১০ কেজি ওজনের লেহেঙ্গা উচু করে দৌড়াচ্ছি। পিছনে কালো পোশাক পরা লোকগুলো আসছে। আজ যেই করেই হোক আমাকে পালাতে হবে নাহলে আমার জীবনের সব থেকে বড়ো ভুল হবে। দৌড়াতে দৌড়াতে একসময় অনেকগুলো গাড়ি দেখি সেখানের একটা গাড়ির পিছনে লুকিয়ে যাই । হালকা মুখ বের করে দেখি লোকগুলো আছে কি না তখন হটাৎ মনে হলো কেউ আমার কাঁধে হাত রাখছে । ভয়ে ভয়ে পিছনে তাকিয়ে আমার আত্মা উরে গেছে। ঠাস করে আমার গালে চর পরলো।মনে হয় গালের একটা দাঁত পরে গেছে। গালে হাত দিয়ে সামনে থাকা ব্যাক্তির দিকে তাকিয়ে আছে।
রেহান: তুমি কি ভেবেছিলে সুইটহার্ট এতো সহজে আপনার চোখ ফাঁকি দিয়ে চলে আসবে সেটা তো হবে না
কথাটা বলে আমাকে কাধে তুলে হাঁটা ধরলো।গাড়িতে বসিয়ে আমাকে নিজের পাশে বসিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
(আসুন পরিচিত হয়ে নি আমি রিহা চৌধুরী ।আম্মু নেই বাবা আছে আর সৎমা আছে আর যিনি আমাকে মারলেন সে এই দেশের নাম করা বিজনেসম্যান রেহান চৌধূরী। বাকিটা গল্প পড়ে জানতে পারবেন )
গাড়িটা অবাব সেই জায়গায় থামলো যেখান থেকে আমি পালিয়েছিলাম। রেহান আবার আমাকে কাধে তুলে নিলো।
রিহা : ছাড়ুন ছাড়ুন বলছি (লাফাতে লাফাতে)
রেহান: দেখো আর একবার লাফালে ফল তোমার জন্য ভালো হবে না বলে দিলাম এমনটেই তুমি আমার কত টাইম নষ্ট করে দিছো
রিহা : আপনার তো টাইম নষ্ট পছন্দ না আমাকে ছেড়ে দিন আমি বাসায় যাবো (নেকা কান্না করে)
রেহান কোনো কথা বলে না রিহা তো বক বক করে যাচ্ছে। রেহান রিহাকে সোফায় বসিয়ে নিজের তার পাশে বসে।
রিহা চারিদিক তাকিয়ে দেখে ওর সৎমা আর ওর আব্বু সহ আরো অনেকে আছে।
রিহা: পাপা এই গুন্ডা কে বলো আমায় যেতে দিতে।
রিহার আব্বু অন্য দিকে মুখ করে।
রিহার সৎ মা : আমাদের মানসম্মান সব ডুবিয়ে দিয়ে আবার নেকা কান্না হচ্ছে।
রিহা কিছু না বলে শুধু ভেংচি কাটে।
রেহান : ওতো কথার দরকার নেই বিয়ে শুরু করো।
রিহা: কিসের বিয়ে আমি আপনার মত গ্যাংস্টার কে বিয়ে করবো না কিছুতেই না।
রেহান : কাজী সাহেব
রেহান এর কথায় কাজী সামনে আসে। তার মুখ দেখে বুঝা যাচ্ছে কত চাপে তাকে রেখেছে।
রিহা: পাপা প্লিজ
আফজাল: মামনি বিয়ে করে নাও এমনি তো আমাদের মানসম্মান ডুবিয়ে চলে গিয়েছিলে এখন বিয়েটা করে নাও। (রিহার আব্বু)
রিহা: পাপা প্লিজ
রেহান : কাজী সাহেব শুরু করেন
রিহা : আরে কি শুরু করবে আমি বিয়ে করবো না কিছুতেই না
নীলিমা : দেখেছ মেয়ের কি তেজ সব তোমার ভালোবাসার জন্য।এই মেয়েকে আমার আগে থেকে ঠিক মনে হতো না (রিহার সৎমা )
রিহা : i also hate u (মুখ ভেঙিয়ে)
আফজাল: রিহা(জোরে)
রিহা: what আমি জানি আমার নাম রিহা ওতো বলার কি আছে
আফজাল : উনি তোমার আম্মু ঠিক ভাবে কথা বলো
রিহা : আমি কি বললাম she told me that she don’t like me and i also told her i hate her
কাজী: বলছি বিয়েটা কি হবে না মানে অনেক রাত হয়ে গেছে তো
রেহান কিছু বলতে যাবে তার আগে রিহা বলে।
রিহা : কিসের বিয়ে কোনো বিয়ে হবে না আপনি চলে যান
আফজাল : রিহা
রিহা : পাপা আমি এই লোকটাকে বিয়ে করবো না মরে গেলেও না
কথাটা বলে রিহা চলে আসছিল তখনই রেহান ওর হাত ধরে ঘরে নিয়ে যায়
রিহা : আরে হচ্ছে কি ছাড়ুন এটা কোন ধরনের গুন্ডামি (হাত ছাড়াতে)
রেহান কোনো কথা না বলে রিহাকে ঘরে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।
রিহা : আপনি দরজা বন্ধ করলেন কেনো খুলুন খুলুন বলছি
রেহান রিহার মুখ চেপে ধরে।
রেহান : চুপ আর একটা কথা না অনেকক্ষণ ধরে তোমার কথা শুনছি আর একটা কথা বললে তোমার এক দিন কি আমার একদিন এমনিতেই তোমার উপর অনেক রাগ আমাকে আর খারাপ হতে বাধ্য করো না
রিহা হাত সরিয়ে বলে
রিহা : কি করবেন আপনি কি করার ক্ষমতা আছে খুব জোর হলে মারবেন কাটবেন এই তো আপনাকে বিয়ে করার থেকে মরে যাওয়া ভালো।
রেহান : খুব মরার সখ তাইনা ওকে তোমার ইচ্ছা আমি পূরণ করব কিন্ত এতো তাড়াতাড়ি তো না সুইটহার্ট আস্তে আস্তে। এখন আমার কথা মত কাজ করো নাহলে
রিহা: নাহলে কি আবার গুন্ডামি শুরু করবেন আপনি পারেন তো ওটাই করতে আপনার মত #গ্যাংস্টার কে বিয়ে করার চেয়ে মরা ভালো।
রেহান : হা গ্যাংস্টার আমি আর এই গ্যাংস্টার কে নিয়ে তোমায় সারা জিবন থাকতে হবে
রিহা : কিছুতেই না
রেহান : ভালো ভাবে বলছি রাজি হয়ে যাও নাহলে তোমার আব্বু (বলে ডেভিল স্মাইল দেয়)
রিহা রেহান এর কলার ধরে।
রিহা : আপনি আমার আব্বুর কিছু করলে আপনাকে আমি শেষ করে ফেলবো
রেহান : আমি তো চাই তুমি আমাকে শেষ করে ফেলো তোমার প্রেমের আগুনে জ্বালিয়ে পুরে শেষ করে দাও ।মরতে চাই তোমার প্রেমের আগুনে
রিহা রেহান কে ছেরে দূরে সরে দাড়ায়।
রিহা : আপনার মত অমানুষ আমি জীবনেও দেখিনি যে নিজের জন্য অন্যকে বিপদে ফেলতে পারে ।
রেহান : #গাংস্টারা সব পারে এখন চলো।
রেহান রিহার হাত ধরে বাইরে নিয়ে এসে সোফায় বসায়।
রেহান ‘ কাজী সাহেব
কাজী : জী সব শেষ
প্রথমে রেহান সই করে পরে রিহাকে দিকে রিহা ওর আব্বুর দিকে তাকিয়ে সই করে দেয়।
এখন কবুল বলার পালা রেহান এর তো বলা শেষ রিহাকে বলতে বললে রিহা চুপ থাকে রেহান : কি হলো বলো(ধমক দিয়ে)
রিহা : কবুল বকুল কুকুল
রেহান : আমাদের কি বোকা মনে হয় ঠিক করে বলো নাহলে তোমার
রিহা : বলছি তো
রেহান চোখ রাঙায় রিহা কাদতে কাদতে বলে দেয়।
বিয়ে পড়ানো শেষ । রিহা তো ওর আব্বুকে ধরে কেদে যাচ্ছে
আফজাল : মারে কাদিস না আজ তুই ওকে ভুল বুঝছিস একদিন ঠিক তোর ভুল ভাঙবে
রিহা : তুমি আমার আব্বু না
কথাটা বলে রিহা গাড়িতে উঠে স্টার্ট দেয় । বিয়ের দিন কোনো মেয়ে নিজে গাড়ি চালিয়ে যায় সেটা রিহার দাড়ায় সম্ভব।
আফজাল : বাবা ও তো
রেহান : বাদ দিন আংকেল আপনি তো জানেন আপনার মেয়ে কেমন। ঠিক একটু পর চলে আসবে।
আফজাল : তাই যেনো হয় তুমি ওর খেয়াল রখো সবই তো জানো মেয়ে টা আমার
রেহান : আংকেল এখন থেকে ও আমার স্ত্রী ওর সব দায়িত্ব আমার আপনি নিশ্চিনে থাকুন আফজাল : হুম আমার মেয়ে স্ত্রী হলে আমাকে তো বাবা বলা যায়
রেহান : না তুমি তো আমার পাপাই
আফজাল : এখন ও মনে আছে
রেহান : কিছু ভুলিনি পাপাই সব মনে আছে আচ্ছা আমি এখন যাই দেখি ও কোথায় গেছে
আফজাল : নিজের খেয়াল রেখো রিহা কিন্ত
রেহান : জানি সব জানি
বলে ২জনে হাসতে লাগলো।
আফজাল রেহানকে বিদায় দিয়ে ঘরে আসে।
এদিকে রিহা একটা ফাঁকা জায়গায় গাড়ি পার্ক করে ব্রিজের উপর বসে আছে
রিহা : ধুর ছাই চলে তো আসলাম এখন যাবো কোথায়? ধুর বাবা এক কাজ করি রাইমা বাসায় যাই
রিহা ফোন করতে গেলে তখনই ওর ফোন রেহান এর কল আসে।
রিহা : এই লোক আবার কেনো ফোন করছে ধুর ওতো ভেবে কি হবে ফোন ধরলে তো জানতে পারবো
রিহা কল ধরতেই রেহান বলে
রেহান : ১০মিনিটের মধ্যে আমি তোমাকে বাসায় দেখতে চাই নাহলে পরে কি করবো সেটা তুমি ভালোই যানো
রিহা কিছু বলতে যাবে তার আগে রেহান কেটে দেয়।
রিহা : আজব তো আমার কথা তো শুনলো না কেমন মানুষ ১০মিনিটের মধ্যে দেখতে চায় কিন্ত আমি তো বাসা চিনি না কি করি
ভাবতে ভাবতেই রিহার ফোন মেসেজ আসে। রেহান ঠিকানা মেসেজ করে দিচ্ছে। রিহা আর কিছু না ভেবে টিকানা অনুযায়ী বাসায় ।
বাইরে থেকে একদম সাজানো দুর থেকে মনে হচ্ছে কোনো রাজপ্রসাদ।
রিহা : বাবা জীবনের সব টাকা মনে হয় বিয়ের পিছনে নষ্ট করছে কি সাজ । এতো সাজ কিসের জন্য বিয়ে ত করছে জোর করে হুই আমি একটা অবলা নারী (নেকা কান্না করে)
রিহা এসব ভাবতে ভাবতে গাড়ি থেকে নামে তখনই রেহান ওকে ভিতরে নিয়ে যায় । রিহা ভিতরে গিয়ে আরো অবাক বাইরের থেকে ভিতর আরো সুন্দর । রিহা ভিতরে ঢুকার সাথে সাথে রিহার উপর ফুলের পাপড়ি পরছে।
রেহান রিহাকে কোলে নিয়ে ভিতরে যায়। রিহা চমকে উঠে।
রিহা : আমার এইসব ভালো লাগছে না আমি কোথায় থাকবো সেটা বলে দিন
রেহান : ভালো না লাগলেও ও সহ্য করতে হবে এই সব আমি তোমার জন্য নিজে হাতে কষ্ট করে সাজিয়েছি ।
রিহা : আমি কি বলেছি আজব তো
রেহান কথা না বলে রিহাকে উপরে একটা রুমে নিয়ে যায় রুমটা গোলাপ ফুল দিয়ে সাজানো । রেহান রিহাকে নামিয়ে দিয়ে বাইরে যায়।
রিহা রুমটা ভালো করে দেখছে রুমটাতে রিহার কিছু ছবি আছে পুরু রুমটা গোলাপ ফুল দিয়ে সাজানো রুমের সাথে একটা বারান্দা আছে যেটা রিহার সব থেকে বেশি পছন্দের । রিহা সামনে এগুতে গেলে পরে যায়।
রিহা : উফফ এই এতো ভারী লেহেঙ্গা পরে কেউ থাকতে পারে
রিহা ক্যাবার্ড থেকে একটা ড্রেস বের করে washroom যায়।
রেহান বাইরে থেকে রুমে এসে দেখে রিহা চুল মুচ্চে। রেহান তো রিহাকে দেখে ধমকে দাড়ায় ।
চলবে
গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_১
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
(জানিনা কতটুকু ভালো লিখতে পারছি। লিখার কোনো ইচ্ছা ছিল না কিন্ত অনেক জনের জোর করাতে লিখছি রেসপন্স পেলে পরবর্তী পর্ব দেওয়া হবে )