এক_রক্তিম_ভোর পর্ব_২২

এক_রক্তিম_ভোর পর্ব_২২
#প্রভা_আফরিন

সুদূর অন্তরীক্ষে সদর্পে বিরাজমান থালার মতো ভেসে থাকা চাঁদের আলোয় ভাটা পড়েছে। এক খন্ড মেঘ তাকে পুরোদস্তর আড়াল করে লুকোচুরি খেলায় মগ্ন। ঠিক যেমনটা মগ্ন প্রয়াস এবং নাবিলা। উত্তরের হিমেল হাওয়া জানান দিচ্ছে শীত দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে। বাতাসের শীতলতা নাবিলাকে কাপিয়ে দিলো। কিন্তু মুখে তার কোনো অভিব্যক্তি প্রকাশ পেলো না। অপরদিকে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটা তখন হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে কপালের ঘাম মুছতে মনোযোগী। চোখে তার পালিয়ে যাবার বাসনা।
নাবিলা এবং প্রয়াস এখন বারান্দায় অবস্থান করছে। বা পাশের বাগান থেকে আসা আলোর ছটায় বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা দুজন মানুষের চেহারা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

‘এতো রাতে চোরের মতো আমার রুমে কি করছিলে তুমি?’

‘ক কই? কিছু না তো!’

‘কিছুই না? তাহলে এমন ঘামছো কেনো?’

‘আসলে যা গরম পড়েছে না! তাই আরকি।’

‘অনেক গরম তাইনা?’

‘হ্যা অনেক গরম পড়েছে। কবে যে বৃষ্টি হবে!’

‘হেমন্ত ঋতুর পদচারণ শেষের পথে ভাইয়া। বৃষ্টি না বরং শীত আসবে। তুমি তো দেখছি মাসের খবরও রাখছো না।’

প্রয়াস জিভ দিয়ে শুকনো ঠোঁট ভিজিয়ে বললো,
‘ওহহ! তাই তো। আসলে ইদানীং অফিসের কাজে এতো বেশি ব্যস্ত থাকি যে অন্য কিছুর খেয়ালই থাকে না।’

নাবিলা বুঝতে পেরেছে এমন ভঙ্গিতে মাথা নেড়ে বললো,
‘খুব কাজ তাই না। কিন্তু তুমি এখানে ঠিক কি করছিলে?’

প্রয়াস শুনতে পায়নি এমন ভাবে বললো,
‘হ হ্যা?’

‘আমার রুমে তোমার বিচরণ কেনো?’ এবার কিছুটা দৃঢ় কন্ঠে বললো নাবিলা। অপরজনের থেকে প্রত্যুত্তর না পেয়ে আবার বললো,

তুমি কি নার্ভাস ফিল করছো?’

‘কই নাতো। তোর চোখের পাওয়ার বেড়েছে। চশমাটা বদলাতে হবে। উল্টোপালটা দেখিস আজকাল।’

প্রয়াস কন্ঠে দৃঢ়তা আনার চেষ্টা করলো। হার মানলে চলবে না। শক্ত কন্ঠে কথা বললে নাবিলা ঘুরিয়ে প্রশ্ন করার সাহস পাবে না। কিন্তু ওর বেইমান গলাটা ওর মনের কথা শুনতে একদম নারাজ। যাকে শাসনে রেখেছে তার সামনেই মিনমিন শুরু করেছে নিমকহারাম টা। মনে মনে ঠিক করলো স্লিপ ওয়াক বলে চালিয়ে দেবে।

প্রয়াসকে চুপ থাকতে দেখে নাবিলা চোখের চশমাটা নাকের ওপর থেকে আরেকটু ঠেলে উপরে তুলে আবার বললো,

‘তোমারতো স্লিপ ওয়াকের প্রবলেম নেই ভাইয়া। তাহলে?’

প্রয়াস আবার নিভে গেলো। মনের কথাটা কিভাবে বললো মেয়েটা? বুদ্ধিগুলো কই পালিয়ে যাচ্ছে কে জানে। একটাও যুতসই উত্তর মিলছে না।
প্রয়াস আরো কিছুটা সময় চুপ থাকলো। তারপর বললো,

‘বারান্দার দরজা খোলা রেখেছিস কোন বুদ্ধিতে? যদি আবার কিছু হয়ে যায়! সাবধানের মার নেই। তাই নিজে থেকেই খোজ নিতে এলাম।’

‘আচ্ছা? আমার খোজ নিতে তুমি জেগে ছিলে বুঝি?’

‘আজ্ঞে নাহ। আমার ঘুম ভেঙে যাওয়ায় বারান্দায় এসে দেখি তোর বারান্দার দরজা হাট করে খোলা। শেষে তো আমাকেই খুজে বের করতে হবে। তাই রিস্ক নিতে চাইলাম না। নাথিং এলস।’

‘কিন্তু আমার কেনো মনে হলো ঘুমের মধ্যে কেউ আমার কপালে ছুয়েছে?’

প্রয়াস কিছুটা হকচকিয়ে গেলেও সেটা চেপে নিলো। বললো,
‘সারাদিন উল্টা পালটা মুভি দেখে বোধহয় এমন হয়েছে। তাই স্বপ্নেও দেখিস কেউ কপালে চুমু খাচ্ছে ছিঃ! তোর মুভি দেখা বন্ধ কাল থেকে।’

‘কিন্তু আমি কখন বললাম কেউ আমার কপালে চুমু খেয়েছে? শুধু বললাম কেউ ছুয়েছে মনে হলো।’
নাবিলা ঠোট উল্টিয়ে ভ্রু নাচালো।

‘ত..তো কপালে স..স্পর্শ তো চুমুই হবে তাইনা! আমি এতোকিছু বুঝি নাকি?’
নাবিলা মাথা নেড়ে না বুঝিয়ে ঠোঁট টিপে হাসলো।

প্রয়াসের এবার নিজের ওপর রাগ হলো। তানজিলার বিয়ের আসর থেকেই প্রয়াস বারবার নিজের আচরনে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে। উল্টোপাল্টা বলে ফেলছে। অথচ এটা তাকে একদমই শোভা পায় না। এভাবে নিজের ব্যক্তিত্ব থেকে সরে আসাটা ঠিক হচ্ছে না। প্রয়াস খ্যাঁক করে গলা ঝাড়লো। নাবিলার চোখে চোখ রেখে বললো,

‘এতো কথার কি আছে? আমি দেখতে এসেছিলাম সব ঠিক কি না। সব যখন ঠিকই আছে তবে এবার দরজাটা বন্ধ করে ঘুমা। আমাকেও চিন্তা মুক্ত কর।’

নাবিলা এবার রুষ্ট কন্ঠে বললো,
‘আর কিছু বলার নেই তোমার?’
‘উহু।’

‘বলি তোদের চোর পুলিশ খেলা হলে এবার ঘুমাতে যা। রাত তো শেষের পথে।’

পেছন থেকে একটা ভাঙা কন্ঠ কানে আসতেই নাবিলা এবং প্রয়াস ভুত দেখার মতো চমকে উঠলো।
নয়নতারা বেগম বারান্দার দরজার কাছটায় এসে দাড়িয়েছে। আবছা আধারে মুখে তার অন্যরকম হাসি।

‘দ দা দাদি তুমি?’ নাবিলা তুতলে উঠলো।

প্রয়াসের দৃষ্টি উত্তাল সমুদ্রের ন্যায় অশান্ত হয়ে উঠলো। হৃৎপিন্ড টা আকষ্মিক ঘটনা হজম করতে না পেরে অত্যধিক লাফাতে লাগলো। এমন লজ্জা জনক পরিস্থিতিতে জীবনে কখনো পড়েছে কিনা সন্দেহ।

‘হ্যা আমি। আশা করিসনি বুঝি?’

‘তুমিতো ঘুমাচ্ছিলে!’

‘ঘুমাচ্ছিলামই তো কিন্তু তোদের এই খুটুরমুটুর আওয়াজে উঠতে হলো। ঘুমের ঔষধ খাওয়া ছেড়েছি তোর কিডন্যাপড হওয়ার পর। তাইতো জেগে গেলাম।’

নাবিলা মনে মনে নিজেকে গালাগাল করলো। ওর আগেই বোঝা উচিৎ ছিলো দাদি এখন সতর্ক থাকে সবসময়। প্রয়াসকে চেপে ধরতে গিয়ে নিজেই এখন চাপে পড়েছে। কি বলবে বুঝতে না পেরে অসহায় দৃষ্টিযুগল মেঝেতে নিবদ্ধ করলো। প্রয়াস মৃদু কাশি দিয়ে বললো,

‘ইয়ে মানে দাদি। হয়েছে কি! নাবিলা বারান্দার দরজাটা খোলা রেখেছিলো বিধায় একটু চেইক করতে এসেছিলাম সব ঠিক আছে কিনা। ও এমন নির্বুদ্ধিতার কাজ করে যে… ‘

‘যে তোমাকে রাতের বেলা জেগে জেগে পাহারা দিতে হচ্ছে। তাইতো? সত্যিই তো নাবিলা। ছেলেটাকে কেনো এতো জ্বালাচ্ছিস তুই?’

‘না মানে দাদি। ত..তেমন কিছু না। একটু গরম লাগছিলো তাই দরজাটা খোলা রেখেছিলাম।’

‘হেমন্ত বিদায়ী পথে। সামনে শীত আসছে। রাতে ঠান্ডা পড়ছে। আর তোর গরম লাগছে?’

নাবিলা থতমত খেয়ে গেলো। একটু আগে এমন কথায় প্রয়াসকে ভরকে দিয়েছিলো। আর এখন দাদির সামনে নিজেই ভরকে গেলো। লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে।

‘হয়েছে হয়েছে। এবার ঘুমাতে আয়। রাত শেষ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে রাত জাগলে চোখের নিচে কালি পড়ে অসুস্থ দেখতে লাগবে। জলদি আয়।’

নয়নতারা বেগম বারান্দা ছাড়লেন। তিনি ভেতরে যেতেই প্রয়াস চাপা স্বরে জিজ্ঞাসা করলো,

‘রুমের সব দরজা খুলেই ঘুমিয়েছিস আজকে?’

‘না। দাদি আমার রুমেই শুয়েছে। তুমি খেয়াল করোনি বোধহয়।’

‘তো সেটা আগে কেনো বলিসনি?’

‘তুমি জানতে চাওনি তাই।’

প্রয়াসের মাথা চেপে ধরলো। আরেকটু সতর্ক হওয়া উচিৎ ছিলো ওর। নাহলে এভাবে দাদির হাতে ধরা পড়তে হতো না। কে জানে তখনকার কথাগুলো শুনেছে কিনা! অবশ্য এতে একটা সুবিধা হয়েছে। দাদি যদি নিজে থেকেই ধরে নেয় ওদের মধ্যে কিছু আছে তবে প্রয়াসের পক্ষে এগোনো টা সহজ হবে। যদিও ওনার মনোভাব তেমন একটা বোঝা যায়নি।
প্রয়াস একটু স্বস্তির নিশ্বাস নিয়ে নাবিলার মাথায় হালকা চাপড় মেরে রেলিং টপকে নিজের রুমে চলে গেলো।

নাবিলা এক হাত দিয়ে আরেক হাতের নখ খুটতে খুটতে রুমে এসে দাদির পাশে চুপটি করে শুয়ে পড়লো। দাদি কি ভাবছে ওদের নিয়ে সেই ভাবনা মস্তিষ্ক দখল করে নিয়েছে। যদি বাবা মাকে জানিয়ে দেয় তাহলে ও বাবা-মায়ের সামনে যাবে কি করে?

নাবিলার ধারনাকে মিথ্যা করে দিয়ে নয়নতারা বেগম কাউকেই কিছু জানালো না। শুধু নাবিলা কিংবা প্রয়াসের সাথে চোখাচোখি হলেই অদ্ভুত ভাবে হাসতে লাগলো। যেন তিনি মজা নিচ্ছেন বেচারাদের ওপর। নাবিলা পুনরায় বাবার অফিসে জয়েন করেছে। নয়নতারা বেগম বলে দিয়েছেন বিকেলের মধ্যে নাবিলা বাড়িতে থাকবে। মায়ের আদেশ মেনে তারেক হোসেনও তাই করেছেন। এখন বাড়িতে বসেও পারবে এমন কাজ করছে নাবিলা।

প্রয়াসও আজ দুইদিন খুব একটা ওই বাড়ির মুখো হয়নি। অফিস থেকে ফিরে ক্লান্ত দেহটা টেনে নিয়ে ছাদে উঠলো। নাবিলাকে কফি করে দেওয়ার বাহানায় ফোন দিয়েছিলো। কিন্তু নম্বর বিজি এসেছে। এক দুই মিনিট হলেও ঠিক আছে। কিন্তু টানা দশ মিনিট একই ঘটনা। প্রয়াসের রাগ হলো। কার সাথে এতো কথা? অগত্যা ছাদে উঠতে হলো। দিনের শেষভাগ মেয়েটাকে এখানেই পাওয়া যাবে। হলোও তাই। রেলিঙে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে নাবিলা। কানে ফোন, হেসে হেসে কথা বলছে ও। প্রয়াস তীক্ষ্ণ চোখে ওকে পর্যবেক্ষন করতে লাগলো।

নাবিলা পাশের ছাদে প্রয়াসের উপস্থিতি টের পেয়ে গলার জোর বাড়িয়ে দিলো। চেহারায় ফুটে উঠলো একরাশ ভালোলাগা। যেন নতুন প্রেমের জোয়ারে ভাসতে শুরু করেছে ওর শরীর ও মন।

‘চলে আসার সময় আপনাকে বলে আসতে না পারায় আমি খুবই দুঃখিত স্যার। আসলে হুট করে চলে আসতে হলো।’
…………
‘কি! স্যার ডাকবো না? তাহলে কি বলে ডাকবো আপনাকে?’
…………..
‘শুধু রোহান? এমা! আপনি আমার কত্ত বড়। আমি আপনার নাম ধরে ডাকতে পারি বুঝি?’
…………..
‘আমার যা ইচ্ছা তাই ডাকবো? আচ্ছা, আমি ভেবে জানাবো আপনাকে।’
……………
‘আমাকে নীল শাড়িতে এতো ভালো লেগেছে আপনার? আমারো আপনাকে…’

কথা বলতে বলতেই নাবিলার হাত থেকে ফোন উধাও হয়ে গেলো। সেটা এখন প্রয়াসের হাতে। প্রয়াস ফোসফাস করে নিশ্বাস নিচ্ছে। চোখ বলছে সামনের মানুষটাকে কুচি কুচি করতে পারলে খুশি হবে।

‘ভাইয়া আমার ফোনটা দাও।’
নাবিলা কেড়ে নিতে চাইলো। প্রয়াস দিলো না।

‘প্রেম জেগেছে তাই না? খুব প্রেম জেগেছে? ঘন্টার পর ঘন্টা প্রেম বিনিময় চলছে খুব?’

প্রয়াস স্ক্রিনের নামটা দেখলো। ‘রোহান স্যার’।নাম্বারটার দিকে মনোযোগ দিতেই রাগ শিথিল হয়ে ভ্রু কুঞ্চিত হয়ে এলো। পকেট থেকে নিজের ফোনটা বের করে কিছু একটা মিলিয়ে দেখে বাকা হেসে উঠলো।

‘আমাকে বোকা বানানো? মাহির নাম্বার রোহান স্যারের নামে সেইভ। এইসকল স্টুপিড আইডিয়া তোর মাথা থেকেই আসবে।’

নাবিলা জিভ কাটলো। এভাবে ধরা পড়বে ভাবতে পারেনি। মাহির নাম্বার প্রয়াসের কাছে থাকতে পারে তার কোনো ধারনাই ছিলো না ওর। আমতা আমতা করে বললো,

‘আসলে স্যার মাহির নাম্বার দিয়ে কল দিয়েছে আমায়। ওরা এখন তানজিলার শশুর বাড়ি কিনা।’

প্রয়াস ফোনটা কেড়ে নিয়ে হোল্ড করে ফেলেছিলো। নাবিলার কথা শুনে প্রয়াস ফোনটাকে লাউডে দিলো। সাথে সাথেই ওপাশ থেকে মাহির উত্তেজিত কন্ঠ ভেসে এলো।

‘হ্যালো নাবিলা। কাজ হয়েছে তো? প্রয়াস ভাইয়া এবার জেলাসিতে নিশ্চয়ই মনের কথা স্বীকার করবে দেখে নিস। এইবারের প্ল্যান ফ্লপ হবে না আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি।’

প্রয়াস হাসবে নাকি কাদবে বুঝতে পারছে না। ওর নাবিলা কিনা ওর মনের কথা স্বীকার করাতে এতো কিছু করছে? বিশ্বাসই হচ্ছে না। মনের ভেতর হুট করেই প্রজাপতির মেলা বসে গেলো। না চাইতেই কাঙ্ক্ষিত জিনিসটা পেয়ে যাওয়ার খুশি ওর চোখে মুখে স্পষ্ট হয়ে উঠলো।

নাবিলার ইচ্ছে করছে উধাও হয়ে যেতে। ম্যাজিক জানলে নিশ্চয়ই এমন কিছু করে ফেলতো। লজ্জায় কান, গাল গরম হয়ে উঠেছে। মাহিটার কোনো কান্ডজ্ঞান নেই? ফোন ধরে অপর পাশের মানুষটার কন্ঠস্বর তো শুনে নিবি তা না, দিলো হাটে হাড়ি ভেঙে।
উপায় না পেয়ে শেষমেশ প্রয়াসের প্রশস্ত বুকটাকেই মুখ লুকানোর যায়গা হিসেবে বেছে নিলো নাবিলা। একহাতে বুকের কাছটায় ঘর্মাক্ত শার্টটা খামচে ধরে মুখ ডুবালো প্রয়াসের প্রশস্ত বুকে।

প্রয়াস যেন হাওয়ায় ভাসছে। চারিদিক থমকে গিয়ে শুধু নাবিলাকেই অনুভব করছে। অজান্তেই হাত উঠে গেলো নাবিলার পিঠে। বাধন শক্ত হলো। প্রয়াস খেয়াল করলো ওর হাত মৃদু কাপছে। কাপছে বুক। চোখের পাতা ঝাপসা হয়ে আসছে বুঝি। তার বুকে থাকা মানবী টি গুটিয়ে গেলো আরো কিছুটা। অপর হাত দিয়ে খামচে ধরার চেষ্টা করলো প্রয়াসের পিঠের কাছটায়। পারলো না। তার আগেই অবশ শরীরের সম্পূর্ণ ভার ছেড়ে দিলো অপর মানুষটার ওপর। প্রয়াস আগলে নিলো। আকাশের পানে মুখ তুলে চোখ বন্ধ করে অনুভব করতে লাগলো।

অনুভূতির আদান প্রদান হলো নিঃশব্দে। চুপিচুপি। না বলা সব কথাগুলোও নিশ্বাসেরা জানিয়ে গেলো একে অপরকে। মুখে একটাও শব্দ হলো না। ওদের দেখে আলোও লজ্জা পেয়ে মুখ ঢাকতে শুরু করলো। আজ আধার নামার বুঝি খুব তাড়া আছে। তাড়া নেই শুধু একে অপরের সাথে মিশে থাকা তৃষ্ণার্ত এক প্রেমিক যুগলের।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here