“এখনো ভালোবাসি”💖 পর্ব-১৬

0
3934

“এখনো_ভালোবাসি”💖
Writer:TaNia
Part-16

“ষোল সতেরো বয়সটা অনেকটা অপরিণত বয়স।এই বয়সে মন খুব অল্পতেই অস্থির হয়ে উঠে।কোনও কিছুতে বাধা দিলে,মনে জিদ চেপে ধরে।কিন্তু কিশোরী মনের এই অপরিণত মনকে অনেকেই বুঝে উঠতে পারে না।তাইতো মানুষ কিশোরী বয়সে জীবনের সব চেয়ে বড় বড় ভুলগুলো করে বসে।”
–এই বয়সে বালকানির খাঁচায় ঝুলে থাকা পাখিটির মতো নিজেকেও পরাধীন মনে হয়।তখন তার এই কিশোর মন উড়াল দিয়ে চায়।মুক্ত বিহঙ্গ হবার স্বপ্ন দেখে।জীবনের বড় হবার স্বাদ কেমন তা এই মনটা একেবারে পেতে চায়।বলতে গেলে ১৩ বছরের কিশোরী মনটা এক নিমিষে ৩০ বছরের পরিণত নারী হবার স্বাধ পেতে চায়।আর তখনই ভুল করে অনেক সময় ভুল মানুষের হাত ধরে ফেলে।হ্রদয়ের কাপানি,শরীরের উত্তেজনা আর মনের চাওয়া এসবের মাঝে ভালোমন্দটা এই মন বুঝতে চায় না তখন।সকল নিশেধ জিনিসের প্রতি থাকে একটা প্রবল আকর্ষণ।

“প্রিয়ুর অবস্থাটা ও তেমনি ছিলো।অল্প বয়সে প্রেমের স্বাধ নিতে গিয়ে সামনের মানুষটিকে প্রিয়ু যাচাই না করেই মন দিয়ে দেয়।আর প্রিয়ুর প্রয়োজনের সময় সেই মানুষটি উড়াল দিয়ে চলে গেলো কোথাও।
বাবার অকাল মৃতুও,ভালোবাসার মানুষটির হঠাৎ এমন উধাও হওয়া আর যাকে জীবনে সব থেকে বেশি বিশ্বাস করেছিলো তার মুখেই নিজেকে নিয়ে এতো নোংরা কথা শোনা,এসব কিছু প্রিয়ু সহ্য করতে পারলো না।তাই মনের ভেতরে একটা জিদ আর অভিমান চেপে গেলো।”

–প্রিয়ু আশা করেছিলো আয়ন ওর সব কথা শুনবে,যা এতোদিন কেউ শুনেনি।যা ও কাউকে বলতে পারেনি।সব বলবে ওর আয়নদাকে।আয়নদা নিশ্চয়ই প্রিয়ুকে বুঝবে।অবশ্যই বুঝবে, কেনে বুঝবে না।কিন্তু তা হলো না।
“আয়নতো প্রিয়ুকে কিছু বলার সুযোগই দিলো না।তার আগেই লাগিয়ে দিলো চরিত্রহীনতার তাকমা প্রিয়ুর গায়ে।
অভিমানী প্রিয়ুও আর আয়নের ভুল ভাঙ্গানোর চেষ্টা করলো না।প্রিয়ু মনে করে, বিশ্বাস হচ্ছে কাচের মতো।একবার ভেঙ্গে গেলে,সহযে জোড়া লাগানো যায় না।আর জোড় করে জোড়া লাগালেও তার দাগ রয়ে যায় সারা জীবন।তাহলে কি প্রয়োজন এসব করে।তাই সেদিন প্রিয়ুও চেষ্টা করেনি আয়নের ভুল ভাঙ্গানোর।”

বর্তমান……
–জলন্ত সিগেরেটটি নিজেকে সম্পূর্ণ পুড়িয়ে আয়নের হাতের দুআঙ্গুলকে উত্তাপ দিয়ে জানিয়ে দিলো,আমার যৌবনকাল শেষরে ভাই,এবার মুক্ত করে দে।আর কতো পুড়াবি,এখন তো রেহাই দে..
‘সিগেরেটের হালকা উত্তাপ আঙ্গুলে স্পর্শ করায় আয়ন অতীত থেকে বর্তমানে ফিরে এলো।আর এসেই সিগেরেটের উপর মনে হয় আয়নের একটু মায়া হলো,তাই সিগেরেটটির শেষাংশ ছুড়ে ফেলে দিলো অনেক দূরে।
আয়নের ভেতর এখন খুব তোলপাড় চলছে।প্রিয়ুকে এভাবে কখনো ভাঙ্গতে দেখেনি আয়ন।এমনকি তখনও না,যখন প্রিয়ু সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছিলো।প্রিয়ু যে আয়নকে নিয়ে দ্বিধায় পড়ে গিয়েছে,তা আয়ন খুব ভালো করেই বুঝতে পাড়ছে।প্রিয়ুকে পেতে হলে আয়নকে আবার প্রিয়ুর বিশ্বাস জিত্তে হবে।তা না হলে আয়ন প্রিয়ুকে একেবারে হারিয়ে ফেলবে।যা আয়ন হতে দিবে না।
অনেক কষ্টের পর সব ঠিক হয়েছে, সম্পর্ক আগে না বাড়ুক,প্রিয়ু ওর পাশে তো আছে।মন চাইলে দেখতে পাড়বে,ছুঁয়ে দিতে পারবে এটা কম কিসের।

“আয়ন গিয়ে ঘুমন্ত প্রিয়ুর পাশে এসে বসলো।প্রিয়ুর নিষ্পাপ মুখটার দিকে তাকিয়ে আনমনে বলে উঠলো,কতোটা নিষ্পাপ তুই প্রিয়ু।আর আমি কিনা তোর সাথে কতো কিছু করলাম।আমার মতো জানোয়ারের কাছে তোর মতো নিষ্পাপ মেয়েকে মানায় না সোনা।কিন্তু কি করবো বল,মনের কাছে বন্ধি আমি।আমি খুব স্বার্থপর রে।নিজের স্বার্থের জন্যই তোকে ধরে রেখেছি।আমার সুখ যে তোর মাঝে,তোকে ছাড়া বেঁচে থাকতে কষ্ট হয়।আমার অক্সিজেন যে তুই।আর আমার এই অক্সিজেন আমি হারাতে পারবো না।আয়নের ভেতর থেকে একটা দীর্ঘ শ্বাস বের হয়।”

–আর তখনই আয়নের এসব চিন্তার অবসান ঘটাতে রুমের দরজায় টোকা পড়লো।দরজার শব্দ শুনে আয়ন ঘড়ির দিকে তাকালো।সকাল নয় টা এখন।নিশ্চয়ই ওয়েটার নাস্তা সার্ভ করতে এসেছে।আয়ন দরজা খুলে ওয়েটার থেকে নাস্তা নিয়ে প্রিয়ুকে আস্তে আস্তে ঘুম থেকে ডাকতে লাগলো।এর পর আয়ন নিজের হাতেই প্রিয়ুকে নাস্তা করিয়ে দিলো।
__________

“তিতিদের ড্রয়িংরুমের সোফায় পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে দিনেশ।আর নির্বিকারে তাকিয়ে আছে তিতিরের দিকে।কিছুক্ষন পর অপেক্ষার ফোরন কেটে দিনেশ শান্ত গলায় বললো।
ক্ষুদা লেগেছে তিতির,নাস্তার জন্য কিছু করেছো।”

–দিনেশের এমন শান্ত মেঝাজ দেখে তিতির একটু চমকে উঠলো।তিতির ভেবেছিলো দিনেশ আজ মনে হয় সব কিছু ভেঙ্গে চূরমার করে দিবে।রাগ উঠলে জিনিষ ভাঙ্গার খুব পুরানো অভ্যাষ দিনেশের।আর সেই মানুষ এতোটা শান্ত,তাও আবার তিতিরের বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে এটা শুনেও।ব্যাপারটা তিতিরকে খুব ভাবাচ্ছে।

“কি হলো,কিছু বলো।এমন ক্যাবলাকান্তের মতো তাকিয়ে আছো কেনো।আমি জানি আমি অনেক হ্যান্ডশাম, আর তুমিও আমার উপর ক্রাশড খেয়ে বসে আছে।তাই এভাবে তাকিয়ে থেকে ইশারা করে বুঝাতে হবে না।”

–দিনেশের কথায় তিতির সম্বিৎ ফিরে পায় সাথে লজ্জাও।আর আমতাআমতা করে বলে।আসলে পরোটা,অমলেট আর সবজিভাজি করেছি।আপনি কি খেতে পারবেন এসব।
“দিনেশ হেসে ডায়নিং টেবিলের দিকে হাটা ধরে,কেনো পাড়বো না।আমাকে কি তোমার মানুষ বলে মনে হয়না।”
–না, মানে আপনার তো……।
“রিলেক্স তিতির, তোমার হাতে তো বিষও খেতে রাজি আমি।এর তুলনায় এসব তো কিছুই না।”
–মুহুর্তেই তিতির স্থির হয়ে গেলো।চোখের কোনায় কিছুটা জল জমে গেলো।দিনেশের ভালোবাসার প্রতি কোনও সন্দেহ নেই তিতিরের।দিনেশের এমন পাগলামি গুলোকেই তো না চাওয়া সত্যেও ভালোবেসে ফেলেছিলো তিতির।কিন্তু তিতির যে নিরুপায়।ধর্মের কাছে,সমাজের কাছে।

“তিতিরকে এখনো চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে,কি হলো।না খাইয়ে মেরে ফেলার প্লানিং করছো নাতো।”

“তিতির আবারও কিছুটা লজ্জা পেয়ে যায়।দিনেশের সামনে নিজের ইমোশনাল গুলো লুকাতে কেনো পাড়ছে না এসব ভেবে এখন নিজের উপরই রাগ উঠছে তিতিরের।এরপর আর কিছু না ভেবে চুপচাপ রান্না ঘরে চলে যায় নাস্তা রেডি করতে।”
………..
–ডাইনিং টেবিলে বসে দিনেশ খুব উৎফুল্লের সাথে নাস্তা করছে।নাস্তা নয়,যেনো অমৃতের স্বাধ নিচ্ছে।দিনেশকে এমন খোশ মেঝাজে দেখে তিতিরের গলা দিয়ে খাবার ডুকছে না।খুব কনফিউজড আজ তিতির।মনে হয়,সামনে বসা এই লোকটিকে তিতির একদম চিনে না।এখনতো তিতিরের আরো ভয় হচ্ছে, ভীষণ ভয়।

“তিতিরের চিন্তার মাঝখানে,দিনেশ তার প্রশ্ন ছুড়ে মারলো এতোক্ষন পর।তো তিতির তোমার হবু বর কি করে।
-তিতির চমকে গেলো,দিনেশের প্রশ্নে।তবুও নিজেকে কোনও রকম সামলিয়ে বললো,প প্রফেসার।ভার্সিটির প্রফেসার উনি।
“তাই নাকি,ওয়াও!তুমি একজন জ্ঞানী,তোমার হবু বর হলো মহাজ্ঞানী তাহলে তোমাদের ছেলেমেয়ে নিশ্চয়ই কোনও পন্ডিত থেকে কম হবে না।তোমাদের দেখি একদম পার্ফেক্ট ঝুটি।”

–তিতির কি বলবে বুঝতে পাড়ছে না,দিনেশের এমন শান্ত স্বাভাবের সাথে একদম পরিচয় না তিতির।কিন্তু দিনেশ যে মঝার ছলে তিতিরকে খোঁচা মেরে কথা বলছে তা তিতির খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে।

“তোমার হবু বর নিশ্চয়ই ফ্রি মাইন্ডের।ঠিক তো।”
–মানে!তিতির ভ্রুটা কিঞ্চিৎ কুচকিয়ে।ফ্রি মাইন্ড বলতে কি বুঝাতে চাইছেন।
“দিনেশ নিজের নাস্তাটা ফিনিশ করে, মুখটা মুছে,এক গ্লাশ পানি খেয়ে তিতিরের দিকে তাকালো।এটা যে তোমার হবু বরের তোমার ভার্জিনিটি নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই তো।”
–ম মানে!কি বলতে চাইছেন।ক্লিয়ার করে বলুন।তিতির কিছুটা রেগে গেলো।
“তুমি সেদিন হোটেলে আমার সাথে পুরো একরাত কাটিয়েছো, মানে আমরা দুজন একই হোটেলে,একই রুমে সারারাত…..।”
–দিনেশকে আর বলতে দিলো না তিতির,চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে গেলো।আমার মনে হয় আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে।
“তার মানে কি তিতির তুমি অস্বীকার করছো।মানে আমি মিথ্যা বলছি।আমি মিথ্যাবাদ।দিনেশও উঠে তিতিরের সামনে এসে দাঁড়ালো।বল তিতির।”

“আমি সেটা বলছি না,আপনি বলেছেন সেই রাতে আমাদের মাঝে তেমন কিছু হয়নি।তাহলে!”

–তোমার কি মনে হয় সত্যিই কিছু হয়নি।

“তিতির স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,ও বুঝতে পাড়ছে না দিনেশ সেদিন মিথ্যে বলছে নাকি আজ।এটা হতে পারে না স্যার।আপনি মিথ্যা বলছেন।”
–দিনেশ মুচকি হেসে তিতিরের কানের কাছে গিয়ে বললো,তোমার শরীরের স্পর্শকাতর জায়গার লাল তিলটা কিন্তু ধারুন।মনে পড়লে এখনো নেশায় ধরিয়ে দেয় আমায়।এটা বলেই দিনেশ হাটা ধরলো ড্রয়িংরুমের দিকে।
–আর এদিক দিয়ে তিতিরের মাথা ঘুড়ে গেলো দিনেশের কথা শুনে।পা দুটো কাঁপতে লাগলো।শরীরটা অবশ হতে লাগলো।হঠাৎ কি হলো,তিতির দাঁড়িয়ে থাকতে পাড়ছে না।
এটা হতে পারেনা।আমি কিছুই করেনি।তিতির নিজেই বিরবির করে বলতে লাগলো।
______________

“দিশাকে কলেজের সামনে নামাতেই,কোথা থেকে একটা ছেলে এসে,হুট করে দিশার হাতটি ধরে ফেললো।ঘটনার আকষ্মিক দিশা নিজেও চমকে গেলো।”
–প্লিজ দিশু,আম সরি।আমাকে এবারের মতো ক্ষমা করে দেও।আমি সত্যি অনুতপ্ত।আমি এমন ভুল জীবনেও করবো না।সত্যিই বলছি।তোমার কসম।

“দিশা ছেলেটি থেকে নিজের হাতটি ছুটানোর চেষ্টা করছে।কিন্তু পাড়ছে না।কি করছো নিশান্ত।ছাড়ও আমার হাত।আশেপাশের সবাই দেখছে।”
–কিন্তু নিশান্ত তবুও ছাড়ছে না।আগে বলো তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছো।তারপর ছাড়াছাড়ি।

“তিয়াশ ব্যাপারটা বুঝতে একমিনিট সময় নিলো।তিয়াশ বুঝে গেলো এই সেই ছেলে যার সাথে দিশার রিলেশন ছিলো।এই ছেলেটিকে দেখলেই বুঝা যায়,কেমন লেম চরিত্রের।তা না হলে পাবলিক প্লেসে কেউ তার এক্স গার্লফ্রেন্ড এর সাথে এমন করে।কিভাবে যে এই মেয়ে একে এতোদিন সহ্য করেছে আল্লাহই জানে।তিয়াশ আর সহ্য করতে না পেড়ে,দিশার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।এনি প্রোবলেম দিশা।”

–ন নো প্রোবলেম।আপনি আসতে পারেন।এটা আমার আর আমার গার্লফ্রেন্ড এর ব্যাপার।নিশান্ত বলে উঠলো।

“তিয়াশ নিশান্তের সেই হাতটি শক্ত করে চেপে ধরলো যে হাত দিয়ে দিশাকে ধরে রেখেছিলো।ব্যাথায় নিশান্ত দিশার হাতটি ছেড়ে দেয়।মুখ দিয়ে অস্ফুটে বল,ওই মিয়া সমস্যা কি আপনার।”

–তিয়াশ নিশান্তের কথার তোয়াক্কা না করে,দিশাকে জিঙ্গেস করে, তুমি কি এখনো ওর সাথে রিলেশন কনটিনিউ করতে চাও।
“দিশা তড়িৎ গতিতে মাথা নাড়ায়।তার মানে ও এই রিলেশনে ইতি করতে চায়।”
–বুঝে বলছো তো।পরে আবার পল্টি মারবে না তো।এর ইনোসেন্ট মার্কা ডায়লগ শুনে।
দিশা কিছুক্ষন নিশান্তের দিকে তাকিয়ে,তারপর মুখ “ঘুড়িয়ে বললো। নো,নেবার।আর কনটিনিউ করার তো প্রশ্নই উঠে না।”
–দিশা….নিশান্ত কিছুটা চিল্লিয়ে।

“রিলেক্স ব্রো,এতো হাইপার হচ্ছো কেনো।দিশা তুমি যাও, ক্লাশের দেরি হয়ে যাচ্ছে।আমি তোমার প্রাক্তনকে একটু সান্তনা দিই।গো সুইটহার্ট।
–দিশা কলেজের ভেতরে প্রবেশ করতে করতে আরো একবার পিছনে ঘুড়ে তাকালো।চলছে কি দুজনার মধ্যে আল্লাহই জানে।”

“হু আর ইউ।আপনি কেনো আমাদের মাঝে আসলেন।আমার গার্লফ্রেন্ড, রাগ করেছে আমিই তার রাগ ভাঙ্গিয়েও ফেলবো।প্লিজ স্টে ওয়ে।”

–তিয়াশ নিশান্তের এককাঁধে হাত রেখে বললো,তা কি করে হয় ভাই।তোমার প্রাক্তন এখন আমার গার্লফ্রেন্ড। আর আল্লাহ চাইলে কাল আমার ওয়াইফ হবে।তাহলে বলো আমি এসব থেকে দূরে থাকবো কিভাবে।

“কিসব, আবলতাবল বলছেন।এ হতে পারে না।আমরা অনেক বছর ধরে রিলেশনে ছিলাম।দিশু আমাকে এতো তারাতারি ভুলতে পারবে না।”

–ব্রো,সমস্যা নেই।আমার ভালোবাসায় সব ভুলিয়ে দিবো।আর রিলেশনের বয়স দিয়ে কি হবে,তখন তো ও নিজেই বাচ্চা ছিলো।আর একটা বাচ্চা মেয়েকে চকলেট,ললিপপ দিয়ে ভুলিয়ে ভালিয়ে প্রেমে ফেলেছো।মনে করছো,বাচ্চা মেয়েটি বাচ্চাই থাকবে।তোমার আসল চেহারা কোনও দিন দেখতে পাবে না।যেমনে নাচাবে তেমনি নাচবে।কিন্তু ভুলে গিয়েছো বাপের উপরও বাপ আছে।
তোমার যে কুকুরের মতো জায়গায় জায়গায় মুখ দেওয়ার স্বভাব আছে তা দিশা হয়তো কখনো জান্তেই পারতো না।কিন্তু কি করবো বলো।মেয়েটি খুব ইনোসেন্ট।প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম অনেক আগেই।কিন্তু তোমার সাথে রিলেশন চলছে বলে চুপ করে ছিলাম। কিন্তু তোমার এতো এতো সুনাম শোনার পর রইতে পারলাম না,তাই সব সত্য দিশার সামনে তুলে ধরলাম।আর দেখো কি হলো কাল যে তোমার গার্লফ্রেন্ড ছিলো আজ তোমার প্রাক্তন।

“দিনেশ এবার নিশান্তের কাধ থেকে হাত সরিয়ে সামনে এসে নিশান্তের কোলারটা ঠিক করতে করতে বললো,আর যদি দিশাকে ডিস্টার্ব করতে দেখি,বা দিশার ত্রি সীমায় দেখি তাহলে তোমার বংশে তোমার পর আর কেউ বংশ বৃদ্ধি করতে পাড়বে না।রাস্তাই রাখবো না আমি।”
–নিশান্ত চোখ গরম করে তিয়াশের দিকে তাকালো।
আর তিয়াশ চোখে সানগ্লাসটা পড়ে বাকা হেসে গাড়ীতে উঠে চলে গেলো।
……………
“ভাই পোলাটাকে চিন্তে পারছেন।কলেজেরই এক ছোটভাই নিশান্তকে জিঙ্গেস করছে।”
–নিশান্ত বিরাক্ত চোখে সোয়েল এর দিকে তাকালো।না!কেনো?কোনো গ্রহের প্রাইম মিনিস্টার যে চিনতে হবে।
“না,প্রাইম মিনিস্টার না।তবে কমও না।”
–মানে,কে এইডা।তুই চিনিশ।
“আপনে গাড়ীর পিছনের লগোটা মনে হয় খেয়াল করেন নাই।”
–কেনো?স্মিত চমকে।
“প্যান্টটা সাবধানে রাইখেন।না হইলে খুইলা নিয়া যাইবো।”
–হারামযাদা,মোশকারী করোস।আমি কি তোর বোনের জামাই লাগি রে।
“আরে ভাই চেতেন কে।আপনে যে ব্রান্ডের প্যান্টটা পড়ছেন না,এটা ওই পোলা গো।আর দেখেন আপনার প্যান্টেও ওই একই লগো দেওয়া।আর সব থেকে বড় কথা আয়ন মাহবুব এর ভাই হয় এটা।”
–কোন আয়ন রে।ওইটা না তো।
“হুম ঠিক বুঝছেন।তাই বলছি পানিতে থাইকা কুমিরের সাথে লড়তে যাইয়েন না।এই পোলার কথা জানি না,কিন্তু আয়ন মাহবুভ কিন্তু খাতারনাক লোক।”

–হুম,কিন্তু ভাবার বিষয়,আমার পোষা বিড়ালের পাতে,এতো বড় বোয়ালমাছ ধরা পড়লো কেমনে।

চলবে….।

[গতো পর্বে আয়নকে নিয়ে অনেকে অভিযোগ করেছে।আর এটা হবারি কথা।সব গল্পে যে নায়ক দুধে ধোয়া তুলসি পাতা হবে এমনতো নয়।ভালোমন্দ নিয়ে আমাদের জীবন।এখন দেখার পালা প্রিয়ু আয়নকে মেনে নিতে পারে কিনা]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here