গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_৪১
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
রিহা ফোনের স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ফেলছে এত দিন যাকে এত খারাপ ভাবছে আসলে সে রিহার সব থেকে কাছের মানুষ । যাকে এত খারাপ ভাবছে আসলে সে খারাপ না
রিহা : উনি সব সময় আমায় বলত চোখের দেখা আসল দেখা না কিন্ত আমি বার বার ভুল বুঝছি রুশ ও তো বার বার বলছিলো আমি কেনো শুনিনি রেহান আমার রো (কাদতে কাদতে)
রিহার আব্বুর ফোনে করে রিহা কে সব বলে দেয় । মাইশা চৌধুরী রিহার সেন্স ফীরার কথা জানায় এর রিহা চলে যেতে চাইছে সেই সব বলে । আফজাল সাহেব ফোন করে মেয়েকে সব বলে দেয় এখন আর ভয় না । রিহার আর রেহান এর ছোট বেলার কিছু ছবি ও পাঠিয়ে দেয়। রিহার কিছু মনে না থাকলে ও এটা মনে ছিল কেউ একজন আছে যে ওকে খুব ভালোবাসত নাম মনে ছিল না শুধু মনে ছিল fast ওয়ার্ড R তাই রিহা ছোট থেকে রো রো করত । আজ সেই R নামে মানুষ কে সেটা জানতে পারছে
রিহা নিজের চোখের পানি মুছে নেয়
রিহা : অনেক কষ্ট দিছি আর না সেই ছোট বেলা থেকে কষ্ট পেয়েছে আমি আর কষ্ট দেবো না জানি অনেক অভিমান করছে কিন্ত আমিও ভালোবাসা দিয়ে অভিমান দূর করবো
রিহা এসব ভাবছে তখনই একটা মেয়ে ঘরে ঢুকে বলে
মেয়েটি : ম্যাম আপনার ওষুধ স্যার পাঠিয়েছে
রিহা : রেহান কোথায় জানো ?
মেয়েটি : স্যার তো বেরিয়েছে আর আপনাকে ওষুধ খেতে বলছে
রিহা কিছু না বলে নিচে যায় । দেখে মাইশা চৌধুরী বসে আছে
মাইশা চৌধুরী : তোর রাগ এখনও কুমেনি রেহান জানতে পারলে কিন্ত খুব খারাপ হবে
রিহা : মামনি রেহান কোথায় ?
মাইশা চৌধুরী : রাগ করে আয়াস কে নিয়ে বেরিয়ে গেলো
রিহা মাইশা চৌধুরী পাশে বসে । মাইশা চৌধুরী রিহার মাথায় হাত দিয়ে বলে
মাইশা চৌধুরী : কেনো আমার ছেলেকে এভাবে কষ্ট দিচ্ছিস আর নিজেও কষ্ট পাচ্ছিস
রিহা এবার মাইশা চৌধুরী কে ধরে কেঁদে উঠে
রিহা : বিশ্বাস করো আমি ওকে কষ্ট দিতে চাইনি কিন্ত কোনো মেয়ে কি স্বামী হিসেবে একজন গ্যাংস্টার কে চাইবে তুমি বলো আর আমাকে কখনো কেউ রেহান এর কথা বলে নি আজ যদি আব্বু না বলত তাহলে আমি জানতে পারতাম না (কাদতে কাদতে)
মাইশা চৌধুরী: দেখ রিহা তুই অনেক অসুস্থ ছিল আর কেউ চাইবে না তোকে আরো অসুস্থ করতে তোকে আমি দোষ দেবো না আমার ছেলেটা যেমন তোকে ভালোবাসে তেমনি তেমনি তুই ও রেহান কে ভালবাসিস সেই ছোট থেকে তুই রেহান কে আর রেহান তোকে ছাড়া থাকতে পারে না
রিহা : হ্ন কিন্ত উনি আমাকে সব সময় অন্ধকারে রাখে কেনো বলে দিলে তো হয় এখন ঊনার রাগ ভাঙ্গানো যায় কি করে
মাইশা চৌধুরী : সেটা তুই জানিস তোর বর তুই কি করবি দেখ
রিহা : মামনি একটু হেল্প করো না (কাদো কাদো ফেস করে)
মাইশা চৌধুরী : আমি বাবা এসবের মধেনেই
রিহা : বুঝছি তোমায় আমার শশুর এর কাছে পাঠাতে হবে
দুইজন হেসে দেয়
মাইশা চৌধুরী : রেহান এর আব্বুর কথা তোর মনে আছে ?
রিহা মাথা নাড়িয়ে না বোঝায় । মাইশা চৌধুরী একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে
মাইশা চৌধুরী : মানুষ টা তোকে চোখের মণি করে রাখতো বাড়ির সবাই তোকে খুব ভালোবাসত । রেহান এর আব্বু তোর জন্য রোজ কিছু না কিছু নিয়ে আসতো আর তুই পাপাই পাপাই বলে ছুটে যেটি
রিহা মন দিয়ে মাইশা চৌধুরী কথা শুনছে। হটাৎ বলে
রিহা : আচ্ছা মামনি তোমার ছেলে কি ছোট থেকে এমন জেদী কথা শেষ না করে চলে গেলো আসার নাম নেই
মাইশা চৌধুরী হেসে দেয়
মাইশা চৌধুরী : ফোনে করলে ত হয়
রিহা একটা মুচকি হেসে ফোন দেয় কিন্ত রেহান এর কি এত সহজে রাগ কুমবে ফোন ধরার নাম নেই এত বার দিচ্ছে।
রিহা : ফোনে ধরে না
মাইশা চৌধুরী : অনেক অভিমান করছে ১বছর তোর জন্য আমার ছেলেটা কত কষ্ট পেয়েছে । অনিরা তো রুশ এর জন্য ঢাকা গেছে রেহান কে সামলানোর মত কেউ ছিলো
রিহার মাথা থেকে এতক্ষণ রুশ অনি আর আয়াস এর কথা ছিল ন এখন আসতেই প্রশ্ন করে
রিহা : মামনি ওরা কোথায় ?
তারপর মাইশা চৌধুরী সব বলে। সব শুনে রিহার আপসোস হচ্ছে
রিহা : ইসস আমি যদি অসুস্থ না হতাম তাহলে আমার একটা বেবি হতো (বির বির করে)
মাইশা চৌধুরী : কি বললি
রিহা : কই না তো আচ্ছা আয়াস ছেলেটা কে এখানে কি করছে )
মাইশা চৌধুরী : আয়াস আর রেহান ছোট বেলার বন্ধু আয়াস তোকে অনেক bar দেখছে ছোট বেলায় ওর আব্বুর সাথে মাঝে মাঝে আসতো তোকে নিজের বোনের মত দেখে
রিহা : বোনের মতো দেখে তাই আমার পিছনে লেগেছিল
মাইশা চৌধুরী : কে পিছনে লেগেছিল
রিহা : ওসব বাদ দাও তো আজ আমি কি করবো সেটা বলো রেহান এর তো রাগ ভাঙ্গাতে হবে
মাইশা চৌধুরী : তুই ভালো জানিস
কথাটা বলে চলে গেলো । রিহা অনেকক্ষণ ভেবে শেষে রান্না করতে যায় । শরীর দূর্বল থাকায় কষ্ট হচ্ছে তাও অনেক কষ্ট রান্না করে গোসল করতে যায় ।
রাতে
রিহা বসে আছে রেহান কখন আসবে কিন্ত ওর আসার নাম নেই মাইশা চৌধুরী খেয়ে চলে গেছে রিহা জোড় করে পাঠিয়ে দিচ্ছে। রিহা অনেক বার ফোন করছে কিন্ত ধরার নাম নেই
রাত ১২ টায় কলিং বেল বাজতে রিহা বিরক্তি নিয়ে খুলে দেখে রেহান আর আয়াস দাড়িয়ে আছে । রিহা কিছু বলার আগেই রেহান ঢুকে পড়ে
রিহা : এত দেরি লাগে আসতে আর ফোন ধরছিলেন না কেনো ?
রেহান কিছু বলে না চুপ করে উপরে যায় । আয়াস মুচকি হেসে বলে
আয়াস: এত রাত পর্যন্ত জাগা ঠিক না মাত্র সুস্থ হলে
রিহা : সেটা কি আপনার ফ্রেন্ড বুঝছে
আয়াস : বুঝালে বুঝবে
রিহা কিছু না বলে উপরে যায় । রেহান শার্ট খুলে ওয়াশরুমে যায় । রিহা যে ঘরে আছে সেটা চোখেই পড়ছে না
রেহান ফ্রেশ হয়ে নিজের মত কাজ করছে রিহা কে দেখছে না রিহা অনেক বার কান্না কান্না মুখ করে রেহান এর সামনে যাচ্ছে কিন্ত রেহান এর পাত্তা নেই ।
রিহা এবার রেহান কে পিছনে থেকে জড়িয়ে ধরে
রিহা : i am sorry sorry sorry sorry sorry sorry sorry প্লিজ মাপ করে দিন
রেহান : হুম এবার ছার (গম্ভীর কণ্ঠে)
রিহা : সরি বললাম তো
রেহান : it’s ok (অন্য দিকে ফিরে)
রিহা এবার রেহান এর সামনে কান ধরে
রিহা : সরি
রেহান : ডিভোর্স পেপার বানাতে দিছি বিয়ের আগে পেয়ে যাবে
রিহা : কিসের ডিভোর্স আমি কাউকে ডিভোর্স দেবো না
রেহান : দিতে তো হবেই নাহলে আমি বিয়ে করবো কেমনে
রিহা: আমি বেঁচে থাকতে কখনো না (কলার ধরে)
রেহান কলার ছড়িয়ে বলে
রেহান : আচ্ছা বাচ্চার নাম কি রাখবো বলো তো আর মেয়ে তো শান্ত দেখে বিয়ে করবো
রিহা : উফফ আপনি কি শুরু করলেন বললাম তো সরি
রেহান : হুম এখন ঘুমাতে দাও
রিহার তো মাথা ফেটে যাচ্ছে এত ভাব কেমনে আসে তাও নিজেকে কন্ট্রোল করে বলে
রিহা : খাবেন না ?
রেহান : না বাইরে থেকে খেয়ে আসছি নিজের হাতে খাইয়ে দিছে
রিহা : কে ?(অবাক হয়ে)
রেহান : কে আবার আমার পার্টিতে গিয়েছিলাম সেখানের একটা মেয়ে উফফ কি হট ওর কাছে তুমি কিছু না
রিহা রাগ সপ্তম আসমানে চলে গেছে হাতের কাছে জগ ছিল সব পানি রেহান এর গায়ে ছুড়ে মারলো
রেহান : এটা তুমি কি করলে স্টুপিড
রিহা : বেশ করছি ঘরে বউ না খেয়ে বসে আছে আর উনি বাইরে থেকে খেয়ে আসছে অন্য মেয়েদের হাতে
রেহান : বউ কে কি আমি না খেয়ে থাকতে বলছি পুরাই ভিজিয়ে দিল আজাইরা
কিছু টা রাগ দেখিয়ে রেহান ড্রেস চেঞ্জ করে নেয় ।
রিহা : এখন আমি আজাইরা হয়ে গেছি
রেহান কিছু না বলে ঘর থেকে বের হয় রিহা ও পিছন পিছন যায়
রিহা : আজব আপনি কোথায় যাচ্ছেন ?
রেহান : মাথা ব্যাথা করছে ঘুমাবো
রিহা : তো চলুন আমি মাথা টিপে দিচ্ছি
রেহান আর চোখে তাকিয়ে আয়াস এর রুমে ঢুকে
রিহা : এখানে কেনো?
রেহান : আমার পিছন পিছন না এসে যাও ঘুমাও
কথাটা বলে রেহান দরজা আটকিয়ে দেয় । রিহা ওখানেই দাড়িয়ে আছে ।
আয়াস : কি রে কাজ হলো ?
রেহান : কাজ আর হবে না রিহার তো চোখ দিয়ে পানি বের হবে হবে
রেহান শুয়ে পড়ার কিছুক্ষণ পর দরজায় ধাক্কা পরে।
রেহান : আমি ঘুমানোর ভান করছি তুই খোল
আয়াস : ওকে
আয়াস দরজা খুলতেই দেখে রিহা চোখ লাল করে তাকিয়ে আছে
আয়াস : আরে রিহা তুমি
রিহা : রেহান ?
আয়াস : ও তো ঘুমিয়েছে
রিহা : একটু ডেকে দিন
আয়াস রেহান এর কাছে যায়
আয়াস : রেহান রিহার চোখ লাল হয়ে আছে দেখ বেশি করা ঠিক হবে না ওর শরীর খারাপ একটু বুঝ এত কষ্ট দিস না
রেহান এর ও খারাপ লাগলো । রেহান উঠে দরজায় কাছে যেতে রিহা হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়
রেহান : কিহলো এভাবে টেনে আনলে কেনো ?
রিহা রেহান কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়
রিহা : সরি বললাম তো আর হবে না সত্যি বলছি আপনি যা বলবেন তাই করবো এভাবে ইগনোর প্লিজ করেন না
রেহান চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে । রিহা কাদতে কাদতে সেন্সলেস হয়ে যায় ।
রেহান : রিহা এই রিহা সেন্স হারালো কি করে
রেহান নারী চেক করে দেখে ।
রেহান : এই মেয়েটার উপর রাগ করে ও কি করবো আমাকে ঠিক মানিয়ে নেবে
রেহান ওষুধ গুলিয়ে খাইয়ে দেয়। রিহাকে ঠিক করে শুয়ে দিয়ে ওর পাশে বসে মাথায় হাত বুলাতে থাকে
সকালে
রিহা ঘুম থেকে উঠে পাশে কাউকে কে পায় না ফোনে চেক করে দেখে মেসেজ ।
মেসেজ টা দেখে রিহার মাথার চুল ছিঁড়তে ইচ্ছা করছে ।
চলবে