#কাউকে_চাই_না
#মাশরাফি_আল_মেহেদী
#পর্ব_৪
বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি। আজকে আকাশটা অনেক শান্ত হয়ে আছে। হেমন্তকাল চলছে। হালকা হালকা শীতও লাগছে। তবে আমার মনে তখন আগুন বয়ে যাচ্ছে। যাকে ভুলে যাওয়ার জন্যে সবকিছু ছেড়ে এইখানে আসলাম তার কথা আজকে আবার মনে পড়ছে। সে তো নেই। তবে ফেলে গেছে হাজারো সৃতি। জানি না সেই মানুষটার মনে আছে নাকি। কিন্তু আজকে কেনো জানি না সেই সৃতির কথা বেশি মনে পড়ছে।
একটু আগে শাওন ভাইয়া কল করে বললো,
শাওন, “হেলো। কেমন আছিস?”
আমি, “আছি ভালোই। তুমি কেমন আছো?”
শাওন, “আমরাও ভালো আছি। এখন তো মনে হয় ভুলেই গেছিস আমাদের।”
আমি, “ভুলে যাবো কেনো?”
শাওন, “গত 2 বছরে একবারও কল করেছিস নিজে থেকে? যতবারই কথা হয় তখন আমিই দেই। আর তুই সর্বোচ্চ 1 মিনিট কথা বলিস। কেনো রে? আগে তো খুব পটর পোটর করতী।”
আমি, “নাহ। তেমন কিছু না। ওই একটু ব্যাস্ত থাকি।”
শাওন, “বুঝলাম। আচ্ছা শোন যেটার জন্যে তোকে ফোন করেছি। তুই আংকেল হয়েছিস”
আমি, “মানে। সেটা তো কবেই। আরশ ভাইয়ার মেয়ে হইছে।”🙄
শাওন, “আরেহ পাগল। আজ সকালে তোর ভাবী বিথির ডেলিভারি হয়েছে। আর আমাদের ঘরে একটা কন্যা সন্তান এসেছে। অর্থাত তুই আবার আংকেল হয়েছিস।”
আমি, “ওহ আচ্ছা। ভাবী প্রেগনেন্ট ছিল?🙄”
শাওন, “বাহ্। তুই এইটাও যান তিশ না? জানবি কিভাবে সেইদিন আরশ কে দেখতে গেছিলাম তখনতো তুই আগে ভাগে পালালি।”
আমি, “যাক ভালই হলো।”
শাওন, “সবই ঠিক হলো। কিন্তু তুই বিয়ে করবি কবে? তোর সাথের সবাই তো ম্যারিড। খালি তুই ই বুড়া হয়ে গেছিস তাও বিয়ে করার কোনো নাম নাই”
আমি, “না। আমার বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে নেই। একাই আছি। ভালো আছি। কোনো ঝামেলা নাই। ইচ্ছামত যা ইচ্ছা তাই করতে পারি।”😊
শাওন, “তুই আসলেই বেতিক্রম একজন মানুষ।। আচ্ছা তাহলে ভালো থাকিস। ক্ষুদা হাফিজ”
এই বলে আমি ফোন কেটে দিলাম। আমার ভিতরে সেই আগের সৃতিগুলো ফুটে উঠছিল। শাওন ভাইয়ার কথা শুনে যা বুঝলাম তারা দুইজন অনেক সুখেই আছে। তাহলে ঠিক করলাম যে আমি আর আগের কথা মনে করবো না। আর নতুন করে কারো সাথে জড়াবো ও না।
পরের দিন অফিসে গেলাম। গিয়ে সাভাবিক ভাবেই সবাই সালাম করছিল। আর আমি সালামের জবাব দিচ্ছিলাম। আমি ভুলেই গেছিলাম যে আজকে আমার নতুন PA আসার কথা। কিন্তু কিছুক্ষন পরেই দেখি সে দৌড়া দৌড়ি করে অফিসে ঢুকলো। ঢুকার পরে ম্যানেজার এর সাথে দেখা হলো,
ম্যানেজার, “আরে মিস নিধি!.. আপনি এখন আসছেন? 15 মিনিট লেট?”
নিধি,”স্যার আসলে কি করবো?. আশার জন্যে রাস্তায় একটাও রিক্সা পাচ্ছিলাম না।”
ম্যানেজার, “আমি নাহয় শুনলাম কিন্তু স্যারের কাছে যাও। উনি যে রাগী। তার উপর লেট করছেন।”
আমি আপন মনে কাজ করছিলাম এমন সময় কেউ একজন আমায় বলল, “may I come in sir?”
আমি, yes
নিধিকে দেখে আমার তার কথা মনে পড়লো। আসলেই তো আমি ভুলেই গেছিলাম কালকেই তো তাকে নিয়োগ করা হইছিলো। আমি কিছু না বলতেই নিধি বলে উঠল,
নিধি, “স্যার আসলে আমি রাস্তায় একটাও রিক্সা পাচ্ছিলাম না তাই দেরি হয়ে গেল।”
আমি, “একটু দেরি হইছে? পুরাই 14 মিনিট লেট।”
নিধি, স্যার আজকের মত মাফ করে দেন। ভবিষ্যৎ থেকে আর হবে না।
আমি, ওকে আজকে প্রথম দিন বলে কিছু বললাম না। বাট নেক্সট টাইম থেকে হলে শাস্তি পেতে হবে। আর আমি ম্যানেজারকে বলে দিচ্ছি উনি আপনাকে আপনার কেবিন দেখায় দিবে। আর কাজ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দিবে। নাও ইউ ক্যান গো 😷
এইবলে নিধি চলে গেলো। আর আমি কাজে মনোযোগ দিলাম। আজকেও তাকে দেখে আমি মনেই করতে পারছিলাম না যে আগে কোথায় দেখেছি।
#চলবে