গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_৬
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
রিহা বিছানায় আরাম করে ঘুমিয়ে আছে । রেহান এর তো নিজের মাথার চুল ছিরতে ইচ্ছা করছে এই জন্য রেহান এতো ভয় পেয়েছিলো।
রেহান : এই মেয়ে কখনো চেঞ্জ হবে না একদম আগের মতই আছে
রেহান রিহার ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে আছে কি নিষ্পাপ লাগছে আর জেগে থাকলে পুরো বাড়ি মাথায় করে রাখে । এসব ভাবতেই রেহান এর মুখে হাসি ফুটে উঠে । রেহান রিহার কপালে চুমু দিয়ে বলে
রেহান : সব করতে পারি তোমার জন্য সব কিছু । আগেও যেমন তোমার খুশির জন্য নিজের সব কিছু ছেড়ে দিয়েছি এখন ও তাই সব কিছু করতে পারি সব
রেহান রিহাকে কোলে নিয়ে নিজেদের ঘরে আসে। রিহাকে বিছানায় শুয়ে দিয়ে রেহান বাইরে গিয়ে কাউকে ফোন করে
কথা বলে বিছানায় রিহার পাশে রিহাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ে।
বিকেলে রিহার ঘুম ভাঙ্গল পেটের উপর কিছু অনুভব করে ভালো করে তাকিয়ে দেখে কারোর হাত । পাশে তাকিয়ে দেখে রেহান ঘুমিয়ে আছে রিহা আজ প্রথম রেহান কে এতো কাছে থেকে দেখছে রিহা যেনো কেমন ঘোরে চলে গিয়েছে। ঘুমের মধ্যে রেহান রিহাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে
রিহা : এই লোকটা যদি গ্যাংস্টার না হতো তাহলে প্রেমে পরে যেতাম। প্রেমে তো পড়েছিলাম যেদিন প্রথম দেখেছিলাম ইসস কি কিউট দেখতে কিন্ত আসলে সাইকো । আচ্ছা কত স্টোরি তে পড়েছিলাম জোর করে বিয়ে করে পরে সব ঠিক হয়ে যায় এটাই ও কি তাই হবে কিন্ত আমি কোনো গ্যাংস্টার এর সাথে থাকতে পারবো না কিছুতেই না (কিছুক্ষণ ভেবে) আচ্ছা যদি উনাকে এসব ছেরে দিতে বলি তাহলে কি রাজি হবে নানা আমি এসব কি ভাবছি রিহা তুই নিজেকে সামলা এই লোকটা খুনি আর একজন খুনি কখনো ভালো হতে পারে না কিছুতেই না (মনে মনে)
এসব আরো অনেক কিছু ভেবে রিহা উঠে ওয়াশ্রূমে যায়। ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে দেখে রেহান এখনও ঘুমাচ্ছে
রিহা : আমার ঘুম কেড়ে নিয়ে আপনি কি করে শান্তিতে ঘুমাতে পারেন আমি ও দেখবো
রিহা একটা শয়টানি হাসি দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় । একটু পর হাতে এক বালতি পানি নিয়ে আসে । রিহা সব পানি রেহান এর উপর ফেলে দেয় রেহান ধরপরিয়ে উঠে দেখে রিহা মিটমিট করে হাসছে
রেহান : এটা কি হলো ?
রিহা : গোসল করা হলো দুপুর তো মনে হয় গোসল করেন নি তাই আমি করিয়ে দিলাম যতই হোক আপনার জোর করে বিয়ে করা বউ এই টুকু তো করতে পারি তাই না
রেহান কিছু না বলে রিহার আছে আসে
রেহান : তাই না
রিহা : হা তাই (ভাব নিয়ে)
রেহান রিহাকে কোলে তুলে বাথরুমে নিয়ে যায় ।বাথটপে ফেলে দেয়
রিহা : এটা কি হলো ?
রেহান: তুমি ও ত গোসল করনি স্বামী হিসেবে এই টুকু তো করতে পারি তাই না
রিহা : আমি যে ব্যাথা পেলাম তার বেলায়
রেহান : ওতো কিছু জানিনা প্রতিশোধ নিতে মন চাইলো নিলাম
রিহা : আপনাকে তো
রেহান : আমাকে কি ? এখন তাড়াতাড়ি গোসল করে ড্রেস চেঞ্জ করে নাও ভেজা কাপড়ে তোমাকে অনেক হট লাগে (চোখ মেরে)
রিহা : অসভ্য লোক বের হন এখান থেকে
রেহান : কেনো চলো এক সাথে গোসল
আর কিছু বলার আগে রিহা শ্যাম্পুর বোতল মারতে গেলে রেহান ভোঁ দৌড়
রিহা গোসল করে বেরিয়ে আসার পর রেহান ঢুকে ।
কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে দেখে রিহা বসে আছে
রেহান : কি হলো অভাবে বসে আছো কেনো ?
রিহা : তো কি করবো ড্যান্স করবো
রেহান : করো দেখি কেমন নাচতে পারো
রিহা : আমার খুদা লাগছে
রেহান : খাবার এখানে হেটে হেটে তো আসবে না তার জন্য হয় বানাতে হবে নাহলে নিচে গিয়ে বলতে হবে
রিহা : আপনি তো খুব বউ বউ করেন তাহলে এখন বউকে রেধে খাওয়ান
রেহান : আমি (অবাক হয়ে)
রিহা : হা আমি ওসব রান্না বান্না পারি না (ডাহা মিথ্যে কথা ) আমাকে আপনার রান্না করে খাওয়াতে হবে
রেহান : ওকে ম্যাই লাভলি ওয়াইফ। আজ দেখবে তোমার বর কেমন রান্না করতে পারে
রিহা : হ্ন দেখা যাবে ওতো কথা না বলে চলুন
রেহান আর রিহা রান্না ঘরে গেলো। রিহা রান্না ঘরে টেবিলের উপর বসে আছে আর রেহান রান্না করছে
রেহান : এতো কিছু কি আমি একা করতে পারি একটু হেল্প করো
রিহা : ওকে আমি সবজি কাটছি আপনি পরোটা রান্না করেন আর হা আমি কিন্ত আলুর পরোটা বেশি পছন্দ করি
রেহান : জানি
রিহা : কি করে (ভ্রু কুচকে)
রেহান : যাকে ভালোবাসি তার সব কিছু না জানলে কি চলে
রিহা আর কিছু না বলে সবজি কাটতে লাগলো । রেহান পরোটা বানিয়ে ভাজতে যাবে
রিহা : এই কি করছেন ?
রেহান : কেনো পরোটা ভাজবো
রিহা : এভাবে কেউ পরোটা বানায়
রেহান : কেনো কি হলো ?
রিহা : আমি বানাচ্ছি আপনি দেখেন
রেহান : শেষ তো
রিহা : চুপচাপ দেখেন
রিহা পেজ এর ঝাল কেটে আটার সাথে ভালো করে মেখে নিয়ে বেলে হালকা তেল দিয়ে বেজে নেয়
রেহান : এটা কি হলো ?
রিহা কিছু না বলে একটা পরোটা ভেজে একটু ছিড়ে রেহান এর মুখে পুরে দেয়
রিহা : কেমন ?
রেহান : ওয়াও কোথা থেকে শিখলে ?
রিহা : আমার আম্মু ছোটো বেলায় এভাবে পরোটা ভেজে দিত আব্বুর মুখে শুনেছি
রেহান : তোমার আম্মু কিভাবে মারা যায়?
রিহা : শুনেছি তো কার অ্যাক্সিডেন্টে
রেহান : রিহা
রিহা : জী
রেহান : তোমার কি ছোটো বেলার কোনো কথা মনে পড়ে না
রিহা : মানে (ভ্রু কুচকে)
রেহান : কিছু না তুমি পরোটা বানাও আমি সবজি রান্না করে ফেলাই
রিহা : হম্ম
২জন রান্না করে খাবার টেবিলের উপর রাখে।
রেহান : চলো খাওয়া শুরু করি
রিহা : শুরু করি মানে আগে হাত ধুয়ে আসেন
রেহান : হাত তো ক্লিন আছে
রিহা : কেমন আছে আমিও জানি যান
রেহান আর কথা না বাড়িয়ে হাত ধুয়ে আসে।
রেহান : এবার খাওয়া শুরু করি খিদেতে পেটে হাতি ঘোড়া লাফালাফি করছে
রিহা হেসে দেয় রেহান এর কথায়। রেহান খাবার বেড়ে দেয় আর নিজেরটা বেড়ে নেয়।
রেহান : খেয়ে দেখো ত কেমন হইছে ?
রিহা মুখে দিয়ে দেখে সত্যি খুব ভালো হইছে আর স্বাদ যেনো খুব চেনা
রেহান : কেমন হইছে ?
রিহা : মোটামুটি চলে
রেহান : কি ?
রিহা : তো কি খাওয়া যায় না তবুও জোর করে খাচ্ছি
রেহান এর মন খারাপ হয়ে যায়।
রিহা : পরোটা সেই হইছে তাই না ?
রেহান : চলে বেশি ভালো না
রিহা : তাই না তাহলে আর খেতে হবে না আমার পরোটা আমি খাবো
রেহান : তাহলে আমি খাবো কী ?
রিহা : কেনো আপনার সবজি
রেহান : তাহলে তুমিও সবজি খাবে না ।
রিহা : পরোটা দিয়ে কি খাবো ?
রেহান : সবজির সাথে কি খাবো ?
রিহা : ওকে ঠিক আছে দিচ্ছি আপনিও সবজি দেন ।
রেহান : হুম নাও
এভাবে ওদের খাওয়া শেষ হলো। খাওয়া শেষে রিহা ঘরে গিয়ে শুয়ে পরে একটু পর রেহান আসে।
রিহা : রাতেও কি রান্না করে খেতে হবে ?
রেহান : না আজ আর না আমি বাইরে থেকে অর্ডার করবো
রিহা : বিরিয়ানি করবেন ?
রেহান : ওকে ম্যাডাম (বাসায় কুক আছে কিন্ত তোমার হাতে রান্না খাবো বলে এতো কষ্ট )
রিহা : কি ভাবছেন ?
রেহান : কিছু না
রিহা : আপনার ল্যাপটপ দেবেন ?
রেহান : কেনো কি করবে ?
রিহা : একটু গান শুনবো আমার ত ল্যাপটপ নেই বাসায় গিয়ে আনতে হবে
রেহান : নাও (ল্যাপটপ এগিয়ে দিয়ে)
রিহা ল্যাপটপে গান শুনছে আর রেহান ফোন কার সাথে কথা বলছে
রিহা : ধুর অনেকক্ষণ গান শুনছি এখন একটু স্টোরি পরি ।
রিহা ফেসবুক ওপেন করে স্টোরি পরতে থাকে এর মধ্যে যে রেহান বাইরে গেছে রিহা টের পাইনি।
অনেকক্ষণ পর রেহান এসে রিহার পাশে বসে।
রেহান : চলো খেয়ে নিবে
রিহা…
রেহান : কি হলো ?
রিহা…
রেহান রিহার কাধে হাত রাখে। রিহা হেডফোন খুলে রেহান এর দিকে তাকায়
রিহা : ডাকছেন ?
রেহান : কি করছো তুমি ?
রিহা : গান শুনছিলাম +স্টোরি পড়ছিলাম
রেহান : অনেক হলো এবার খেতে চলো
রিহা : এতো তাড়াতাড়ি ?
রেহান : ৯টা বাজে
রিহা তাকিয়ে দেখে সত্যি সত্যি অনেক রাত হইছে ।
রিহা : চলুন
খাওয়া শেষে রিহা বসে আছে
রেহান : ঘুমাবে না ?
রিহা : আপনিও এখানে ঘুমাবেন ?
রেহান : আর নইতো কোথায় বাড়ি আমার বেড আমার বউ আমার
রিহা ভেংচি কাটে ।
রিহা : সরেন আমি safety ওয়াল বানাবো
রেহান : এটা আবার কি
রিহা : আমাদের মাঝখানে দেয়াল
রেহান : কিসের জন্য ?
রিহা : কিসের জন্য মানে আমি আপনি এক সাথে থাকবো নাকি
রেহান : তো?
রিহা : তো মানে কি আমি safety ওয়াল বানাবো সরেন
রেহান : একে তো
রেহান বলতে গিয়েও বললো না । রিহা বালিশ দিয়ে মাঝখানে পাচিল বানিয়ে দিল রেহান কিছু বললো না।
রেহান : এবার তো ঘুমাতে পারি ?
রিহা : আমাকে বলার কি দরকার ঘুমান
রেহান শুয়ে পড়ে কিন্ত রিহার ঘুম আসছে না । অনেকক্ষণ এবার ওপাশ করে ঘুমিয়ে পরে।
সকালে
রেহান অনেকক্ষণ ধরে রিহাকে ডাকছে কিন্ত রিহার উঠার নাম । রেহান কোনো উপায় না পেয়ে রিহাকে বাঁথটপে ফেলে দেয়। রিহার মনে হচ্ছে রিহা ডুবে যাচ্ছে
রিহা : somebody help me i am পরিং water ডুবিং হাবুডুবু
রেহান: এই মেয়ে কি বলছ এসব কি ইংলিশ
রেহান রিহার মুখে পানি দেয় এখন রিহার হুশ ফিরে । রিহা চারিদিক ভালো করে দেখে কাদ কাদো হয়ে বলে
রিহা : আপনি আবার আমার সাথে এমন করলেন আজ তো আমি পানি দিনাই তাহলে
রেহান : তুমি উঠছিল না তাই করতে বাধ্য হলাম এখন গোসল করে এস ভার্সিটিতে যেতে হবে তো
কথাটা বলে রেহান চলে যায়। রিহা রেহান এর ২৮গুষ্টি উদ্ধার করতে করতে গোসল করে বেরিয়ে আসে
রেহান আয়নায় চুল ঠিক করছিলো রিহা রেহান কে দেখে হা হয়ে গেলো
চলবে