#এক_শ্রাবণ_হাওয়ায়-২
#লেখিকা – কায়ানাত আফরিন
#পর্ব – ৬
-‘ এখানে কি করছো তুমি?’
এই কথাটি শুনে ভয়ে শরীর জমে গেলো আমার। এক হাতে আমার ছিলো মোবাইল আর অন্যহাতে আনভীরের সেই রিপোর্ট। আমি পরপর কয়েকবার শুকনো ঢোক গিললাম আতঙ্কে। পেছনে ফিরে আনভীরকে না দেখে নাহিদ ভাইয়াকে দেখে অবাক হলাম আমি৷ নাহিদ ভাইয়া সচরাচর আপনি বলে সম্বোধন করেন আমায়। এখন তুমি ডাকাতে যেমন আমি অবাক হয়েছি তেমনিভাবে উনিও। হয়তো ভাবতে পারেননি এভাবে তুমি বলে ফেলবেন। তৎক্ষনাৎ নাহিদ ভাইয়া বললেন,
-‘ সরি মিস.আহি, তুমি বলে সম্বোধন করার জন্য। আপ…..আপনি কি করছেন এখানে? সকালে না আপনাকে বললাম যে এখানে আসা নিষেধ?’
আমি অপ্রতিভ হলাম। বললাম,
-‘ না আসলে অনেক বড় একটা জিনিস জানতে পারতাম না। কি এটা?’
আমি হাত উচিয়ে দেখালাম রিপোর্টটি। নাহিদ ভাইয়া বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে রইলেন কিছুক্ষণ। ট্রাউজারের পকেটে গুজে থাকা হাত নিমিষেই চিন্তিত ভঙ্গিমায় চালিয়ে দিলেন চুলে। আমি বললাম,
-‘ বলছেন না কেনো কিছু? এটাই সেই সত্য না যেটি রাহি আপুর কাছে আছে? আমার শুরু থেকেই সন্দেহ হচ্ছিলো যে এমন কি আছে রাহি আপুর কাছে যার জন্য আনভীর এমন পাগল হয়ে যাচ্ছেন? এবার ক্লিয়ার হলো, এমন একজন পপুলার আইডল যার ফ্যানডম দেশের অন্য ফ্যানডমের তুলনায় অনেক বড় তার যদি এত বড় একটা মেন্টাল সিকনেস ধরা পড়ে এটাই স্বাভাবিক যা উনার ক্যারিয়ার মাটিতে মিশিয়ে দিতে পারে, তাই তো?’
নাহিদ ভাইয়া এবার বললেন,
-‘ আমার সাথে পুলের সামনে আসেন মিস.আহি। এখানে থাকাটা আপনার জন্য সেফ না। আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি বলে এই না যে আনভীর আপনাকে এভাবে দেখে কোনো রিয়্যাক্ট করবেন না।’
বলেই উনি চুপচাপ প্রস্থান করলেন রুমটি। ইশারায় আমায় বললেন এখান থেকে বেরিয়ে আসতে। কথামতো আমি তাই-ই করলাম। নাহিদ ভাইয়া এবার সন্তর্পণে লক করলেন রুমটি। কোনো ক্লু রাখলেন না যে এখানে কেউ এসেছিলো। আমি অবাক হয়ে গেলাম উনার ব্যাবহারে। যেই মানুষটা আনভীরের এতটা বিশ্বস্ত সে কেনই বা হেল্প করছে আমার?
তারপর পুলের কাছাকাছি বসে পড়লাম আমি। নির্জন রাত, লাইটের প্রতিফলেন পুলের নীলচে পানিটা অনন্য লাগছে দেখতে। আমি নাহিদ ভাইয়ার দিকে তাকালাম। উনার নিষ্পলক দৃষ্টি পুলের পানির দিকে। কিছুক্ষণ মৌনতা কাটানোর পর বলে ওঠলেন,
-‘ এই প্রবলেমটা হঠাৎ করে হয়নি ভাইয়ের। হয়েছে খুবই আস্তে আস্তে। ‘
নাহিদ ভাইয়ার মুখে ‘ভাই’ ডাকটি শুনে অবাক হলাম। এটা জানি যে নাহিদ ভাইয়া আনভীরের কাজিন ব্রাদার হন। কিন্ত প্রফেশনাল লাইফে উনি বা আনভীর কখনোই এদিকটাকে মুখ্য করেননি। নাহিদ ভাইয়া আবার বললেন,
-‘ প্যারানয়েড পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার ‘ মানে তো আপনার ভালোমতোই বোঝার কথা। এই লক্ষণ টা খুব সহজে সবার চোখে ধরা পড়ে না যেহেতু এটা খুব মেজর একটা মেন্টাল সিকনেস না। যেমনটা আপনিও ধরতে পারেননি যদি রিপোর্টটা না দেখতেন।’
আমি নিশ্চুপ।
-‘ অকারনে কোনো বিষয় নিয়ে সন্দেহপ্রবন বা নিজের কোনো বিষয় নিয়ে একটু বেশিই প্রোটেকটিভ থাকার বেশিষ্ট্যই এই ডিসঅর্ডারের মূল লক্ষণ। আর এই জিনিসটাই আজ উনাকে উনার ফ্যামিলি থেকে এতটা দূরে রেখেছে৷ উনার বাবা-মা-ভাই-ভাবি সবসময়ই ভালো চেয়েছিলো৷ কিন্ত উনি সেটা বুঝতে পারেননি। অহেতুক এত সন্দেহপ্রবণতাটাই ধীরে ধীরে দূরে সরিয়ে দিলো পরিবার থেকে।’
-‘ আচ্ছা, উনার মা কি তাদের সাথেই থাকেন? মানে…..উনি কখনই এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলেননি কাউকে?’
নাহিদ ভাইয়া চুপ হয়ে গেলেন। অতঃপর মৌনতা কাটিয়ে বললেন,
-‘ আন্টি, আঙ্কেল আর ভাইয়াদের সাথেই থাকেন এটা সত্য, তবে উনার কন্ডিশন ভালো না। একবার একটা এক্সিডেন্টে পায়ে খুব বড়সড় একটা ইন্জুরি হয় আন্টির। আঙ্কেল যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলো পর্যাপ্ত চিকিৎসার মাধ্যমে আন্টিকে সুস্থ করার। কিন্ত সেটা এতটাও সাকসেসফুল হয়নি। আনভীর ভাই তখন ছিলেন দেশের বাইরে পড়াশোনাতে ব্যস্ত। আন্টিই না করে দিয়েছিলেন আনভীরকে উনার অবস্থার কথা বলতে যাতে ছেলে টেনশন না করে। কিন্ত পরবর্তীতে যখন ভাই এটা জানতে পারলেন তখন বিশ্বাস করেনি সে কারও কথা। না আজরান ভাইয়ার, আর না আঙ্কেলের। ছোটো ছোটো জিনিস নিয়ে সে আঙ্কেলকে সন্দেহ করতেন। সবমিলিয়ে অহেতুক চিন্তায় মগ্ন হয়ে থাকতো ভাইয়া। পড়াশোনাতেও মন ছিলো না, না অন্যকিছুতে। তারপর আজরান ভাইয়ার বিয়ে হওয়ার পর আরও একা হয়ে পড়ে ভাই। এসব মিলিয়ে অনেক পরেই আঙ্কেল খেয়াল করে যে ভাইয়ের বিহেভ অনেকটা চেইন্জ হয়ে গিয়েছে। পরে ডক্টরের কাছে নিয়ে গেলে জানা গেলো যে হি ইউ অ্যা পেশেন্ট অফ ‘পিপিডি’। ‘
বলেই দম নিলেন নাহিদ ভাইয়া৷ এতকিছু জানার পর এতটুকু বুঝতে পারলাম, উনার লাইফ বিগত কিছু বছর যাবৎ খুব একটা সুখকর ছিলো না। আমি আমতা আমতা করে বললাম,
-‘ এর……এর কোনো চিকিৎসা করা হয়নি?’
-‘ চেয়েছিলো আঙ্কেল, অনেকবার আঙ্কেল চেয়েছিলো ভাইয়ের চিকিৎসা করাতে। বাট ভাই আঙ্কেলকে দেখেই অনেক বেশি রিয়্যাক্ট করে ফেলে। আঙ্কেল আজ পর্যন্ত যা ডিসিশন নিয়েছেন, আমি জানি সেগুলো কতটা ভালো ভাইয়ের জন্য। মাঝে মাঝে আঙ্কেল অনেক দুর্ব্যবহারের শিকার হলেও একবারও সরে আসেনি ছেলের কাছ থেকে। কিই বা করবে, নিজের সন্তান তো। বাট ভাই সবসময়ই আঙ্কেল কে ভুল বুঝে গেলো। আন্টির অসুস্থতার পিছে দায়ী করে গেলো আঙ্কেল আর আজরান ভাইয়াকে। এইযে এই বাড়িটা দেখছো না, এখানে লাইফের ১৫ টা বছর কাটিয়েছেন ভাই। তারপরই তো আঙ্কেল ভাইকে লন্ডন পাঠিয়ে দিলো। ফিরে আসলো ক্যামব্রিজ থেকে মাস্টার্স কমপ্লিট করার পর। এইযে এতগুলো বছর যে মানুষটা পরিবার থেকে দূরে ভিনদেশে বেড়ে উঠছিলো, তার মনে অহেতুক সন্দেহ আর নিজের জিনিসটাকে প্রায়োরিটি দেওয়া কি অস্বাভাবিক?
-‘ এসব….এসবের মধ্যে রাহি আপু কোথা থেকে আসলো আবার। আনভীর যে বারবার বলছিলেন যে আপুই নাকি উনাকে ফ্যামিলি থেকে দূরে রেখেছে?’
নাহিদ ভাইয়া হাসলেন কিঞ্চিত। বললেন,
-‘ আমি যদি বলি তবে তুমি বিশ্বাস করবে না আমার কথা। সেটা সুযোগ পেলে ভাইয়ই তোমায় সব বলে দিবে।’
-‘…………’
-‘ আমার একটা রিকোয়েস্ট রাখবেন আহি?’
-‘ ক…..কি?’
-‘ ভ-ভ-ভাইকে ছেড়ে যাবেন না। আমি মানি যে উনি আপনাকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলো যাতে রাহিকে দ্রুত খুঁজতে পারে। বাট আই থিঙ্ক এই প্রথম ভাই কোনো মেয়ের জন্য এতটা এট্রাকশন ফীল করছে যেটা কখনোই এর আগে করেনি। শুধুমাত্র আপনার সেফটির জন্য ভাইয়ের আপনাকে এভাবে এখানে রাখা, আপনাকে আপনার বাবা-আপনার অপূর্ব ভাইয়ার আড়াল করা, আপনার লাইফের এক পার্সেন্টও যাতে রিক্স না থাকে সেদিকে নজর রাখা আপনিই ভাবুন তো একটা মানুষ এভাবেই এটা করে? ভাই তখনই আপনার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছিলো যখন আপনি সেরাতে ভাইকে নিজের ফ্ল্যাটে রাখতে দেন। আই থিঙ্ক হি ইজ ম্যাডলি ইন লাভ উইথ ইউ।’
চমকে ওঠলাম আমি। নাহিদ ভাইয়া বিষয়গুলো যেভাবে দেখেছেন আমার মনে হয়না এতটা গভীরভবে আমি দেখেছি। আনভীর….আর আমায় ভালোবাসে? আমি বিড়বিড়িয়ে বললাম,
-‘ ইম্পসিবল!’
-‘ পসিবল হয়ে গিয়েছে মিস.আহি। ভাই আপনাকে নিয়ে যতটা কেয়ারফুল থাকে আমি শিউর সে ভালোবাসে আপনাকে। হয়তো সেটা ভাই নিজে জানে না, অথবা জানলেও প্রকাশ করতে চায় না। আর যদি ভাই সত্যিই আপনাকে ভালোবেসে থাকে তবে সে আপনার কাছ থেকে সব শর্ত উইথড্রো করে দিবে। আপনি হয়তো এখন ধরতে পারছেন না, তবে একদিন ঠিকই বলবেন যে আমিই রাইট ছিলাম। একটা ছেলে যদি একটা মেয়েকে নিয়ে এতটা কেয়ারফুল আর পজেসিভ থাকে, তাহলে এর মানেই এটাই দাঁড়ায় যে সে মনেপ্রাণে সেই মেয়েটাকে চায়।’
বলেই এখান থেকে চলে গেলেন নাহিদ ভাইয়া৷ উনার শেষ কথাগুলোর জন্য ভাবুক হয়ে গেলাম আমি। আসলেই কি আনভীর ভালোবাসেন আমায়? নাকি অজান্তেই ভালোবাসতে শুরু করেছেন?
_____________
ভ্যাপসা গরমে আশপাশ রমরম করছে। এতক্ষণ গাড়ির এসির হাওয়াতে আরামে বসে ছিলাম বলে টের পাচ্ছিলাম না, গাড়ি থেকে নামতেই গায়ে গরম যেন শিরায় উপশিরায় বয়ে যেতে থাকলো। ঘড়ির কাটায় তাকিয়ে দেখি দুপুর বাজে দেড়টা। লাঞ্চ টাইম শেষ হবে কিছুক্ষণ পর। তারপরই হসপিটালে এসিসট্যান্ট ডক্টরের সিভি জমা নেওয়া শুরু হবে। আমার সাথে এসেছেন নাহিদ ভাইয়া। এটাই স্বাভাবিক যে আনভীর আমায় একা ছাড়বেন না। নাহিদ ভাইয়ার ফর্মাল গেটআপে আছে পুরো। দূর থেকে যেকেই দেখলে মনে করবে যে এই মহাশয় আমার বডিগার্ড। অবশ্য ব্যাপারটাকে আমি ইন্জয়ও করছি বেশ। নাহিদ ভাইয়া এবার বললো,
-‘ হসপিটালে এখনই ঢুকবেন নাকি লাঞ্চ করবেন আগে?’
-‘ উহু! খিদে নেই আমার। পরে লাঞ্চ করবোনে। ‘
তারপর হসপিটালের ঢুকে সিভি জমা দিয়ে আরও কিছু ফর্মালিটি কমপ্লিট করতে করতে করতে বিকেল হয়ে গেলো।স্টুডেন্ট ভালো হওয়ার দরুন মেডিক্যাল কলেজ থেকে যেহেতু আগেই সুপারিশ করা ছিলো তাই ফর্মালিটি শেষ হওয়ার পরপরই জানতে পারলাম যে এখানে আমার এসিস্ট্যান্ট ডক্টর হিসেবে জব কনফার্ম। আমার আনন্দ আর দেখে কে, আফটার অল শহরের এতবড় এক হসপিটালে অফার লেটার পেয়ে গিয়েছি এতে তো খুশি হওয়াই স্বাভাবিক। হসপিটাল ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে জানতে পারলাম এই হসপিটালের একজন বিশিষ্ট হার্ট সার্জনের আওতাভুক্ত হয়ে আমায় কাজ করতে হবে। তার নাম ধ্রুব। মানুষটার ব্যবহার বলতে গেলে একেবারেই আন্তরিক। অল্প কথার মধ্যেই আমাদের মধ্যে একটা ভালো বন্ডিং হয়ে গেলো। উনি ‘কংগ্রাচুলেশন’ বললেন আমায়। তারপর আমরা এভাবেই কথা বলতে বলতে হসপিটালের পার্কিং সাইটে চলে গেলাম। পেছন থেকে নাহিদ ভাইয়া ডাক দিয়ে বললেন,
-‘ মিস আহি সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে আপনি তো এখনও লাঞ্চ করেননি।’
-‘ ইটস ওকে, বাসায় গিয়ে একবারে করবো নে আমি। আপনি গাড়ি বের করুন।’
চলে গেলেন নাহিদ ভাইয়া। ধ্রুব স্যার জিজ্ঞেস করলেন,
-‘ ইনি কে হয় তোমার আহি!’
সরাসরি এভাবে আহি সম্বোধন করায় অপ্রস্তুত হলাম আমি। বললাম,
-‘ আমার…..আমার ভাইয়ের মতোই একজন!’
আর কিছু বললেন না উনি। ছোট্ট করে ওহ্ প্রতিউত্তর দিলেন। আমি বিদায় জানিয়ে চলে যেতেই আমার হাত ধরলেন উনি। অন্য হাত বাড়িয়ে বললেন,
-‘ নাইস টু মিট ইউ আহি! আবার দেখা হবে।’
আমিও ভদ্রতার খাতিরে হাত মেলালাম উনার সাথে। উনার যেহেতু ডিউটি শেষ তাই গাড়ি নিয়ে চলে গেলেন উনি। আমি এদিকে নাহিদ ভাইয়ার জন্য অপেক্ষা করতে করতে অন্যদিকে ফিরবো তখনই সাথে সাথে আমার চোখ গেলো রাস্তার ঠিক অপরপ্রান্তে। চোখ মুছলাম কয়েকবার। মাথায় চাটা দিয়ে ভাবলাম, ভুল দেখছি না-কি? কেননা আমায় অবাক করে দিয়ে ওখানে আনভীর দাঁড়িয়ে ছিলেন। ব্ল্যাক গাড়ি, সেটাতে হেলান দিয়ে হাত ভাজ করে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিলেন আমাতে। উনার চোখে স্পষ্ট রাগের আভাস। আমহ নিজেকে পরখ করে নিলাম। না তো! সব ঠিকই আছে, উনি এভাবে রেগে আছেন কেনো? আমি তৎক্ষনাৎ রাস্তা পার হয়ে উনার কাছে গেলাম। বললাম,
-‘ মাস্ক খুলেছেন কেন আপনি? কেউ দেখে ফেললে কি হবে ভাবতে পারছেন?’
উনি পরোয়া করলেন না। আমি নিজেই এবার ব্যতিব্যস্ত হয়ে গলায় ঝুলিয়ে রাখা মাস্কটা মুখে পরিয়ে দিলাম। গাড়ি থেকে ক্যাপটা নিয়ে মাথায় পরিয়ে দিতেই আনভীর বলে ওঠলেন,
-‘ ওই ছেলে হাত ধরেছে কেনো তোমার?’
-‘ আপনি চিনেন নাকি তাকে? আমার সিনিয়র ডক্টর উনি।’
-‘ সে তোমার সিনিয়র ডক্টর তাই সেরকমই থাকতে বলো, তোমার দিকে হাত যেনো না বাড়ায়।’
উনাকে এতটা রেগে যেতে দেখে অবাক হলাম। ততক্ষণে নাহিদ ভাইয়া এসে পড়েছিলেন। আনভীর ততক্ষণে নাহিদ ভাইয়ার মাথায় একটা চাটি দিয়ে বলে ওঠলেন,
-‘ কি বলেছিলাম তোকে নাহিদ? যে ওর আশেপাশে থাকবি৷ তুই থাকতে ওই স্টুপিড ওর সাথে হ্যান্ডশেক করে কিভাবে?’
নাহিদ ভাইয়াও বোকা বনে গেলো এতে। আনভীর এবার বললেন,
-‘ আজকে গান রেকর্ড করতে গিয়েও কাজ শেষ করতে পারলাম না এসবের চিন্তায়। আর ওই… ওই ডক্টরের সাথে ডিসট্যান্স নিয়ে কথা বলবে আহি! গট ইট?’
-‘ হ…হ্যাঁ।’
-‘ লাঞ্চ করেছো?’
যেটার ভয় পাচ্ছিলাম সেটাই হলো। নাহিদ ভাইয়াও করুন চোখে তাকালেন আমার দিকে। বাট আমার কিছুই করার নেই। মাথা নাড়িয়ে না বলতেই উনার রাগ আর পায় কে। সাথে সাথেই গাড়ির দরজা খুলে দিয়ে বললেন,
-‘ গাড়িতে উঠো।’
-‘ কো…কোথায় যাবো?’
-‘ ডেটে যাবো, হ্যাপি? এবার উঠো গাড়িতে।’
বলেই টান দিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিলেন আমায়। আমি রীতিমতো আয়াতুল কুরসি পড়তে থাকলাম এবার। আনভীর এতটা রেগে গেলেন কেনো এভাবে উনার সাথে হ্যান্ডশেক করায়? তাহলে ভাইয়া কি আসলেই রাইট? আনভীর কি সত্যিই ভালোবাসেন আমায়?বারবার কানের মধ্যে বেজে ওঠছে ভাইয়ার বলা সেই কথাগুলো, ‘আই থিঙ্ক হি ইজ ম্যাডলি ইন লাভ উইথ ইউ।’
.
.
.
.
.
~চলবে ইনশাআল্লাহ
ভুলক্রুটি ক্ষমাসুলভ চোখে দেখবেন।
কায়াভ্রমর এখন 8K সদস্যের বিশাল পরিবার। ভালোবাসা সরার জন্য। গ্রুপ লিংকঃ
https://m.facebook.com/groups/727233321503560/