“এখনো ভালোবাসি”💖 পর্ব-৩০

0
3193

“এখনো ভালোবাসি”💖
Writer:TaNia
Part-30

লন্ডন শহর।এটা যেনো একটা স্বপ্নের মতো।বিশ্বের অন্যতম একটা ব্যস্ত বাণিজ্য নগরীর মধ্যে লন্ডন অন্যতম।এই শহরের সব কিছুই অনেক ব্যববহুল।তবুও এখানকার লোকজন খুব স্বাচ্ছন্দ্যেই এই শহরে বসবাস করছে।প্রতি বছর হাজার লোকের পদধূলি পড়ে এই লন্ডন শহরে,শুধু ভ্রমণের উদ্দেশ্যে।আজ তিতির ও দিনেশও পৌছালো এই স্বপ্নের নগরীতে।ইমিগ্রেশন পার করেই তিতির ও দিনেশ বাহিরে বের হয়ে ওদেরকে নিতে আসা গাড়ীর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো।কিন্তু এই এতো টুকু সময়ই তিতির পুরো শরীর কেপে উঠলো।

–কারন লন্ডনে এখন হার কাপানো শীত।দিনেশ তিতিরকে আগেই বলে দিয়েছিলো।তাই তিতিরও গরম কাপড় পড়ে আসে।কিন্তু তিতির এই গরম কাপড় লন্ডনের এই শীতকে নিয়ন্ত্রণ করতে পাড়ছে না।তাই শরীরের তাপমাত্রা কমতে লাগলো হঠাৎ।আর তিতির শরীর এই ঠান্ডা পরিবেশে নিজেকে মানাতে পাড়ছে না।তিতির ফর্সা মুখটি লাল হয়ে গেলো।ঠোঁটগুলো কাপতে লাগলো।মনে হচ্ছে দাঁতেদাঁত লেগে যাবে।হাতের মুজোগুলোতে মুখ দিয়ে ফু দিয়ে বারবার গরম করার বৃথা চেষ্টা করছে।কিন্তু কাজ মনে হয় কিছুই হচ্ছে না।আসলে আগের বছরের তুলনায় এবার শীত বেশি।তাই এখানকার শীতের টেম্পেরেজার আগের তুলনায় অনেক বেশি।তাই হয়তো তিতির এতো কষ্ট হচ্ছে।

“–দিনেশ তার ড্রাইভারের সাথে এতোক্ষণ ফোনে কথা বলছিলো,কতোক্ষণ লাগবে তার আসতে জানতে।ফোন রেখে তিতিরের দিকে তাকিয়েই দিনেশ আতকে উঠলো।কারণ তিতিরকে স্বাভাবিক লাগছে না।তিতির যেনো জমে যাচ্ছে।দিনেশ তিতির কাছে এসেই জিঙ্গেস করলো,”কি হয়েছে তোমার।এমন করছো কেনো?”

তিতির কাপাকাপা কন্ঠ দিনেশকে জিঙ্গেস করলো,”স্যার আমারই কি ঠান্ডা লাগছে, নাকি আসলেই এখানে ঠান্ডা অনেক বেশি।”

–না,এখানকার শীতের মাত্রা বাংলাদেশকে থেকে একটু বেশিই।তবে এবার নাকি গতো কয়েক বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলেছে।এবারের মতো শীত কোনও বার হয়নি।দেখো না চারপাশের লোকজন একদম উপর থেকে নিচ পর্যন্ত ঢেকে বের হয়েছে।দিনেশ একটু চিন্তিত চোখে তিতির দিকে তাকালো এবার।তোমার কি খুব বেশি সমস্যা হচ্ছে তিতির।
“তার মানে আমিও ফকির হলাম,আর দেশেও আকাল এলো।”
–‘মানে!কিসব বলছো তুমি।ঠিক আছো তো।নাকি ঠান্ডায় মাথা গেছে। ‘

‘মানে বুঝেন না,এতো বছর রেকর্ড ভাঙ্গতে মন চায়নি শালা এই শীতের।যেই না শুনছে আমি আসবো,তাতেই বেড়ে গেলো।এতো দরদ আমার জন্য।যতোসব গাঁজাখুরি কারবার।’

দিনেশ তিতির কথায় হাসবে নাকি অবাক হবে বুঝতে পাড়ছে না।ও শুধু বিমুখ হয়ে তিতির দিকে তাকিয়ে আছে।
–‘স্যার, এভাবে ক্যাবলাকান্তের মতো তাকিয়ে না থেকে কিছু একটা করুন।আমার শরীর হঠাৎ করে এতো ঠান্ডা নিতে পাড়ছে না,আমার প্রচণ্ড ঠান্ডা লাগছে।’

দিনেশ তিতিরের অবস্থা দেখে তারাতারি ব্যাগ থেকে আরো একটা লং কোট বের করে তিতিরকে পড়িয়ে দিয়ে,একহাতে টেনে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরলো।

–“স্যার আপনার ঠান্ডা লাগছে না।তিতিরও দিনেশের বুকে মুখ লুকিয়ে কথাটি বললো।”

না!আমার কোনও সমস্যা নেই,আমার এটা সহ্য করার অভ্যাস আছে।তখনই ওদের নিতে আসা গাড়ীটি এসে দাঁড়ালো সামনে।দিনেশ ড্রাইভার কে ব্যাগগুলো তুলতে ইশারা করে তিতিরকে নিয়ে গাড়ীতে উঠে বসলো।তিতিরকে নিজের সাথে তখনও জড়িয়ে ধরে নিজের শরীরের সব উষ্ণতা দেওয়ার চেষ্টা করছে দিনেশ।তিতিরও আজ কোনও শব্দ না করে একটা ছোট বিড়াল ছানার মতো দিনেশের বুকের সাথে লেপ্টে আছে।হয়তো শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচার জন্য ও নিজেও দিনেশকে জড়িয়ে ধরে আছে।

“হোটেল 55তে দিনেশের বুকিং ছিলো।এখানে দুটো রুম আগে থেকেই তাদের জন্য বুকিং করা ছিলো।তাই হোটেলে এসেই চাবি নিয়ে সোজা যে যার রুমে চলে গেলো।দিনেশ তিতিরকে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে বলে চলে গেলো।রাতে ডিনারে দেখা হবে বলে।রুমের তাপমাত্রা কিছুটা গরম হবার কারণে কিছুটা হলেও তিতির স্বস্তি ফিরে পেলো।ফ্রেস হয়ে তিতির কোম্বলের ভেতর ডুকে পড়লো।লং জার্ণি আর এতো ঠান্ডা পরিবেশে চোখ বন্ধ করার সাথে সাথে ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেলো তিতির।”

–“রাত আটটায় দিনেশ তিতির রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।কখন ধরে দরজা ধাক্কাচ্ছে অথচ ভেতর থেকে কোনও সারা নেই।ফোন দিবে তারও পথ খোলা রাখেনি,কারণ তিতির ফোন বন্ধ।হোটেলে কর্মরত একজন স্ট্যাপ কে দিয়ে ডুবলিকেট চাবি এনে তিতিরের রুমে প্রবেশ করে দিনেশ।রুমটি এখনো অন্ধকারাচ্ছন্ন।শুধু পর্দাগুলোর ফাঁকেফাঁকে বাহিরের কিছু আবছা আলো ঘরটিতে প্রবেশ করছে।দিনেশ বিছানায় তাকিয়ে দেখে তিতির কোম্বল পেছিয়ে গভীর ঘুমে ডুবে আছে।দিনেশ মনে মনে হেসে দিলো,কি ঘুম কাতুরী মাইরী।এতো ডাকাডাকি করেও ওর ঘুম ভাঙ্গলো না।তিতিরকে এভাবে দেখে হঠাৎ কি যেনো হলো দিনেশের।
তিতির পাশে বসে আলতো করে ওর মুখে পড়ে থাকা চুলোগুলো সরিয়ে দিলো খুব সাবধানে।দিনেশ তিতিরকে দেখেই যাচ্ছিলো।ওর ঘুমের জন্য ফুলে উঠা গোলাপি ঠোঁটগুলো,লাল হয়ে যাওয়া গালদুটো খুব করে যেনো টানছিলো দিনেশকে। মনের মধ্যে তিতিরকে আরো একটু স্পর্শ করার চাহিদা জেগে উঠলো।নিজের ইচ্ছাকে প্রশ্রয় দিতে টুপ করে তিতির গালে একটা চুমো দিয়ে দিলো দিনেশ।এতে তিতির একটু নড়ে উঠে এবং সোজা হয়ে হাতপা ছড়িয়ে ঘুমাচ্ছিলো।তিতিরকে বাচ্চাদের মতো ঘুমাতে দেখে দিনেশও মুচকি হেসে ওর পাশে শুয়ে পড়লো।দিনেশ নিজের ইচ্ছাকে আরো একটু প্রশ্রয় দিয়ে,খুব ধীরে তিতির নরম ঠোঁট দুটি বুড়ো আঙ্গুলে স্পর্শ করলো।ওর খুব লোভ হতে লাগলো।তিতির ঠোঁটের উপর ক্রমশ ওর হাতের স্পর্শ বাড়তে লাগলো।তিতির মরার মতো ঘুমাচ্ছে।ওর কোনও হুস নেই।দিনেশ নিজের লোভ টাকে সামলাতে না পেরে আবারও নিজের ইচ্ছাটাকে প্রশ্রয় দিয়ে দিলো।নিজের শরীরটাকে টেনে তিতিরের শরীরের উপর এনে তিতির ঠোঁটগুলো আলতো করে ছুঁয়ে দিলো নিজের ঠোঁট দিয়ে।কিন্তু এতেও তিতির নড়লো না।দিনেশ খুবই অবাক হলো।এই এটা মেয়ে নাকি অন্য কিছু।একে কেউ ঘুমের মধ্যে রেপ করে দিলেও হয়তো বুঝতে পাড়বে না।দিনেশ বুঝতে পাড়লো,ওর অনৈতিক ইচ্ছার সাথে ওর দেহের চাহিদাও বাড়ছে তিতিরকে এভাবে দেখে।যা একদম অশোচনীয়।এভাবে ঘুমে থাকা একটা মেয়ের সুযোগ নেওয়া কাপুরুষের লক্ষণ।
তাই কিছুক্ষণ পর দিনেশ নিজেকে নিজেই থামিয়ে দিলো,”স্টোপ দিনেশ,আর সাহসিকতা দেখাস না।এই মেয়েটি তোর,আর নিজের জিনিসকে চুরি করে আদর করা বেড ম্যানারস।তিতির জানতে পাড়লে কপালে মাইর ঝুটবে।এমনেই এই মেয়ে কয়েকদিন ধরে বাঘিনী রুপ ধরেছে।”

দিনেশ আস্তে করে নিজের শরীরটা সরিয়ে ফেললো তিতির এর উপর থেকে।তিতির পাশে একহাতে ভর দিয়ে শুয়ে তিতিরকে ডাকতে লাগলো দিনেশ।
…………………………………

রাতের ডিনার করতে একটা টার্কিশ হোটেলে এলো ওরা।হোটেলের সব কিছু ভালো লাগলেও এখাকার মেয়ে ওয়েটারসদের পোশাকে কোনও শালিনতা ছিলো না।এই শীতেও হোটেলের ভেতরে গরম পরিবেশ থাকায়,মেয়েরাও অনেকটা খোলামেলা পোষাক পড়েই কাস্টমারদের অর্ডার নিচ্ছে।তিতিরের ব্যাপারটা একদম ভালো লাগলো না।ওর নিজেরই খুব লজ্জা লাগছে,মেয়েগুলোকে দেখে।তাছাড়া মনের মধ্যে একটু খুত হতে লাগলো।এই শর্ট ওয়েস্টার্ন ড্রেস পড়া মেয়েদের দিকে দিনেশ তাকাচ্ছে কিনা তা জানতে বারবার আর চোখে দিনেশের দিকে তাকাচ্ছে তিতির।কিন্তু কিছুই বুঝতে পাড়ছে না।

-“দিনেশ খুব মনোাযোগ দিয়ে ম্যানু দেখছে।তিতিরের মন খুশি হয়ে গেলো।যতোটা খারাপ ভেবেছে দিনেশকে ততোটা না।এই বেশরম মেয়েগুলোর দিকে একবারও তাকায় নিই দিনেশ।যাক বাঁচা গেলো।তিতির খুশি হয়ে টেবিলের উপর থেকে গ্লাশটি হাতে নিয়ে পানি খেতে নিলে,দিনেশের কথায় বিষম খেয়ে পানি সব মাথায় উঠে যায়।দিনেশ তারাতারি ওর কাছে এসে পিঠে হাত বুলিয়ে মাথায় কয়েকটা চাপড় মারে।আর ইউ ওকে তিতির।তিতির কোনও রকম মাথা নেড়ে হা বলে।”

-আসলে দিনেশ তিতির এর সব কিছুই লক্ষ্য করছিলো।মেয়েগুলোকে দেখে যে তিতির অস্বস্তি ফিল করছে সাথে ইনসিকিউর তা দিনেশ খুব ভালো করেই বুঝতে পাড়ছে তাই তিতিরকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলো,”এভাবে আর চোখে দেখে লাভ নেই।এসব ছোট পোশাক পড়া মেয়েগুলো আমাকে কোনও ভাবেই আকর্ষণ করতে পাড়বে না।তাছাড়া এরা শুধু ব্রা আর পেন্টি পড়ে আসলেও আমার ভেতর কোনও রিয়েকশন আসে না।শুধু তোমাকে ছাড়া।তুমি যদি পড়ে আসো তাহলে অন্য কথা।তাছাড়া আমি এসব পোশাকে শুধু তোমাকেই কল্পনা করি।অন্যকোনও নারীকে না।”
ব্যাচারী তিতির পানি খাচ্ছিলো,দিনেশের বেলাগাম কথায় বেহুশ হয়ে যেতে মন চাইছিলো ওর।
রাগতো উঠছিলো দিনেশের উপর কিন্তু তার সাথে ভীষণ লজ্জাও ঝেকে ধরলো।এখান থেকে পালাতে পাড়লে হয়তো বেঁচে যেতো।তা না হলে এই লোক তিতিরকে লজ্জা দিয়ে একদিন সত্যিই মেরে ফেলবে।লজ্জাহীন মানুষ বলে কি?এই লোক নাকি আমাকে এসব রুপে কল্পনা করে ছিঃ।

–“পুরো ডিনারের সময় তিতির আর চোখ তুলে তাকাতে পাড়লো না দিনেশের দিকে।ওর ভীষন লজ্জা লাগছিলো আজ দিনেশের সাথে বসে থাকতে।দিনেশও আর কিছু বললো না,বরং তিতির লাল হয়ে যাওয়া গাল দুটো দেখেই বুঝে গেলো সব।ডিনার করেই তিতিরকে সাথে নিয়ে এখানকার কয়েকটা সোপিংমল গুড়ে তিতিরকে শীতের আরো বেশ কিছু পোশাক কিনে দিলো দিনেশ।তিতির অবশ্য কিছুই নিতে চায়নি,কিন্তু দিনেশ ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দিলো,কারণ এখানে শীতের প্রকোপ হয়তো আরো বাড়বে।আর তুষার বৃষ্টিপাত হলেতো কথাই নেই।”

সোপিংমল থেকে বের হয়ে দিনেশ তিতিরকে নিয়ে গেলো সোজা টেমস নদী দেখাতে।সন্ধ্যার পর বিভিন্ন আলোক সজ্জায় সজ্জিত হয়ে উঠে এই নদী।এটাকে লন্ডনের হ্রৎপিন্ডও বলা হয়।এই নদীতে ছোটছোট অনেক জাহাজ ভাসে।দিনেশও ছোট একটা জাহাজে তিতিরকে নিয়ে উঠে পড়লো।অপরুপ সৌন্দর্যে ভরপুর টেমস নদী।এর চারপাশে বিরাজ করছে নগরসভ্যতা।পুরো লন্ডন যেনো দেখা যায় টেমস নদী দিয়ে একবার ঘুড়লে।একবার পুরো টেমস নদী চক্কর দিয়ে পুরো লন্ডন শহর দেখে তিতির ও দিনেশ আবার ফিরে এলো হোটেলে।কাল সকাল দশটার মধ্যে তিতিরকে রেডি থাকতে বলে,যে যার রুমে চলে গেলো আবার।
…………………………………………

তিয়াস ও দিশা বসে আছে একটা রেস্টুরেন্টে।দিশা ফ্যাচফ্যাচ করে কান্না করছে।এসব দেখে তিয়াশের বিরক্ত হবার সাথে সাথে মাথা ব্যাথাও করছে।কিন্তু দিশাকে কিছু বলতেও পাড়ছে না,কোন মুখেই বা বলবে।

–“মায়ের উপর প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত তিয়াশ।মা হয়ে ছেলের কষ্ট বুঝতে চায় না।কেমন মা আমার।ছেলের থেকে টাকার মূল্যটা কি খুব বেশি।হয়তো বেশি তা না হলে টাকার লোভে ছেলেকে বেঁচে দিতে একবার হলেও বুক কাঁপতো তার।তিয়াশের মনটাও ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো এসব ভেবে।নাক টানার শব্দে আবার দিশার দিকে তাকালো।মেয়েটি এখনো কেঁদে যাচ্ছে।আর কাঁদবেই না কেনো।আজ সকালে মা নাকি ওদের বাসায় ফোন করে ওর বাবা মাকে যা তা বলেছে।দিশার চরিত্রের উপরও আঙ্গুল তুলেছে।শুধু এতোটুকুতে ক্ষান্ত হয়নি মা,দিশাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দেওয়ার তাগিদ করেছে।ছেলে না পেলে নাকি সে দিবে দরকার হলে।তার কাছে নাকি অনেক ভালো ভালো পাত্রও আছে।তাহলে পাত্র হিসেবে আমার কি দোষ।নাকি আমি ভালো না পাত্র না।ঘটকালি করতে মন চাইলে নিজের ছেলের জন্য কর না বাপু,অন্য ছেলের সাথে আমার বউকে ঝুলিয়ে দেওয়ার মানে কি।তিয়াশ মায়ের এমন আচরণে খুবই হতাশ।তার উপর আজকের ঘটনার কারণে দিশার বাবা মা তিয়াশের সাথে দিশাকে নাকি কিছুতেই বিয়ে দিবে না বলে জানিয়েছে।”

দিশার বাবার মতে,”যে ছেলের মা এমন,সে সংসারে দিশা গেলে নাকি কখনো সুখে হবে না।ছেলেও মা আর বউয়ের মধ্যে পিষে যাবে।না নিজে সুখে থাকবে না দিশাকে সুখে রাখতে পাড়বে।তাই তিয়াশের সাথে সব সম্পর্কের ইতি টানাই ভালো।ব্রেকআপ করে দেওয়ার জন্য দিশাকে চাপ দিচ্ছে।তিয়াশ এখন ভাবণায় পড়ে গেছে,আজ দিশা চলে গেলে হয়তো ও আর দিশাকে দেখতে পাবেনা।দিশার বাবা মা যেভাবেই হোক ওকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দিবে।এটা ভাবতেই তিয়াশের অস্থিরতা আরো বেড়ে গেলো।”

দিশা চোখের পানি মুছে উঠে দাঁড়ালো, চলে যাওয়ার জন্য।আমি আসি তিয়াশ।ভাগ্যে থাকলে আবারও দেখা হবে বলে,তিয়াশের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দিশা চলে যেতে নিলে তিয়াশ একটা হার কাপানো ধমক মারে।তিয়াশের ধমকে দিশাসহ আশেপাশের মানুষও কেপে উঠে।কিন্তু তিয়াশ সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে,দিশাকে চুপচাপ বসতে বলে।তিয়াশের মুখের এক্সপ্রেশন মুহুর্তেই বদলি হয়ে যাওয়ায় দিশাও একটু ভয় পেয়ে চুপচাপ বসে পড়ে আগের জায়গায়।কাপাকাপা কন্ঠে তিয়াশকে প্রশ্ন করে,”কি হয়েছে তিয়াশ।কিছু বলবে।”

–তিয়াশ দাঁতেদাঁত চেপে বলে,”আমাকে কি খেলার পুতুল পেয়েছো তোমরা।যখন খুশী খেলবে আবার যখন খুশী বদলে দিবে।।তুমি নিজের বাবা মায়ের দোহাই দেও,আর আমার মা কেবল নিজেটা বুঝে।আর এ দিকে যে আমি জলজ্যান্ত একটা মানুষ ছুটফট করছি সেদিকে কারো কোনও খবর নেই।কেন রে? আমি কি মানুষ না।অনেক শুনেছি সবার কথা আর না।এবার শুধু আমার মর্জি চলবে।”

–“দিশা নির্বাক হয়ে তিয়াশের দিকে তাকিয়ে আছে,আসলে কি বলবে বুঝতে পাড়ছে না।এখানে ওরো যে কিছু করার নেই।”

আর তিয়াশ দিশার এই নির্বাক চাওয়ার দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে ফোন দিলো আয়নকে।আয়ন ফোন রিসিভ করার সাথেসাথে ভাইকে কিছু বলতে না দিয়ে নিজেই বলতে লাগলো তিয়াশ,”ভাই আমি বিয়ে করবো।আজ এবং এখনই।তুমি সাহায্য করবে নাকি একা একা করে ফেলবো।”
–দিশা তিয়াশের কথা শুনে কি রিয়েকশন দিবে হয়তো এই মুহুর্তে ভুলে গেছে।ব্যাচারী একহাত হা করে তাকিয়ে আছে তিয়াশের দিকে।

চলবে…..।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here