#চলো_ভিজি_বৃষ্টিতে
#Tanjima_Islam
১৭
.
.
.
.
.
ব্যালকনিতে হেলান দিয়ে বসে আছে আরহাম। শার্টের ওপরের বোতাম গুলো খুলে রেখেছে, চোখজোড়া রক্তের মতো লাল হয়ে গেছে তার।
এক হাতে ওয়াইনের বোতল, আরেক হাতে রিয়াকে দেওয়া সেই গাউন!
ওয়াইন খাচ্ছে আর বলছে,” সেদিন কেন এমন করলে রিয়া!? আমি তো তোমাকেই ভালবেসেছিলাম।
পকেট থেকে একটা ব্ল্যাক কালারের রিং এর বক্স বের করে বলল,” সেদিন পার্টি শেষে প্রোপোজ করতে চেয়েছিলাম তোমায়। কিন্ত তুমি!
.
.
.
.
.
বোনের ডাকে সম্বিত ফিরল আরহামের, তাড়াতাড়ি রিং এর বক্সটা পকেটে ঢুকিয়ে ফেলল সে।
আরশি ব্যালকনিতে গিয়ে দেখল, তার ভাই দেয়ালে হেলান দিয়ে ফ্লোরে বসে আছে!
হাতে ওয়াইনের বোতল দেখে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল আরশির।
ভাইকে ধমক দিয়ে বলল, ” আবার এসব ছাইপাঁশ খাচ্ছিস!? কি হয়েছে তোর!!?
আরহাম বোতল রেখে রিয়ার গাউনটা দু’হাতে ধরে বলল, ” সেদিন রিয়া আমার সাথে যা করেছিলো, আজ আমিও রিয়ার সাথে তাই করেছি! রিভেঞ্জ নিয়েছি আমি!! কিন্ত আমার কেন এতো কষ্ট হচ্ছে বল তো!!!?
ভাইয়ের কথা শুনে আরশির মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল!
মৃদু চিৎকার করে বলল, ” কি বলছিস তুই!? কিসের রিভেঞ্জ!!? রিয়ার সাথে কি করেছিস!!!?
আরহাম হেসে বলল, ” শপিংমল থেকে অনেক খুজে খুজে সবচেয়ে সুন্দর ড্রেসটা ওর জন্য কিনেছিলাম। সেটা পরে যখন আমার সামনে এলো, মনে হচ্ছিলো প্রথমদিন দেখা সেই বৃষ্টিভেজা মেয়েটাকে দেখছি! যার পুরোটা স্নিগ্ধতায় মেশানো!!
বোনের দিকে তাকিয়ে আবার বলল, ” জানিস, ও যখন কাদছিলো, ওর রক্তের মতো লাল চোখজোড়া দেখে সহ্য করতে পারছিলাম না! ইচ্ছে করছিলো, ওকে বুকে টেনে নিয়ে বলি,” কেদোনা রিয়া! ভালবাসি তোমায়!!
.
.
.
.
.
আরশি কিছু না বলে স্থির দৃষ্টিতে ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আছে, ভাইকে লাইফে খুব একটা কাদতে দেখেনি সে।
বাবা মারা গেলে সেই প্রথম খুব কেদেছিলো আরহাম। তারপর আজ, রিয়ার জন্য!!!
আরহাম একটু থেমে আবার বলল, ” রিয়াকে আজ প্রোপোজ করিনি আমি। দ্যাখ ওকে কষ্ট দিয়ে নিজেই তারচেয়ে বেশী কষ্ট পাচ্ছি! খুব ভালবাসি যে ওকে।
আরশি ধীর পায়ে ভাইয়ের পাশে গিয়ে বসল। আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল, ” ছোট থেকেই দেশের বাইরে ছিলাম, তাই বাঙালি মেয়েদের সম্পর্কে খুব একটা পরিচিত ছিলাম না আমি। কিন্ত মায়ের মুখে শুনেছি, লজ্জা নারীর ভূষণ, অলংকার স্বরূপ। এই লাজুক বৈশিষ্ট্যতা একমাত্র বাঙালি নারীর মধ্যে দেখা যায়। আদর, সম্মান, মান-মর্যাদা এগুলো পৃথিবীর অন্য কোন ধর্মের নারীর মধ্যে দেখা যায়না।
ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আবার বলল, ” বাঙালি নারী লজ্জা পায় প্রিয় মানুষটির চোখে চোখ রেখে কথা বলতে, এমনটি পৃথিবীর আর কোন নারীর মধ্যে দেখা যায়না। এই অপরূপ সৌন্দর্য আল্লাহ একমাত্র বাঙালি নারীকেই দান করেছেন, সেই সাথে তাদের অসীম ভালবাসার ক্ষমতাও দিয়েছেন। বাঙালি নারী সাহসী, দুর্বার, নির্ভীক। তারা সাহসী হয় তার ভালবাসার জন্য, পরিবারের জন্য, প্রিয় মানুষটির জন্য সবকিছু ত্যাগ করতে।
আরহাম নিশ্চুপ হয়ে শুনছে, আরশি স্মিত হেসে বলল, ” তাহলে তুই কিভাবে ভেবে নিলি যে, সবার সামনে একটা বাঙালি মেয়েকে কিস করলে সেটা সে মেনে নেবে!
আরহাম কিছু বলছেনা, বারবার সেদিন পার্টিতে রিয়ার সাথে নাচের স্মৃতি মনে পড়ছে!
রিয়ার নেশায় মাতাল হয়ে কিস করেছিলো সে!! সাথেসাথেই রিয়া ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছিলো আরহামকে!!! সে তো ভুল কিছু করেনি!!!!
আরশি ভাইয়ের হাতে হাত রেখে বলল, ” রিয়া ভুল কিছু করেনি ভাইয়া, সব ভুলে ওকে কাছে টেনে নে। নাহলে তোরা দুজনেই কষ্টে পাবি!
.
.
.
আরশি উঠে আরহামের রুম থেকে বেরিয়ে গেল, আরহাম রুমে এসে রিয়ার গাউনটা কাবার্ডে ঢুকিয়ে ওয়াশরুমে গেল।
বেসিনের ট্যাপ ছেড়ে জোরে জোরে মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে আয়নায় তাকিয়ে বলল, ” স্যরি রিয়া, তোমার চোখের জল ঝরানোর জন্য! আই প্রমিজ, আর কোনোদিন তোমাকে কাদতে দেবোনা!!
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
ঘড়িতে রাত তিনটা সাতচল্লিশ বাজে, রিয়ার চোখে ঘুম নেই!
ব্যালকনিতে হেলান দিয়ে ফ্লোরে বসে আছে সে, অনেক চেষ্টা করেও ঘুম আসেনি দুচোখে তার!!
সবার সামনে নিজেকে শক্ত দেখালেও, ভেতর থেকে ভেঙে পড়েছে রিয়া।
প্রতিনিয়ত আরহামের সাথে কাটানো সেই মুহুর্ত গুলো হানা দিচ্ছে তার চোখের পাতায়!
এ কেমন অসহ্য যন্ত্রণা! ইচ্ছে করছে ছুটে চলে যাই আরহামের কাছে!! ওকে ছাড়া কিভাবে থাকবো আমি!!!?
আমি যে আরহামকে ভালোবেসে ফেলেছি! খুব বেশি!! আচ্ছা আরহামের কি আমাকে মনে পড়ছেনা!!? ও কিভাবে পারল এমন করতে!!?
.
.
.
.
.
আফসার ডাক পেয়ে রিয়া তাকিয়ে দেখল, ঘুমুঘুম চোখে দাঁড়িয়ে আছে আফসানা!
কিন্তু এখানে কি করছে!!? এটা আফসা তো! নাকি কোনো ভূতপ্রেত এসে উঠেছে!!!?
ধড়ফড়িয়ে উঠে দাড়ালো রিয়া, আফসা চোখ ডলতে ডলতে বলল,” কিরে! এখনও ঘুমোস নি!?
একে তো আফসাকে আচমকা দেখে পিলে চমকে গেছে রিয়ার।
এখন এই অদ্ভুত কন্ঠঃ শুনে প্রাণ যায়যায় অবস্থা তার!
এদিক ওদিক তাকিয়ে ব্যালকনির লাইট অন করে দু’হাতে চোখমুখ চেপে ধরল রিয়া।
আফসা চোখ ডলে এবার কিছুটা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে, লাইটের আলোয় রিয়াকে চোখমুখ হাত দিয়ে ঢেকে রাখতে দেখে চেচিয়ে উঠলো, ” ও আল্লাহ গো! আম্মু!! ভুভুউত!!!
আফসার চিৎকার শুনে ঘুম ভেঙে গেল সুমুর, এদিকে রিয়া তাড়াতাড়ি হাত সরিয়ে দেখল ওটা ভুতপ্রেত কিছু না। তার হারামি দোস্ত আফসা দাঁড়িয়ে আছে!
আফসা তো চেচাচ্ছে আর লাফাচ্ছে, রিয়া তাড়াতাড়ি গিয়ে আফসার মুখ চেপে ধরে বলল, ” চুপ কর ছেমরি! এতো রাতে ষাড়ের মতো চেচাচ্ছিস কেন!?
মুখ চেপে ধরায় আফসার তো ভয়ে প্রাণ উড়াল দেবে দেবে ভাব।
সুমু এসে দেখল, আফসা আর রিয়া ধ্বস্তাধস্তি করছে! কিন্ত কেন!!?
সুমু তাড়াতাড়ি দুটোকে ঠেলেঠুলে রুমে ঢুকিয়ে ব্যালকনির দরজা লক করে দিল।
রিয়ার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে বেডের কোনায় গুটিশুটি মেরে বসল আফসা!
সুমু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, ” এই মাঝরাতে কি শুরু করেছিস তোরা!?
রিয়া উত্তর না দিয়ে ক্রুর চোখে তাকিয়ে আছে আফসার দিকে।
আফসা বেচারা ভয়ার্ত স্বরে বলল, ” তুতুই ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে কি করছিলি!?
রিয়া দাতমুখ খিচিয়ে বলল, ” তার আগে বল, তুই ওখানে গিয়ে ভূতের মতো দাঁড়িয়ে কি করছিলি!!? আরেকটু হলে তো আমার পরকাল নেমে আসছিলো প্রায়!
সুমু দুজনকে থামিয়ে বলল, ” হয়েছে! স্টপ!! এখন আর কোনো কথা নয়, সবাই ঘুমাবি চল!!!
সুমুর কথা শেষ না হতেই ফজরের আজান দিল, রিয়া ওয়াশরুমে যেতে যেতে বলল, ” আয় আগে নামাজ পড়ে নিই।
.
.
.
.
.
নামাজ পড়ে কিচেনে চা বানাতে গেল আফসানা। ট্রেতে তিন কাপ চা নিয়ে ব্যালকনিতে গিয়ে বসল।
রিয়া আনমনে কি যেন ভাবছে, গরম চায়ে মুখ দিতেই আহ করে উঠল রিয়া।
সুমু চায়ে চুমুক দিয়ে বলল, ” সারারাত ঘুমোস নি নারে!?
রিয়া স্মিত হেসে বলল, ” ঘুম আসছিলো না।
আফসা বলল,” তোকে কি বলে স্বান্তনা দেবো বুঝতে পারছিনা দোস্ত। ইনশাআল্লাহ আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে।
সুমু হেসে বলল, ” ফাইয়ায ভাইয়ার কথা মনে আছে!? বলেছিলো, তুই একদিন রিয়েলাইজ করবি যে তুই আসলে তাকেই ভালবাসিস!
রিয়া চায়ের কাপ রেখে বলল, ” আরহাম আমাকে ভালবাসে না মানে এই না যে, আমি ফাইয়াযকে ভালবাসি!
আফসা বলল,” দোস্ত তোকে একটা কথা বলি। কথায় আছে, “যাকে তুমি ভালবাসো তাকে নয়, বরং যে তোমাকে ভালবাসে তাকে আগলে রেখো”
আফসানা একটু থেমে আবার বলল,” এখন আবেগ দিয়ে না, তোর উচিৎ বিবেক দিয়ে বোঝা।
সুমু বাধা দিয়ে বলল, ” আমার মনে হয় রিয়া নিজেই ভালো বুঝবে ওর এখন কি করা উচিৎ।
রিয়া একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল, ” আমি বুঝতে পারছিনা সুমু! আমি সত্যিই বুঝতে পারছিনা আমার কি করা উচিৎ!!
আফসা বলল,” তুই নিজেকে একটু টাইম দে দোস্ত। কদিন পর তুই নিজেই বুঝতে পারবি, তোর কি করা উচিৎ।
সুমু উঠে বলল, ” আচ্ছা, চল এবার সবাই মিলে ব্রেকফাস্ট রেডি করি।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
জগিং করতে করতে লেকের পাড়ে একটা বেঞ্চে গিয়ে বসল আরহাম।
সারারাত দুচোখের পাতা এক করতে পারেনি সে। বারবার রিয়ার কান্নামাখা মুখটা ভেসে উঠছিলো চোখের পাতায়।
ভোর হতেই জগিং করতে বেরিয়ে গেছিলো, টানা দেড় ঘন্টা জগিং করেছে সে।
সাথে আনা পানির বোতল নিয়ে ঢকঢক করে পানি খেয়ে চোখেমুখেও ঢালল।
রিয়ার কাছে যতক্ষণ না ক্ষমা চাচ্ছে, শান্তি পাবে না সে। আজ অফিসে ইম্পর্ট্যান্ট একটা মিটিং আছে, মিটিং শেষে রিয়ার সাথে দেখা করবে সে।
ফোনের রিংটোন পেয়ে ভাবনায় ছেদ পড়ল আরহামের।
ফোন হাতে নিয়ে দেখল রাফাত কল দিচ্ছে।
রিসিভ করতেই রাফাত বলল,” দোস্ত কোথায় তুই!?
আরহাম মুখ মুছে বলল,” এই তো একটু জগিংয়ে এসেছি। কেন!?
রাফাত কয়েকটা ফাইল দেখতে দেখতে বলল,” তুই নাকি ইকরাদের কাছ থেকে শেয়ার ফিরিয়ে নিবি শুনলাম!
আরহাম মাথা নাড়িয়ে সায় দিয়ে বলল, ” হুম, ঠিকই শুনেছিস! বাই দ্যা ওয়ে, তোকে কে বলল!?
রাফাত চেয়ার ছেড়ে উঠে বলল, ” ইকরার আব্বু মি. ইকবাল হাসান কল করেছিলো। বলল, সে নাকি শেয়ার ফেরত দেবেনা!
আরহাম ভ্রু কুচকে বলল,” হোয়াট দ্যা হেল! দেবেনা মানে!? আমি তো ক্যাশ ব্যাক করবো বললাম।
রাফাত বলল,” উনি বললেন, ওনাকে এর জন্য ডাবল ক্যাশ দিতে হবে। নাহলে সে শেয়ার ফেরত দেবেনা।
আরহাম রাগ নিয়ন্ত্রণ করে বলল, ” নিশ্চয়ই ইকরা ঝামেলা করছে, আজ মিটিংয়ে ইকরা আসবে!?
রাফাত বলল, ” আসার তো কথা।
রাফাতকে আর কিছু বলতে না দিয়ে আরহাম বলল,” ওয়েল, মিটিং শেষে এ নিয়ে ইকরার সাথে কথা হবে।
বলেই কল কেটে দিল আরহাম, দ্রুত পায়ে বাড়ির দিকে চলল সে।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
ব্রেকফাস্ট করতে বসেছে, রিয়া, আফসানা আর সুমু। রিয়া খেতে খেতে জিজ্ঞেস করল, ” সুমু তুই কি আজ কলেজ যাবি!?
সুমু খেতে খেতে বলল, ” হুম। ওহ, তোকে তো বলতেই মনে নেই। নেক্সট মান্থে আমাদের এক্সাম শুরু হবে।
আফসা অবাক হয়ে বলল, ” হোয়াট!? ওহ নো, আজকাল ঠিকমতো ক্লাস করা হয়নি আমার। আল্লাহ জানে আমার কি হবে!!
রিয়া স্মিত হেসে বলল, ” আর আমি তো উইকে একবার করছি!
সুমু জিজ্ঞেস করল, ” আজ কি তুইও কলেজ যাবি রিয়া!?
রিয়া একটু ভেবে বলল, ” না, আজ যাবো না। আজ আমাকে অফিসে যেতে হবে।
আফসা হালকা রেগে বলল,” এতো কিছুর পরও তুই অফিস যাবি!?
রিয়া মাথা নাড়িয়ে সায় দিয়ে বলল, ” হুম, একটা কাজ বাকি।
সুমু জিজ্ঞেস করল, ” কি কাজ!?
রিয়া বলল, ” যে কাজটা আমার আগেই করা উচিৎ ছিলো, রিজাইন দেবো!
আফসা সায় দিয়ে বলল, ” গুড ডিসিশন দোস্ত! টেনশন নিস না, তোর রেজিগনেশন লেটার আমি লিখে দেবো।
সুমু রিয়ার হাতে হাত রেখে বলল, ” ইনশাআল্লাহ সব ঠিক হয়ে যাবে।
রিয়া স্মিত হেসে বলল, ” ইনশাআল্লাহ! ভাবছি ফাইয়াযের সাথে দেখা করবো।
সুমু হেসে বলল, ” সেটাই ভাল হবে, আমার মনে হয় সব ভুলে তোকে ফাইয়াযকে বিয়ে করে নেওয়া উচিৎ। ফাইয়ায ভাইয়া তোকে অনেক ভালবাসে দোস্ত!
রিয়া তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,” আরহামকে ভালবেসেছি কিন্ত পাইনি। এখন বুঝতে পারছি, ভালবাসা হারানোর কষ্ট কি! ফাইয়াযকে এই কষ্ট আর দিতে চাইনা!! আমি আমার ভালবাসা পাইনি, অন্তত ফাইয়ায তার ভালবাসাকে পাক। এতে সবারই ভাল হবে, ফাইয়াযের আম্মু, আমার আব্বু আম্মুও হ্যাপি থাকবে! আমার কাছে এটাই অনেক!!
.
.
.
সুমু বুঝতে পারছে রিয়া কথা গুলো মন থেকে বলছেনা।
কিন্ত জীবনে এমন অনেক পরিস্থিতি আসে, যখন নিজের মনের বিরুদ্ধে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
ব্রেকফাস্ট শেষে রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়ল রিয়া, আফসা আর সুমু।
ফুটপাত ধরে হাটতে হাটতে একটা ট্যাক্সি ভাড়া করল সুমু।
রিয়া কল দিচ্ছে ফাইয়াযকে, আফসানা রিয়াকে ডেকে রাস্তা পার হয়ে গেল।
ফাইয়ায কল রিসিভ করে বলল, ” কি খবর কেমন আছো রিয়া!?
রিয়া ফুটপাত থেকে নেমে এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল,” এই তো আছি ভালো, তুমি কেমন আছো!?
ফাইয়ায স্মিত হেসে বলল, ” তুমি যেমন রেখেছো, বাই দ্যা ওয়ে তোমাকে কল দিতাম। কিছু কথা আছে।
রিয়া রাস্তা পার হতে হতে বলল,” ওকে, চলো কোথাও মিট করি। আমারও তোমার সাথে কিছু কথা আছে।
ফাইয়ায আর কিছু বলার আগেই একটা প্রাইভেট কার এসে ধাক্কা দিল রিয়াকে!
চোখের সামনে যেন দুনিয়া দুলে উঠল তার!! টাল সামলাতে না পেরে রাস্তায় পড়ে গেল রিয়া!!! আফসা আর সুমু চিৎকার দিয়ে ছুটে এলো রিয়ার কাছে!!! ঝাপসা চোখে একপলক তাকিয়ে চোখ বুজল রিয়া!!!!
.
.
.
.
.
(চলবে)