#কিশোরী_মাফিয়া
লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_১০
প্রথম ছবিটার দিকে তাকাতেই আকাশের হুঁশ উড়ে যায়!সে চোখ বড় বড় করে ছবিটার দিকে তাকিয়ে আছে!মনে হয় যেনো কেউ তাঁকে মৃত্যুর ফেরেস্তার ছবি পাঠিয়েছে!আকাশ অনেকটা হাইপার হয়ে যায় প্রথম ছবিটা দেখার পর!কিন্তু সে কোনো ধরনের রিয়েক্ট করতে পারছে না।কারন তার পাশেই ঈদনি শুয়ে আছে।তাই সে নিজেকে সামলে নিয়ে বাকি ছবি গুলো দেখতে থাকে।রকির পাঠানো সমস্ত ছবি আকাশের দেখা শেষ।তখনি রকি তাঁকে ফোন দেয়।আকাশ রকির ফোন রিসিভ করে তাঁকে বলে…
–ভাই একটু হোল্ড আমি বারান্দায় গিয়ে কথা বলছি।
.
আকাশ বিছানা থেকে উঠে গিয়ে বারান্দায় চলে যায়।পরে বারান্দায় গিয়ে রকিকে জিগ্যেস করে…
–ভাই কি ছিলো এসব?আপনি আলফা এবং তার দলবল কোথায় আস্তানা গেড়েছে তার ছবি পেলেন কি করে?
–আরেহ আকাশ ভাই বললাম না আপনাকে,যে আমার সাধ্য মতন আমি আপনাকে সাহায্য করবো।সো তাই করেছি।আলফা এবং তার সমস্ত ছেলেপেলে যেখানে বসে বসে আপনাকে মারার প্লানিং করছে,এসব ছবি সেখান থেকেই আমার কাছে কেউ একজন পাঠিয়েছে।
আপনাকে তো আগেই বললাম আমার একজন ছেলে তাঁদের মাঝে আছে।সেই আমাকে আলফা এবং তার পুরো টিমের ব্যাপারে খবর দিচ্ছে।সো এবার আপনি ছবি গুলোকে দেখে তাঁদের লোকেশন বের করুন।
–হুম ভাই আমি তাই করবো।ছবি গুলো সমস্ত ছেলেপেলের কাছে পাঠিয়ে তাঁদের খুঁজে বের করবো।
–কিন্তু আকাশ ভাই সাবধান।কারন আলফা অনেক ডেঞ্জারাস একটা মানুষ।আমি যতোদূর জানি সে কখনো কাঁচা খেলা খেলে না।আর তার সাথে লড়াই করে আগে কেউ কখনো পারেনি।সো আপনার জন্যেও মুশকিল হবে তাঁকে হারানো।তাই যা করবেন ভেবে চিন্তে প্লান মোতাবেক করবেন।না হয় তো আপনি মারা পড়বেন।
–ভাই জানি না কি হবে,তবে আমি আমার সব টা দিয়ে চেষ্টা করবো।
–ভাই আবারো বলছি সাবধানতার সাথে কাজ নিবেন।
কারন সে আগেও বহু বড় বড় মাফিয়াকে হারিয়েছে।আর তারা আপনার থেকেও বড় বড় মাফিয়া ছিলো।তাই আপনাকে নিয়ে আমার ভয় হচ্ছে!সত্যি বলতে আমার ভরসা হচ্ছে না আপনার উপরে,যে আপনি তার সাথে পেরে উববেন।কারন তার যে শক্তিশালী ফোর্স,তাঁদের সাথে কখনোই পেরে উঠা সম্ভব না।বলতে গেলে এক কথায় সব কয়টা হায়েনা।মানুষকে মেরে চিঁড়ে ফুঁড়ে রক্ত খাওয়ায় তাঁদের কাজ।সো মাথা ঠান্ডা করে কাজ নিন।আপনি যদি একবার তার কাছে হেরে যান,তাহলে তো সোজা মারা পড়বেন।আর আপনার পরিবারকেও সে ছাড়বে না।
.
আকাশ এমনিতেই ঘাবড়ে আছে।তার উপরে সে রকির কথা শুনে আরো ঘাবড়ে যায়!কারন তার কাছে ছেলেপেলে আছে ঠিক,কিন্তু সে তাঁদেরকে নিয়ে আলফার মোকাবিলা করতে পারবে কিনা সেটা নিয়েই তার ভয় হচ্ছে!সে এই কয়দিনে আলফার ভয়াবহতা সম্পর্কে অনেক টুকুই জেনেছে।আলফা কতোটা ভয়ংকর আর নিষ্ঠুর,সেটা ভেবেই তার ভয় হচ্ছে!যদি দেশের কোনো মাফিয়া হতো,তাহলে সে ইজিলি তার সাথে মোকাবিলা করতে পারতো।কিন্তু আলফা তো অনেক বড় মাফিয়া।আর তার জন্যই সে পুরো আন্ডারওয়ার্ল্ডের মাফিয়াদের হাতে মুঠোয় করে রেখেছে।তার সাথে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কোনো মাফিয়া পাঙ্গা নেওয়ার মতন সাহস করেনা।আর সে তার সাথেই লড়াই করতে চলেছে।আকাশের ভয় যেনো ক্রমশ বেড়েই চলেছে।তবে ভয়টা সে নিজেকে নিয়ে পাচ্ছে না।তার ভয়টা হচ্ছে অন্য জায়গায়।সে মরে গেলেও কোনো আপত্তি নাই।কিন্তু তার পরিবারের কোনো ক্ষতি না হওয়া চাই।সে তার মা’বোনকে অনেক বেশি ভালোবাসে।তার উপরে তার ভালোবাসায় কাতারে নতুন করে শামিল হয়েছে ঈদনি।যাকে সে কোনো ভাবেই হারাতে চায় না।সে তাঁকে অনেক বেশি ভালোবাসে।কিন্তু আলফা যদি তাঁকে পরাজিত করে ঈদনিকে আর তার মা’বোনের ক্ষতি করে দেয়,সেটা সে কোনো ভাবেই মানতে পারবে না।তার বুক ধুপধুপ করে কাঁপছে!তখনি রকি তাঁকে বলে….
–ভাই ভয়ের কিছু নেই।মাথা ঠান্ডা করে কাজ নিলেই সব হয়ে যাবে।
.
আকাশের চোখে পানি চলে আসে তার মা,বোন আর ঈদনির কথা ভেবে।সে কান্না জড়িত কন্ঠে রকিকে বলে…
–রকি ভাই আমার একটা আবদার রাখতে হবে আপনাকে।
–কি আবদার?
–ভাই আমার যদি কিছু হয়ে যায়,তাহলে আপনি আমার মা,বোনকে নিজের দেশে নিয়ে চলে যাবেন।কারন তাঁদের কিছু না হওয়া চাই।আর বিশেষ করে ঈদনিকেও সাথে নিবেন।কারন মেয়েটাকে আমি খুব বেশি ভালোবাসি রকি ভাই।এমনিতেই মেয়েটাকে তার মতের বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়ে করে অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি আমি তার সাথে।এর উপরে যদি আমার কারনে আলফা তার কোনো ক্ষতি করে বসে,তাহলে আমি সেটা মরে গিয়েও মানতে পারবো না।প্লিজ ভাই আপনি তাঁদেরকে দেখেশুনে রাখবেন।আমার কারনে ঈদনির কিছু না হওয়া চাই।ভাই মেয়েটাকে আমি আমার নিজে জীবনের চাইতেও বেশি ভালোবাসি।আমার নিজের জীবনের বিনিময়ে হলেও আমি তাঁকে রক্ষা করতে চাই।আমি মরে যাই তাতে কোনো আফসোস নেই আমার।কিন্তু তার কিছু হলে আমার জীবনটাই বৃথা হয়ে যাবে।প্লিজ ভাই আপনি তাঁদেরকে আপনার হেফাজতে রাখবেন।
.
আকাশ রকিকে এসব বলতে বলতে কান্না করে দেয়।তার কান্নার আওয়াজ রকি ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে শুনতে পায়।তার ভয়টা যেনো আরো বহু গুন বেড়ে গিয়েছে!
–আরেহ আকাশ ভাই আপনি শান্ত হন।প্লিজ কান্না করিয়েন না আপনি।ইনশাআল্লাহ আপনার কিছু হবে না।বরং আপনিই তাঁদের পরাজয় করবেন।আর আপনার কিছু হোক বা না হোক,আমি এখন থেকেই আপনার মা,বোন আর প্রিয় মানুষের জিম্মাদারি নিচ্ছি।আমার জীবন থাকতে তাঁদের কোনো ক্ষতি হতে দিব না আমি।
–ধন্যবাদ ভাই।
–আকাশ ভাই আমি বলছি আপনি পারবেন।আপনি সমস্ত ভয়ভীতি দূর করে পারফেক্ট একটা প্লান করেন তাঁদেরকে শেষ করার।আলফা কিছু করার আগেই অপ্রত্যাশিত ভাবে আপনি তার উপরে হামলা করেন।তাহলে সে জয়ের মুখ কোনোদিন এই দেখবে না।
–ঠিক আছে ভাই।
–হুম তাহলে এখন ফোন রেখে শান্ত মাথায় প্লান সাজান।
.
আকাশ ফোন রেখে দিয়ে চুপচাপ বারান্দায় বসে আছে।সে বারান্দায় বসে বসে আলফার বিরুদ্ধে প্লান করে।তার প্লানটা রকির কথা মোতাবেক এই সাজায়।সে আলফা কিছু করার আগেই তার উপরে হামলা করার পরিকল্পনা করে।আগামীকাল সকালে সে আলফার উপরে হামলা করবে।সমস্ত কিছু মাথায় সেট করে নেয়।এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে সারাটা রাত ঘুম না গিয়ে বারান্দায় কাটিয়ে দেয়।পরে সকাল হতেই রুমে চলে আসে।সে রুমে এসে দেখে ঈদনি ঘুমিয়ে আছে।সে চুপচাপ ঈদনির পাশে বসে।তারপর আলতো করে ঈদনির মাথায় হাত বুলাতে থাকে।ঈদনির মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে তার ও ঘুম পেয়ে যায়।তাই সে নিজেই অজান্তেই ঘুমিয়ে পড়ে।যখন তার ঘুম ভাঙ্গে,তখন সে দেখতে পায় ঈদনি তাঁকে ডাকছে।
–এই যে উঠুন,আমার স্কুলের সময় হয়ে এসেছে।আমায় তাড়াতাড়ি স্কুলে দিয়ে আসুন।
.
আকাশ ঘুম থেকে উঠে ঈদনির কথা শুনে চমকে যায়!
কারন ঈদনি আজ তাঁকে নিজেই বলছে স্কুলে দিয়ে আসতে!সে অবাক হলেও ঈদনিকে কিছু বলে না।ঈদনির কথা মতন চুপচাপ উঠে রেডি হয়ে দিয়া আর ঈদনিকে স্কুলে দিয়ে আসে।আর সাথে সেই চারজন গার্ডকেও অন্য গাড়ি নিয়ে স্কুলে আসতে বলে।সে এখন কোনো ভাবেই রিক্স নিতে চায় না।কারন তার প্রতিপক্ষ এখন যে কোনো সময় তাঁদের উপরে হামলা করতে পারে।তাই গার্ডকে স্কুলে কড়া পাহারায় থাকতে বলে।
পরে সে সেখান থেকে সোজা তার ছেলেপেলের কাছে চলে যায়।তারপর সবাইকেই তৈরী হতে বলে লড়াই করার জন্য।আকাশ সবাইকে জানিয়ে দেয় আগামীকাল তারা সবাই আলফার উপরে হামলা করবে।আর আজকের মধ্যে তাঁদের লোকেশন খুঁজে বের করতে হবে।আকাশের কথা শুনে ফরিদ তাঁকে বলে….
–ভাই তাঁদের লোকেশন কি করে বের করবো?
তাঁদের কোনো ইনফরমেশন এই তো নেই আমাদের কাছে।
–ফরিদ তাঁদের ইনফরমেশন আমার কাছে আছে।আমি তোদের সবার ফোনে কিছু ছবি পাঠাচ্ছি।তোরা সেই ছবি গুলো দেখে চিনতে পারিস কিনা দেখ,যে তারা এখন কোথায় অবস্থান করছে।
.
আকাশ সবাইকে ছবি গুলো পাঠায়।সবাই ছবি গুলোকে ভালো করে দেখতে থাকে।তখনি তাঁদের থেকে একজন বলে উঠে….
–ভাই আমি এই লোকেশন টা চিনি।এই লোকেশন টা হচ্ছে চৌধুরী নগর।চৌধুরী নগরে আঠারো তলা একটা বিল্ডিংয়ের কাজ চলছিলো,কিন্তু সেটা এখন বন্ধ কোনো না কোনো কারনে।এই পিক গুলা সেই বিল্ডিংয়েই তোলা হয়েছে।কারন ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডে একটা টাওয়ার দেখা যাচ্ছে।যেটার পাশে হচ্ছে আমার এক বন্ধুর বাড়ি।
–এই তো এবার জমবে খেলা।
আগামীকাল এই লোকেশনে গিয়েই হামলা করবো সকলে মিলে।
.
আকাশ তারপর সবার সাথে মিলে পরিকল্পনা করে,যে কে কি ভাবে হামলা করবে,আর কে কোন পজিশনে থাকবে।
.
অন্যদিকে ঈদনি স্কুলে এসে প্রতিদিনের ন্যায় টিফিন ব্রেকে সেই ছেলেটার সাথে কথা বলে।গার্ড আজকেও ঈদনি আর সেই ছেলেটাকে ফলো করে।এদিকে আকাশ তার সমস্ত প্লান সবাইকে বুঝিয়ে দিয়েছে।সে সমস্ত কিছু শেষ করে বেশ রাত করে বাড়ি ফিরে।ঈদনি দিয়ার রুমে বসে বসে তার সাথে গল্প করছিলো।তখনি গার্ড আকাশকে দেখতে পেয়ে তাঁকে বলে….
–ভাই আপনার সাথে কিছু কথা আছে।আপনি একটু সাইডে আসুন।
আকাশ গার্ডের কথা মতন বাড়ির পাশের একটা খালি জায়গায় যায়।আর এই গার্ডটাই সে,যে কিনা ঈদনির পরকীয়া সম্পর্কে জানে।
–হুম বলো…
–ভাই জানি না আপনি কি মনে করবেন।হয়তোবা আমার উপরে চরম রেগে যেতে পারেন।কিন্তু তাও আমার আপনাকে আজ কথা গুলো বলতে হবে।না হয়তো অনেক বড় সমস্যা হয়ে যাবে।
–আরে কি কথা বলবে তো?
–ভাই ভাবি স্কুলের একটা ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছে।
–কিহহহহহহহ!
–হুম ভাই সত্যি।আজ কয়দিন যাবৎ তাঁদের এই সমস্ত কিছু আমি নোটিশ করেছি।আপনি হয়তো আমার কথা বিশ্বাস নাও করতে পারেন।কিন্তু আমার কথাগুলো সত্যি।
–তাহলে তুমি এসব আমায় আগে জানাও নি কেন?
–ভাই আমি শুরুতে ভেবেছি ভাবি শুধরে যাবে।আর তাছাড়া ভাবির বিষয়ে আপনার সাথে এসে কথা বলার মতন সাহস করতে পারছিলাম না আমি।কিন্তু আজ আর না বলে পারলাম না।তাই সাহস করে এসে বলেছি।
–এতসব চলছে আমার পিছনে পিছনে!তাই তো বলি ঈদনির এতোটা পরিবর্তন কেন!তবে আমার কেন জানি এখনো তোমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে না।
–ভাই আমি জানতাম আপনার বিশ্বাস হবে না।তাই আমি অনেক কয়টা ছবি তুলে রেখেছি তাঁদের।
এই যে দেখেন ছবি।
.
গার্ড নিজের ফোনে তোলা ছবি গুলো আকাশকে দেখায়।আকাশ ছবি গুলো দেখে কিছু বলার মতন ভাষা হারিয়ে ফেলে!তাও সে গার্ডকে বলে….
–আচ্ছা আমি দেখছি।তুমি তোমার কাজে যাও।
.
গার্ড চলে যায়।গার্ড যেতেই আকাশ ধুপ করে মাটির মধ্যে বসে কান্না করে দেয়!তার কলিজাটা যেনো ছিঁড়ে যাচ্ছে ঈদনির সম্পর্কে এসব জেনে!
–ঈদনি তুমি কেন করলে এমনটা আমার সাথে?
আমি তো তোমায় অনেক ভালোবাসি।হ্যাঁ তোমার মতের বিরুদ্ধে তোমায় বিয়ে করেছি,কিন্তু কখনো তো তোমার উপরে জুলুম বা অত্যাচার করিনি।কখনো তো তোমার শরীরের উপরে নিজের খায়েশাতের অধিকার ফলাইনি।তাও কেন তুমি আমার সাথে এমন করলে?
ঈদনি কিসের কমতি রেখেছি তোমার আছি?আমার জানামতে কোনো কিছুর এই তো কমতি রাখিনি।তাও তুমি আমায় এভাবে ঠকালে?বলো কেন ঠাকলে তুমি আমায় এভাবে?আকাশ এসব বলতে বলতে কান্নায় মশগুল হয়ে পড়ে।
.
আকাশ অনেকটা ভেঙ্গে পড়ে ঈদনির এমন আচরণে!আগামীকাল তার এতো বড় একটা লড়াই,আর আজকেই ঈদনি তার ভিতরটাকে ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছে!যেখানে ঈদনি তার পাশে থাকার কথা ছিলো।সেখানে ঈদনিই তাঁকে ভিতর থেকে মেরে ফেলেছে।
সে ঘন্টা খানিক মাটিতে বসে কান্না করে।তারপর কোনো ভাবে নিজেকে সামলে নেয়।আর মনে মনে ঠিক করে ঈদনিকে সে সেই ছেলের হাতে তুলে দিবে।
–ঈদনি তোমায় আমি সেই ছেলের হাতে তুলে দিব।
আমি চাইনা তুমি আমার সাথে থেকে কষ্ট পাও।আমি জানি তুমি আমায় অনেক বেশি ঘৃণা করো,কিন্তু ঘৃণার পরিমাণটা যে আমার চিন্তা ভাবনার চাইতেই হাজার গুন বেশি,তা আমি কোনোদিন ও কল্পনা করতে পারিনি!তাই তোমায় আর আমার কাছে না রেখে দূরে ঠেলে দিব।যাও তুমি উড়ে বেড়াও তোমার খোলা আকাশে।তোমায় আর বন্দী খাঁচায় রেখে কেউ ভালোবাসবে না।তোমায় আর বন্দী খাঁচায় আঁটকে রেখে কেউ ভালোবাসার দাবী করবে না।মুক্ত করে দিব তোমায় আমি।আজ রাতেই আমি রকি ভাইকে জানিয়ে দিব তোমার কথা।আমি যদি আগামীকাল লড়াই করতে গিয়ে নিজের প্রাণ হারাই,তাহলে তিনি যেনো তোমায় সেই ছেলের সাথে মিলিয়ে দেয়।
.
আকাশ চোখ মুখ মুছে নিয়ে সোজা বাসায় প্রবেশ করে।তারপর নিজের রুমে প্রবেশ করে।আকাশ বাসায় এসেছে দেখতে পেয়ে ঈদনি দিয়ার রুম থেকে নিজের রুমে চলে আসে।কিন্তু সে আকাশের সাথে কোনো কথা বলে না।চুপচাপ বিছানায় শুয়ে পড়ে।এদিকে আকাশ ও তাঁকে কিছু বলে না।সে পকেট থেকে ফোন বের করে বালিশের পাশে রাখে।আর কোমড় থেকে মেশিনটা বের করে তার মাথার কাছেই তোশকের নিচে রাখে।যেটা সে প্রতিদিন এই করে।পরে ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্রেশ হতে।কিছুক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে ফিরে আসে।পরে এসে সেও চুপচাপ শুয়ে পরে কোনো কথাবার্তা ছাড়াই।তারপর বালিশের পাশ থেকে ফোনটা হাতে নিয়ে ঈদনির কথা লিখে রকিকে একটা টেক্সট পাঠায়।তারপর ফোনটা আবার বালিশের পাশে রেখে চুপচাপ চোখ বুঝে শুয়ে থাকে।কিন্তু তার চোখে ঘুম নেই।আজ সারাটা রাত ও হয়তো তার ঘুম হবে না।অন্যদিকে ঈদনি ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেছে।
.
এভাবেই সকাল হয়ে যায়।ভোর বেলায় এসে আকাশের চোখ লাগে।কিন্তু তার চোখের পাতা বেশিক্ষণ সে একত্রে রাখতে পারে না।নানান চিন্তায় তার ঘুম ভেঙ্গে যায়।সে ঘুম থেকে উঠে দেখে ঈদনি বিছানায় নাই।
কিন্তু সে তার মাথার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।আকাশ ঘুম থেকে জেগেছে দেখতে পেয়েই ঈদনি রুম ছেড়ে নিচে চলে যায়।আকাশ বেশ অবাক হয় ঈদনির আচরণে!কিন্তু সে কোনো ধরনের রিয়েক্ট না করে ওয়াশরুমে চলে যায়।পরে ফ্রেশ হয়ে এসে আপন মনে তোশকের নিচ থেকে মেশিনটা কোমড়ে গুঁজে নিয়ে লড়াই করার জন্য প্রিপারেশন নেয়।তারপর নিচে চলে আসে।নিচে এসে দেখে ঈদনি আর দিয়া বসে বসে গল্প করছে।
–কিরে দিয়া স্কুলে যাবি না?
–না ভাইয়া আজকে স্কুলে যাবো না।
–কিন্তু কেন?
–ভাবির নাকি আজ কেন জানি স্কুলে যেতে ইচ্ছে করছে না।আর আমারো শরীরটা একটু খারাপ লাগছে।
–ঠিক আছে আজ যেতে হবে না স্কুলে।
.
তারপর আকাশ আর কাউকে কিছু না বলে চুপচাপ ঘর থেকে বেরিয়ে যায়!অন্যদিকে ঈদনি আকাশের বেরিয়ে যাওয়ার দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে!
এদিকে আকাশ তার ছেলেপেলের কাছে আসে।পরে সবাই অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে চৌধুরী নগর রওয়ানা হয় আলফাকে মারার জন্য।চৌধুরী নগরের সেই বিল্ডিংয়ের সামনে গিয়ে আকাশের প্লান মোতাবেক সবাই নিজের পজিশন মতন দাঁড়িয়ে যায়।আর পুরো বিল্ডিং টাকে ঘিরে ফেলে।আর আকাশের পাশে ফরিদ আর তার স্পেশাল টিম দাঁড়িয়ে আছে।তখনি বিল্ডিংয়ের ভিতর থেকে একটা মেয়ে তার দলবল নিয়ে বের হয়।আর আকাশের দিকে ভয়ানক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে!আকাশ ও মেয়েটাকে দেখতে পেয়ে চমকে উঠে!কারন তাঁকে দেখে….
চলবে?
ভুল ত্রুটির গুলো ক্ষমার নজরে দেখবেন।
গল্প শেষ না হওয়া পর্যন্ত পাঠক এবং পাঠিকা,কেউ গল্প সম্পর্কে পুরোপুরি মতামত দিবেন না।
আগামী পর্বে ইতি ঘটবে গল্পের।