এবং_স্ত্রী পর্ব_২৬

এবং_স্ত্রী
পর্ব_২৬
#Jannatul_Ferdos

নিরুপমার অপেক্ষায় উৎস বসে আছে।সেই যে ওয়াশরুমে গেল আর বের হওয়ার নাম গন্ধটি নেই। আর ওইদিকে নিরুপমা ও কি কম ফাজিল?ইচ্ছা করেই বের হচ্ছে না।সে খুব ভালো করেই জানে উৎস নিজের ওয়াশরুম রেখে বাড়ির অন্য কোনো ওয়াশরুমের যাবে না।উৎস বসে বসে এটম বম হচ্ছে।এখনো ফ্রেশ হতে পারে নি সে।ফ্রেশ না হয়ে চেঞ্জ ও করবে না।
“নিরুপমা নিরুপমা হলো তোমার?এবার কিন্তু ভিষণ রাগ হচ্ছে আমার।
নিরুপমা এবার ভেবে দেখলো আসলেই অনেক সময় ধরে সে উৎসকে বসিয়ে রেখেছে এবার বের হওয়া দরকার।কিন্তু এখন পরেছে আরেক মুসিবতে।নিরুপমা প্রায় অনেকটাই ভিজে গেছে।সে তো তার শাড়ি ও আনে নাই এখন কি করবে?উৎসকেই বলতে হবে।নিরুপমা কোনোরকম সাহস জুগিয়ে দরজা হাল্কা করে খুলে উৎসকে ডাক দেয়..
” এইযে শুনছেন?
“এতোক্ষণ পরে বের হয়ে আবার ওখানে কেন দাঁড়িয়ে আছো?বাইরে আসো
” ইয়ে মানে শুনেন না
“বলো
” আমি না আমার শাড়ি আনতে ভুলে গেছি।আমার ট্রলি থেকে একটা শাড়ি বের করে দিবেন?
উৎস প্রথমে কিছু বলল না তারপর কি ভেবে শাড়ি বের করে নিরুপমার দিকে এগোতে লাগল।নিরুপমা শাড়ি ধরতেই উৎস নিরুপমাকে ধাক্কা দিয়ে ওয়াশরুমের মধ্যে নিজে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।নিরুপমা বড় বড় ঢোক গিলে উৎস এবার তাকে আস্ত গিলে খাবে।
“আ আয়াপ্নি না মানে আপনি ভিতরে আসলেন কেন?আ আমি তো বের হচ্ছিলাম
উৎস কোনো কথা না বলে নিরুপমাকে দেওয়ালের সাথে চেপে ধোরে শাওয়ার ছেড়ে দেয়।নিরুপমা ভিজে যায়।আর উৎস নিরুপমাকে দুহাত দিয়ে দেওয়ালের মাঝে বন্ধি করে রাখে।নিরুপমাকে খুব স্নিগ্ধ লাগছে।উৎসের কেমন জানি মাতাল মাতাল লাগছে নিরুপমাকে দেখে।মেয়েটা সুন্দর শুধু সুন্দর না ভয়ংকর সুন্দর।নিরুপমার ভিতরে এক অদ্ভুত মায়া আছে যা উৎসের চোখে পড়ে নি এতোদিন।নিরুপমা উৎসের দিকে দৃষ্টি স্থীর রেখে তাকিয়ে আছে।বোঝার চেষ্টা করছে ওই চোখে তার জন্য কি আছে?ভালোবাসা নাকি করুনা?
উৎস ধীরে ধীরে নিরুপমা মুখ বরাবর এগোতে থাকে নিরুপমা চোখ বন্ধ করে নিলে উৎস নিরুপমার কানের কাছে ফিসফিস করে বলে আমাকে এতো অপেক্ষা করানোর ফল এটা।নিরুপমা চোখ খুলে ছানাবড়া হয়ে যায়। এই মানুষটা এতো বদ এতো পাজি সে জানত না।
” আপনি
“হুসসসসসস চেঞ্জ করে নাও
” আপনি না গেলে চেঞ্জ করব কিভাবে?
“আমার সামনেই করো…উৎস নিরুপমাকে চোখ মেরে বলে
” নো ওয়ে।আপনি যাবেন এইখান থেকে?
“উহু এক পা ও নড়ছি না
” আপনি যদি না যান আমি এভাবে ভেজা অবস্থায় এইখানে বসে থাকব
“থাকো আমার কি?সাথে আমি ও থাকব
” প্লিজ যান না
“উহু
” প্লিজ
“শর্ত আছে
নিরুপমাকে অসহায় লাগছে এখন খুব
” কি শর্ত
“মুসকানতো ঘুমিয়ে আছে আর উঠবে না বোধহয় আজকে প্রেমার কাছেই থাক।
” কেন ও প্রেমার কাছে কেন থাকবে?এতোদিন পর আমার মেয়েকে কাছে পেয়েছি ও আমার কাছে কেন থাকবে না?
“তাহলে যে এতোদিন পর আমার মেয়ের মাকে আমি কাছে পেয়েছি সে কেন আমার কাছে থাকবে না….উৎস কথাটি বলে জিভে কামড় দেয়।মুখ ফসকে কথাটি বলে ফেলেছে।সে এভাবে বলতে চায় নি।নিরুপমা চোখ ছোট করে উৎসের দিকে তাকায়।তার হাবভাব ভালো লাগছে না নিরুপমার।
” কি বললেন ঠিক বুঝলাম না
“বোঝা লাগবে না।কথা একটাই আজকে মুসকান প্রেমার কাছে থাকবে ব্যাস।চেঞ্জ করে রুমে আসো

উৎস রুমে গিয়ে চেঞ্জ করে নেয়।নিরুপমা ও চেঞ্জ করে আসে। এর মধ্যেই প্রেমা খেতে ডাকতে আসে।উৎস বলে তারা একটু পরই আসছে।
আজ কতোদিন পর আবার সকলে একসাথে খাবে।তনিমা বেগম নিরুপমার জন্য চিংড়ি মাছের মালাইকারী রান্না করেছেন। নিরুপমার অনেক বেশি পছন্দের।আজ আর নিরুপমার নিজে হাত খাওয়া লাগল না তনিমা বেগম নিজের পাশে বসিয়ে নিরুপমাকে খাইয়ে দেন।মাঝে মধ্যে প্রেমা ও একটু ভাগ বসায়।উৎস চোখ পিট পিট করে শুধু সব দেখছে।রাগে শরীর জ্বলছে তার।
” বাহ আমার মায়ের তো শুধু দুই মেয়ে তার তো কোনো ছেলে নাই।তার দিকে নজর কেন দেবে?
“ওই হতচ্ছাড়া আমার মেয়েদের দিকে নজর দিস না তো…প্রবীর খান বলেন
” হ্যা এখন তো আমি হতচ্ছাড়া আর তোমার বউ যে তোমার দুই মেয়েকে খাইয়ে দিচ্ছে তার বেলায়?
প্রবীর খান এবার উৎসের কান মুলে দেন
“আহ বাবা লাগছে তো
” লাগার জন্যই তো দিছি।ওই ব্যাটা ওই আমার বউ তোর কি হয় রে বেয়াদব কোথাকার
নিরুপমার সামনে এমন অপমান উৎস মেনে নিতে পারছে না।শেষমেষ নিজের বউয়ের সামনেই কানমলা খেতে হবে এটা উৎস ভাবে নাই।না এ তো ঘোর অন্যায়।উৎসের মতো একটা ইনোসেন্ট, শান্ত, ভদ্র,ভালো ছেলের অপমান?এ তো পুরুষ জাতি মেনে নেবে না।
“এতো কি ভাবছিস আয় তোকে খাইয়ে দিচ্ছি..তনিমা বেগম বললেন।
নিরুপমা এতোক্ষণ উৎসের করুণ দশা দেখে মিটিমিটি হাসছিল।ভিষণ বেকায়দায় পড়েছিল উৎস।আচ্ছা এইযে কি সেই উৎস?যে উৎস সবসময় গম্ভীর হয়ে থাকত। নিরুপমাকে সহ্য করতে পারত না।অপমান করতো এমনকি গায়ে ও হাত তুললো?আসলে একটা শোকে মানুষ কি না হয়ে যেতে পারে।নিরুপমার ভালো লাগছে সে আবার আগের উৎসকে সবার মাঝে ফিরিয়ে আনতে পেরেছে।এইটাই তার বড় প্রাপ্তি।

চলবে!

গল্প দিতে না পারার জন্য দুঃখিত।আমি চট্টগ্রাম ট্যুরে গিয়েছিলাম।ঝর্নার ট্র্যাকিং করে যাওয়া আসায় এতো হাত পা পুরো ব্যথা হয়ে ছিল।ফিরতে ফিরতে রাত ২ টা বাজে।তাছাড়া এমনিতেই জ্বর ছিল। সব মিলিয়ে গল্প দেওয়ার মতো পজিশনে ছিলাম না।কিছুদিন গল্প নিয়মিত দিতে পারব না।আমি ঢাকায় আছি নানান ব্যস্ততায় সময় কাটছে।কেউ রাগ করবেন না।

গল্প ছোট হওয়ার জন্য আরো বেশি সরি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here