গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_৪০
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
রেহান এর হাত থেকে গান পরে গেলো। রেহান এর চোখ জ্বলজ্বল করছে দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে
রিহা দাড়িয়ে আছে রেহান এর ছোঁয়া ওর অসহ্য লাগছে। রেহান তো রিহাকে এই ভাবে দেখে খুশিতে কেঁদে ফেলে
রেহান : কত অপেক্ষা করেছি জানো অবশেষে আমার কষ্ট সার্থক (কাদতে কাদতে)
যেই লোকটা রেহান কে আঘাত করছিল সে তাকিয়ে আছে । রেহান রিহা কে জড়িয়ে ধরে ছোট বাচ্চাদের মত কেদেই যাচ্ছে ।
রিহা নিজের থেকে রেহান কে ছড়িয়ে নেয়।
রেহান : সবাই জানতে পারলে খুব খুশি হবে আমার রিহা ফিরে আসছে আবার আগের মত হবে এবার আর তোমাকে আমি নিজের কাছ থেকে দূরে যেতে দেবো না কিছুতেই না
রিহা সাড়া মুখে চুমুতে ভরিয়ে । রেহান পিছনে তাকিয়ে লোকটাকে বলে
রেহান : এখন তুমি যেতে পারো
লোকটা : জি স্যার
রিহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে । রেহান এর মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছে কিন্ত ওর সেইদিকে খেয়াল নেই । রিহাকে আবার নিজের বুকের সাথে শক্ত করে চেপে ধরলো যেনো ছেড়ে দিলেই পালিয়ে যাবে ।
রিহা এবার নিজের সব শক্তি দিয়ে রেহান কে ধাক্কা মারে । রেহান অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে
রিহা : কি ভেবেছেন কি আপনি আপনার এইসব নেকামি তে আমি সব ভুলে যাবো কিছুতেই না আমি একবার ভুল করেছি আপনার মত #গ্যাংস্টার কে ভালবেসে কিন্ত আর না আপনার সাথে আমার আর থাকা পসিবল না
কথা টা বলতে বলতে রিহা মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছিল রেহান এসে ধরে। এতদিন কোমায় থাকার ফলে রিহার শরীর অনেক দুর্বল।
রেহান রিহাকে খাটে বসিয়ে দিয়ে পানি খাওয়ায় । এখন ও রেহান এর মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছে । রিহা রেহান কে দেখছে । রেহান অস্থির হয়ে রিহাকে জিজ্ঞেস করছে
রেহান এর কোনো কথা রিহার কানে যাচ্ছে না রিহা শুধু রেহান কে দেখছে। খুব ইচ্ছা করছে রেহান কে বুকে জড়িয়ে নিতে কিন্ত ভিতর থেকে একটা চাপা কষ্ট বেরিয়ে আসছে । অভিমানের জন্য রিহা কিছু করতে পারছে না
রেহান : রিহা খুব কষ্ট হচ্ছে (ঝাকিয়ে )
রেহান এর কথায় রিহার হুস ফিরে নিজেকে ঠিক করে রেহান কে জোরে ধাক্কা মারে
রেহান ছিটকে নিচে পড়ে যায় ।
রিহা : দূরে সরে যান আমার থেকে আপনার মুখ ও আমি দেখতে চাই না আপনি একজন খুনি আমার পক্ষে খুনীর সাথে থাকা সম্ভব না
খুনি কখনো কাউকে ভালোবাসতে পারে না
রেহান উঠে রিহার হাত ধরে।
রেহান : রিহা বিশ্বাস করো আমি খুনি না আমি কোনো অন্যায় করিনি অন্যায় তো আমার সাথে হইছে বিশ্বাস করো
রিহা : হা বিশ্বাস আর আপনাকে কখনো না আপনাদের মত মানুষ সব করতে পারে সব নিজের স্ত্রী কে ও খুন করতে ১০বার ভাববে না
রেহান : রিহহা (চিৎকার করে)
রিহা : চিৎকার করে লাভ নেই আমি থাকবো না আর এখানে
কথাটা বলে রিহা ঘর থেকে বের হয় রিহার পিছন পিছন রেহান ও বের হয়
(সরি আমি কোমায় থাকলে কি হয় না হয় বেশি জানি না তাই নিজের মতো বানিয়ে দিলাম এটা just গল্প এর বাইরে কিছু না )
রেহান : রিহা প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না আমি বাঁচতে পারবো না তোমাকে ছাড়া রিহা প্লিজ বুঝার চেষ্টা করো প্লিজ
রিহা কোনো কথা শুনছে না শিরি দিয়ে নামছে ।
আয়াস আর মাইশা চৌধুরী ওদের আসতে দেখে । দুইজন রিহাকে দেখে খুব খুশি ।
মাইশা চৌধুরী রিহাকে জড়িয়ে ধরে
মাইশা চৌধুরী : মা আমার তুই সুস্থ হইছিস কত অপেক্ষা করেছি জানিস তুই হাসি মুখ দেখবো বলে আর কখনো আমাকে ছেড়ে একা যাবি না বল যাবি না
রিহা : মামনি আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি কিন্ত আমাকে যেতেই হব
রেহান : আম্মু রিহাকে আটকায় ও আমাকে ছেড়ে চলে যেতে চাইছে প্লিজ ওকে বুঝাও
আয়াস : রেহান তোর মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছে কেনো?
মাইশা চৌধুরী : রিহা এসব কি
রিহা : মামনি আমাকে যেতে হবে
রেহান : একবার বলেছি না তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবে না কথা কানে যায় না (রেগে)
রিহা : আপনার কথা শুনতে আমি বাধ্য নয় এখানে থেকে কি আপনার মরণের খেলা দেখবো
রেহান : হা দেখতে হবে তোমাকে তুমি আমার স্ত্রী
রিহা : কিসের স্ত্রী আমি আপনার মত খুনীর স্ত্রী না জোড় করে বিয়ে করা যায় কিন্ত ভালোবাসা যায় না আর এই বন্ধন থেকে আমি মুক্তি চাই আমার ডিভোর্স চাই
কথাটা বলতে দেরি কিন্ত রেহান এর চর মারতে দেরি না । রিহা গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে ।
রেহান : পেয়েছ ডিভোর্স হইছে শান্তি নাকি আরো লাগবে
মাইশা চৌধুরী আর আয়াস দুইজনের কান্ড দেখছে
রিহা : মারুন মেরে ফেলুন তাও আমি আপনার সাথে থাকবো না কিছুতেই না (কাদতে কাদতে)
রেহান : তুমি চাইলে ও কি আর না চাইলে ও কি তোমাকে আমার সাথে থাকতে হবে
রিহা : কিছুতেই না
কথাটা বলে রিহা দৌড়ে গেটের কাছে যেতে রেহান রিহার হাত ধরে
রেহান : একবার বলেছি না তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবে না কথা কানে যায় না
রিহা : ছাড়ুন আমাকে
রেহন : ওকে
কথাটা বলে রেহান রিহাকে কাধে নেয় ঠিক বিয়ের দিনের মতো
রিহা : ছাড়ুন বলছি ছাড়ুন আপনাকে আমি শেষ করে দেবো খুন করে ফেলবো
রেহান : আচ্ছা ঠিক আছে শেষ করো তোমার জন্য সব ফ্রী
কথাটা বলতে বলতে রেহান উপরে যাচ্ছে । আয়াস কিছু বলার আগেই মাইশা চৌধুরী থামিয়ে দেয়
আয়াস : আম্মু ওরা
মাইশা চৌধুরী : ১বছরের জমানো রাগ ,অভিমান,দুষ্টুমি আজ সব বের করতে দে ওদের মত ছেড়ে দে দেখবি সব ঠিক হয়ে গেছে
আয়াস : রেহান এর তো মাথা
মাইশা চৌধুরী : মনের আঘাত দূর করে নিক দেখবি সেই আবার মাথার আঘাত দূর করে দিয়েছে
আয়াস আর কিছু বলল না ।
রেহান রিহাকে ঘরে নামিয়ে দিতেই রিহা দরজার কাছে যেতে লাগে
রেহান : কই যাচ্ছ আমি কি যেতে বলেছি
রিহা : আমাকে ছাড়ুন নাহলে আজ আপনার শেষ দিন হবে
রেহান : রেহান চৌধুরীর ওয়াইফ এর একটু তেজ থাকবে না তাহলে কি করে হয় । নাও শেষ করে দাও আমি ও দেখতে চাই কি করতে পারো
রিহা : আপনাকে তো আমি
কথাটা বলতে বলতে রিহা রেহান কে মারতে গেলে রেহান রিহার হাত ধরে ঠোঁটে চুমু খায়
রিহা ঠোঁটে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে । রেহান সেইসব এর তোয়াক্কা না করে স্টাইল দিয়ে সোফায় বসে
রেহান : হা তো কি বলছিলে ? ডিভোর্স চাও তাই তো
রিহা…..
রেহান : ওকে ফাইন ডিভোর্স পেয়ে যাবে কিন্ত আমার শর্ত আছে
রিহা ভ্রু কুচকে রেহান এর দিকে তাকিয়ে আছে
রেহান : ওভাবে তাকিয়ে লাভ নেই আমি বলছি আমার যতদিন না বাচ্চা হচ্ছে তুমি আমাকে ছেড়ে যেতে পারবে না
রিহার চোখ তো কৌটা থেকে বের হওয়ার মত
রেহান : ভয় পাওয়ার কিছু নেই তোমাকে বলছি না আমি আবার বিয়ে করবো আর সেই ঘরে বাচ্চা হবে তারপর তুমি যেখানে খুশি যেতে পারো আর বিয়ের আগের দিন ডিভোর্স দিয়ে দেবো বেপার না
রিহার তো মাথায় আগুন ধরে গেলে ।
রিহা : আমি আগে জানতাম এই লোকের ক্যারাক্টের এর প্রবলেম আছে আজ তার প্রুফ পেলাম নিজের স্ত্রীর সামনে বিয়ে করার কথা বলছে লুচ্চা বদমাইশ(মনে মনে)
রেহান : তোমার বোকামির জন্য আমার লাইফ থেকে রোমান্স এর একটা বছর চলে গেছে সেন্স ফিরে ও তোমার বোকামি শেষ হলো না এখন বুঝো (মনে মনে) কি হলো?
রিহা : আপনি বিয়ে করবেন না কি করবেন টা জেনে আমি কি করবো আমাকে যেতে দিন তাহলে হবে
রেহান : তোমার হলে হবে না আমার ও হতে হবে তোমার পিছনে অনেক টাইম নষ্ট করছি আর না এবার সঠিক মানুষের পিছনে টাইম নষ্ট করবো আমার বিয়ে সকল দায়িত্ব তোমার বুঝলে এখন মাথা ব্যান্ডেজ করে দাও
রিহা : আমি কেনো করবো যাকে বিয়ে করবেন তাকে করে দিতে বলেন
রেহান : r u jelous?
রিহা : im not
রেহান: তাহলে ব্যান্ডেজ করে দাও নাহলে কিন্ত ডিভোর্স পাবে না আমার বিয়ের আগের দিন পর্যন্ত তুমি আমার wife
রিহা : বয়ে গেছে (ভেংচি কেটে)
রিহা চলে যেতে গেলে রেহান রিহাকে টেনে নিজের কোলে বসায়
রেহান : অনেক কষ্ট দিচ্ছ একটা বছর তোমার জন্য তিলে তিলে মরেছি এখন তোমার পালা ভালোবাসার আগুনে আমি একা কেনো মরবো তোমাকে ও মরতে হবে এখন সোজা কথা ব্যান্ডেজ করে দাও
রিহা : আমি পারবো না ছাড়ুন আমাকে
রেহান : ছেড়ে দেওয়ার জন্য তো ধরিনি আমার প্রতি এত রাগ যে আমার রক্ত ও তোমার চোখে পড়ছে না আমার কোনো কথা তো তোমার বিশ্বাস হবে না তাহলে নিজের আব্বুর কাছ থেকে শুনে নাও
কথাটা বলে রেহান ফোনে রিহার কাছে ধরে আর বলে
রেহান : যা যা জানার জেনে নাও
কথাটা বলে রেহান চলে যায় রিহা কানে ফোনে ধরতেই ওর আব্বুর বোকা শুনতে পায়
রিহা কিছুক্ষণ কথা বলে বাকরুদ্ধ হয়ে যায় । হটাৎ ফোনে একটা মেসেজ আসে রিহা open করতেই অবাক ।
রিহার চোখে দিয়ে দুই ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ল।
চলবে