গুন্ডি বউয়ের ভালোবাসা পাঠ_৭

0
1100

#গুন্ডি_বউয়ের ভালোবাসা
#পাঠ_৭…

সকালে মোবাইলের আওয়াজে ঘুম ভাঙল ৷

এত সকালে আবার কে ফোন দিল ৷

নাম্বারটা না দেখেই রিসিভ করে
বললাম….
আপনি যাকে ফোন দিয়েছেন সে
এখন গভীর ঘুমে ব্যাস্ত আছে ৷
অনুগ্রহ করে কিছুক্ষন পরে ফোন দিয়েন ৷

কথাটি বলেই ফোনটা কেটে দিলাম ৷
ঘুম লেগে আসছিল তখনই আবার মোবাইল বেজে উঠল ৷

এবার নাম্বারটা দেখলাম, আরে গুন্ডিটা
ফোন দিয়েছে ৷ আমি এসব কি বলে
ফেলেছি ৷

ভয়ে ভয়ে ফোনটা রিসিভ করলাম ৷

মৌশি : অই আজকে না তর বিয়ে আর তুই
পরে পরে ঘুমাচ্ছিস ?

আমি< কার বিয়ে গো?

মৌশি : দেখ আজ আমায় রাগাস না ৷

আজ আমি রাগা রাগী করতে চাইছি না ৷

নিজেরভাল চাস তো তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠে যা।

আমি< আচ্ছা আচ্ছা ওঠছি এত রাগ
দেখানোর কি আছে ৷

মৌশি :হুম তাড়াতাড়ি ওঠ ৷

এই কথাটা বলেই ফোনটা কেটে দিল ৷

আমি বিছানা থেকে ওঠে ব্রাশ হাতে নিয়ে
ব্রাশ করতে করতে রুম থেকে বের হলাম ৷

রুম থেকে বের হতেই আম্মু সামনে পড়ল ৷

আম্মু< কিরে তুই এখন ওঠছিস ঘুম থেকে ?
আমি তো ভাবলাম তুই আরও আগেই ওঠে
গেছিস তাই তোকে ডাকলাম ও না ৷

তাড়াতাড়ি কর 10টা বেজে গেছে ৷

1টার সময় তোদের কনে বাড়ি যেতে হবে ৷

ওদিকে দেখ সবাই রেডি হওয়া শুরু করে
দিয়েছে ৷

আর তুই বর হয়েও কোনো খবর নাই ৷
কথায় আছে না…

যার বিয়ে তার নাম নাই
পাড়া পরশির ঘুম নাই ৷

আমি< আরে আম্মু যাচ্ছি তো এত
বকাবকি করার কি আছে ৷
……
বন্ধুরা সবাই আমাকে পান্জাবী পাজামা
পরাচ্ছে ৷

আমি< কিরে এত ভারী কেন এই পান্জাবী
এটা পড়ে আমাকে সারাদিন থাকতে হবে
নাকি?

সায়ান< হুমম রে মামু ৷ বুঝবি আজকে বিয়ে,,,,,
করা কত মজা লাগে ৷

আমার যখন বিয়ে হয়েছিল আমাকে
একেবারে মূর্তি বানিয়ে বসিয়ে রেখেছিল ৷

আম্মু এসে বলল, কিরে তোদের শেষ
হয়েছে কি?
এদিকে বরযাত্রীরা তো সবাই
বেড়িয়ে পরেছে ৷

সায়ান< জ্বি আন্টি শেষ ৷

আম্মু< তাহলে তাড়াতাড়ি আস ৷
….

আম্মু আব্বুকে সালাম করে কনের বাড়ি
যাওয়ার জন্য গাড়ীতে ওঠলাম ৷

হঠাৎ ইতু এসে বলল, এই তোমরা সরো
আমি সবুজ এর সাথে যাব (ইতু আমার
থেকে ছোট হলেও আমাকে সব সময় নাম
ধরেই ডাকে)।

ইতু সবাইকে সরিয়ে আমার পাশে চেপে
বসল ৷

আমি< এই ইতু তুই মেয়েদের গাড়ীতে
যাবি ৷
আমার গাড়ীতে কেন আসলি?

ইতু: না আমি তোমার সাথেই যাব ৷

আমি< আচ্ছা আমার সাথেই যাবি ৷ কিন্তু
আমার একটা শর্ত আছে ৷

ইতু: কি শর্ত ?
আমি< তুই বিয়ে বাড়িতে আমার থেকে দশ
হাত দূরে থাকবি?

ইতু: কিছুক্ষন কি যেন ভাবল ৷ তারপর
বলল….আচ্ছা ঠিক আছে৷

….
40মিনিট জার্নির পরে মৌশি দের বাড়িতে
আসলাম ৷

গাড়ীতে এসি থাকা শত্তেও আমি অনেক
ঘেমে গেছি ৷

কারণ গাড়ীতে ইতু আমাকে এমন ভাবে
চেপে বসেছিল যে আমি একটুও নাড়চাড়া
করতে পারছি না৷

….
অনেক্ষন ধরে একা একা বসে আছি ৷

সালার বন্ধুরা আমাকে একা ফেলে মেয়ে
পটাতে চলে গেছে ৷

কিছুক্ষন পর কাজী সাহেব এসে আমাকে
কবুল পড়িয়ে গেলেন ৷

তারপর সবাই এসে আমাকে কনের কাছে
মানে মৌশির কাছে নিয়ে গেল ৷

মৌশির কে কনে রূপে দেখে আমি আবারও
ক্রাশ খেলাম ৷

নতুন করে মৌশির প্রেমে পরলাম ৷
আমি হা করে মৌশির দিকে তাকিয়ে
থাকলাম ৷

মৌশি আর আমি সোফাতে
বসাছিলাম ৷
হঠাৎ মৌশি আমাকে কমরে
জুরে একটা চিমঠি কাটল ৷
আর আমাকে
কানে কানে বলল এমন হা করে কি দেখিস ৷
আমি মৌশির চিমঠি খেয়ে সবার সামনেই
জুরে চিৎকার দিয়ে উঠলাম ৷

মৌশির বান্ধবীরা বলল কি হল দুলাভাই
এত জুরে চিৎকার দিয়ে উঠলেন কেন?

আমি< না ম মানে পা পায়ে কি যেন কামর
দিল ৷

কনে বিদায়ের সময় মৌশির সেকি কান্না ৷
😭😭😭😭😭

ওর কান্না 😭😭😭দেখে আমার মনে হল এই রকম কাদতে আমি কাকে যেন দেখেছিলাম ৷

এই কান্না আমার অনেক পরিচিত মনে হল

মৌশির বাবা মৌশি কে আমার হাতে তুলে
দিলেন।

সারাটা রাস্তা কান্না 😭😭😭😭করতে করতে এসেছে মৌশি ৷

বাড়িতে আসার পর সবাই কনেকে নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়ল ৷

আমি যে বর তার কোনো খবরই নাই ৷

এমনকি আমার নিজের আম্মুও আমার
দিখে চেয়েও দেখল না সে তার নতুন
মেয়েকে নিয়ে ব্যাস্ত ৷

….
রাতে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে
কখন যে 11টা বেজে গেছে খেয়ালই করি
নাই ৷

আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাসর গড়ে
আমি যাব না ৷

অনেক ভয় করছে গুন্ডিটা কি যে করব ওর
পাশে গেলে ৷

তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি
অই রুমে কিছুতেই যাব না ৷

বন্ধুরা অনেক জুড়াজুড়ি করছে যে
তাড়াতাড়ি তর রুমে যা তর বউ একা একা
বসে আছে মনে হয় ৷

কিন্তু আমি জেদ ধরে বসে আছি যে আমি
বাসর গড়ে যাব না ৷

শেষ পর্যন্ত বন্ধুরা আর কোনো উপায়
না পেয়ে আমাকে সবাই ধরে তলে নিয়ে
যেতে লাগল ৷

আমি বললাম, আরে কি করছিস তরা নামা
আমাকে নামা আমি হেটেই যাব ৷

হেটে হেটে আমার রুমের দরজা পর্যন্ত
আসলাম ৷
কিন্তু ভিতরে যেতে ভয় করছে ৷

বন্ধুরা আমাকে দরজার সামনে দাড়িয়ে
থাকতে দেখে জুরে ধাক্কা দিয়ে রুমে ডুকিয়ে
বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে দিল ৷

আমার তো অবস্থা খারাপ হাত পা কাপছে ৷

দরজা ভিতর থেকে লাগিয়ে দিয়ে মৌশির দিকে তাকালাম।

মৌশি ইয়া বড় ঘুমটা দিয়ে মাথা নিচু করে
বসে আছে ৷

আমি ভয়ে ভয়ে মৌশির দিকে এগিয়ে
গেলাম ৷
মৌশি আমাকে অবাক করে দিয়ে বিছানা
থেকেওঠে এসে আমার পা ধরে সালাম করল ৷

আমি< এই এই কি করছ ওঠ ৷

মৌশি : স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর
বেহেশত ৷

তুমি রুমে আসতে এত দেরি করলে কেন?

মৌশির এ রকম ব্যাবহার দেখে আমি থ
হয়ে দাড়িয়ে রইলাম ৷

যে মেয়েটা আমাকে তুই তুই ছাড়া ডাকত না
আজ সেই মেয়েই আমাকে তুমি করে ডাকছে।

মৌশি : কি অবাক হলে তো ৷ তোমাকে
আমি বলেছিলাম না বিয়ের পরই বুঝতে
পারবে আমি কে ৷

আমার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখ তো
আমায় চিনতে পার কিনা?

আমি মৌশির দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে
থাকার পর আমার একটা সন্দেহ হল ৷

আমি মেয়েটাকে পিছন দিকে দাড় করিয়ে
ব্লাউজের হুক খুলতে লাগলাম ৷

(খারাপ কিছু ভাববেন না এখানেও রহস্য আছে)

একটা হুক খুলার পর অনেক বড় একটা শক খেলাম ৷

আমি< জান্নাত তুই???????

#চলবে.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here