গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_৩০
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
রিহা অবক হয়ে দাড়িয়ে আছে সাথে রেহান ও।
রাইসা খান : i am sorry বাচ্চা আমি বুঝতে পারিনি আমায় মাপ করে দাও সত্যি আমি খুব খারাপ নিজের মেয়েকে ওভাবে দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি সরি আমাকে মাপ করবে না আমি তো তোমার মা এর মত তাই না
রিহা….
রাইসা : কিহলো আমাকে মাপ করবে না
রেহান রিহার কাধে হাত রাখে রিহা নিজেকে ঠিক করে বলে
রিহা : আপনি ওভাবে বলছেন কেনো আপনার তো এতে দোষ নেই
রাইসা খান : কারোর দোষ নেই সব ভাগ্যের দোষ আগে বলো আমাকে মাপ করছো কি না ?
রেহান : আরে খালামণি মাপ করার কথা কেনো আসছে ও তো তোমার ছোটো আর একটু আগে বললে মেয়ে তাহলে সন্তান এর আছে কি মা মাও চায়
রিহা : রেহান তো ঠিক বলছে আপনি এভাবে আমাকে ছোটো করবেন না ভুল টা কারেন্ট এর ছিল নাহলে কি অন্তরা আপুকে চিনতে ভুল করি
সবাই হেসে দেয় ।
রাইসা খান : আমার মেয়ে টা তো অনেক কথা জানে দেখছি এখন তাড়াতাড়ি রেডী হয়ে নাও
রিহা : কোথাও কি যাচ্ছি
রাইসা খান : হা পাশের গ্রামে মেলা বসছে তোমরা তো আগে কখনো যাওনি
রিহা : কি মেলা wow আমি শুধু বই এ পড়ছি
রাইসা খান : আজ না হয় রিয়াল দেখো
রিহা : কিন্ত অন্তরা আপু
রাইসা খান : সবাই যাবো অন্তরা এখন অনেক টা সুস্থ
রেহান : তাহলে তো ভালো হলো
রাইসা খান : হুম রেডী হয়ে নাও
রেহান : আচ্ছা
রাইসা খান চলে যেতেই রিহা লাফিয়ে উঠে
রিহা : ইয়ে কত মজা হবে
রেহান : বাবা কত খুশি
রিহা : আমার কত দিন এর ইচ্ছা ছিল মামনি যখন আমাকে বলেছিল আমরা গ্রামে যাবো তখন থেকে ভেবে রেখেছিলাম মেলায় যাবো শহরে ত বই মেলা হয় আজ আমি অনেক ঘুরবো
রিহা : আচ্ছা রেহান কোনটা পড়বো বলেন তো
রেহান : একটা পরলেই হলো আমি তো দেখবো তোমাকে আর কেউ ত না
রিহা : হা আপনারে তো কইছে
রেহান : বলছে তো আমার বউ এর দিকে অন্য কেউ চোখ তুলে তাকালে চোখ তুলে নেবো
রিহা : শুরু আপনার #গ্যাংস্টার_গিরি
রেহান : হুম
রিহা : আপনার সাথে কথা বলে সময় নষ্ট করতে চাই না
রিহা একটা ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে যায়। রেহান কফি আনতে যায়। সকালে কফি না খেলে উনার দিন চলে না ।
রিহা রেডী হয়ে দেখে রেহান এখনও রেডী না
রিহা : কিহলো আপনি রেডি হন নি কেনো দেরি হয়ে যাবে তো হুম
রেহান : আরে বাবা সকালে খাবার খেয়ে তারপর বের হবো
রিহা : তাও আপনি রেডী হন যান আগে যান
রেহান : আরে এতো তাড়া কিসের
রিহা : কোনো কথা না যান
রিহা রেহান এর হাত থেকে কফি নিয়ে রেহান কে ঠেলতে ঠেলতে বাথরুমে পাঠায়। রিহা বসে রেডী হতে থাকে । চোখে কাজল ঠোঁটে লিপিস্টিক । পুরাই গ্রামের মেয়ের মতো হালকা সাজ।
(না মানে আগের গ্রামের মেয়ে গুলো এভাবে সাজত এখন মেকআপ এসে সব শেষ)
রিহা রেহান এর জন্য অপেক্ষা না করে নিচে যায়। সবাই নিচে বসে আছে অন্তরা ও আছে
রিহা : এখন কেমন লাগছে অন্তরা আপু (বসতে বসতে )
অন্তরা : ভালো আছি
রাইসা খান : আয় মা বস আমার মা কে তো একদম পরির মত লাগছে
রুশ কাশতে শুরু করে । অনি রুশ কে পানি দেয়।
মাইশা চৌধুরী : ঠিক আছিস তো ?
রুশ : হুম
রাইসা খান রিহা কে খাবার দিচ্ছে রুশ ইশারা করে রিহাকে বলছে। রিহা ও ইশারা করে চুপ থাকতে বলে
মাইশা চৌধুরী : রিহা রেহান কই
রিহা : উনি তো
অনি : ওই তো আসছে
সবাই তাকিয়ে দেখে রেহান আসছে । রিহার সাথে ম্যাচিং করে ব্লু শার্ট ব্ল্যাক জিন্স পড়েছে। রিহা তো হা করে তাকিয়ে আছে। যেমন প্রথম দিন ক্রাশ খাইছিল
রিহার খেয়াল নেই কখন রেহান ওর পাশে বসছে। রুশ এর কাশিতে রেহান এর হুস ফিরে।
রিহা লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে । রাইসা খান রিহার খাবার দিচ্ছে রেহান দুষ্টুমি করে বলে
রেহান : এটা ঠিক না শুধু ছেলের বউ কে দিলে হবে আমার দিকে কারোর নজর নেই
মাইশা চৌধুরী : ছেলে এখন পর বৌমা এখন সব বুঝছো
রেহান : ঠিক আছে আমি চলে যাচ্ছি
রেহান উঠে দাড়ায়। রাইসা খান আটকাতে গিলে মাইশা চৌধুরী বারন করে
রেহান : আমি কিন্ত চলে যাচ্ছি
অনি : গাড়ির চাবি কি দেবো
রেহান : মজা করবি না আমি সত্যি সত্যি চলে যাচ্ছি
মাইশা চৌধুরী : অনি ওকে মনে হয় এগিয়ে দিয়ে আসতে হবে যা তো
রেহান বসে পড়ে
রেহান : কোথাও যাবো না আমি আমার বাড়ি আমার সব আমার বউ রেখে আমি কই যাবো
সবাই হেসে দেয়। রিহা রেহান এর কানে ফিসফিস করে বলে
রিহা : যেও তো দেখান পা কেটে আপনার হাতে ধরিয়ে না দিলে আমার নাম রিহা না
রেহান : আচ্ছা
বলে গালে ভালোবাসা দেয়। রিহা স্তব্ধ । আশে পাশে তাকিয়ে দেখে কেউ দেখেনি রিহা রেহান যে চিমটি কাটে
সবাই খাওয়া শেষ করে বের হবে।
রেহান রিহাকে ওর পাশে বসতে বলে কিন্ত ও রুশ এর সাথে বসে ।
রেহান : এই মেয়েকে নিয়ে যে আমি কি করবো
বেচারা আর কি করবে ড্রাইভিং সিটে বসে পরে । পাশে অনি । দুইজনের এক অবস্থা । অন্তরা রিহাদের সাথে বসতে চায় কিন্ত ওর শরীর ভালো না তাই ওর আম্মুর সাথে বসে
অন্য গাড়িতে মাইশা চৌধুরী আর রাইসা খান।
গাড়ি চলছে আপন গতিতে রুশ আর রিহা মনে হয় পিকনিক করছে । গান ছেরে গানের সাথে নাচছে ।
রেহান লুকিং গ্লাস এ রিহা কে দেখছে।
অনি : এই তোমরা কি শুরু করছি এমনি রাস্তা ভালো না তার উপর তোমরা এভাবে নাচ্ছো মনে হচ্ছে তোমাদের বিয়ে হবে
রুশ : এই তুমি বেশি কথা বলো না ধাক্কা মেরে গাড়ি থেকে বের করে দেবো
রিহা : ঠিক বলেছিস চল এই দুটোকে ধাক্কা মেরে ফেলে দি
রেহান : ওতো বল হয়ে পারেনি ফু মারলে যাবে উরে
রিহা : হ্ন আয়ছে বডি বিল্ডার( ভেংচি কেটে)
রেহান : তাই তো
রিহা : রুশ বাদ দে তো এদের সাথে কথা বলে নিজেদের টাইম নষ্ট করা ফাউ।
রুশ : ঠিক বলছিস
অনি : আমাদের ওতো ফালতু টাইম নেই
বলে অনি আর রেহান হাই ফাইভ করে।
রিহা আর রুশ ভেংচি কাটে।
কিছুক্ষণের মধ্যে ওরা চলে আসে । সবাই গাড়ি থেকে নেমে দাড়ায় । অনেক ভিড়
অনি রুশ এর হাত ধরে এতো ভিড়ের মধ্যে যদি হারিয়ে যায়। বেচারা রেহান এর তো পথ নেই রিহা ওর মামনির হাত ধরে আছে ।
সবাই যে যার মতো ঘুরছে রেহান রিহার হাত ধরে টেনে আনে।
রিহা : কিহলো ওভাবে আনলেন কেনো?
রেহান : চুপ
রেহান রিহার হাতে নিল কাচের চুড়ি পরিয়ে দেয়।
রেহান : তোমার মধ্যে তো কোনো ফিলিং নেই তাই আমাকে জোর করতে হয়।
রিহা : হইছে আমি কিছু কিনবো আমি দেখবেন
রেহান : যা হুকুম মহারানীর
রিহা অনেককিছু কিনে । ওর মামনির যেখানে বসে ছিল ওখানে যায় । রাইসা খান রিহাকে পানি দেয়। রিহা পানি খেয়ে বসে পরে। রেহান মাইশা চৌধুরী কে ঘুরিয়ে দেখাচ্ছে । সাথে আন্তরা আছে ।
কিছুক্ষণ পর হটাৎ রিহার মাথা ঘুরে ।
রাইসা খান : কিহলো রিহা শরীর খারাপ লাগছে
রিহা : মাথা একটু ঘুরছে অনেক রোদ তো তাই রাইসা খান : বেশি বেশি করে খেতে হয় তাহলে আর কিছু হয় না । বেশি শরীর খারাপ লাগল বাসায় যাও
রিহা : রেহান
রাইসা খান : আমি ওকে বলে দেবো তুমি গাড়ি নিয়ে বাসায় যাও
রাইসা খান এর জোরাজুরিতে রিহা গাড়ি নিয়ে বাসার যায়।
মাঝ পথে যেতেই রিহার গাড়ির সামনে কেউ এসে দাড়ায় রিহা তাড়াতাড়ি ব্রেক মারে। গাড়ি থেকে নেমে বলে
রিহা : এই স্টুপিড দেখে চলতে পারো না ।
রিহা আর কিছু বুঝে উঠার আগেই সেন্সলেস হয়ে যায় । রাইহান একটা বাকা হেসে রিহাকে কোলে তুলে গাড়িতে উঠিয়ে বাড়ির দিকে যায়।
এদিকে
সবাই অনেকটা ঘুরার পর এক জায়গায় বসে পরে।
রুশ : রিহা কোথায় গেলো ? রেহান ভাইয়ার সাথে নাকি
অন্তরা : না রেহান ওর বন্ধুর সাথে আছে । ওর কোন বন্ধুর সাথে দেখা সেজন্যই ওদের সাথে আছে ।
রাইসা খান : রিহা তো বাড়ির দিকে গেছে
মাইশা চৌধুরী : কি একা একা কি করে গেলো
অন্তরা : আমি তো ওকে আমাদের বাড়ির পাশের রাইহান এর সাথে যেতে দেখলাম । ওর সাথেই গেছে হইতো
রুশ : আচ্ছা এখন বাসায় গিয়ে দেখি রিহা তো ওখানে থাকবে
মাইশা চৌধুরী : হুম চল
সবাই বাসার দিকে যায়। রুশ এর তো খুব টেনশন হচ্ছে । রিহা না বুঝে কোনো বিপদে পরে যাইনি তো ।
কিছুক্ষণের মধ্যে বাসায় পৌছে যায়।
রুশ : আমি দেখছি রিহা আছে কি না
রাইসা খান : চলো আমরা দেখছি ওর শরীর তো ভালো লাগছিলো না
সবাই মিলে রিহার রুমে যায় । রুমের দরজা খুলে সবাই স্তব্ধ । এমন কিছু দেখবে ওরা কখনই ভাবতে পারে নি । মাইশা চৌধুরী লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে
চলবে