#আলোয়_অন্ধকার🍁
#Roja_islam
#part 28
প্রায় তিন ঘণ্টা পর স্তব্ধের ঘুম ভাঙে। সে শান্ত ভাবে উঠে বসে! কিছুক্ষণ ওভাবে’ই থম মেরে বসে থেকে পিছনে তাকাতে’ই টিয়া’কে স্তব্ধের মাথা’র পাশে কাত হয়ে ঘুমন্ত অবস্থা’য় দেখতে পায়! স্তব্ধ গভীর ভাবে একনজর টিয়া’র মুখের দিকে তাকায়। টিয়া’র চোখে অশ্রুকণা শুকিয়ে তার মোটা মোটা দাগ ফর্সা গালে স্পষ্ট দেখতে পায়। কিন্তু একবারও স্তব্ধ ভাবলো না! টিয়া কেঁদেছে? কিন্তু কেনো? সে চুপচাপ উঠে দাড়িয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আরও একবার টিয়া’কে দেখে দ্রুত পায়ে টিয়া’র রুম ত্যাগ করে! স্তব্ধ ধীরে ডোর লক করে গেছে! যেনো টিয়া’র ঘুমের ডিস্টার্ব না হয়! হলোও তাই টিয়া ঘুমিয়ে’ই রইলো। সে বুঝতে পারলো না স্তব্ধ চলে গেছে।
স্তব্ধ নিজের রুমে ঢুকে, নিজের ফোন টা একবার চেক করে! ফ্রেস হতে চলে যায় ওয়াশরুমে! স্তব্ধ নিজেকে শান্ত করতে শুধু মাত্র টিয়া’র রুমে ঘুমিয়েছে! কারণ টিয়া’র পাশেই স্তব্ধের শান্তি! কিন্তু এখন তার অনেক কিছু করতে হবে! সামনে যে কিছু ভয়ংকর হতে চলেছে স্তব্ধের ভালো’ই আশংকা আছে তার! কিন্তু স্তব্ধ কি করতে চলেছে আশংকা কাটাতে সে নিজেও সেটা বুঝতে পারছে না! বাবা’র এমন কোন কথা নেই যেটা সে রাখেনি! কিন্তু কবির যখন স্তব্ধ’কে বলেই ফেলে ডেনিয়াল’কে না মারতে! স্তব্ধ ভেবে’ই নিয়েছিলো! বাবা’র শুধু মাত্র একটা কথা’ই সে রাখবে না। সে ডেনিয়াল’কে মেরে ফেলবে! কিন্তু ডেনিয়াল’কে মারা এতটাও সোজা নয়! স্তব্ধ সেটা আমেরিকা এসে বুঝেছে! হবেই বা কি করে! আমেরিকার মাফিয়া’র একমাত্র ছেলে বলে কথা! রাইজিং ডেনিয়ালে’র বাবা তার থেকেও ডেনিয়াল এর পাওয়া’র আমেরিকায় বেশি! মাফিয়া জগত কাঁপে ডেনিয়ালে’র নামে৷ তাছাড়াও ডেনিয়াল ছদ্মবেশী একজন ব্যাক্তি। আমেরিকা’র নাম করা ব্যাক্তিরাও অবগত নয় ডেনিয়ালে’র আসল পরিচয় সম্পর্কে! তারা তাকে একজন সাকসেসফুল, রিচ, বিজনেসম্যান হিসেবে’ই চিনে। স্তব্ধের মতো কিছু ব্যাক্তি’ই শুধু জানে ডেনিয়ালে’র আসল পরিচয়! সব মিলিয়ে ধরা ছোঁয়া’র বাইরে ডেনিয়াল গ্লোবার! রহস্যের বেরা জালে ঘেরা এক রহস্যময় ব্যাক্তি ডেনিয়াল।
আর এমন একজন ব্যাক্তি তার টিয়া’র দিকে নজর দিয়েছে! ব্যাপার টা আরও প্রবল ভাবে স্তব্ধের মন’কে জাগিয়ে তুলে ডেনিয়াল’কে শেষ করে দিতে! কিন্তু স্তব্ধ জানে এটা সম্ভব নয়! একদম অসম্ভব! বরঞ্চ তার এবং টিয়া’র জীবন এই মুহুর্তে ঝুকিপূর্ণ! কখন কি হয় কেও জানেনা। ডেনিয়াল যতই রহস্যময় হোক না কেনো! তবে স্তব্ধ সব কিছু’র জন্য প্রস্তুত ছিলো কিন্তু এখন! টিয়া’র জন্য’ই স্তব্ধ লুকিয়ে আছে! কিন্তু কতক্ষণ থাকতে পারবে জানে না স্তব্ধ! শুধু জানে….
স্তব্ধের ফোন বেজে ওঠে স্তব্ধ দ্রুত শাওয়ার শেষ করে। টাওয়াল কোমরে পেচিয়ে বেরিয়ে কল পিক করে কানে রেখে! শান্ত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে উঠে,
–” ইউ ডিড হোয়াট আই ছেইড? ”
ওপাশ থেকে বলে উঠে,
–” ইয়েস স্যার, এভ্রিথিং ইজ রেডি! অনলি ইউ এন্ড ম্যাম উয়িল কাম হেয়ার টুমরো এন্ড দ্যা ওয়ার্ক উইল বি কমপ্লিটেড! ”
স্তব্ধ ওর দ্রুত জবাব,
— ” ওকে দ্যান সি ইউ টুমরো! ”
এটুকু বলে’ই কল কেটে দেয় স্তব্ধ! কিছু ক্ষণ ফোনের দিকে তাকিয়ে থেকে কবির’কে একটা ম্যাসেজ সেন্ড করে স্তব্ধ।
ডেনিয়াল ক্যালিফোর্নিয়া শহরে পৌঁছেছে কিছুক্ষণ হবে। সে ক্যালিফোর্নিয়ায় তার নিজেস্ব বাড়িতে উঠেছে। বিশাল বড় বাড়িটিতে দেখাশোনার লোক ছাড়া বছরের পর বছর কেও আসেনা। শুধু দরকারে ডেনিয়াল এসে কিছু রাত যাপন করে চলে যায়। এবারও ভিন্ন কিছু নয় দরকারে’ই এসেছে সে। লম্বা জার্নি করে আসায় ডেনিয়াল তার বেড রুমে রেস্ট করছিলো। ফোনে টুংটাং শব্দ হতেই ডেনিয়াল বিরক্ত হয়ে অন্যদিকে ফিরে শুয়ে পরলো। কিন্তু কি ভেবে ১০ সেকেন্ড পরে ডেনিয়াল একপ্রকার লাফ দিয়ে উঠে ফোনটা দ্রুত চ্যাক করলো। একটা ভয়েস মেসেজ পাঠিয়েছে জ্যাক তাকে! সে দ্রুত সেটা প্লে করলো! ম্যাসেজ টায় স্তব্ধের কণ্ঠস্বর স্পষ্ট! স্তব্ধ আর তার লোকের সাথে কিছুক্ষণ আগের কথোপকথন টাই পাঠিয়েছে জ্যাক!
সম্পূর্ণ টা শুনার পর ডেনিয়াল ফোন রেখে বারান্দায় গিয়ে স্মোক করতে লাগলো। ডেনিয়াল ভাবছে কি রেডি করার কথা বলছিলো স্তব্ধ! বেশ কিছুক্ষণ ভাবার পর ডেনিয়াল এর চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো…. সে চিৎকার করে বললো,
— ” নো! ”
২ দিন পর,
থাই গ্লাসে আবৃত একটি রুমে কোণায় টিয়া হাটুতে মুখ গুঁজে অনবরত কেঁদে যাচ্ছে ফুঁপিয়ে। তার পড়নে বিয়ের ভারী লাল টকটকে লেহেঙ্গা যাতে শুকনো ছোপ ছোপ রক্ত লেগে খরখরে হয়ে কালো হয়ে আছে। তাই লাল রঙেও রক্ত স্পষ্ট। মাথার চুল গুলো এলোমেলো হয়ে কাধে পিঠে পরে আছে! হাতের চুরি গুলো বেশকিছু বেঙে গেছে যার ফলস্বরূপ টিয়ার হাত কেটে রক্ত ঝরে সেগুলোও শুকিয়ে আছে! একরকম বিভৎস অবস্থা টিয়া’র।
চলবে!
[ গাইছ এত এত দুঃখিত৷ এত লেট করে গল্প দেওয়ার জন্য! বাট আমি অনেক অসুস্থ ছিলাম। ঠিক কতটা বলে বুঝাতে পারবোনা বাট আমি আমার লাইফে এত অসুস্থ হয়নি কখনও। এত অসুস্থ হয়ে বুঝলাম যে মুখ দিয়ে কথা ঠিক মতো বলতে পারা কতবড় নিয়ামত সৃষ্টিকর্তার। কারণ আমি প্রায় ১ সাপ্তাহ কথা বলতে পারিনি ঠিক হাসতে পারিনি খেতে পারনি। আমি তো ভেবেছিলাম আমি বুঝি আর কখনও কথাই বলতে পারবোনা। তারপর জ্বর, টনসিল এর ব্যাথা মুখে ব্যাথা খাওয়া দাওয়া ঘুম সব হারাম আমার ভেবেছি সুস্থই বুঝি আর হবোনা। বাট আল্লাহ রহমতে শেষমেষ সুস্থ হয়েছি ঈদের একদিন আগে। তাই ঈদ করে একবারে গল্প দিলাম। গল্প এদিন বা দুদিন পর পর পেয়ে যাবেন এখন থেকে ইনশাআল্লাহ ❤ এখন বলেন টিয়ার এই অবস্থা কেনো? কি হলো ওর!]
আর হ্যাঁ আমার গ্রুপে একটি রহস্য টাইপ গল্প দিবো যেটার কথা আমি বহু আগে একবার বলেছিলাম। গল্প লিখবো না লিখবোনা করেও এই গল্পটা লিখে ফেলেছি। কারণ প্লট ঘুমাতে দিচ্ছিলোনা আমাকে। গল্পটা শুধু গ্রুপে দিবো কারণ আইডিতে আলোয় অন্ধকার চলে তাই যারা গ্রুপে এড নেই তাদের জন্য এখানে গ্রুপ লিংক দিলাম এড হয়ে নিন নতুন গল্পটা পরতে।