এক_বৃষ্টিস্নাত_সন্ধ্যা ৩৩.

#এক_বৃষ্টিস্নাত_সন্ধ্যা
৩৩.
#writerঃMousumi_Akter

ধুলাময়লা ধুয়ে সতেজ হয়ে উঠেছে প্রকৃতি।দিঘীর পাড়ে কয়েকটুকরো কাঠে আগুন জ্বালিয়ে আগুন পোহাচ্ছি আমরা দুজনে।দুইটা গাছের মাঝ বরাবর আগুন জ্বালিয়ে দুই সাইডের দুইটা গাছে হেলান দিয়ে পিঠ ঠেকিয়ে বসে আছি দুজনে।দুজনের চোখের দৃষ্টি দুজনের দিকেই আছে।দিঘীতে অনেক লাল লাল শাপলা ফুটে রয়েছে বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়ে শাপলা গুলো গোসল করে তাদের রুপ যেনো আরো বহুগুন বেড়ে গিয়েছে।পানির ভিতরে কাঠে জ্বালানো আগুন এর প্রতিচ্ছবি দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।আমার পূর্ণ দৃষ্টি পানিতে দেখে বিহান ভাই বললেন,সদ্য বিবাহিত এই ছেলেটার প্রতি এতটা অবহেলা কেনো মিসেস বিহান।

কথাটা শুনেই একঝটকায় উনার দিকে তাকালাম।উনি আমাকে মিসেস বিহান ডাককছেন।এই ডাকটা এতটা মিষ্টি না হলেও তো পারতো।উনার মুখের প্রতিটা কথা এত কআকর্ষিত করে কেনো আমাকে? মুখের উপরে পানিতে দলা ধরা কয়েক গোছা চুল এসে পড়েছে চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে বললাম কিসের অবহেলা হলো বুঝলাম নাতো।

শ্বশুরের এই জামাই কে রেখে তার মেয়ে পানির দিকে তাকিয়ে আছে।এখন তো আমার ওই দিঘির বুকে শাপলা পাতার জল হতে ইচ্ছা করছে।তাহলে এই বাহানায় যদি সে একটু আমায় দেখতো।

কিছুটা লাজুকতা ঠোঁটের কোনে একটু হাসি নিয়ে বললাম,,তাকেই তো দেখছি।জলের বুকে তাকে এতটা সুন্দর না লাগলেও পারতো।ওই শাপলা পাতার নিচে আগুনের কুন্ডলির পাশে গাছে হেলান দিয়ে বসে থাকা এক যুবক কে দেখছি।ওই ছেলেটা এত সুন্দর কেনো বলতে পারেন?আল্লাহ কি সব সৌন্দর্য ওই ছেলেটার মাঝেই দিয়েছেন।এই সুন্দর ছেলেটাকে ছোট বেলা থেকে দেখে দেখে মুগ্ধ আমি।কওই ছেলেটাকে বলে দিন তার জন্যই শ্বশুরের মেয়ে তার জামাই কে কষ্ট দিচ্ছে।

বিহান ভাই নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে একটা নেশাক্ত হাসি দিয়ে উঠে দাঁড়ালেন।উনার ও পরণে সাদা শার্ট, পরনে কালো জিন্স। মাথার চুল একটু পিছনে উজিয়ে দিয়ে নিজের শার্ট এর হাতা গোটাতে গোটাতে আমার দিকে এগিয়ে এলেন।আমার দুই বাহুতে হাত দিয়ে আমাকে দাঁড় করালেন।আমার কপালের উপর এসে পড়া চুল গুলো উনার হাত দিয়ে আমার কানে গুজে দিলেন।শার্টের হাতা অনেক বড় আমার হাত ঢেকে গিয়েছে উনি আমার পরা শার্টের হাতা ভাজ দিতে লাগলেন।দুই হাতা ই ভাজ করে কনুই এর নিচ পর্যন্ত রাখলেন।এরপর যেটা করলেন হটাত বুক এ দুরুম দুরুম সাউন্ড শুরু হল।উনি শার্টের গলার কাছের প্রথম বোতাম টা খুলে দিলেন আমার।বোতাম খুলে এদিক ওদিক কোনো খেয়াল নেই উনার গলার দিকে তাকিয়ে আছেন একভাবে।হাত গলাতেই আছে এখনো আমি উনার হাত গলায় আমার হাত দিয়ে একটু চেপে ধরে বললাম কি করছেন।

বউ কে মানুষ যা করে তাই করছি।?

এসব কি বলছেন।

পিচ্চি মানুষ কোথায় গলা এটে দম বন্ধ হয়ে যাবে বুঝতেও পারবা না।একটা বোতাম খোলা থাকলে কিছুটা দম নিতে পারবা ভাল ভাবে ঠিক আছে পুচকি।

ওহ আমি ভেবেছি…..

যা ভেবেছো সেটা করবো বলেই কোমর চেপে ধরলেন।উনার থেকে ছুটে পালালাম।কুড়ের ভেতরে গিয়ে ভেজা কাপড় গুলো আনলাম।উনাকে বললাম এগুলা শুকাতে হবে না।

বিহান ভাই বললেন তোকে এইভাবে ভাল লাগছে দেখতে।

আমি কি এইভাবে পিকনিকে যাবো।

ওইযে দুই টা গাছে রশি বাধা আছে ওখানে মেলে দে।

তাকিয়ে দেখি সত্যি রশি বাধা আছে।

এগিয়ে গিয়ে দেখি খানিক টা উচুতে নাগাল পাচ্ছি না।উনাকে ডাকলাম বিহান ভাই এগিয়ে আসুন না নাগাল পাচ্ছি নাতো।আপনি একটু মেলে দিন।

বিহান ভাই এগিয়ে এসে বললেন আমি আকতোকে উচু করে ধরছি তুই মেলে দে।

উনি আমায় উচু করে ধরলেন আর আমি কাপড় গুলো মেলতে লাগলাম।হঠাত পেটে সুরসুরি অনুভব হলো।উচু হওয়াতে শার্ট খানিক উপরে উঠে নাভি বের হয়ে গিয়েছে।এত সময় কি নাভি দেখছিলেন।উনার দিকে আমি তাকাতেই পেটে গভীর ভাবে চুমু দিলেন।সুরসুরি তে লাফিয়ে উঠাতে নিচে নামিয়ে দিলেন।

এই ছেলেটা এমন অসভ্য কবে হলো।সুযোগ পেলেই এসব করছে

কাপড়ের পানি শুকালে আগুনে দিয়ে শুকালাম। এতক্ষণ বিভোর ভাই লম্বা এক ঘুম দিয়েছেন।
কোন ভোর রাত্রে আমরা রওনা হলাম্বার। দিঘির এই আন্টি খিচুড়ি রান্না করেছিলেন সাথে ডিম ভাজি।আরাম করে খেয়ে বাইকে বেরিয়ে পড়লাম।বিহান ভাই এর কাধে হাত দিয়ে উন্মুক্ত গ্রামের রাস্তা দিয়ে চললাম।

অবশেষে আমাদের গন্তব্য স্হানে পৌছালাম। মাত্রই বোধহয় রান্না শুরু হয়েছে।কারণ বৃষ্টির জন্য রান্না শুরু করতে পারেনি এত সময়।

রিয়া বললো কাজ করার ভয়ে পিছনে পিছনে থেকেছিলি তাইতো দিয়া।

তোহা আপু বললো বিহান ভাই এত লেট করলেন কেনো?ভীষণ মিস করছিলাম।

বিভোর ভাই বলেন কেনো

সেটা বিহান ভাই জানেন।

বিহান ভাই বলেন

নাউজুবিল্লাহ আপা কি জানি আমি।

আপা বলেই চোখ বড় বড় করলো তোহা ভআপু।এই আপা ডাক শুনে মাথা ঘুরে কাজের গেলো যেনো।

বিভোর ভাই বললেন এই আপা ডাক শুনে চোখ কপালে কেনো তোহা।

তাই বলে আপা ডাকবে।আপা ডাক নিষিদ্ধ বিহান ভাই এর জন্য।

বিহান আন্টি ডাকবি এখন থেকে।তোহা মনে হয় এটায় চাচ্ছে।

মোটেও না আমি এটা চাইছি না।বিহান ভাই জানেন সব।

কতোহা মাফ চাই আপা।সদ্য বিবাহিত যুবক আমি।এগুলা বলে আমার সংসারে আগুন লাগিও না।

রিয়া বলে উঠলো বিহান ভাই তাহলে তোহা আপুর স্টোক হবে এটা নিশ্চিত।

বিভোর ভাই বললেন,রিয়া আমি বিয়ে করলে কি স্টোক হবে তোমার।

আপনি ঠিক কতজন কে বিয়ে করবেন একটু বলবেন বিভোর ভাই।যতজন কে প্রস্তাব দিয়েছেন বাবাহ।ভাবতেই নোবেল ছুড়তে মন চাই আমার।

তুমি একটু পাত্তা দাও না বলে ছেলেটা আজ আমের অভাবে জুস খাচ্ছে।

আমের অভাবে জুস? এটার মানে কি?

মানে তোমার অভাবে অন্যর কাছে যাচ্ছি।

ছিঃছিঃ আপনি এত বড় চরিত্রহীন কেনো বিভোর ভাই।।ভাবতেই গা গোলাচ্ছে।বিয়ের পর ও এই অভ্যাস থেকে যাবে তাইনা?

আরে না রিয়া ভুল বুঝছো।ওইটা এমনি বলেছি বিলিভ মি।বিলিভ হয় না তাইনা।এইযে তিয়াস এর চোখ ছুয়ে বলছি।এইবার তো বিলিভ করো।

তিয়াস ভাই ছিটকে গিয়ে পড়ে বললেন,বিভোর ভাই ভাল হয়ে যান।আর আসে কত করবেন এসব ভন্ডামি।আমার খালাতো বোন কে তাই প্রপোজ করেছেন।এখন আপনার মিথা ঢাকতে আমার চোখের বলিদান দিতে হবে তাইতো।নিজে তো এমনি সব মেয়ে ক নিচ্ছেন তাতে আমাদের অন্ধ বানাচ্ছেন।যাতে বাকি যা মেয়ে আছে তারাও আপনার হয়।কয়টা লাগে শুনি।

তিয়াস আমি যায় করি তোর মতো তো আর মহিলাদের পিছে ঘুরি না।তোর জন্য পাড়ায় ককোনো বিবাহিত মহিলারা নিরাপদ নয়।

ভাই আর কত বাঁশ দিবেন।

চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here