#গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_২৯
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
মাঝ রাতে রিহার ঘুম ভেংগে যায়। পাশে রেহান ঘুমিয়ে আছে ।
রিহা : ধুর বাবা হটাৎ ঘুম ভাঙলো কেনো এখন কি করবো ঘুমানোর চেষ্টা করি
রিহা অনেকক্ষণ এপাশ ওপাশ করে শেষে না পেরে উঠে পরে।
রিহা : ধুর ছাই ঘুম আসে না কেনো এক কাজ করি ছাদে একটু হেটে আসি সেটাই ভালো হবে
রিহা আস্তে আস্তে উঠে দরজা খুলে ছাদে যায়। সিড়ি দিয়ে উঠার সময় কারোর আওয়াজ পায় । রিহা কিছু না বলে চুপ করে ছাদের দরজায় দাড়িয়ে শুনতে থাকে
রিহা : ধুর ছাই কে ওখানে আর কি কথা বলছে একটু দেখি ত দরজা ফাঁক করে
রিহা দরজা একটু ফাঁক করে দেখে অবাক।
অন্তরা আর একটা ছেলে দাড়িয়ে কথা বলছে । ছেলেটার মুখ ভালো ভাবে বুঝা যাচ্ছে না তবে দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হচ্ছে ছেলেটা না না করছে আর অন্তরা বুঝিয়ে যাচ্ছে ।
রিহার কানে একটা কথা আসলো ছেলেটা বলছে আমি এসব পারবো না ও মারেড
রিহা : কার সাথে এতো কথা বলছে না শুনা যাচ্ছে না ধুর একটু জোড়ে বললে কি হয়
রিহা কিছুক্ষণ ছটপট করে শেষে ওর মাথায় একটা বুদ্ধি আসে।
রিহা নিচে যায় একটু পর একটা লাঠি নিয়ে আসে আর জোরে জোরে বলে
রিহা : চোর চোর চোর (চিৎকার করে)
রিহার চিৎকারে অন্তরা আর ছেলেটা চমকে উঠে । রিহা চিৎকার করেই যাচ্ছে ছেলেটা পালাতে গেলে রিহা গিয়ে লাঠি দিয়ে বারি মারে
রিহা : কোথায় পালাচ্ছিস চোর আমাদের বাড়ি চুরি করবি তোর এত সাহস দেখ এখন কেমন লাগে (মারতে মারতে)
অন্তরা আর আর ছেলেটা দুর দাড়িয়ে কথা বলছিল ছেলেটা অনি ছাদে লাফ দিতে গেলে রিহা গিয়ে মারা শুরু করে অন্তরা পালাতে চাইলে রিহা ওকে চুলের মুঠি ধরে
রিহা : এতো চোর দেখছি কিন্ত কাপল চোর দেখিনি তোরা কি এক সাথে চুরি করতে আসিস দারা আজ তোদের দেখাচ্ছি মজা
এই সুযোকে ছেলেটা রিহা কে ধাক্কা মেরে অনি ছাদে চলে যায় আজ আবহাওয়া ভালো না থাকায় তেমন দেখা যায় না
রিহা : যা ছেলেটা তো চলে গেলো কিন্ত একে তো ছাড়বো না আমাকে পানিতে ডুবানো দেখাচ্ছি (মনে মনে)
রিহা অন্তরার চুলের মুঠি ধরে ইচ্ছা মত চর গুশি লাথি কিচ্ছু বাদ দিচ্ছে না আর জোরে জোরে চোর চোর বলছে
এতক্ষণে বাড়ির সবাই জেগে গেছে রেহান অনি রুশ মাইশা চৌধুরী এসে দেখে রিহা মারছে রুশ ও সাথে join দেয়।
দুই বান্ধবী মিলে ইচ্ছা মত মেরে যাচ্ছে বেচারি অন্তরা তো কিছু বলতে পারছে না শুধু ছেরে দাও ছেরে দাও বলছে ।
রুশ : আবে তোমরা কি করছো লাঠি নিয়ে আসো (অনি আর রেহান এর দিকে তাকিয়ে)
রিহা : আরে লাঠি পরে আগে আমরা তো মেরে নি
রুশ : ঠিক কইছিস অনেক দিন কাউরে মারি না
রুশ আর রিহা তো মেরে যাচ্ছে । অনি আর রেহান ওদের বউ এর কান্ড দেখছে । রাইসা খান ও চলে আসে ।
রাইসা : আরে বেশি করে মারো আরো জোড়ে
মাইশা : থাম তো রেহান যা ওদের আটকা
রাইসা : না আমি ও যাচ্ছি
রাইসা খান গিয়ে একটা চর মারে আর মারার আগে অন্তরা বলে
অন্তরা : আম্মু আমি (কাদতে কাদতে)
রাইসা : এই গলা চিনা চিনা লাগছে
রুশ : গলা কেমনে চিনবেন আমরা তো কিছু দেখতে পাচ্ছি না আপনি আবার গলা দেখলেন কেমনে
রাইসা : চুপ করো
রাইসা খান ফোনের লাইট অন করে একটা চিৎকার দেয়।
রেহান : খালা মনি কি হলো।
রাইসা খান: অন্তরা মা তুই এখানে
এতক্ষণে অন্তরা সেন্স হারিয়ে মায়ের বুকে ঢলে পরে।
রাইসা খান : এই কে আছিস আমার মেয়ে কে ধর এরা আমার মেয়েকে শেষ করে ফেললো
রাইসা খান এর কথায় রেহান আর অনি অন্তরা কে দেখে ধরে নিচে নিয়ে শুয়ে দেয়। বেচারি এতো মার খাবার পর বেচে আছে কি সন্দেহ ।
সবাই অন্তরার খাটের পাশে দাড়িয়ে আছে রাইসা খান ফুলছে। রিহা আর রুশ মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে ।
একটু আগে ডক্টর এসে দেখে গেছে ওষুধ ও লিখে দিয়েছে অন্তরা কে ঘুমের ওষুধ দিয়েছে। অন্তরার দাদী ঘুমের ওষুধ খায় সেই জন্য টের পাইনি।
রাইসা খান : দিলে তো আমার সোনামনিকে শেষ করে হেগো আমার আমার মেয়ে তোমার কোন পাকা ধানে মই লাগিয়েছিল
রুশ : আন্টি রিহা তো ধান লাগাইনি তাহলে
মাইশা চৌধুরী : রুশ চুপ করে থাক
রেহান আর অনি মুচকি মুচকি হাসছে।
অনি : ভাই যাই কস না কেনো আমার বউ কিন্ত খুব কিউট (ফিসফিসিয়ে)
রেহান : যা মার দিলো এখন ত অন্তরার করুন অবস্থা । তবে মার টা কিন্ত সেই ছিল
অনি : হা হা হা
রাইসা : আমার মেয়ে টাকে একদম শেষ করে দিয়েছে আমার মানিক কিভাবে শুয়ে আছে
রিহা : আন্টি আমরা কি বুঝতে পারছি অন্তরা আপু এতো রাতে ছাদে ছিল তার উপর আবার একটা ছেলের সাথে
রেহান : কোন ছেলে ?
রিহা কে বলতে না দিয়ে রাইসা খান বলে
রাইসা খান : চুপ থাকো আমার মানিক এর এই অবস্থায় তোমরা ওসব কথা বলছো আমার সোনামনিকে নিয়ে তোমাদের দেখি কোনো চিন্তা নেই আমার মানিক ঠিক আছে বলে ছেরে দিলাম কিছু হলে না তোমাদের সবার নামে কেস করতাম
রুশ : এতে আমাদের কি দোষ আপনি নিজে ও তো মারছেন
মাইশা চৌধুরী : রেহান তোমরা ঘরে যাও দরকার পরলে আমরা ডেকে নিবো
রেহান : আচ্ছা
রেহান , রিহা আর অনি, রুশ নিজেদের রুমে যায় ।
রিহা তোর মনে মনে ড্যান্স করতে ইচ্ছা করছে
রিহা : নাচ মেরে লেইলা নাচ মেরে লেইলা লেইলা 💃 (মনে মনে)
রেহান ভ্রু কুচকে রিহার দিকে তাকিয়ে আছে
রিহা : ওভাবে তাকিয়ে কি দেখছেন আমি কি ইচ্ছা করে করছি নাকি
রেহান: এতো রাতে ছাদে কি করতে গিয়েছিলে ?
রিহা : আমার বিএফ আসছিল তো তাই দেখা করতে গিয়েছিলাম আজব প্রশ্ন ঘুম আসছিলো না তাই গিয়েছিলাম আর আমি কি ইচ্ছা করে করছি আমি কি করে জানবো ওটা চোর না অন্তরা আপু (অভিমানী কণ্ঠে)
রেহান রিহাকে নিজের কোলে বসায়
রেহান : আমি তোমাকে কি কিছু বলছি আমি জানি তো তুমি কখনো ইচ্ছা করে কাউকে কষ্ট দিতে পারো না আমার রিহা ওমন না
রিহা : হ্ন সেই জন্য তো ঘরে ঢুকার আগেই প্রশ্ন করতে শুরু করেছেন
রেহান : আমি তো ওভাবে বলিনি আমার কি জানার অধিকার নেই আর তোমার ঘুম ভাঙছে আমাকে ডাকতে পারতে
রিহা : আপনি তো কি সুন্দর করে ঘুমিয়েছে একদম বিড়াল ছানার মতো
রেহান : তাই (মুচকি হেসে)
রিহা : হুম
রেহান : আচ্ছা এখন ঘুমিয়ে পরো
রিহা : আচ্ছা
রিহা শুয়ে পরে সাথে রেহান ও। রিহাকে বুকে নিয়ে রেহান ঘুমের দেশে পাড়ি জমায়।
এদিকে
অন্তরা ঘুমিয়ে আছে। মাইশা চৌধুরী আর রাইসা খান অন্তরার মাথার কাছে বসে আসে।
মাইশা চৌধুরী : রাইসা তুই রিহার সাথে ওমন ব্যাবহার করে ঠিক করিস নি ও কি করে বুঝবে তুই বল
রাইসা খান : আমি এখন এই নিয়ে কথা বলতে চাই না আমার মেয়েটা এখন অসুস্থ এই নিয়ে পরে কথা বলা যাবে
মাইশা চৌধুরী : তোর কি একার মেয়ে আমার মেয়ে বুঝি না
রাইসা খান : মনে তো হচ্ছে না
মাইশা : রাইসু
রাইসা খান: এখন এসব বাদ দে কাল দেখা যাবে
সকালে
রিহা ঘুম থেকে উঠে দেখে দেখে রেহান ওর দিকে তাকিয়ে আছে
রিহা : ওভাবে তাকিয়ে কি দেখছেন ?
রেহান : আমার বউ কে দেখছি তোমার কোনো সমস্যা
রিহা : অন্তরা আপুকে দেখতে গেছেন ?
রেহান : না এক সাথে যাবো
রিহা : আচ্ছা আপনি দাড়ান আমি ফ্রেশ হয়ে আসি
রেহান : হুম
রিহা ফ্রেশ হয়ে আসে তখনই দরজায় টুকা পরে । রিহা দরজা খুলে দেখে রাইসা খান
রিহা ভাবছে হইতো কোনো বাজে কথা বলবে কালকের বেপারে জন্য রেহান ও উঠে আসে কিন্ত ওদের অবাক করে দিয়ে রাইসা খান রিহাকে জড়িয়ে ধরে।
চলবে