গোধূলী_বেলার_স্মৃতি (Unexpected Story) পর্ব- ১৫

0
3312

গোধূলী_বেলার_স্মৃতি (Unexpected Story)
পর্ব- ১৫
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
—” আমার লাইফ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার কিংবা চর্চা করার অধিকার আমি আপনাকে কবে থেকে দেওয়া শুরু করলাম। তাতে তো আমার ঠিক মনে পড়ছে নাহ। ” কথাটা বলে’ই রুদ্রিক পকেটে হাত ঢুকিয়ে ড্রইং রুমে বসে গেলো। রুদ্রিককে দেখে আফজাল শেখ উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,
“রুদ্রিক তুমি আমাকে যত-ই’ ঘৃণা না করো, কিন্তু একটা কথা তো মানবে আমি তোমার জন্মদাত্রি পিতা। তোমার লাইফের কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার রাইট আমারও আছে।
রুদ্রিক হাঁসলো। যাকে বলে বিদ্রুপ হাঁসি।

অন্যদিকে,

আমি ছুটকির পাশে বসে মাকে ডেকে বললাম,

” মা ক্ষিদে পেয়েছে। তাড়াতাড়ি খেতে দাও।

মা রান্নাঘর থেকে খাবার এনে টেবিলে সাঁজিয়ে রেখে বাবাকে ডাক দিলেন। বাবা এসে খাবার টেবিলে বসে পড়লেন। বাবা শুধু বার বার খাবার নাড়ছেন হয়তো কিছু বলতে চাইছেন কিন্তু বলতে গিয়েও বলতে পারছেন নাহ। বাবার অবস্হা বুঝতে পেরে আমি বললাম,

“বাবা কিছু বলবে?

বাবা এইবার গলাটা পরিষ্কার করে বললেন,

” আসলে তোমার বিয়ে নিয়ে কথাটা বলতে চেয়েছিলাম। ”

—-“কিন্তু বাবা! ”

আমার কথার মাঝে-ই’ বাবা বললেন,
—-“আমি জানি তুমি কী বলবে। তুমি এখন রেডি নয় কিন্তু মা একটা ব্যাপার ভেবে দেখো,তোমার তিন তিনবার বিয়ে ভেঙেছে। পাড়া-প্রতিবেশি নানান কথা রটাচ্ছে। এদের এছাড়া তো আর কোনো কাজ নেই। তাই আমি চাইছিলাম খুব তাড়াতাড়ি তোমার সাথে যোগ্য এক পাত্রের সাথে বিয়ে দিতে। ”

আমি মাথা নিচু করে-ই’ বলি,
“বাবা সত্যি আমি এখন এইসব এর জন্যে রেডি নই।”

বাবা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,

“তোমার কী কাউকে পছন্দ মা? ”

বাবার কথা শুনে আমার চোখের সামনে ‘ছোট সাহেবের ‘ মুখখানা ভেসে উঠে।

“আমার কাউকে পছন্দ নয় বাবা কিন্তু আমি এখন এইসব বিষয় কিন্তু প্রস্তুত নই। আমি এখন পড়াশোনায় কিছুটা সিরিয়াস হতে চাই। ”

কথাটা বলে আমি হাত টা ধুয়ে উঠে চলে গেলাম। এইসব বিয়ের কথা শুনলে সত্যি বিরক্তি ছাড়া আর কিচ্ছু লাগেনা।

কাজল চলে যেতেই কাজলের মা কাজলের বাবার কাছে গিয়ে বললেন,

“কাজল যখন বলছে বাদ দাও নাহ।”

কাজলের বাবা বললেন,

“আমি কাজলের বাবা। ওর খারাপ চাইবো নাহ।
যোগ্য পাত্রের সন্ধান পেয়েছি আমাদের মেয়েকে ভালো রাখবে। এইবার সেই যোগ্য পাত্রের সাথে আমার মেয়েকে বিয়ে দিয়ে পাড়া-প্রতিবেশীদের দেখিয়ে দিবো। তাছাড়া সেই পাত্রকে দেখলে তোমার মেয়ে মানা করতে পারবে নাহ বরং আরো খুশি হবে।”

কাজলের মা কিছুক্ষন ভেবে বললেন,

“তুমি আবার ওর কথা বলছো না তো?”

কাজলের বাবা রহস্যময়ী হাঁসি হাঁসলেন।

অন্যদিকে,
হাঁসের মাঝেই রুদ্রিক চোখ-মুখ শক্ত করে বলল,

” মিঃ আফজাল শেখ আমার জীবনের থেকে অধিকারবোধ, সেই ১৫ বছর আগেই হাঁরিয়ে ফেলেছেন। আপনার মতো ঘৃণীত লোকের ছেলের পরিচয় নিয়ে আমাকে সমাজের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এইটাই সব থেকে বড় লজ্জাজনক ব্যাপার আমার কাছে। আপনার থেকে বোধহয় সবথেকে বেশি ঘৃণা আমি কাউকে করিনা। হুম কাউকে করিনা। ”

রুদ্রিক খানিক্টা চিৎকারের সুরেই কথাগুলো বলছিলো। রাগে তার নাক লাল হয়ে গিয়েছে।
রুদ্রিকের চিৎকার শুনে জেসমিন শেখ, সিথি ও দিয়া নীচে নেমে আসে।

আফজাল শেখ এইবার চুপ থাকতে পারলেন নাহ। তিনি বলে উঠলেন,

“আমাকে ঘৃণা ঠিক আছে। কিন্তু যার জন্যে তুমি আমাকে ঘৃনা করো সে ঠিক কী কী করেছিলো সে সম্পর্কে তোমার কোনো ধারণা আছে? ”

রুদ্রিক বলে উঠে,
“আফজাল শেখ মুখ সামলে কথা বলুন। আপনার কার সম্পর্কে কী বলছেন?”

—–“আমি যা বলছি তা সবকিছুই সত্যি। জানতে চাও সেসব সত্য? ”

রুদ্রিক কড়া জবাব দিয়ে বলে,

“বলুন আমিও শুনতে চাই আপনার সেই সত্য। বলার সাহস আছে আপনার? ”

আফজাল শেখের কিছু বলতে যাবে তার আগেই, জেসমিন শেখ উনার হাত ধরে কিছুটা আস্তে বললেন,

“আপনি এইসব কী বলছেন? আচ্ছা ও না হয় অবুঝ। তাই বলে আপনি এইসব কী শুরু করেছো?”

ইশানী শেখ ভাবছেন এইবার আর চুপ করে থাকা যাবে নাহ। রুদ্রিককে থামাতে হবে। নাহলে অনেক-কিছু’ই হাতের বাইরে চলে যাবে
কফির কাপ উপরে রেখে। ইশানি শেখ রুদ্রিকের হাত ধরে বলে,
“রুদ্রিক আমার বাচ্ছাটা! এইসব কথা এখন বাদ দাও। এইসব কথা বলে এখন কী লাভ বলো?”

—–“কিন্তু পিপি আগে উনাকে আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে বলো। উনি যে এত্তো বড় বড় কথা বললেন তার কী উত্তর আছে উনার কাছে?”

—–“এইসব কথা অপ্রাসঙ্গিক। তোমাকে দেখে টায়ার্ড লাগছে রুদ্রিক। আপতত তুমি নিজের ঘরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও।”

ইশানি শেখের কথা শুনে রুদ্রিক দমে গিয়ে বলল,

“ঠিক আছে পিপি আমি যাচ্ছি,কিন্তু উনাকে এই কথাটা বলে দিও উনি যেনো কখনো আমার লাইফে ইন্টারফেয়ার না করেন। ”
কথাটা বলেই, রুদ্রিক ফ্রেশ হতে চলে গেলো।

রুদ্রিক চলে যেতেই দিয়া যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচলো।
দিয়া। সিথিও শুকনো ঢুক গিলে দিয়ার কানে ফিসফিস করপ বলল,

“বাড়িতে প্রত্যেকটা দিন একটা না একটা ব্যাপার নিয়ে ড্যাড আর ভাইয়ুর মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকবে।”

দিয়াও ফিসফিস করে বলে,
“এইসব বিষয়ে আমাদের আপাতত না ঢুকা-ই’ ভালো।আমি ভাই হেব্বি রিলাক্স ঘরে গিয়ে, টুক করে একটা সেল্ফি তুলে নিবো। ”

সিথি মুখ বেঁকায়। তখনি সিথির ফোন বেজে উঠে।
সাদির মেসেজ–

“কালকে যে নোটস গুলো কম্পলিট করতে বলেছিলাম। করেছো? না করলেও এখুনি করে ফেলো কোনো ফাঁকিবাজি যেনো না হয়। ”
সিথি মেসেজ টা পড়ে বিড়বিড় করে বলল,

“ভাইয়ু ঠিক-ই’ বলে আস্ত একটা পড়ুয়া। শুধু পড়ুয়াও নাহ মাস্টারমশাই ও। সারাদিন শুধু পড়া আর পড়া। আমাকে এখন পড়া অত্যাচার সহ্য করতে হবে দূর। ”

দিয়া ভ্রু কুচকে বলে,

“কি এতো বিড়বিড় করছিস বলতো? ”

সিথি বিরক্তির সুরে বলল,
“কিচ্ছু নাহ। ”

কথাটা বলে সিথি উপরে চলে গেলো।

_____ঘরে ঢুকে আমার কেনো যেনো একটিবার ইচ্ছে হলো ছোট সাহেবকে কল করতে। কি মনে করে যেনো আমি উনার নাম্বারে ফোন দিলাম কিন্তু হুট করে আমার ফোনটা পড়ে গেলো। যাহ বাবা ফোনটার অবস্হা তো খারাপ।

নিতিয়া বার বার কাজলকে ফোন করে যাচ্ছে কিন্তু ফোন ধরছেই। নিতিয়া হতাশার সুরে বলল,

“কাজল ফোন ধরছে নাহ এখন কী হবে? আমরা যে পরশু আসছি। তা ওকে কীভাবে জানাবো ভাইয়া? ”

নিতিয়ার কথা শুনে কেউ মুচকি হেঁসে বলে,

“ভালো হয়েছে কাজল ধরেনি। পরশুদিন আমরা যখন কাজলের সামনে উপস্হিত হবো। তখন কাজল শুধু হা হয়ে থাকবে। ”

নিতিয়াও তাল মিলিয়ে বলে,

“হ্যা ভাইয়া এমনভাবে উপস্হিত হবো। কজাল ভাবতেও পারবে নাহ। ”

_______রুদ্রিক নিজের রুমে কিছু ফাইল চেক করছে। তখনি কেউ তাকে ফোন করে। রুদ্রিক ফোন তুলে বলে,

“ইয়েস স্যার!”

————-

রুদ্রিক হেঁসে বলল,

“জ্বী স্যার ডোন্ট ওয়ারি আমি সব প্যাপার রেডি করে ফেলবো। ”

সিথি রুদ্রিকের রুমের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলো। রুদ্রিকের কথা কানে ভাঁসতেই সিথি সেখানে দাঁড়িয়ে যায়। সিথি আপনমনে বলতে থাকে,
“ভাইয়া ঠিক কাকে স্যার বললো? আর কী এমন ফাইল চেক করছে? নাহ ব্যাপারটা কাজলের সাথে শেয়ার করতে হবে। ”

______আজকে আমি খুব তাড়াতাড়ি-ই’ ভার্সিটি চলে এসেছে। সকাল ৮ বাজে। লাইব্রেরি পুরো ফাঁকা। আমি প্রথমে লাইব্রেরিতে ঢুকে-ই’ কিছু বই কালেক্ট করতে এসেছিলাম। বরাবরেরে মতো এইবার ও বইগুলো সব থেকে উপরের তাঁকে। ভাগ্য খারাপ হলে যা হয় আর কি। ‘আল্লাহর ‘নাম পড়ে তাড়াতাড়ি
একটা চেয়ার নিয়ে উঠে দাঁড়ালাম। আগের মতো পরিস্হিতিতে যেনো না পড়তে হয় কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে এইবার ও পা পিছলে পড়ে যেতে নিলে খপ করে নিজের চোখ জোড়া বন্ধ করলাম। এইবার কোমড় নিশ্চিত যাবে। কিন্তু পড়লাম নাহ। আমি চোখ খুলে তাঁকিয়ে দেখি, ছোট সাহেব আমার কোমড় চেপে ধরে আছেন। আমি যেনো কিছু বলার শক্তি হাঁরিয়ে ফেললাম মুহুর্তে। উনি আমাকে কোলে নিয়ে,

চলবে…..

বাকীটা আগামী পর্বে…

ইস আসলে মন খালি উড়ু উড়ু করে 🥵লিখতে মন চায়না। তবুও লিখে ফেললাম। আর গল্পে রহস্য যখন দিয়েছি।বরাবরের মতো সময় এলে,সমাধান ও করে দিবো। এতো কাস্ট করে লিখেছি কমেন্ত করে দিয়েন🌚

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here