আলোয় অন্ধকার পর্ব-১৫

0
1800

#আলোয়_অন্ধকার🍁
#Roja_islam
#part 15
ডেনিয়াল এর কথা শুনে টিয়া মিনতি করতে লাগলো,
— নো.. নো. প্লিজ এখানে কোনো পানিশমেন্ট নয় প্লিজ। আমার এখানে ভয় করছে বাড়ী যাবো আমি প্লিজ…

ডেনিয়াল টিয়াকে টেনে নিয়ে যেতে যেতেই বললছে,
— মিস টিয়া!! তুমি বেঁচে থাকো আর মরে যাও বাড়ী যেতে পাড়বে না ভুলে যাও বাড়ী! দ্যাট’স গুড ফর ইউ!

টিয়ার কোনো কথা কানে না নিয়ে ডেনিয়াল টেনে একদম সমুদ্রের সামনে নিয়ে চলে এসেছে টিয়াকে। তবে টিয়া পানি দেখার আগে! ডেনিয়ালের কথা শুনে জ্ঞান হারালো। টিয়া ভাবতে পারেনা টিয়া আর কোনদিন বাড়ী যেতে পারবে না! তাই ডেনিয়ালের কথাটা এই অবস্থায় নিতে পারেনি টিয়া জ্ঞান হারায়। টিয়াকে জ্ঞান হারাতে দেখে ডেনিয়াল তাকে কোলে তুলে নেয়!

তারপর সামনের বিশাল সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে থাকে প্রচুর বাসাত বইছে। যেমন বাতাস তাদের নিয়ে কোথাও উড়িয়ে ফেলে দিবে! আমেরিকায় আবহাওয়া হঠাৎই খারাপ হয়ে যায়! এখনো তাই মনে হচ্ছে ঝড় হবে! ডেনিয়াল আর দাঁড়ালো না। এই বাতাস শরীরে লাগাও ভালো হবে না টিয়ার। টিয়াকে কোলে নিয়ে ডেনিয়াল বাড়ীর দিকে হাটা দিলো।

টিয়াকে তার রুমে নিয়ে আস্তে করে শুইয়ে দিলো। জ্ঞান ফিরানোর চেষ্টা ডেনিয়াল করলোনা! কারণ এখন টিয়ার জ্ঞান ফিরলে হয় তো আবার পাগলামো করতে পাড়ে! ডেনিয়াল টিয়ার পাশে বসে টিয়ার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে রইলো! খুব অদ্ভুত ভাবে ডেনিয়াল এই মেয়েকে কষ্ট দিয়েও দিতে পারেনা! টিয়ার যায়গায় অন্য কিউ হলে হয় তো! যে দিন থাপ্পড় মেরেছে সেদিনই মেরে ফেলতো কিন্তু টিয়াকে চেষ্টা করেও মারতে পারেনি। কি জানি আছে টিয়ার মুখে গভীর মায়া! এই মুখে তাকালে মায়ায় ডুবে যায় ডেনিয়াল!
তখন কিচ্ছুই করতে ইচ্ছে করেনা টিয়াকে তার!

প্রথম যখন টিয়াকে ঐ হাত পা বাধা অবস্থায় দেখে লাল শাড়ী পড়নে, মুখে কোনো সাজ, নেই এলোমেলো চুল, খুবী সাধারণ ভাবেই টিয়াকে অসাধারণ লেগেছে ডেনিয়ালের! আর যদিও রাগ হয় বাট টিয়ার এই জেদ গুলো ডেনিয়ালের পছন্দ হয়। ডেনিয়াল টিয়ার মুখে পড়া চুল গুলো কানের পিছনে গুঁজে দিয়ে! টিয়ার গালে হাত রাখতেই টিয়া অন্যদিক ফিরে শুয়ে গেলো। ডেনিয়াল নিজের হাত গুটিয়ে নিয়ে মনে মনে বললো!

— ইউ আর মাইন! তোমার কথাই জেনো সত্যি হয় স্তব্ধ খান তোমায় নিতে জেনো নাই আসে! কারণ আসলে সে আমার হাতে মরবে! দ্যাটস ফাইনাল!

বলেই টিয়ার পেছনের চুলের উপর চুমু দিয়ে বললো,
— গুড নাইট!

বলেই চলে গেলো ডেনিয়াল নিজের রুমে! সাথে সাথে টিয়া নিজের মাথা ধরে উঠে বসলো যেখানে ডেনিয়াল চুমু দিয়েছে টিয়ার মন চাইছে তার মাথায় আগুন লাগিয়ে দিতে একেই তো এতো যন্ত্রণা করছে মাথায়! তার উপর এই শয়তান ঈগল তার মাথা চুমু দিয়েছে! ভাবতেই টিয়া নিজের চুল নিজেই টানতে লাগলো! টিয়ার সব ভেঙে চুড়ে ফেলতে ইচ্ছা করছে! মনে হচ্ছে এই রুমে আর এক সেকেন্ড থাকলে সে পাগল হয়ে যাবে! টিয়া আশন করে বসে কোলে একটা বালিশ নিয়ে বসে সেটা ধরে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো!

টিয়ার জ্ঞান ডেনিয়াল যখন তাকে বেডে শুয়িয়ে দেয় তখনি ফিরে আসে। কিন্তু সে চোখ খুলেনি যদি ডেনিয়াল তাকে শাস্তি দেয় সেই ভয়ে কিন্তু শরীরে হাত দিতেই টিয়া অন্যদিকে ফিরে যায়। প্রচণ্ড ভয় করছিলো তার যদি ডেনিয়াল কিছু করে বসে তার সাথে? ভেবেই টিয়ার কান্না বেড়ে গেলো! টিয়া ভেবে পাচ্ছেনা তাকেকি এখান থেকে বাঁচাতে কেউ আসবে না? তাহলে কি হবে তার এখানে এভাবেই বন্দি থাকতে হবে তার?যদি থাকতেই হয় ডেনিয়াল কি করবে তার সাথে? না টিয়া এখানে থাকবেনা তাও এই ডেনিয়াল নামক শয়তান এর সাথে? টিয়া আর ভাবতে পারলো না তার কান্নার সাথে মাথা ঘুরছে, বমি পাচ্ছে টিয়া দৌড় লাগালো ওয়াশরুমে!

অভিজিৎ এর কেবিনে তীর্থ বসে! অভিজিৎ ফাইল হাত থেকে রেখে জিজ্ঞেস করলো তীর্থকে,
— কিছু পেলে?

তীর্থ হতাশ গলায় বললো,
— স্যার ঐ একি! বাবা ভার্সিটির প্রফেসর তাও যেই ভার্সিটিতে স্তব্ধ পড়তো! বাবার নাম কবির খান! মা নেই! বিয়েও করেনি ! স্তব্ধ এর পড়াশোনা শেষ কিন্তু বেকার! যেই বাড়ীতে স্তব্ধ থাকে সেটা কবির খানের নামেই! এখনো ২ জন কাজের লোক আছে যারা রেগুলার তার বাসায় আশা যাওয়া করে! আর তার চাচাতো ভাই আস্ফিও থাকে তার সাথে ! কিন্তু স্যার স্তব্ধের বাবা স্তব্ধের সাথে থাকে না!

এবার অভীজিৎ কপাল কুঁচকে বললেন,
— তাহলে কোথায় থাকে??

— তিনি উনার পুড়ানো বাসায় থাকেন!

— খবর নাও বাপ ছেলের মধ্যে ঝামেলা আছে কি না!

— নেই স্যার কালকেও স্তব্ধ তার বাবার সাথে দেখা করতে গেছে তার কুত্তা সমেত!

অভীজিৎ নাক মুখ কুঁচকে বললো,
— কুত্তা?

— সরি স্যার স্তব্ধ একটা কুকুর পালে!!

— ঠিক করে কথা বলতে শিখো!

তীর্থ মাথা নিচু করে বললো,
— সরি স্যার!

অভীজিৎ তার চশমা খুলে টেবিলে রেখে বললো,
— তাহলে কি কোন হাত নেই এই কেইস এর সাথে স্তব্ধের?

— বুঝা দায় স্যার সেটা!

— আচ্ছা সেটা বাদ, যদি বাপ ছেলের মধ্যে কিছু নাই হয়ে থাকে তো আলাদা বাসায় কেনো থাকে?? ২/৩ কাজের লোক দিয়েই বা একটা ছেলে কি করে?

তীর্থ এক প্রকার উত্তেজিত হয়ে বললো,
— স্যার কাজের লোক গুলোও এক একটা শিক্ষিত। মুগ্ধ, রায়হান, …. সব স্তব্ধের সাথেই পড়াশোনা শেষ করেছে। তবে কেনো স্তব্ধের বাসায় কাজ করতে যাবে?? চাইলে যে কোনো যায়গায় জব করতে পারে ভালো সেলারিতে! স্যার অন্য কিছু আছে যার ক্লু আমরা পাচ্ছিনা এই স্তব্ধ খান খুব চালাক! আমি শিউর তিনটা খুন সেই করেছে!

অভীজিৎ মাথায় ঢুকছেনা নরমাল লাইফ লিড করছে স্তব্ধতো এই খুন করলো কি করে বডি কোথায়? বাবার সাথে থাকে না কেনো? শিক্ষিত কাজের লোক দিয়েই করে টাকি? আর ওরাই কেনো লেখাপড়া করে শিক্ষিত হয়ে স্তব্ধের বাসায় কাজ করতে কেনো যায় ? দীর্ঘ শ্বাস ফেলে অভীজিৎ বললো,
— তীর্থ মানলাম খুন স্তব্ধ করেছে প্রমাণ করবে কি দিয়ে??

তীর্থ কিছু বললো না! তার মাথা স্তব্ধের গুণগান শুনে ঘুড়াচ্ছে এমনিতেই! লোকেদের মুখে! তীর্থ চেয়েও কোথাও স্তব্ধের বিরুদ্ধে নেগেটিভিটি বের করতে পারেনি। সবার কাছে স্তব্ধ ভালো একটা ছেলে! সেখানে স্তব্ধকে খুনি বলছে! আবার সেটার প্রমাণ কই থেকে দিবে সে ।তীর্থকে চুপ থাকতে দেখে অভীজিৎ বললো,
— কাল স্তব্ধের বাবার সাথে কথা বলতে যাবো!
রেডি থেকো!

— ঠিক আছে স্যার!

— আর হ্যাঁ স্তব্ধের উপর নজর রাখতে থাকো ওর কাজের লোকদের উপর ও!
একটা না একটা কিছু ভুল তো করবেই যদি খুন করে থাকে! সেই ভুল দিয়েই প্রমাণ অবধি যাবো৷ তুমি লেগে থাকো!

— ওকে স্যার!
.
.
দু দিন পড়!

স্তব্ধ আমেরিকায় কিছুক্ষণ আগেই পৌঁছেছে এসে! এয়ারপোর্ট অপেক্ষা করছে স্তব্ধ। তাকে পিক করতে আসার কথা একজন লোক এর! স্তব্ধ ৫ মিনিট হয়েছে এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে! ৫ মিনিট দাঁড়াতেই স্তব্ধের চোয়াল শক্ত হয়ে গেছে! কপাল কুচকে গেছে।অপেক্ষা করা স্তব্ধের পছন্দ নয়! স্তব্ধ আর দাঁড়াবে না ভেবে সামনে হাটা দিবে তখুনি তার নামটার কেউ বারোটা বাজিয়ে দিলো!

— স্টট স্যার??

স্তব্ধ তার ভ্রু কুঁচকে পিছনে তাকালো! টকটকে ফর্সা করে! ৩০ বছর এর এক লোক দাঁড়িয়ে তার দিকে হেন্ডশেক এর জন্য হাত বাড়িয়ে রেখেছে ! বিশাল বড় মুখে বিশাল বড় এক হাসি ঝুলিয়ে রেখেছে! তবে দেখে মনে হচ্ছে দৌড়ে এসেছে এক দুই কিলো! কারণ ফর্সা মুখ লাল হয়ে ঘাম ছুটে গিয়েছে! স্তব্ধ একনজরে লোক টাকে ভালো করে দেখে পিছনে তাকালো! একটা কালো মার্সিডিজ দেখতে পেলো। লোকটার সাথে পরিচিত না হয়ে! হাত না মিলিয়ে! স্তব্ধ গিয়ে সোজা গাড়ীতে ড্রাইভিং সীটের পাশের সীটে বসে পড়লো!

ফর্সা করে লোকটার মুখের হাসি চলে গেছে! স্তব্ধকে গাড়ীতে গিয়ে বসতে দেখে!পিছনে তাকিয়ে লোকটা কপাল কুঁচকে ঠোঁট বাকিয়ে বললো,
— স্ট্রেঞ্জ!

সে তার হেন্ডশেক করার জন্য বাড়ানো হাত গুটিয়ে নিজের পড়নের কোর্টের গুতাম ঠিক করে লাগাতে লাগাতে গিয়ে ড্রাইভিং সীটএ বসে গাড়ী স্টার্ট দেয়।আর আড় চোখে স্তব্ধকে দেখতে থাকে! যেমন স্তব্ধ এলিয়েন এভাবে বার বার তাকাচ্ছে স্তব্ধের দিকে সে!

স্তব্ধ হঠাৎ সামনে তাকিয়েই বললো,
— হোয়াটস ইউর নেইম??

লোকটার দ্রুত জবাব,
— টনি..

টনিকে আর কিছু বলতে না দিয়ে স্তব্ধ বললো,
— টনি তুমি আমায় পড়েও দেখতে পারবে! নাও ড্রাইভ প্রপার্লি!

টনি কেনো যেনো আর কিছু বললার সাহস পেলো না স্তব্ধকে! সে সুন্দর করে ড্রাইভ করে। লিংকোন এর লোকদের ঠিক করা বাড়ীতে গিয়ে গাড়ী থামালো! স্তব্ধ টনি দুজনেই নেমে বাড়ীর ভিতরে ঢুকলো! টনি স্তব্ধকে তার রুম দেখিয়ে হাফ ছেড়ে বাঁচলো!

টনি নিজে নিজেই কথা বলতে বলতে তার রুমে যাচ্ছে,
— আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এই ছেলেকে হেন্ডেল করতে রিয়ালি! একে তো এর ফাদার ও হেন্ডেল করতে পারবেনা। আমি জানিনা আমি কিভাবে কি করবো!

টনি নিজের রুমে ঢুকে ধারাম করে দরজা লাগিয়ে তার লোকদের জানালো স্তব্ধ সেইফলি আছে! তারপর! যিনি টনিকে স্তব্ধের সাথে থাকার দায়িত্ব দিয়েছে তাকে দুইটা আমেরিকান গালি দিলো সে!
কারণ সে বুঝে গেছে তাকে স্তব্ধের দায়িত্ব কেনো দেওয়া হয়েছে!

স্তব্ধ তার রুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়েছে! পড়নে শুধু একটা জিন্স।ফর্সা বডিটা সম্পূর্ণ খালি! বিন্দু বিন্দু পানি লেগে আছে এখনো! বেডের পাশে গ্লাস ধারা আবরণ করা সেখানে দাঁড়ালে বাইরের শহর দেখা যায় স্তব্ধ সেখানে দাড়ালো গিয়ে! তারপর একটা সিগারেট ধরালো। এক হাতে সিগারেট টান দিচ্ছে অন্য হাতে টিয়ার ফোন। স্ক্রীনে টিয়ার ছবিটা দেখতে লাগলো স্তব্ধ। বিড়বিড় করলো স্তব্ধ!

— তোকে মরতে হবে ডেনিয়াল ! আমার জিনিশে হাত দেওয়ার অপরাধে। টিয়ার গায়ে হাত দিয়ে ঠিক করিসনি এটা করায় গণ্ডায় বুঝতে হবে তোকে….

তারপর কি ভেবে বাঁকা হাসলো তখনি সে দরজায় টোকা পড়লো….স্তব্ধ দরজা খুললো না! সে চুপচাপ তার সিগারেট শেষ করলো! তারপর ফোন টা রেখে গিয়ে দরজা খুললো! দরজায় টনি দাড়িয়ে! স্তব্ধ দরজা খুলতে সে হেসে বললো,
— স্যার কল দিয়েছে!

স্তব্ধ ফোন হাতে নিয়ে কানে রেখে কথা বলতে লাগলো! এদিকে আজ দুইদিন আস্ফি ফোন ধরছেনা! পিউ যদিও ঐদিন মজা করেছিলো কিন্তু আজ সত্যি তাকে দেখতে আসবে এই নিউজ কাল রাতে জেনেছে পিউ৷ পিউ এর মাথা কাজ করছেনা৷ সে দরজা বন্ধ করে রুমে বসে আছে একটু পড় পড় পিউ এর মা তাকে ডেকে যাচ্ছে! কিন্তু পিউ দরজা খুলছেনা! বারবার আস্ফিকে কল লাগাচ্ছে সে কিন্তু ফোন বন্ধ। ঝগড়ার পড়ে আর খোলা পায়নি পিউ। কি করবে বুঝতে পারছেনা সে৷ শুধু দোয়া করছে যেনো বাবা এসে তাকে ডাকনা দেয় কারণ একবার যদি বাবা ডাক দেয় পিউ না গিয়ে পারবেনা। পিউ ফোন হাতে অস্থির হয়ে বারবার কল দিয়ে যাচ্ছে আস্ফিকে!

— প্লিজ আস্ফি এতো বড় শাস্তি দিস না প্লিজ ফোন ধর! আমার মন বলছে আজ আমি তোকে না পেয়েই হারিয়ে ফেলবো প্লিজ একবার আয়৷

পিউ হঠাৎ ই দ্রুত পায়ে উঠে বারান্দায় গেলো! যে খানে আস্ফি সব সময় বাইক নিয়ে দাড়িয়ে তার জন্য অপেক্ষা করে আজ যায়গাটা খালি! পিউ এর চোখ দিয়ে টুপটুপ করে পানি পড়ছে। পিউ বারান্দা দিয়েই দেখলো একটা গাড়ী থেকে কিছু মহিলা আর দুইটা ছেলে নামছে। পিউ বুঝলো সত্যি তাকে দেখতে লোক এসে পড়েছে! ভয়ে পিউ চুপসে গেছে। বুকে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করছে পিউ। দরজায় টোকার শব্দ কানে আসতেই ফুপিয়ে কেদে দিলো পিউ৷ হ্যাঁ যেটার ভয় করছিলো সেটাই হলো! তার বাবা দরজা খুলতে বলছে! দরজা খুললে এটাই বলবে রেডি হয়ে অদের সামনে সুন্দর করে যেতে । আর বাবাকে না করার ক্ষমতা পিউ এর নেই। দরজায় টোকার শব্দ বাড়তেই পিউ চোখ মুছে দরজা খুলে দিলো। পিউ এর মা শাড়ী হাতে ধরিয়ে দিলো বাবা বসে বুঝিয়ে গেলো। ছেলে ভালো জব করে পছন্দ হলে আজি আকদ সম্পূর্ণ করে তবেই যাবেন! পিউ ভীষণ ধাক্কা খেলো এই কথায়৷ তার বাবা যেতেই ফ্লোরে বসে অস্তির হয়ে বারবার কিছুক্ষণ ফোন দিলো আস্ফিকে। না এখনো বন্ধ। পিউ কিছুক্ষণ কেদে বাধ্য হয়ে শাড়ী পড়ে রেড়ি হলো কিছুই করার নেই বাইরের মানুষের সামনে বাবা অসম্মান করতে পিউ পারবে না পিউ রেড়ি হতেই ৷ ছেলের বোন এসে তাকে সবার সামনে নিয়ে গেলো ড্রইং রুমে!

ছেলের বাড়ী থেকে ছেলের ফুপু আর ছেলের খালা, খালাতো বোন, ছেলে এবং ছেলের এক বন্ধু আর ছেলের আংকেল এসেছে দেখতে পিউকে বুঝাই যাচ্ছে তারা ঠিক করেই এসেছে মেয়ে পছন্দ হলে শুভ কাজে দেরি করবেনা ! ছেলের বাবা মা নেই ফুপুর বাসায় থাকে শিক্ষিত জব করে ভালো সেলারিতে! পিউকে তারা সবাই মিলে নানান প্রশ্ন করলো। ভয়ে চুপসে যাওয়া পিউ বাধ্য হয়ে সব প্রশ্নের উত্তর সুন্দর করে। তার বাবাও পাশে সোফায় বসে। মা এটা সেটা দিচ্ছে একা হাতে সবাইকে। পিউ একমাত্র মেয়ে তাদের কোন কমতি নেই কোন কিছুতে। একমাত্র মেয়েকে দেখতে এসেছে বলে কথা!

অবশেষে পিউকে ভেতরে পাঠিয়ে দেওয়া হলো খুটিয়ে নাটিয়ে দেখে৷ যেমন মেয়ে নয় পন্য দেখতে এসেছে। পিউকে ভেতরে পাঠিয়ে মুরুব্বিরা কথা বলতে লাগলো। ছেলেকে জিজ্ঞেস করা হলো। মেয়ে পছন্দ হয়েছে কিনা। ছেলে হ্যা বলাতে। পিউ এর বাবা পিউ এর কোন প্রকার মত না নিয়ে তিনিও বলে দিলেন তাদেরও ছেলে পছন্দ হয়েছে। সব শেষ কথা ঠিক হলো আজি আকদ করে যাবেন তারা!

চলবে!
[গঠন মূলক মন্তব্য করুণ এতে নেক্সট পার্ট আরো সুন্দর হবে ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here