আরশিযুগল প্রেম পর্ব – ৪৬

আরশিযুগল প্রেম পর্ব – ৪৬
# লেখনীতে — নৌশিন আহমেদ রোদেলা

—-” ফারদিন সাহেবকে ফোন দিয়ে দেখা করতে বললে কেমন হয়? হবু বউয়ের সাথে দেখা করতে উনার আপত্তি থাকার কথা নয়।”

পুষ্পির কথায় ফুঁসে ওঠল শুভ্রতা। চোখ-মুখ শক্ত করে বলল,

—-” কিসের হবু বউ? আমি কারো হবু বউ নই। আর ফারদিন সাহেবের হবু বউ তো কখনই নয়।”

—-” আরে সিরিয়াস হচ্ছিস কেন? পুষ্পি তো শুধু কথার কথা বলল।”

শুভ্রতা জ্বলন্ত চোখে তাকাল,

—-” কথার কথাতেও অন্যকোনো পুরুষের সাথে আমাকে জড়াবি না প্রেমা। বাবার পরিচয়ের বাইরে আমি শুধু এবং শুধুই রাফাত আল সাদাফের স্ত্রী। আর কোনো পুরুষের সাথে আমার যোগসূত্র নেই, বাস্তব, কল্পনা বা স্বপ্ন কোথাও নেই।”

অর্পন সরু চোখে তাকাল। সামনে রাখা পানির গ্লাসটা তুলে নিতে নিতে বলল,

—-” তোর কথা শুনে মনে হচ্ছে তোরা অলরেডি হাসবেন্ড ওয়াইফ। একদম লায়লা মজনু টাইপ অবস্থা তোদের। সত্যি সত্যি বিয়ে টিয়ে করে ফেলিস নি তো?”

অর্পনের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার আগেই অধৈর্য্য ভঙ্গিতে বলে উঠল পুষ্পি,

—-” আজাইরা কথা-বার্তা বন্ধ কর প্লিজ। আমাদের হাতে আজ নিয়ে মাত্র তিনটা দিন আছে। যা করতে হবে দ্রুত করতে হবে। একটা মুহূর্তেও নষ্ট করা চলবে না।”

পুষ্পির কথার ভাঁজে ‘বিয়ে’ বিষয়ক আলোচনাটা সেখানেই থেমে গেল। প্রেমা জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে কপাল কুঁচকে তাকাল। অর্পনের হাতে থাকা পানির গ্লাসটা কেড়ে নিয়ে এক নিঃশ্বাসে সবটা শেষ করল। ডানহাতের পিঠ দিয়ে মুখ মুছে নিয়ে বলল,

—-” ফারদিন সাহেবকে ফোন লাগা শুভি। আজ বিকেলের মধ্যেই দেখা করতে বল।”

শুভ্রতা মুখ কাঁচুমাচু করে বলল,

—-” আমার কাছে উনার নাম্বার নেই।”

শুভ্রতার বলা বাক্যটা কানে পৌঁছাতেই তিন জোড়া বিস্মিত দৃষ্টি বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে রইল। শুভ্রতাকে কিছুক্ষণ চুপচাপ নিরক্ষণ করে হঠাৎই টেবিলে থাবা দিয়ে উঠল অর্পন। বিরক্তি নিয়ে বলল,

—-” তুই আসলেই একটা বলদ। তোকে দ্বারা জাস্ট কিচ্ছু সম্ভব নয়। কিচ্ছু না। একবার সাদাফ ভাইয়ের নাম্বার নেই তো আরেকবার ফারদিন সাহেবের নাম্বার নেই। একটা লোকের সাথে বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছি, তিনদিন পর তোর বিয়ে আর তুই তার নাম্বার রাখবি না? গালি দেওয়ার জন্য হলেও তো নাম্বারটা রাখা উচিত ছিল নাকি?”

—-” গালি দেওয়ার জন্য কে নাম্বার রাখে গর্দভ? উনার সাথে আমার তেমন একটা কথায় হয় নি তো নাম্বারটা রাখব কেন? আর…”

অর্পন-শুভ্রতার বাকবিতন্ডার মাঝেই ফোন বাজল পুষ্পির। পুষ্পি স্ক্রিনে তনয়ার ছবি দেখতেই অস্ফুট আনন্দ ধ্বনি করে উঠল। ফোনটা টেবিলে রাখা গ্লাসের সাথে ঠেস দিয়ে রেখে উত্তেজিত গলায় বলে উঠল,

—-” এই এই চুপ। তনয়া ভিডিও কল দিয়েছে। চুপ কর তোরা।”

তনয়ার নামটা শুনেই শান্ত হয়ে গেল সবাই। কৌতূহল দৃষ্টিতে ফোনের দিকে তাকাল। ওপাশ থেকে তনয়ার মলিন হাসিটা দেখেই ঠোঁট দুটো প্রসারিত করল সবাই। সবাইকে চুপ থাকতে দেখে তনয়ায় কথা বলে উঠল প্রথম,

—-” কেমন আছিস তোরা?”

শুভ্রতা নরম গলায় বলল,

—-” তুই কেমন আছিস?”

তনয়া হাসল। ডানহাতে চুলগুলোকে কানের পাশে গুঁজে নিতেই চুড়ির টুনটান আওয়াজ কানে এলো। শীতল গলায় বলল,

—-” আমার কাছে বেঁচে থাকা মানেই ভালো থাকা। সেই হিসেবে ভালোই আছি।”

তনয়ার কথায় সবার মাঝেই বেদনাদায়ক হাওয়া বয়ে গেল। পরিবেশটাকে স্বাভাবিক করতে দাঁত বের করে ফোনের দিকে ঝুঁকে পড়ল অর্পন। কৌতূহল নিয়ে বলল,

—-” এই ভাইয়া কেমন আছে রে? তোর তো ননদ নেই তাই না? দু’একটা দেবর দেখে বিয়ে কেন করলি না বল তো? আমাদেরও তো একটা হক আছে নাকি? শশুরবাড়িতে সবাই নিশ্চয় ভীষণ ভালোবাসে তোকে?”

অর্পণের একের পর এক প্রশ্নের তোড়ে হেসে ফেলল তনয়া। তনয়া কিছু বলার আগেই স্ক্রিনের ওপর আরেকটু ঝুঁকে এল অর্পন। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে কিছু একটা পর্যবেক্ষণ করে নিয়ে দুষ্টু হাসল। বলল,

—-” তনু বেপি? তোর গলার কাছে ওইটা লাভ বাইটের দাগ না? ওহহো…ভীষণ প্রেম চলছে বুঝি?”

অর্পণের এমন কথায় অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে তাকাল পুষ্পি, শুভ্রতা। তনয়ার মধ্যে তেমন একটা ভাবাবেগ দেখা গেল না। অর্পণের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বলল,

—-” একটু পরই আমার ক্লাস। বেশিক্ষণ কথা বলতে পারব না। কাল রাতে পুষ্পির কাছ থেকে শুভির বিয়ের বিষয়টা জেনে কোনোভাবেই স্বস্তি পাচ্ছিলাম না। শুভি? আমার মত তুইও হাল ছেড়ে দিস না প্লিজ। এই পৃথিবীর চরম সত্যটা কি জানিস? বিয়ে করতে, বাচ্চার মা হতে, সংসার করতে, ভালো থাকতে, এমনকি বেঁচে থাকার জন্যও ভালোবাসার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু সত্যিকারের সুখী হওয়ার জন্য শুধু এই ভালোবাসাটাই প্রয়োজন। আমি চাই তুই সুখী হ। সত্যিকারের সুখী! পুষ্পিরা ঠিকই বলছে, ওই ভদ্রলোকের সাথে কথা বলে দেখ। আমার মত অনেক বেশি দেরি করে ফেলিস না শুভি।”

অর্পণ ঠোঁট উল্টে বলল,

—-” শুভির কাছে ওই ব্যাটার নাম্বারই নেই। যোগাযোগটা করবে কিভাবে? সাদাফ ভাইয়ের নাম্বার জোগাড় করতেই যে নাকানি-চুবানি খেতে হয়েছে আমাদের সেখানে এই ব্যাটার নাম্বার যোগার করতে রীতিমতো ‘মিশন ইম্পসিবল’ এর সক্রিয় কর্মী হয়ে যেতে হবে। উফ্ ভাল্লাগে না।”

অর্পনের কথায় তনয়াকেও বেশ চিন্তিত দেখাল। কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে বলল,

—-” আচ্ছা শুভি? লাস্ট টাইম চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে আসার কারণটা কি এই ভদ্রলোকই? নাকি দু’জন আলাদা ব্যক্তি?”

শুভ্রতা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,

—-” দুজন একই।”

—-” তারমানে বিয়ের সম্বন্ধটা তোর মামু থেকেই এসেছে?”

শুভ্রতা মাথা নাড়ল। পাশ থেকে কৌতূহলী গলায় প্রশ্ন করল পুষ্পি,

—-” বিয়ের সম্বন্ধ ওর মামু আনলেই বা কি? তুই কি কোনভাবে ওর মামুর কাছ থেকে ফারদিন সাহেবের নাম্বারটা উদ্ধার করতে বলছিস?”

তনয়া হেসে মাথা নাড়ল। অর্পন চেঁচিয়ে উঠে বলল,

—-” ইম্পসিবল। ওর মামুর থেকে নাম্বার বের করা জাস্ট ইম্পসিবল। প্রথমত, এতো ঝামেলার পর শুভির বাসায় আগের মত ঘুরাফেরা করতে পারব না আমরা। শুভির প্রেমের দায় এখন আমাদের মাথাতেও লটকে আছে। সো,বাসার কেউই আমাদের সহজ চোখে দেখবে না। দ্বিতীয়ত, আমরা যদি ওর মামুর ফোনটা সরিয়েও নিই তবুও কোনো লাভ হবে না। এখন সবার ফোনই লক করা থাকে। উনার মত মানুষ ফোনের পাসওয়ার্ড কি দিতে পারে তা আন্দাজই করতে পারব না। এমন একটা পরিস্থিতিতে শুভিও সহজভাবে মামুর কাছ থেকে ফোন নিতে পারবে না। নিলেও মামু নিশ্চয় কড়া দৃষ্টি রাখবেন ওর ওপর। তাহলে কিভাবে সম্ভব?”

অর্পণের যুক্তি শুনে ফুঁস করে নিঃশ্বাস ফেলল প্রেমা। দুই হাতে মাথা চেপে ধরে বলল,

—-” আমি আর ভাবতে পারছি না দোস্ত। অর্পন কিন্তু ভুল কিছু বলে নি। শুভির বাসায় গিয়ে ওর মামুর ফোন থেকে নাম্বার বের করা শুধু কঠিনই নয় অসম্ভব।”

তনয়া হেসে বলল,

—-” তোদের জন্য অসম্ভব হলেই যে সবার জন্য অসম্ভব হবে তা তো নয়, তাই না? যার জন্য সম্ভব, কাজটা নাহয় সেইই করবে।”

তনয়ার কথায় তিনজনেই ভ্রু কুঁচকে তাকাল। একে অপরের দিকে দৃষ্টি বুলিয়ে নিয়ে বলল,

—-” মানে? কার কথা বলছিস তুই?”

তনয়া মুচকি হেসে বলল,

—-” শুভ্রব বলেছিল, তার একটা মামাতো বোন আছে। যাকে তার মামু সাধ্যাতীত ভালোবাসে। যদি….”

তনয়ার কথা শেষ না হতেই অস্ফুট স্বরে বলে উঠল শুভ্রতা,

—-” রুম্পি?”

—-” হ্যাঁ রুম্পি। আমার মনে হয় ওর থেকে বেস্ট অপশন আমাদের হাতে নেই।”

তনয়ার কথায় সবাই শুভ্রতার দিকে তাকাল। শুভ্রতা ঠোঁট দুটি প্রসারিত করে বলল,

—-” দারুণ আইডিয়া তনু। রুম্পির জন্য এটা কোনো ব্যাপারই না। তাছাড়া মেয়েটা আমাকে মাত্রাতিরিক্ত পছন্দ করে। আমি বললে চোখের পলকে কাজ সেরে ফেলবে সে।”

শুভ্রতার উত্তরে সবার মুখেই স্বস্তির ছায়া দেখা দিল। অর্পন খুশি হয়ে বলল,

—-” তনু জানু? বিয়ের পর তোর মস্তিষ্ক দেখি খুলে একাকার। কি দারুণ দারুণ আইডিয়া দিয়ে দিচ্ছিস আজকাল। কি রে? ভাইয়া কোনো স্পেশাল ডোজ দিচ্ছে নাকি আজকাল?”

অর্পনের কথায় হেসে ফেলল তনয়া। উদাসী গলায় বলল,

—-” আজকাল হাসিটা একটু কমে গিয়েছে তো, তাই হয়ত বুদ্ধিগুলো একটু খুলছে।”

_____________________

দরজার কলিংবেলে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে শুভ্রতা। অন্যহাতে ভার্সিটি ব্যাগটা চেপে ধরে বিরবির করছে সে। বাসার এমন দমবন্ধকর পরিবেশটার কথা ভাবতেই কুলকুল করে ঘামছে সে। ভার্সিটি থেকে বের হওয়ার সময় বার বারই স্বাভাবিক থাকতে বলে দিয়েছে পুষ্পি, অর্পন। কিন্তু এই মুহুর্তে এই স্বাভাবিক থাকাটাই যেন হয়ে উঠছে না তার। শুভ্রতা বুক ভরে শ্বাস নিয়ে কলিংবেল টিপল। কিছুক্ষণের মাঝেই দরজা খুলে দিলেন রাদিবা আহমেদ। এই অসময়ে শুভ্রতাকে বাসায় ফিরতে দেখে বেশ অবাক হলেন। শুভ্রতা নিজের অস্বস্তিটাকে প্রাণপণ চেপে রেখে স্বাভাবিক গলায় বলল,

—-” খেতে দাও তো মা। সকালে ঠিক করে খাওয়া হয় নি বলে চলে এলাম। তিনটার সময় আরেকটা ক্লাস আছে। না খেয়ে কি এতোক্ষণ থাকা যায়?”

শুভ্রতার কথায় খানিকটা বিস্মিত হলেও বেশ স্বস্তি পেলেন রাদিবা। মেয়ের কথার উত্তর না দিয়ে রান্না ঘরের দিকে চলে গেলেন। শুভ্রতা ভার্সিটি ব্যাগটা রুমে রেখেই খাবার ঘরের দিকে পা বাড়াল। রুম্পি তখন খাবার টেবিলেই ছিল। শুভ্রতা ধীর পায়ে রুম্পির পাশের চেয়ার টেনে বসল। রুম্পির মনোযোগী দৃষ্টি ফোনের স্ক্রিন থেকে শুভ্রতার মুখের ওপর পড়ল। শুভ্রতা খানিক হাসার চেষ্টা করে বলল,

—-” কি দেখছিস?”

রুম্পি হাসল। ফোনটা এগিয়ে দিয়ে বলল,

—-” কার্টুন দেখি শুভি দি।”

শুভ্রতা জোরপূর্বক হাসি দিয়ে এদিক ওদিক তাকাল। টেবিলের এক কোণায় শফিক ছাড়া অন্য কাউকেই চোখে পড়ল না। শুভ্রতা ঘাড় ঝুঁকিয়ে ফিসফিস করে বলল,

—-” খাওয়া শেষে আমার রুমে আসিস রুম্পি। তোর সাথে সিক্রেট কথা আছে।”

শুভ্রতার এমন কথায় বেশ অবাক হল রুম্পি। কিন্তু পরমুহূর্তেই তার বড় বড় চোখে অসীম কৌতূহল দেখা দিল। শুভ্রতা নামে মাত্র খাবার খেয়ে নিজের ঘরের দিকে চলে গেল। কয়েক মুহূর্তের অপেক্ষার পরই ছোট ছোট পায়ে দরজায় এসে দাঁড়াল রুম্পি। রুম্পিকে দেখতে পেয়েই হাতের ইশারায় ভেতরে আসতে বলল শুভ্রতা। বিছানার ওপর থাকা চকলেটের বাক্সটা এগিয়ে দিয়ে খানিকটা ঝুঁকে এল শুভ্রতা। নিচু গলায় বলল,

—-” শুভিদির জন্য একটা কাজ করে দিতে পারবি রুম্পি? ছোট্ট একটা কাজ?”

রুম্পি ঘাড় কাত করে সম্মতি জানাল। শুভ্রতা জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিয়ে ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলল। একবার দরজায় দৃষ্টি বুলিয়ে নিয়ে বলল,

—-” মামুর ফোনটা এনে দিতে পারবি আমায়? শুধু মাত্র দুই মিনিটের জন্য?”

শুভ্রতা চোখ পিটপিট করে তাকাল। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,

—-” তুমি কি ফারদিন ভাইয়াকে বিয়ে করবে?”

শুভ্রতা ক্লান্ত গলায় বলল,

—-” জানি না। তুই চাস আমি তাকে বিয়ে করি?”

—-” আমার লম্বা ভাইয়াটাকেও ভালো লাগে। কি সুন্দর দেখতে…তুমি ওকেই বিয়ে করো।”

কথাটা বলেই দৌঁড়ে বেরিয়ে গেল রুম্পি। শুভ্রতা অনুভূতিশূন্য মনে রুম্পির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল। নিজের পরিবারের সাথে লড়তে লড়তে মনটা ভীষণ ক্লান্ত হয়ে পড়ছে শুভ্রতার। চারপাশটা অদ্ভুত বিষে তিক্ত হয়ে উঠছে। কিছুক্ষণ পর পরই ফোন হাতে আগের মতোই দৌড়ে এল রুম্পি। ফোনের পাসওয়ার্ড খুলে শুভ্রতার হাতে ধরিয়ে দিয়ে নিজে চকলেট খাওয়ায় মন দিল। কনট্রাক্ট লিস্টে ফারদিনের নামটা সার্চ করতেই নাম্বারটা পেয়ে গেল শুভ্রতা। নিজের ফোনে নাম্বারটা সেইভ করে নিয়ে ফোনটা রুম্পির দিকে বাড়িয়ে দিল। শান্ত গলায় বলল,

—-” আমি যে মামুর ফোন নিয়েছিলাম কাউকে বলিস না রুম্পি। এটা টপ সিক্রেট। মনে থাকবে?”

রুম্পি নির্মল হেসে মাথা দুলায়। ফোনটা হাতে নিয়ে আবারও দৌঁড়ে বেরিয়ে যায়।

____________________

ঘড়িতে চারটা বাজে। ধানমন্ডির একটা অত্যাধুনিক রেস্টুরেন্টে বসে আছে শুভ্রতা। ভয়ে নয়ত অস্বস্তিতে পা’দুটো হালকা কাঁপছে। তার সামনে বসে থাকা মানুষটির বিস্মিত দৃষ্টি তার দিকেই তাক হয়ে আছে সেই কখন থেকে। শুভ্রতা নিজেকে শান্ত করার প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে। তার থেকে দু’টেবিল ওপাশেই বসে থাকা বান্ধবীদের বিশ্বস্ত হাসিতে সাহস যুগিয়ে কথা বলতে গিয়েও বিশ্বাসঘাতক কন্ঠটা থেমে থেমে যাচ্ছে। শুভ্রতা কাঁপা হাতে পানির গ্লাসটা তুলে নিল। ঢকঢক করে সবটুকু পানি শেষ করে শক্ত গলায় বলল,

—-” আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই না, ফারদিন সাহেব।”

ফারদিন মৃদু হেসে বলল,

—-” কেন?”

#চলবে…

[ রি-চেইক করা হয় নি। অনেক ব্যস্ততার মাঝেও লিখে চলেছি অথচ আগের মত রেসপন্স পাচ্ছি না। পাঠকের উৎসাহ কমে গেলে জানাবেন আমি গল্প বন্ধ করে দেব৷ ধন্যবাদ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here