গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_২৩

গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_২৩
#নুসরাত_জাহান_অংকুর

রিহা অস্থির হয়ে পড়ে। রুশ আর অন্তরা একটু দূরে পরিবেশ দেখছে । রিহা ফোন দেয় কিন্ত রেহান কেটে দেয়

রেহান ফোন রেখে হকিস্টিক দিয়ে ছেলেগুলো মারতে লাগে।

অনি : রেহান ছেরে দে আমরা দেখছি
রেহান : মুখে টেপ দে যাতে চিৎকার করতে না পারে রিহার সাথে কথা বলার সময় ওদের চিৎকার রিহা শুনতে পায় এখন হাজার প্রশ্ন করবে
অনি : ওই কিছু একটা বল নাহলে বেচারি টেনশন করবে

রেহান ওদের থেকে একটু দূরে অন্য একটা রুমে গিয়ে রিহাকে ফোন দেয়। ফোন দেবার সাথে সাথে রিহা ধরে

রিহা : হেলো আপনি সেই সময় ফোন কেনো কেটে দিলেন আর ওটা কার চিৎকার ছিল আপনি ঠিক আছে তো আপনার কিছু হইনি তো (চিন্তিত হয়ে)
রেহান ….
রিহা : কিহলো বলেন
রেহান .
রিহা : হেলো আপনি ঠিক আছে তো

রিহা কথা বলেই যাচ্ছে রেহান স্তব্ধ হয়ে আছে রিহার এতো চিন্তা দেখে নিজেকে সামলে রেহান বলে

রেহান : আমি ঠিক আছি আর…
রিহা : তাহলে কথা বলছিলেন না কেনো ?
রেহান : তুমি যেই ভাবে প্রশ্ন করছো আমি কি করে বলবো
রিহা : হুম
রেহান : আসলে আমি রাস্তায় দাড়িয়ে কথা বলছিলাম তখনই একটা অ্যাকসিডেন্ট হয় তার চিৎকার ছিল।
রিহা : কি বলেন আপনি ঠিক তো?
রেহান : আপনার দোয়ায় ঠিক আছি
রিহা : অনেক কেটেছে নাকি ?
রেহান : না তেমন বড়ো কিছু না তুমি বলো তোমার কি খবর ? কোনো সমস্যা হচ্ছে না তো
রিহা : না (মন খারাপ করে)
রেহান : কিহলো ?
রিহা : কিছু না
রেহান : আমায় মিস করছো আসবো ?
রিহা : সত্যি (খুশিতে)
রেহান : বাবাহ ম্যাডাম কি খুশি আমি যদি আসি তাহলে কিন্ত তোমায় অনেক জ্বালা সহ্য করতে হবে ভেবে দেখো
রিহা : ধুর আমি রাখছি
রেহান : হা হা হা আচ্ছা
রিহা : এই একদম হাসবেন না দাত পরে যাবে
রেহান: আমার দাত ওতো দূর্বল না
রিহা : হ্ন (ভেংচি কেটে)

কিছুক্ষণ দুইজনের মাঝে নিরবতা । নিরবতা ভেঙ্গে রেহান বলে।

রেহান : যাওয়ার জন্য তো খুব নাচানাচি করছিলে তাহলে এখন ভালো কেনো লাগছে না হুম ?
রিহা : কে বলেছে ভালো লাগছে না খুব ভালো লাগছে এত সুন্দর জায়গা ভালো না লেগে পারে
রেহান : তাহলে মন খারাপ কেনো ?
রিহা: তেমন কিছু না সবাই এতো ইঞ্জয় করছি আপনি নেই তাই একটু খারাপ লাগছে
রেহান : ওহ বুঝলাম
রিহা : কচু বুঝছেন । আচ্ছা আপনি কিসের এত কাজে বেস্ত?
রেহান : কেনো তুমি জানো না
রিহা : জানি তো তবে কোনটা সেটা বুঝতে পারছি না অফিসের কাজ নাকি @গ্যাংস্টার গিরি
রেহান : যেদিন আমাকে বুঝতে পারবে সেদিন এই সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে
রিহা : লাগবে না আমার উত্তর বেশি বুঝা ভালো না
রেহান : ওকে ম্যাডাম আমি কাজ শেষ করে তারপর আসবো কেমন
রিহা: হুম
রেহান : টাটা
রিহা : টাটা

রিহা কল কেটে অন্তরা দের কাছে যায়
অন্তরা : এখন বাসায় যাওয়া দরকার রাত হতে গেলো
রিহা : হুম চলো

অন্তরা রিহা আর রুশ বাসায় গেলে মাইশা চৌধুরী দাড়িয়ে আছেন রিহাকে টেনে রুমে নিয়ে যায়।

মাইসা চৌধুরী : কোথায় ছিলে তুমি জানো আমার কত টেনশন হচ্ছিল রেহান বার বার বলে দিয়েছে তোকে দেখে রাখতে আমায় রেখে কেনো গিয়েছিলে আর একটু বলে গেলে কি সমস্যা হতো এতো টেনশনে তো থাকতে হতো না এই বয়সে এসে এতো টেনশন ভালো লাগে না (খাটে বসে)

রিহা আর রুশ অবাক । একটু বলে যায়নি তাই এত রাগ । রিহা ও কম যায়না ধির পায়ে মাইশা চৌধুরীর কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরে

মাইশা চৌধুরী : ছার যেখানে ছিলি সেখানে যা রিহা: না আমার মামনি তো এখানে আমি অন্য কোথাও কেনো যাবো (মিষ্টি হেসে)
মাইশা চৌধুরী : হইছে আর ঢং করতে হবে না আমি এখন বুড়ো হয়ে গেছি আমার কথার দাম তো কারোর কাছে নেই
রিহা : কে বলছে তুমি বুড়ি তুমি তো আমার থেকে সুন্দর এখন যদি তোমায় সাজিয়ে বসায় ছেলেরা তো পাগল হয়ে যাবে ।(দুষ্টুমি করে)
মাইশা চৌধুরী : চুপ কর আমি তোর শাশুড়ি সেটা কি ভুলে গেছিস
রিহা : কেনো যাবো তোমাকে যা হট দেখতে জানিনা ইয়াং বয়সে কেমনে পাগল করছো
মাইশা চৌধুরী : মার লাগাবো কিন্ত (হেসে)
রিহা : হি হি হি

রুশ পাশে বসে বলে।
রুশ : রাজি নাকি ?
মাইশা চৌধুরী : কিসে?
রুশ : বিয়ে করতে (চোখ মেরে)
মাইশা চৌধুরী : তোরা দুটো মার খাবি আজকে
রিহা : না মামনি ত শুধু আমার পাপাই এর বউ তাই না মামনি

পাপাই শুনে মাইসা চৌধুরী অবাক
মাইশা চৌধুরী : পাপাই?
রিহা : কে পাপাই ? কোথাও পাপাই উফফ মাথা ব্যাথা করছে কেনো (মাথা চেপে ধরে)

মাইশা চৌধুরী বুঝতে পেরে বলে কেউ না চল খাবি চল
রুশ : হা রিহা চল পেটে হাত লাফালাফি করছে

রুশ এর কথা শুনে রিহা হেসে দেয়।

সবাই মিলে খাওয়া শেষ করে এক sathe শুয়ে পড়ে।

সবাই মিলে শুয়ে শুয়ে গল্প করছে কিন্ত সব কিছুর মাঝে রিহা রেহান কে মিস করছে ওর তো ঘুম আসছে না শুধু এপাশ ওপাশ করছে মাইশা চৌধুরী বুঝতে পারে রিহার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। অন্তরা রুশ আর রিহা এক সাথে ঘুমিয়েছে মাইশা আর রাইসা নিচে শুয়ে আছে। পুরনো জামানার ঘর বলে বেশি বড়ো খাট না তবে যতেষ্ট বড়ো তিনজনের বেশি হবে না তাও চিকন দেখে । মাইশা চৌধুরী আর রাইসা খান গল্প করছে অনেক দিন পর দেখা হলে যায় হয়

এদিকে
রেহান বারান্দায় দাড়িয়ে আছে ওর তো কিছুতেই ঘুম আসছে না এই কইদিন রিহা নেশা হয়ে গেছে রিহাকে ছাড়া রেহান এর চলা খুব কষ্টের । অনি রেহান এর গাধে হাত দেয়।

রেহান : ঘুমালি নি ?
অনি: তুইও তো
রেহান : ঘুম আসছে না
অনি : রিহা কে মিস করছিস ?
রেহান : নেশা ধরে গেছে যে নেশা কোনো কিছু দিয়ে ছাড়াবে না
অনি : রিহা সুস্থ হয়ে উঠবে না
রেহান : রিহাকে যদি পুরানো কোনো কথা মনে করানোর চেষ্টা করা হয় তাহলে রিহার ক্ষতি হতে পারে (দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে )
অনি : সময় মানুষকে কি বানিয়ে দেয়
রেহান : খুব কষ্ট হয় যখন রিহার আগের কথা ভাবি জানিস সারাদিন বাড়ি ছুটে বেরাত কেউ সামলাতে পারতো না আর ওর সব আবদার আমায় ঘিরে আমার আব্বুকে ও পাপাই বলে ডাকতো । মাঝে মাঝে যখন আমি রেগে বকা দিতাম কাদত না কিন্ত ঠোঁট ফুলিয়ে চোখ লাল করতো তাই দেখে আমার মন গলে যেতে আর ওর চকোলেট যদি কেউ ধরেছে বাড়ি মাথায় করতো (হেসে)

অনি চুপ করে রেহান এর কথা শুনছে । রেহান হেসে আবার বলা শুরু করলো

রেহান : ছোটো থেকে খুব জেদী ছিল আর যা চাবে দিতেই হবে আমাদের পরিবারের মনি ছিল ও । বাড়ির সবাই খুব ভালোবাসতো ।
অনি : তোরা এক বাড়িতে থাকটি ?
রেহান: হুম ওর আব্বু আম্মু আমার আব্বু আম্মু আর আমার দাদু । আমাদের যখন আকদ করায় তখন আমায় বলেছিলো ও কবুল বলবে কিন্ত ওকে অনেক চকোলেট দিতে হবে আর বকা যাবে না আমি হেসে ওর ছোটো ছোট চুল টেনে দিয়েছিলাম । সব ভালো ছিল কিন্ত একটা ঝড় এসে সব শেষ করে দিল আমার সব খুশি কেরে নিল আমার রিহার ছেলে বেলা কেরে নিল ওই দিনটার কথা ভাবলেই বুক কেপে উঠে জানিস ভাগ্য ক্রমে আমার রিহার কিছু হইনি । আমার স্কুলে বিত্তি পরীক্ষা দেবার জন্য জেলার বাইরে যেতে হইছিলো রিহার আব্বু আর আমার আম্মু সাথে করে নিয়ে গিয়েছিল । রিহাকে ছাড়া যেতে খুব কষ্ট হচ্ছিল কখনো ওকে ছাড়া থাকিনি কিন্ত আমাকে যেতেই হলো আর এটাই আমার সব থেকে বড় ভুল ছিল (চোখের পানি মুছে)

অনি রেহান এর কাধে হাত দিয়ে সান্তনা দিচ্ছে রেহান নিজেকে সামলে আবার বলা শুরু করলো

রেহান : আমাদের দুইদিন থাকার কথা ছিল । একবারে রেজাল্ট নিয়ে ফিরবো বলে। বাসায় শুধু রিহার আম্মু আর আমার আব্বু আর দাদু ছিল সেই সুযোগ নিল জানোয়ার গুলো

কথাটা বলতে গিয়ে রেহান এর চোখ লাল হয়ে গেছে

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here