উড়ো পাতার ঢেউ পর্ব: ১৪

0
622

#উড়ো_পাতার_ঢেউ
#লেখা: ইফরাত মিলি
#পর্ব: ১৪
_________________

“কী বললেন?”

“আপনার প্রেমিককে রেডমন্ডে দেখেছি!”

দ্বিতীয়বার সাজিদের মুখে ‘প্রেমিক’ শব্দটা শুনে ইরতিজা ক্ষুব্ধ হয়ে হাতের কফি ছুঁড়ে ফেললো রাস্তার পাশে। কণ্ঠে বিশেষ জোর দিয়ে বললো,
“ও আমার প্রেমিক নয়। সবাই জানে ও আমার বন্ধু। আপনার হঠাৎ ওকে আমার প্রেমিক মনে হলো কীভাবে?”

সাজিদ নীরব হাসলো। বললো,
“বন্ধু?”

“হ্যাঁ বন্ধু ছিল।”
‘ছিল’ শব্দটার উপর বেশি জোর প্রয়োগ করলো। বোঝাতে চাইলো জোনাস বন্ধু ছিল অতীতে। বর্তমানে তো সে ইরতিজার কাছে একজন ঘৃণার মানুষ ছাড়া আর কিছু নয়!

“ও, তাহলে আমার ভুল হয়েছে? হ্যাঁ, ভুল তো হতেই পারে। কিন্তু আপনি এত রেগে গেলেন কেন? ভুল করাও কি আমার ভুল হয়ে গেল?”

“আমি আর এখানে থাকবো না, আমাকে বাসায় নিয়ে চলুন।”

“আপনার এতটা রেগে যাওয়াও আমার স্বাভাবিক লাগছে না ইরতিজা! আপনি সত্যিই আমাকে বিয়ে করবেন তো?”

সাজিদের প্রশ্নে ইরতিজা বোকা বনে গেল। প্রশ্নটার মানে ধরতে পারলো না। ঝাপসা চিন্তা ধারায় দ্বিধার চোখে চেয়ে থেকে বললো,
“আপনার জন্য মেয়ে খুঁজছি তো আমি। পেয়ে যাব শীঘ্রই।”

সাজিদ স্মিত হেসে গাড়ির দিকে মুখ করে বললো,
“চলুন।”

ইরতিজা গাড়িতে উঠে সিটবেল্ট বেঁধে নিলো। সাজিদ ইরতিজার শূন্য অনামিকার দিকে তাকিয়ে ছিল। মেয়েটা আংটিটা আঙুলে না পরে তুলেই রেখেছে! ভিতরের গুমোট সত্ত্বা গম্ভীর স্বরে বলে উঠলো,
“আপনি আসলেই একজন ভালো মেয়ে নন ইরতিজা! আপনি খারাপ!”

কথাটা কানে আসা মাত্র সাজিদের দিকে তাকালো ইরতিজা। সাজিদ তার অনামিকাতেই দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেছে। ইরতিজার মুখ না দেখলেও মুখের ভঙ্গিটা এখন কেমন তা উপলব্ধি করতে পারছে সাজিদ। হাত বাড়িয়ে ইরতিজার মুখ অন্য দিকে ফিরিয়ে দিয়ে বললো,
“সোজা তাকান। আমার দিকে তাকাবেন না। আপনার ক্ষুব্ধ দৃষ্টি আমাকে নিঃশেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। ওই ষড়যন্ত্রে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরবেন না আমাকে।”

ইরতিজার কপালে ভাঁজ পড়লো। লোকটা কী বলছে, কী করছে কিছু বুঝতে পারছে না। আজব মানুষ তো!

মুখ হাঁ করে উষ্ণতা দিয়ে গাড়ির কাচে ধোঁয়ার মতো একটা আবরণ ফেললো ইরতিজা। অন্যমনস্ক মন তার আঙুলের ছোঁয়ায় যত্ন করে একটা হার্ট অঙ্কন করলো গাড়ির কাচে। অস্ফুট স্বরে উচ্চারণ করলো,
“স্টুপিড বয়!”

“কী?” সাজিদের কানে শব্দটা কিঞ্চিৎ পৌঁছাতেই প্রশ্ন করে বসলো সে।

ইরতিজার আনমনা কেটে গেল। চকিতে তাকালো সাজিদের দিকে। এইমাত্র কি সে ‘স্টুপিড বয়’ শব্দ দুটো উচ্চারণ করেছে? সাজিদ শুনেছে সেটা? ইরতিজা বিস্ময়ে জড়িয়ে গেল। দুই পাশে মাথা নেড়ে বললো,
“নাথিং।”
বলে মুছে ফেললো কাচে অঙ্কিত হার্টের চিত্রটি। হৃদয়ের চলন গতি বেড়ে গেল। বুকের ভিতর একটা প্রশ্ন বিদ্রোহে পরিণত হলো। কেন এলো জোনাস?

_________________

একটা ডিম পোচ, দুই পিচ পাউরুটি, আটটা খেজুর আর এক কাপ কফি নিয়ে নওরিনের বেজমেন্ট বেডরুমে প্রবেশ করলেন শারমিন আমেমদ। আজকের ব্রেকফাস্টে আর কিছু তৈরি করা হয়নি। নওরিন বেডের সাথে হেলান দিয়ে মোবাইলে মুখ ডুবিয়ে রেখেছিল। মুখ তুলে সামনে তাকালে শারমিন আহমেদের চোখে চোখ পড়ে গেল। শারমিন চোখ সরিয়ে নিয়ে টেবিলে ট্রে রেখে যেতে উদ্যত হলেই ডাকলো নওরিন,
“মা!”

থামলেন শারমিন। নওরিনের দিকে তাকিয়ে ঠোঁটে সরলতা ছুঁয়ে মিষ্টি হাসলেন। সেদিন নওরিন পায়ে ব্যথা পাওয়ার পর যে সিনক্রিয়েট হয়েছিল তারপর থেকে আর কথা হয়নি দুজনের। নওরিন মুখ গোমড়া করে রাখতো, সেও আর কথা বাড়িয়ে ঝামেলা করতে চাইতো না। আজ নওরিনের মুখে ‘মা’ ডাকটা শুনে বড্ড ভালো লাগলো তার।

“কিছু বলবে?” সহজ গলায় জানতে চাইলেন শারমিন।

“স্যরি! সেদিন অতিরিক্ত করে ফেলেছিলাম আমি। উচিত হয়নি ওরকম বিহেভ করা। ভীষণ রকম দুঃখিত আমি।”

শারমিন হেসে শুধালেন,
“মায়ের সাথে মেয়ের ওরকম একটু-আধটু মনোমালিন্য হওয়া দোষের কিছু নয়। দ্রুত ব্রেকফাস্ট করে নাও।”

কান্নায় বুক ভার হয়ে আসছিল শারমিন আহমেদের। দ্রুত পায়ে বেরিয়ে এলেন বেজমেন্ট থেকে। এমন সিনক্রিয়েটের সাথে তো সে সদ্য পরিচিত ছিল না। এমন আচরণ পেতে পেতে সহ্য হয়ে গিয়েছে সব। শারমিন কিচেনে ঢুকলেন।
আজাদ চৌধুরীকে এক কাপ রং চা দিয়ে ইরতিজাকে ডাকতে গেলেন। দরজা অর্ধ ফাঁক হতেই দেখলেন ইরতিজা ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে আছে। মেকআপের উপর তাড়াতাড়ি করে সেটিং পাউডার দিয়ে নিচ্ছে।

“তুমি কি কোথাও বের হচ্ছো?”

“হুম।”

“এত সকালে কোথায় যাওয়ার প্ল্যান করেছো?”

ইরতিজা নিজের মেকআপ কমপ্লিট করে নিলো। ব্যাগ আগেই গুছিয়ে রেখেছিল, কাঁধে ঝুলিয়ে নিয়ে বেরিয়ে যেতে চাইলো তাড়াতাড়ি। মায়ের প্রশ্নটা সে এড়িয়ে যেতে চেয়েছিল, কিন্তু দরজা দিয়ে বের হয়ে যাওয়া দিলেই শারমিন এক হাত টেনে ধরলেন।

“কোথায় যাচ্ছ?”

“মা, আমি…” ইতস্তত করতে লাগলো ইরতিজা। জোনাসের সাথে দেখা করতে যাচ্ছে এটা মাকে কীভাবে বলবে? পারবে না বলতে। খানিক সময় চুপ থেকে বললো,
“আমি যাচ্ছি ওদিকে একটু জুহির সাথে হাঁটাহাঁটি করতে। এসে পড়বো দ্রুত।” মিথ্যা বলতে বাধ্য হলো ইরতিজা। মায়ের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে দ্রুত চলে এলো। বাসা থেকে বের হওয়ার ক্ষণে আবার বাবার সম্মুখীন হতে হলো।

“এ সময়ে কোথায় যাচ্ছ?”

“একটুখানি কাজ আছে। একা বের হচ্ছি না তো, জুহির সাথে যাব।”

বাবাকে কোনো রকমে পাশ কাটিয়ে চলে এলো ইরতিজা। বাইরে বের হয়ে বড়ো করে একটা নিঃশ্বাস নিলো। রোদের দেখা নেই। আরও বেলা বাড়ার পর বোধহয় সূর্য্যি মামা কিরণ ছড়িয়ে দেবে। তখন রোদ ভাসবে প্রকৃতির বুকে। আলো ছায়ার বিচিত্র খেলা চলবে। আবহাওয়া খারাপ না হলে সূর্য ডোবার আগ পর্যন্ত চলবে রোদের লুকোচুরি। মি. ফলক্রফট বাড়ির আঙিনায় বসে পত্রিকা পড়ছেন। আজকাল আর মানুষের মাঝে অত পত্রিকা পড়ার বিষয়টা পরিলক্ষিত হয় না। কিন্তু মি. ফলক্রফটকে রোজ সকালেই একটা পত্রিকা হাতে বসে থাকতে দেখা যায়। মি. ফলক্রফট ইরতিজাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে হেসে ‘গুড মর্নিং’ জানালো। ইরতিজাও হেসে ‘গুড মর্নিং’ জানিয়ে জোনাসের বাসার দিকে হাঁটতে শুরু করলো।
কিছুক্ষণ হাঁটার পরই এসে পৌঁছালো। নক করার পর ভিতর থেকে কেউ দরজা খুললো না। এমনকি ভিতরে কারো সাড়া শব্দও পাওয়া গেল না। ইরতিজা আবার নক করলো। কোনো মানুষের অস্তিত্বই উপলব্ধি করা যাচ্ছে না। জোনাস কি ভিতরে নেই?
ইরতিজা ভাবছে জোনাস ভিতরে নেই, কিন্তু জোনাস ঠিক বন্ধ দরজাটার ওপাশে দাঁড়িয়ে আছে। জানালা দিয়ে ইরতিজাকে আসতে দেখেই এখানে এসে দাঁড়িয়েছে। ডোর ভিউতে ইরতিজার চিন্তিত মুখখানি সে দেখলো একবার। ইরতিজা আরও একবার নক করলো। জোনাস সাড়া দিলো না। সাড়া না পাওয়ার অনুভূতিটা বিরক্তিকর। ইরতিজার মুখেও বিরক্তির রেশ হালকা প্রভাব ফেললো।
জোনাস কি তবে চলে গিয়েছে? ইরতিজার হৃদয় বেয়ে কেমন একটা চাপা কষ্টের ধারা গড়িয়ে পড়লো। জোনাস তাকে দেখা করতে আসতে বলে একবার দেখা না করেই চলে গেল?
ইরতিজার বড্ড অভিমান হলো। সে আর না দাঁড়িয়ে যাবে বলে পিছন ঘুরলো। ঠিক এই সময়েই জোনাস দরজা খুলে তার একহাত ধরে হ্যাঁচকা টান দিয়ে তাকে ঘরের ভিতর নিয়ে এলো। মাথাটা দেয়ালের সাথে লাগতেই একটু ব্যথা অনুভব করা গেল। খিঁচে ধরা চোখ দুটো মেলে তাকালো ইরতিজা। সে দেয়ালের সাথে মিশে দাঁড়িয়ে আছে। তার সম্মুখে নীল এক জোড়া চোখ। চোখ জোড়া তার দিকে চেয়ে আছে।

“দেখা না করে চলে যাচ্ছিলে কেন?”

“আমি ভেবেছিলাম তুমি বাসায় নেই, চলে গিয়েছো।”

“আমি চলে গেলে তোমার খারাপ লাগতো?”

“খারাপ কেন লাগবে?”

“লাগবে না?”

ইরতিজা দুই পাশে মাথা নেড়ে ‘না’ বোঝালো।

জোনাস দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে লিভিং রুমে এলো। ইরতিজাও ওর পিছন পিছন এসে দাঁড়ালো। জোনাস একটা টুল দেখিয়ে বললো,
“বসো।”

ইরতিজা বসলো। ঘরটা দেখলো ভালো করে। মাত্র একদিন থাকার জন্য এই ঘর কীভাবে ভাড়া করলো? এটা তো ইম্পসিবল!

“ম্যাংগো খাবে? আমার এখানে আপাতত আর কিছু নেই। চা-কফি কিছুই খাওয়াতে পারবো না।”

“কিছুর দরকার নেই।”

‘দরকার নেই’ বলা সত্ত্বেও জোনাস একটা কাঁচা আম কেটে আনলো। কাঁচা আম দেখে ইরতিজা মুখ বিকৃত করে তাকালো।
জোনাস বললো,
“এটা ভীষণ সুস্বাদু।”
বলে নিজে এক পিস খেয়ে নিলো।

“আমি তোমার এখানে কিছু খেতে আসিনি।” কোনো এক অগত্যা কারণে ইরতিজা ভীষণ বিরক্তবোধ করছে। তার মেজাজও খিটখিটে হয়ে উঠছে।

“তাহলে কী করতে এসেছো? নির্দয়ভাবে আমাকে বিদায় জানাতে এসেছো?”

“নির্দয় কেন হবে?”

“কারণ তুমি হৃদয় দিয়ে কোনো কিছু উপলব্ধি করার ক্ষমতা অর্জন করোনি।”

ইরতিজা মুখ গোঁজ করে ফেললো।

ক্ষণকাল কথা বললো না দুজনের কেউ। পিনপতন নীরবতা নেমে এলো। শুধু রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যানবাহনের শব্দ শোনা যাচ্ছে। এ ঘরটা রোডের খুব কাছে। জোনাস এক সময় বললো,
“আমি চলে গেলে আমাকে মিস করবে টিজা?”

“না।” দৃঢ় কণ্ঠের উত্তর ইরতিজার।

“…’না’ কেন?”

“পড়বে না তোমাকে মনে।”
সহজ ভাবে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করলো ইরতিজা। কিন্তু সে জানে, তার মন জানে, জোনাসকে মনে না করে থাকার উপায় তার নেই। মনে করতে না চাইলেও জোনাসকে মনে পড়ে যায় তার।
ইরতিজা ঘটনাটার জন্য প্রস্তুত ছিল না। জোনাস অকস্মাৎ সে যেই টুলে বসে আছে সেই টুলটাকে টেনে নিয়ে গেল নিজের খুব কাছে। ইরতিজা চমকে তাকালো। সে এখন জোনাসের খুব নিকটে। অপ্রস্তুত ভাবে সে জোনাসের চোখ দুটোকে পর্যবেক্ষণ করে চললো। জোনাসও ইরতিজার চোখে দৃষ্টি স্থির রেখে বললো,
“তাহলে আমাকে যাতে সারাজীবন মনে রাখতে পারো এমন কিছু কি করবো আমি? অর্টন যা করেছিল সেটা অন্যভাবে করবো কি?”

ইরতিজার বুকে ঢিপঢিপ মতো শব্দ হচ্ছে। কপাল কুঞ্চিত, চোখ দুটো বিস্ফোরিত হয়ে আছে। দেখতে দেখতেই রাগান্বিত হয়ে উঠলো। চোয়াল শক্ত করে বললো,
“তোমাকে আমি মে/রে ফেলবো জন!”

জোনাসের মাঝে ভাবান্তর হলো না। ভাবলেশহীন কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে লিভিং রুম থেকে চলে গেল। ফিরে এলো হাতে একটা ছুরি নিয়ে। ছুরিটা ইরতিজার হাতে দিয়ে বললো,
“এটা দিয়ে আঘাত করো। কিন্তু দেখো, আমাকে আঘাত করতে গিয়ে তোমার নিজের হৃদয়ে যেন রক্তক্ষরণ না হয়।”

ইরতিজা অবিশ্বাস্য চোখে তাকিয়ে রইল। জোনাস কেমন বেপরোয়া হয়ে উঠছে না? সে ছুরিটা রেখে দিতে উদ্যত হলেই জোনাস হঠাৎ তার ছুরি ধরা হাতটা চেপে ধরে নিজের বুকের বাঁ দিকে এগিয়ে নিয়ে গেল। ছুরিটা জ্যাকেটের পুরু অংশে মৃদু চাপে ধরে রেখে বললো,
“আঘাত করো টিজা। এখনকার পরিস্থিতি থেকে এটা অনেক স্বস্তিদায়ক হবে। যদি পারতাম আমি মরেই যেতাম! করো আঘাত। মানসিক আঘাতের চেয়ে শারীরিক আঘাত অনেক স্বস্তির। শারীরিক ক্ষতের চিকিৎসা করার জন্য এ পৃথিবীতে অনেক ডক্টর রয়েছে। কিন্তু আমার মানসিক ক্ষত ভালো করবে এমন ডক্টর এই পৃথিবীতে একজন ছাড়া আর কেউ নেই। সেই ‘একজন’টা তুমি টিজা! কিন্তু তুমি তো আমার ক্ষত ভালো করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছো! আমি চাইছি না আর এমনটা চলুক। আমি তোমাকে একদম মনে করতে চাই না টিজা। তুমি এমন কিছু করো যাতে আমি তোমাকে সম্পূর্ণ রূপে ভুলে যাই। এমনটা চলতে থাকলে আমি পাগল হয়ে যাব! তুমি কিছু করো টিজা। তুমি সত্যি সত্যি মেরে ফেলতে পারো না আমায়?”

ইরতিজার শ্বাস রুদ্ধ। বুক ব্যথিত। চেয়ে আছে স্তব্ধ চোখে। জোনাস কী বলছে এসব? সত্যি সত্যি পাগল হয়ে যাচ্ছে না কি ও?

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here