চন্দ্রার প্রতিশোধ পাঠ-১

বিয়ের পরের দিন আমার স্ত্রীর পেট অস্বাভাবিক ভাবে ফুলে গেলে চিকিৎসার জন্য একজন কবিরাজ ডাকা হলো। কবিরাজ আমাকে একটু আড়ালে ডেকে বললো তুমি একটা জ্বীনের সাথে বাসর করেছো। তোমার সাথে বাসর ঘরে যে ছিলো সে কোন মানুষ নয়। সে একটা আত্মা। এলাকার কবিরাজ এর মুখে এমন কথা শুনে আমি যেন আকাশ থেকে পরলাম। জবাবে আমি বললাম কী বলছেন এসব আপনি? আপনার কী মাথা খারাপ হয়েছে? কবিরাজ বললো আমি যা বলছি তা একদম সত্যি। মূল ঘটনায় আসা যাক। আমি জুনায়েত।

কালকেই আমি বিয়ে করেছি। আমি যে মেয়েটাকে বিয়ে করেছি তার নাম নীলা। সমস্যাটা হলো বিয়ের পরের দিন আমার স্ত্রী এর পেট অস্বাভাবিক ভাবে ফুলে যায়। দেখে মনে হচ্ছে সে মা হতে চলেছে। কিন্তু এটা কী করে সম্ভব? বিয়ের এক দিন পর একটা মেয়ে মা হয় কী করে? মা বললো এলাকার কবিরাজ কে ডেকে জার ফুক দিলে পেট ফুলা কমে যাবে। তাই আমি এলাকার একজন কবি-রাজ কে ডেকে আনলাম। কবিরাজ এসে আমার স্ত্রী এর পায়ের দিকে তাকিয়েই আমাকে একটু আড়ালে ডাকে।

আর তার পর কী বললো সেটা তো আপনারা নিজেরাই শুনলেন। আমি কবিরাজ কে বললাম আপনি যা বলছেন তার প্রমান দিতে পারবেন তো? কবিরাজ আমাকে বললো প্রমান আমাকে দিতে হবে না প্রমান তুমি নিজেই পেয়ে যাবে। আমি বললাম কী করে? সে বললো তুমি তোমার স্ত্রীর কাছে তার পা দেখতে চাইবে। যদি সে সাধারণ কোন মানুষ হয় তাহলে সহজেই সে তার পা তোমাকে দেখাবে। আর যদি না দেখায় তাহলে বুঝবে সে কোন সাধারণ মানুষ নয় সে হলো একটা ভয়ানক আত্মা।

কারন আত্মাদের পা উল্টো থাকে। আমি কবিরাজ কে জিজ্ঞেস করলাম তার পেট ফুলে যাওয়ার কারন কী? উত্তরে সে বললো সে সত্যি মা হতে চলেছে। আমি অবাক হয়ে বললাম কিন্তু এটা কী করে সম্ভব? বিয়ের এক দিনের মধ্যে মা কী ভাবে হওয়া যায়? সে বললো এটার ব্যাখা আমার জানা নেই। আমি কবিরাজ কে আরো জিজ্ঞেস করলাম আচ্ছা আমি কী বিয়ে করেছি একটা আত্মা কে? কবিরাজ বললো না তুমি বিয়ে করেছো একটা মানুষ কেই। কিন্তু ওই আত্মা টা তোমার বিবাহিত স্ত্রী কে সরিয়ে তার জায়গাটা দখল করে আছে। কবিরাজ আমাকে জিজ্ঞেস করলো বিয়ের দিন রাস্তায় কোথাও বিয়ের গাড়ি থামিয়ে ছিলাম কী না? আমি তাকে বললাম জঙ্গলের ভিতরে বড় গাছটার নিচে এসে গাড়িটা নষ্ট হয়ে যায়।

তাই গাড়িটা সেখানে থামানো হয়েছিলো। আর আমি ও ড্রাইভার কে গাড়ি ঠিক করতে সাহায্য করেছিলাম। কবিরাজ আমাকে জানালো সেখানেই এই আত্বাটা তোমার স্ত্রী কে সরিয়ে তার জায়গা টা দখল করেছে। নিশ্চয়ই ওর কোন সুপ্ত কামনা বা বাসনা আছে। কবিরাজ এর কথা গুলো আমি কোন ভাবেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। তাই ভাবলাম নিজেই পরিক্ষা করবো আজ। আমি নীলার জন্য যে নুপুর জোড়া কিনে ছিলাম সে গুলো হাতে নিয়ে রাতে রুমে প্রবেশ করলাম। নীলা আমাকে দেখে একটু অবাক হলো।

আমি বললাম আপনার পা দুটো বের করেন তো? আমার কথা শুনে নীলা যেন আকাশ থেকে পরলো আর বললো পা কেনো? আমি বললাম আপনার জন্য নুপুর এনেছি আপনাকে নিজ হাতে পরিয়ে দেবো। নীলা আমতা আমতা করে বললো না না এখন পরাতে হবে না। আপনি টেবিলের উপর রেখে দিন আমি সকালে পরে নেবো। নীলার কথা শুনে এবার আমার সন্দেহ আরো গভির হলো। আমি মনে মনে বললাম এখন পা না দেখালেও রাতে যখন তুমি ঘুমিয়ে পরবে তখন আমি লুকিয়ে হলেও তোমার পা দেখবোই। আমাকে দেখতেই হবে ওই কবিরাজ যা বললো তা সত্যি কী না? আমি আর নীলা ঘরের লাইট অফ করে শুয়ে পরলাম। ঠিক মধ্যরাতে আমি খেয়াল করলাম নীলা ঘুমিয়ে পরেছে। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম এবার নীলার পা টা দেখবো কবিরাজ যা বলেছে তা সত্যি কী না? কিন্তু সম্পুর্ন ঘর অন্ধকার ছিলো। যদি লাইট জ্বলাই তাহলে নীলার ঘুম ভেঙে যাবে। বাইরে স্পষ্ট চাঁদের আলো ছিলো।

আমি জানালাটা হালকা খুলে দিলাম। জানালা খুলার সাথে সাথেই এক টুকরো আলো এসে নীলার শরীরে পরলো। আর নীলার সম্পূর্ণ শরীর স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। এবার আমি নীলার পায়ের দিকে তাকাতেই আমার চোখ কপালে উঠে গেলো। সত্যি নীলার একটা পা উল্টো ছিলো। এমন অবস্থা দেখে আমার গলা শুকিয়ে যেতে থাকলো। পা দেখার পর পর ই আমার চোখ পরলো নীলার পেটের দিকে। আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি নীলার পেটের ভিতরে একটা বাচ্চা। কিন্তু এ বাচ্চা সাধারণ কোন বাচ্চা নয়। এই বাচ্চার শরীর পুরো লোমে আবৃত। অনেকটা শিম্পাঞ্জির মতো দেখতে😲

চলবে।
🌺
গল্পটা কাল্পনিক। তাই দয়া করে বাস্তবতার সাথে কেউ মেলাবেন না। গল্পের প্রতিটা পর্বেই থাকবে রহস্যা। আর প্রথম পর্বে রেসপন্স জরুরি। ফ্রেন্ডলিস্টে থাকতে হলে অবশ্যই লাইক কমেন্ট করবেন। সবাই চাইলেই পরবর্তী পর্ব আপলোড করা হবে। ☺️

#চন্দ্রার প্রতিশোধ
#পর্বঃ০১
#জুনায়েত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here