গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_১১
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
রেহান : কিহলো বলো কোন ছেলে?
রিহা : বলে দেবো না থাক বলার দরকার নেই (মনেমনে)
রেহান : কি এতো ভাবছো (রিহার সামনে এসে)
রিহা : না কিছু না চলুন খাবেন
রেহান : হা কিন্ত তুমি এখানে কেনো ?
রিহা : আপনাকে ডাকতে আসছিলাম । এখন চলুন তো খুব খুদা লাগছে
রেহান কিছুক্ষণ সন্দেহ দৃষ্টিতে তাকিয়ে
রেহান : আচ্ছা চলো
রিহা : আস্ত খাটাস (বির বির করে)
রেহান : কি বললে ? (ভ্রু কুচকে)
রিহা : আপনার কানে এতো সমস্যা কাল ডক্টর দেখাবেন
দুইজনেই খাবার টেবিলে বসে খেতে লাগলো।
রেহান : রিহা
রিহা : জী
রেহান : কাল থেকে আমি একটু বেস্ত থাকবো তোমাকে তেমন টাইম দিতে পারবো না তুমি
আর কিছু বলতে না দিয়ে রিহা বললো
রিহা : আমি নিজের খেয়াল নিজে রাখতে পারি আর আপনাকে চিন্তা করতে হবে না আমার ইস্কুটি নিয়ে আসছি ওটাই করে আমি যেতে পারব আপনাকে ওতো ভাবতে হবে না আর আমার কাছে নিজের কলারশিপ এর কিছু টাকা আছে তাই দিয়ে চলে যাবে
রেহান : শেষ ?
রিহা : কি
রেহান : লেকচার দেওয়া শেষ তাহলে এবার আমি বলি তুমি কি ভাবছো অন্য স্বামীদের মত আমি তোমাকে টাইম দেবো নিজের সাথে মানিয়ে নিতে বা তোমাকে তোমার ইচ্ছায় চলতে দেবো তাহলে তুমি ভুল আমি তেমন কিছুই করবো না নিজের জিনিস কিভাবে নিজের কাছে রাখতে হয় সেটা এই রেহান চৌধুরী খুব ভালো করে জানে বুঝেছ আর আমি তোমার একাউন্ট এ টাকা পাঠিয়ে দিয়েছি সেটাই খরচ করবে আমার কথার নর চর হলে তোমার জন্য সেটা ভালো হবে না আজকে যা করেছো সেটা দ্বিতীয় দিন যেনো না হয়
কথাটা বলে রেহান হাত ধুয়ে উঠে যায়
রিহা : এতো সরাসরি হুমকি । আমিও কম কিসে দেখছি মজা
রিহা হাত ধুয়ে উপরে গিয়ে দেখে রেহান চুল ঠিক করছে রিহা রেহান এর কলার ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে
রিহা : কি বলছিলেন আমাকে হুমকি দিলেন এতো সাহস কিছু বলিনা বলে দুর্বল ভাববেন না
রিহার এমন কাজে রেহান অবাক
রেহান : রিহা কি করছো ছার
রিহা : না ছাড়বো না আমাকে হুমকি কেনো দিলি তোর এত বরো সাহস তুই জানিস না আমি কি করতে পারি
রেহান : রিহা তুমি আমার সাথে তুই করে কথা বলছো (রেগে )
রিহা : হা বলছি বেশ করেছি আমার জিবন তুই শেষ করে দিচ্ছিস সব সময় নিজের হুকুম আমার উপর চাপিয়ে দিস কেন রে আমি কি তোর কেনা গোলাম আমি এই বাড়ি থাকবো না কিছুতেই না আমাকে অন্য কোথাও রেখে আয়
রেহান : রিহা আমার কিন্ত মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে
রিহা : তো আমি কি করবো নাচবো (কলার আরো শক্ত করে ধরে) আমার জিবন এমন উল্টাপাল্টা কেনো করে দিলি বল কি ক্ষতি করেছি আমি তোর
রেহান এর আর সহ্য হয়নি তাই রিহার হাত থেকে কলার ছাড়িয়ে ঠাসসসস
রিহা গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে
রেহান : এবার খুশি সেই থেকে উল্টা পাল্টা বলে যাচ্ছ কিছু বলছি না বলে
রিহা : তাই বলে এতো জোরে মারবেন আস্তে তো মারা যেতো এবার দেখেন আমি কি করি
কথাটা বলে রিহা হাতে সামনের ফুলদানি ছিল সেটা রেহান এর দিকে ছুড়ে মারে ভাগ্য ভালো রেহান সেটা ধরতে পারছে নাহলে আজ রেহান শেষ
রেহান : তুমি কি পাগল হইছো এটা যদি আমায় লেগে যেত তুমি বিধবা হতে
রিহা আবার কিছু একটা ছুড়ে মারে
রেহান: আরে না এটা তোমার লাগল আমি বিধবা হতাম এবার তো থামো
রিহা : আপনাকে আমি আজ শেষ করে দেবো
কথাটা বলে আবার হাতের কাছে বই ছিল সেটা ছুড়ে মারে
রেহান : রিহা have u gone lost your mind
রিহা : yes i lost my mind just for you
এবার আর কিছু পায়না তাই টেবিলের সামনে থেকে বডিলোসান ছুড়ে মারে
রেহান : রিহা প্লিজ stop this nooncess
রিহা : আমি নোন্সেস তাই না
আবার ছুড়ে মারে রেহান আর উপায় না পেয়ে ঘরের বাইরে যায় রিহা ও ওর পিছন পিছন যায় আর বাইরে তো আরো ফুলদানি রাখা সেগুলো ছুড়ে মারছে
রিহা অনেকটা হাপিয়ে গেছে তাই ফুলদানি হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছে আর জোড়ে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে
রেহান : রিহা প্লিজ কি শুরু করলে
রিহা কিছু না বলে ঘরে যেতে লাগে
রেহান : রিহা ঘরে যেও না (পিছন পিছন ডাকতে ডাকতে)
রিহা ঘরে গিয়ে জোরে চিৎকার করে
রিহা: আআআআআ
রেহান ছুটে যায়। গিয়ে দেখে রিহা ফ্লোরে পা ধরে বসে আছে
রেহান : কিহলো দেখি (রিহার পা ধরে)
রিহার হাত সরিয়ে দেখে সেখানে একটা কাঁচ ঢুকে গেছে। ঘরে সব কিছু ভেঙ্গে নিচে পড়ে আছে । রেহান রিহার দিকে একটা রাগী লুক দিলো রিহা করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ।
রেহান কোনো কথা না বলে কোলে তুলে খাটে বসিয়ে দেয়। রেহান আস্তে আস্তে কাচ বের করতে গেলে রিহা রেহান এর হাত চেপে ধরে
রেহান : চুপ (ধমক দিয়ে)
রিহা : না আপনি সরেন আমি পারবো
রেহান আর একটা চর বসিয়ে দেয়।
রেহান : অনেকক্ষণ ধরে পাগলামি দেখছি আর না নিজেকে কি ভাবো বাচ্চা তুমি সেই ছোটো বেলার অভ্যাস এখন ও রয়ে গেছে আমি কী সব সময় থাকবো তোমার সাথে (চিৎকার করে)
রিহা : কেনো তুমি কোথায় যাবে (আনমনে)
রেহান অবাক ছোটো বেলায় যখন রিহা এমন ভাংচুর করে কষ্ট পেত আর রেহান বকলে রিহা এমন কথা বলত ।
রেহান কিছুক্ষণ রিহার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আস্তে আস্তে কাচ বের করে ওষুধ লাগিয়ে দেয়। রিহা নিঃশব্দে কান্না করছে ঠোঁট ফুলিয়ে
রেহান রিহার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে । সভেমান্ট দিয়ে সব পরিষ্কার করায়।
রেহান রিহার পাশে বসে ছিল সব শেষ হলে এক গ্লাস দুধ এনে রিহাকে ওষুধ খাইয়ে দেয়।
রেহান : এখন চুপ চাপ শুয়ে থাকবে একটা কথা শুনলে তোমার একদিন কি আমার যতদিন
রিহা : তাহলে ২তো কথা বলি
রেহান হাসবে না রাগ করবে বুঝতে পারছে না
রেহান: রিহা চুপ করে ঘুমাও আর আমাকে একটু শান্তি দাও
রিহা চুপ করে শুয়ে থাকে রেহান শুতে শুতে বলে
রেহান : ছোটো রিহার থেকে বড়ো রিহাকে সামলানো অনেক কঠিন (বির বির করে)
রিহা : কিছু বললেন ?
রেহান : না
রেহান শুয়ে আছে কপালে হাত দিয়ে রিহা রেহান এর হাত ধরলো । রেহান কপাল থেকে হাত নামিয়ে দেখে রিহার ঠোঁট নাক লাল হয়ে গেছে কান্না কান্না করতে করতে
রেহান : কিহলো ব্যাথা করছে ?
মাথা নাড়িয়ে হা বুঝলো। রেহান রিহাকে মুনের বুকে এনে জড়িয়ে ধরে রিহাও কিছু বললো না
রেহান : ঠিক হয়ে যাবে (রেহান এর ও খুব কষ্ট হচ্ছে রিহাকে এভাবে দেখে ছোটো বেলা থেকে রিহার ছোটো থেকে ছোটো কষ্ট রেহান সহ্য করতে পারে না ) আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি তুমি ঘুমিয়ে পড়ো
রিহা : উহু
রেহান : কি?
রিহা : খুব ব্যাথা করছে সব আপনার জন্য আপনি আমাকে না রাগলে এমন হতো না আর এখন ও সরি ও বললেন না
রেহান : আচ্ছা বাবা সরি এখন ঘুমাও
রিহা আর কিছু বলল না রেহান এর বুকে ঘুমিয়ে পরলো আর রেহান মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে । ওর চোখে আজ ঘুম নেই ছোটো বেলা থেকে রিহার কিছু হলে রাতে জ্বর আসে আজ আসে কি কে জানে
সারারাত ওভাবে জেগে রিহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ।
সকালে রিহা ঘুম থেকে উঠে দেখে রেহান এর বুকে শুয়ে আছে
রিহা : হ্ন খাটাস আমায় কত কষ্ট দিচ্ছে আর তোকে বুঝাবো মজা (মনে মনে)
রিহার নড়াচড়া তে রেহান এর ঘুম ভেঙ্গে যায় ।
রেহান : এখন কেমন লাগছে ব্যাথা কি কুমেচে (অস্থির হয়ে)
রিহা শুধু রেহান কে দেখে যাচ্ছে ।
রেহান : কিহলো জ্বর আসছে (কপালে হাত দিয়ে) হা হালকা জ্বর আছে
রেহান উঠে রিহাকে কোলে তুলে নেয়।
রিহা : আমি একা যেতে পারবো
রেহান : সে আমি জানি এখন চুপ করে থাক
রেহান রিহাকে কোলে করে ফ্রেশ করিয়ে দেয়।
(অনেকের প্রশ্ন রেহান কেনো ডক্টর ডাকলো না । এমন টুকটাক কেটে যাওয়া যে কেউ নিজে ট্রিটমেন্ট করতে পারে রেহান ডাক্তারি একটু হলেও জানে । আমি নিজে না তেমন জানিনা কিন্ত নিজের কিছু হলে আমি নিজেই ওষুধ লিখে এনে খাই )
ফ্রেশ করিয়ে আবার খাটে বসিয়ে বলে
রেহান : কি খাবে ?
রিহা : আলুর পরোটা
রেহান : আচ্ছা তুমি বসো আমি আনছি
রেহান নিজে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা বানাতে গেলো।
রিহা ঘরে বসে বোরিং হচ্ছে তাই আস্তে আস্তে উঠে রান্না ঘরে যেতে নিলে রেহান ছুটে আসে
রেহান : তোমাকে বলেছিলাম না এখানে বসে থাকতে
রিহা : বোরিং লাগছিলো আর আমি যেতে পারবো
রেহান : চুপ (ধমক দিয়ে)
রিহা : আবার মারবেন নাকি (কিউট ফেস করে)
রিহার উপর রাগ করলেও রিহার কিউট ফেস দেখে আর রাগ করতে পারলো না । রিহাকে ধরে ধরে রান্না ঘরে টেবিলে বসিয়ে দিল।
রেহান রান্না করছে আর রিহা দেখছে ।
রেহান : অভাবে কি দেখছ খেয়ে ফেলবে নাকি ?
রিহা : বয়ে গেছে আপনাকে দেখতে
রেহান : জানি জানি আমার মত হ্যান্ডসাম ছেলেকে নিজের সামনে দেখে প্রেম জাগছে
রিহা : কচু জানেন (ভেংচি কেটে)
রেহান হেসে দিল ।
রান্না শেষে রেহান রিহাকে খাইয়ে দিচ্ছে তখনই কেউ কলিং বেল চাপলো
একজন সর্ভেমান্ট খুলে দিল।
রেহান : কে আসছে ?
লোকটা ভিতরে আসতে রিহার রাগ উঠে গেলো
রিহা : তুমি কেনো আসছো এখানে চলে যাও
রেহান : রিহা
রিহা : না উনি থাকবে না
চলবে