজিদ অবাক হয়ে প্রথম বারের মতো লক্ষ্য করলো আবেগ, অনুভূতিহীন চারুর গভীর আবেগ। চারুর অতীতের কথা ভেবে সাজিদের ভেতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো। মেয়েটা এখনো সম্পূর্ণ অনুভূতিহীন হয়ে যায়নি। একটু ভালোবাসা দিয়েই আবার তাকে প্রানবন্ত করে তোলা সম্ভব। চারুলতার সাথে যা হয়েছে তার জন্য চারুলতা দায়ী ছিলো না তবে এর শাস্তি কেনো ওকে পেতে হবে? নাহ! এইটা অন্যায় হবে মেয়েটার সাথে। তার একটু সুখে থাকার, একটু ভালো থাকার অধিকার আছে।
_______________________

To Be Continued…
®শুভ্রা আহমেদ প্রিয়া

➡️ সবাইকে নিচের দুটো বিঃদ্রঃ পড়তে অনুরোধ করা হলো-

~ রমজান মাসে প্রেম ফুটিয়ে তোলা যায়না।🙄 ভাবলাম চারুর মাঝে প্রেম আনবো, শিহাবের মাঝেও আনবো কিন্তু উল্টো আমি দুজনকেই আরো ডিপ্রেশনে ফেলে দিলাম।🥴 প্রেমে একটু ফেলার জন্য লিখবো না লিখবো না করেও প্রায় ১৮০০+ শব্দের পর্ব লিখে ফেললাম কিন্তু তাও তাদেরকে প্রেমে ফেলতে পারলাম না। ভাবলাম যেহেতু লেখা হয়েই গেছে সেহেতু পোস্টটা করেই দেই। শুধু শুধু পাঠকদের অপেক্ষা করানো ঠিক হবেনা।

~ আমি যখন পোস্ট করে সবাইকে জিজ্ঞেস করেছিলাম রমজান মাসে গল্প দিলে আমি নিয়মিত হতে পারবো না তখন বেশিরভাগ মানুষই তাতে একমত হলেন। আমি এ-ও বলেছিলাম আমাকে নিয়ে অভিযোগ করা যাবেনা। লেখা হলেই আমি পোস্ট করে দেবো। আপনারা তাও মানলেন। আপনারাই আমাকে অফার করলেন সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন গল্প দেওয়ার জন্য। আমিও সপ্তাহে দুইদিন গল্প দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম কিন্তু তারপরই আমার বিরুদ্ধে উঠে এলো এত এত অভিযোগ। কেনো? আমি কি আগে এই বিষয়টা সম্পর্কে আপনাদের অবগত করিনি? তাহলে প্রথমে রাজি হয়েও এখন আমার অনিয়ম নিয়ে এতো অভিযোগ কেনো? বিষয়টা মানতে পারলাম না। এখন আপনারাই বলুন আপনারা কি চান? গল্পটা কি আমি এখন অফ করে রমজাম মাসের পর নিয়মিত দিবো? আমি ব্যক্তিগত ভাবে এর সাথে সহমত না কারণ এতে অনেক লম্বা বিরতি পড়ে যাবে। পাঠকেরা আর গল্পের চরিত্রের সাথে এত ভালোবাসা নিয়ে মিশে যেতে পারবেনা। আমিও লেখার খেই হারিয়ে ফেলবো। এখন বাকিটা আপনাদের ইচ্ছে। আপনারা পাঠক! আপনারা পড়বেন, মন্তব্য করবেন, রিয়েক্ট দেবেন আমি তো শুধু লিখবো আর আপনাদের উৎসাহ কামনা করবো। উৎসাহ চাওয়াটা নিশ্চয়ই অপরাধ নয়। ধন্যবাদ, হ্যাপি রিডিং।💗

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here