চেরি ব্লসমের সাথে এক সন্ধ্যা পর্ব: ১১

0
1207

#চেরি_ব্লসমের_সাথে_এক_সন্ধ্যা
#লেখা: ইফরাত মিলি
#পর্ব: ১১
_____________

জায়িনের নীল পোরশে কারটি ওয়েস্ট এডমন্টন মলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
এখন বিকেল। বিকেলের নিস্তেজ রোদ গাড়ির উপর এসে পড়ছে। বেশ ভালো লাগছে মিতুলের। কিন্তু জায়িনের পাশে বসে থাকতে ঠিক স্বস্তি অনুভব করছে না। জোহান যতই বদমাইশ হোক না কেন, ওর সাথে থাকলে এই অস্বস্তি বোধটা হয় না। আচ্ছা, জোহান ওকে বাড়িতে না পেয়ে কী করবে?
বাড়ি ফিরলে জোহান ও কে জ্বালাতন করে করে মাথাটা খারাপ বানিয়ে দেবে নিশ্চয়ই!
গতকাল রাতে জোহানের পার্টিতে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও, পরে আবার তা ক্যানসেল করেছিল। সেই পার্টির ডেট দিয়েছিল আজ সন্ধ্যার পরে। বলেছিল বিকেল নাগাদই বের হবে পার্টিতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। দুপুরে খাওয়ার সময়ও এসে বলে গিয়েছিল তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে থাকতে।
মিতুল জানতো জোহান যখন বলেছে ওকে নিয়ে পার্টিতে যাবে, তখন যেতই। তাই মিতুল বাধ্য হয়ে সেজে গুজে রেডি হয়েছিল। জোহানের সাথেই পার্টিতে যেত ও। কিন্তু, দোতলা থেকে নিচে নামার পর রেশমী আন্টি জায়িনের সাথে বাইরে যাওয়ার কথা বললেন।
রেশমী আন্টি দেখেই বললেন,
“কোথাও যাচ্ছ তুমি?”

“হ্যাঁ আন্টি, জোহান এসে বাইরে…”
রেশমী আন্টি পুরো কথা শেষ করতে দিলেন না। তার আগেই বললেন,
“জায়িনের সাথে যাও।”

“কিন্তু…”

“কোনো ব্যাপার না মিতুল। জায়িন এখন বাইরে বের হবে। ওর সাথে ঘুরে আসো।”

রেশমী আন্টির কাছে কেন যেন জোহান পার্টিতে নিয়ে যাবে কথাটি বলতে পারেনি। রেশমী আন্টির কথা অনুযায়ী বাধ্য মেয়ের মতো জায়িনের সাথেই বের হলো।
কিন্তু বের হয়ে ভুলই করেছে বোধহয়। দেখো কেমন নিশ্চুপ রোবটের ন্যায় বসে আছে! চেহারাতেই কেমন যেন অহংকারী অহংকারী ছাপ দেখা যাচ্ছে। এই মানুষটার পাশে বসে নিজেরও এখন রোবটের মতো ফিল হচ্ছে।
মিতুলের ব্যাগে ফোন বেজে উঠলো। মিতুল ধারণা করলো জোহান ফোন করেছে। নিশ্চয়ই বাড়িতে দেখছে না বলে ফোন করেছে। মিতুল ফোন বের করলো।
ঠিক যা ভেবেছিল। জোহান ফোন করেছে। জায়িনের পাশে বসে ফোনে কথা বলতেও কেমন অস্বস্তি হচ্ছে। মিতুল কল রিসিভ না করে উল্টো কল কেটে দিলো। তারপর একটা ম্যাসেজ লিখতে চাইলো জোহানকে।
কিন্তু জোহান আবারও কল দিলো। মিতুল কলটা আবারও কেটে দিয়ে, দ্রুত ম্যাসেজ টাইপ করে, সেন্ড করে দিলো।

‘আমি তোমার ভাইয়ের সাথে আছি।’

পরপরই জোহানেরও ম্যাসেজ এলো,
‘তোমার সাহস তো কম না! তুমি আমার কল কেটে দিয়ে, ম্যাসেজ পাঠাচ্ছ?’

‘আরে আজব তো! ম্যাসেজ পাঠানো কি দোষের?’

‘আমি এখনই কল দেবো আবার। রিসিভ না করলে তোমার নাক সত্যিই জঙ্গলের প্রাণীগুলোর পেটে যাবে।’

ম্যাসেজটা পাঠিয়েই জোহান কল করলো।
মিতুলের ফোন সাইলেন্ট করা, যার কারণে কোনো শব্দ হলো না। জোহান প্রথম বার কল দেওয়ার পরে মোবাইল সাইলেন্ট করে রেখেছিল।
জোহানের লাস্ট ম্যাসেজটা দেখে জোহানের প্রতি ভীষণ রাগ অনুভব হলো মিতুলের। জোহান কে ওকে এভাবে অর্ডার করার? ধরবে না ও ফোন। দেখবে কী হয়! মিতুল ফোন সুইচ অফ করে আবার ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখলো। সাহস কত! বলে কি না নাক সত্যিই জঙ্গলের প্রাণী গুলোর পেটে যাবে! বদমাইশ একটা!

কিছু সময় পর অবশেষে জায়িনের মুখে কথা ফুঁটলো,
“আমরা এখন ওয়েস্ট এডমন্টন মলের দিকে যাচ্ছি।”

মিতুল জানতো না যে জায়িন ঠিক কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তা জানতে চেয়ে প্রশ্নও করেনি। মিতুল সহজ ভাবেই বললো,
“ও তাই?”

“হুম। এটা বিশাল একটা মল। এই মলটি এডমন্টন শহরের মূল আকর্ষণ। এই মল প্রায় ৫৩ লাখ স্কয়ার ফিট স্থান জুড়ে আছে। যা প্রায় নব্বইটি ফুটবল মাঠের সমান…”

“এই মল সম্পর্কে জানি আমি। উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে বৃহত্তম শপিং মল এটা। এই মল ২০০৪ সাল পর্যন্ত বিশ্বের সর্ববৃহৎ মল হিসেবে পরিচিতি ছিল।”

মিতুলের কথার পর জায়িন আবার নিশ্চুপ হয়ে গেল। কেন যেন মিতুলের সাথে ঠিক কথা বলতে পারে না। শুধু মিতুল নয়, অনেক মানুষই আছে যাদের সাথে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। তবে এই মিতুলের ক্ষেত্রটি ঠিক ভিন্ন। মমের বাধ্য ছেলে বলে, মমের আদেশ মেনে মিতুলকে মলে নিয়ে যাচ্ছে। মম বাড়ি থাকতে পই পই করে বলে দিয়েছে মিতুলকে ভালো করে মল ঘোরাতে, পার্ক গুলো ঘুরিয়ে দেখাতে এবং শপিং করে দিতে। তা না হলে কাউকে মল ঘুরিয়ে দেখানো, শপিং করা, এসব বিরক্তিকর কাজ ওকে দিয়ে হতো না। এগুলো ওর কাছে জাস্ট বিরক্তিকর!

প্রায় ত্রিশ মিনিটের ব্যবধানে ওয়েস্ট এডমন্টন মলে এসে পৌঁছলো ওরা। মিতুলের চক্ষু চড়ক গাছ। এত দিন কেবল শুনেই এসেছিল, কিন্তু আজ নিজের চোখে দেখলো। কী বিস্ময়কর! এখানে প্রায় আট’শটিরও বেশি দোকান এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আউটলেট রয়েছে।
বিনোদন ব্যবস্থারও কমতি নেই কোনো অংশে। রয়েছে একটি থিম পার্ক, ইন্ডোর বিচ, মুভি থিয়েটার, আইস স্কেটিং গ্রাউন্ড এবং আরও অনেক কিছু। আইস স্কেটিং গ্রাউন্ডে সাধারণত বাচ্চাদের স্কেটিং শেখানো হয়। বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য আরও রয়েছে ইন্ডোর ট্রেন ও ফান রাইড। ইন্ডোর ট্রেনে বাচ্চাদের শপিং মলের পুরো চক্কর দেওয়া হয়। ফান রাইডে বাচ্চারা নিজেরা নিজেদের মতো রাইড চালিয়ে ঘুরে বেড়ায়। বাচ্চাদের জন্য এখানে আলাদা গলফ কোর্সও রয়েছে।
জায়িন ওকে অনেক কিছু ঘুরিয়ে দেখালো।
শপিং করে দিলো।
শপিং করার মাঝে মিতুলের হঠাৎ শাড়ির কথা মনে পড়লো। কার্লকে শাড়ি পরে দেখাতে চেয়েছিল ও। কিন্তু, বাংলাদেশ থেকে নিজের সাথে কোনো শাড়ি তো আনেনি। এখানে কি শাড়ি পাওয়া যাবে?

মিতুল জড়তা নিয়ে জায়িনকে প্রশ্ন করলো,
“আচ্ছা, এখানে কি শাড়ি পাওয়া যাবে?”

“শাড়ি?” বিস্ময়ে জায়িনের কপালে কয়েকটা ভাঁজ পড়লো।
“শাড়ি পরো তুমি?”

মিতুল একটু হেসে বললো,
“পরি মাঝে মাঝে। বলতে পারো শখের বশে।”
মিথ্যা বললো মিতুল।

জায়িন মাথা নাড়িয়ে বললো,
“আছে শাড়ি। মম এখান থেকে শাড়িও কিনে থাকে।”

মিতুলের হঠাৎ রেশমী আন্টির কথা মনে পড়লো। রেশমী আন্টিকে এখনও শাড়ি পরতে দেখেনি ও। থ্রি পিস, গাউন, ফতুয়া এসব পরতে দেখেছে। হয়তোবা মাঝে মাঝে শাড়িও পরেন শখের বশে।
জায়িন মিতুলকে একটা শাড়ির শপে নিয়ে এলো। অনেক ধরণের ইন্ডিয়ান শাড়ি আছে এখানে। মিতুল ভাবতে পারেনি যে এত সুন্দর ভাবে এখানে শাড়ি পেয়ে যাবে। মিতুল ঘুরে ঘুরে শাড়িগুলো দেখছে।
জায়িন দূরে দাঁড়িয়ে মিতুলকে লক্ষ্য করছে। ভাবছে, এই পিচ্চি, অর্থাৎ খাটো মেয়েটাকে শাড়ি পরলে কেমন লাগবে? কোন রং টা মানাবে গায়ে?

মিতুল বুঝতে পারছে না ও কী রঙের শাড়ি নেবে। কোনটায় ভালো লাগবে দেখতে? আচ্ছা, কার্লের ফেভারিট কালার কী?
ইশ, কার্লের ফেভারিট কালারটা জানা উচিত ছিল। বড়ো ভুল হয়ে গেল! এখন কোন রঙের শাড়ি চুজ করবে? গোলাপি, নীল, লাল আরও বিভিন্ন কালারের শাড়ি আছে। মিতুল মিররে একেকটা শাড়ি গায়ে ধরে দেখছে।

জায়িন দূরে দাঁড়িয়েই লক্ষ্য করে যাচ্ছিল মিতুলকে। মিতুলের পাগলামি দেখছিল। একটা শাড়ি দুই তিন বার করে গায়ে ধরে দেখছে মিতুল। একটা শাড়ি এই রাখছে তো এই আবার উঠিয়ে দেখছে।
জায়িনের ঠোঁটের কোণ প্রশস্ত হলো মিতুলের কাণ্ড দেখে। জায়িনের কেন যেন মনে হলো, হলুদ রঙের শাড়িটায় মিতুলকে বেশি সুন্দর লাগবে। যা অন্য কোনো রঙে হয়তো লাগবে না। কিন্তু মিতুলের যেন হলুদ রং টাতেই বেশি অবহেলা। একবার দেখে শাড়িটা আর ধরেনি।

মিতুল অনেক বাছাই করে একটা শাড়ি চুজ করলো। হ্যাঁ এটাই একটু ভালো লাগছে। মিতুল নেভি ব্লু রঙের একটা শাড়ি অবশেষে নির্ধারিত করলো। নেভি ব্লু শাড়ির সঙ্গে গোলাপি ব্লাউজ।

জায়িন মিতুলের কাছে এগিয়ে এলো।
“এই শাড়িটা নেবে তুমি?”

“হুম। কেন সুন্দর লাগছে না এটা?”

“সুন্দর লাগছে। তবে একটা শাড়ি নেবে কেন? আরও একটা নাও। এই হলুদ শাড়িটা নিতে পারো তুমি।”

মিতুল হলুদ শাড়িটার দিকে তাকালো। হলুদ রং খুব একটা পছন্দ নয় ওর। তবে শাড়িটা দেখতে সুন্দর। কী করবে? জায়িন যেহেতু বলছে, তাহলে কি নেওয়া উচিত? মিতুল ভাবতে ভাবতেই বললো,
“ঠিক আছে। এটাও নেবো।”

মিতুলের শপিং শেষ হলো। ও একাই শপিং করেছে শুধু। জায়িন কিছুই নেয়নি নিজের জন্য। মিতুল ভেবেছিল ওর শপিং এর বিল ও নিজে দেবে। কিন্তু জায়িন কিছুতেই দিতে দিলো না। জায়িন বিল মিটিয়ে দিলো।

বাড়ি ফিরতে অনেক রাত হয়ে গেল। ডিনারও বাইরে থেকে সেরে এসেছে ওরা। বাইরে থাকতে জায়িনকে ভালোই মনে হয়েছিল, কিন্তু বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই কেমন আবার অহংকারী মনে হলো। শপিং ব্যাগগুলো ঘরের ভিতরে নিয়ে ঢুকতে কোনো সাহায্য করলো না জায়িন। আচ্ছা, তার কি উচিত ছিল না শপিং ব্যাগ গুলো নিজ হাতে ধরে একেবারে ওর রুম পর্যন্ত নিয়ে দেওয়া? রুম তো দূরের থাক, শপিং ব্যাগে একটু হাতও লাগিয়ে দেখেনি সে। থাক, কী আর বলবে এদের? অহংকারের পরিচয় তো শুধু এই প্রথম দিলো না!
মিতুল দুই হাতে শপিং ব্যাগ নিয়ে প্যাসেজ ওয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাড়িটা ভীষণ নীরব। কাউকে দেখাও যাচ্ছে না। সবাই কি ঘুমিয়ে পড়েছে? জোহান… জোহান কোথায়? ভেবেছিল বাড়িতে ঢুকতে না ঢুকতেই জোহানের জ্বালাতন শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু না, কোথাও তো দেখা যাচ্ছে না বদমাইশটাকে। কোথায় গেছে? জঙ্গলে না কি? জঙ্গলের কথা মনে হতেই মিতুলের গা শিউরে উঠলো। না ওই জঙ্গল নিয়ে ভাববে না এখন। চুলোয় যাক জোহান!
মিতুল ফুরফুরা মন নিয়ে নিজের রুমের দিকে এগিয়ে চললো।
দরজা খুলে রুমে পা রাখতে আতঙ্কে মিতুলের পা থমকে গেল, হাত থেকে শপিং ব্যাগগুলো পড়ে গেল ফ্লোরে।
প্রথমে বিছানার উপর এক কালো পোশাকধারী মানুষ দেখে ভয়ে জান যায় যায় অবস্থা হয়েছিল। কিন্তু কালো পোশাকধারী মানুষটি জোহান দেখে ধীরে ধীরে প্রাণ ফিরে পেল আবার। মিতুল বুকে এক হাত রেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ত্যাগ করলো। তারপর অগ্নি দৃষ্টিতে তাকালো জোহানের দিকে।
জোহান বিছানায় লম্বালম্বি ভাবে শুয়ে আছে এক হাতে মাথা হেলান দিয়ে। পরনে কালো ফুল হাতার গেঞ্জি এবং কালো ট্রাউজার। মিতুলের দিকে তাকিয়ে থেকে বললো,
“ইউ আর ব্যাক!”

মিতুলের মাথায় রক্ত উঠে গেল। তেড়ে এলো জোহানের দিকে।
“তোমার সাহস তো কম না, তুমি আমার রুমে ঢুকে, আমার বিছানায় শুয়ে আছো! একটা মেয়ে মানুষের রুমে কীভাবে তুমি এভাবে ঢুকতে পারো? কীভাবে এমন ভাবে শুয়ে থাকতে পারো? লজ্জা নেই তোমার?”

জোহান ভাবলেশহীন কণ্ঠে বললো,
“নিজেকে মেয়ে বলে দাবি করো?”

“কী? কী বললে তুমি? কী মিন করলে এই কথা দ্বারা? আমাকে কি তোমার ছেলে মনে হয়?”

জোহান উঠে বসলো। বললো,
“তোমাকে ছেলেও মনে হয় না, মেয়েও মনে হয় না। যা মনে হয়, তা হলো―পিচ্চি একটা এলিয়েন।”

“হোয়াট?”

জোহান মিতুলের কাছে এগিয়ে এলো। গলার স্বর হঠাৎ পরিবর্তন হয়ে গেল। রাগের প্রতিফলন ঘটলো ওর কণ্ঠে,
“তোমার সাহস কী করে হয় আমার কল রিসিভ না করে, ফোন সুইচ অফ করে রাখার? তোমার দেখছি সত্যিই তোমার এই নাকটার জন্য কোনো মায়া নেই।” বলতে বলতে এক আঙুলে মিতুলের নাকে আলতো করে একটা গুঁতো দিলো।

“তুমি কিন্তু ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছ!”

“সেটাই স্বাভাবিক। কারো ধৈর্যে থাকার ইচ্ছা আমার নেই। আমি সবার ধৈর্যের বাইরে থাকতেই পছন্দ করি! কিন্তু তুমি আগে বলো, তুমি এটা কেন করলে আমার সাথে? তুমি যাবে না কি যাবে না, আগে বলতে। কেন তুমি আমার সম্মান, আমার বন্ধুদের সম্মানে এত বড়ো আঘাত হানলে? হোয়াই? টেল মি!” চাপা রাগের গর্জন টের পাওয়া গেল জোহানের কণ্ঠে।

মিতুলের হালকা ভয় করছে। কিন্তু না, নিজের ভীতু ব্যক্তিত্ব কিছুতেই দেখাবে না ও। মিতুল জোহানের রাগের প্রলেপ আঁকা মুখে তাকালো। চোয়াল শক্ত করে দুই হাতে ঠেলা দিয়ে জোহানকে সামনে থেকে সরিয়ে দিয়ে বললো,
“বেরিয়ে যাও। এই মুহূর্তে বেরিয়ে যাও এখান থেকে। নইলে কিন্তু…”

“নইলে কী? কী করবে? শোনো, আমার সম্মানে আঘাত হানার জন্য পানিশমেন্ট পেতেই হবে তোমাকে! তোমাকে কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি দেবো আমি। একদিন…হ্যাঁ, পুরো একদিন কোনো কথা বলবো না আমি তোমার সাথে।”

মিতুল হেসে দিলো।
“একদিন আমার সাথে কথা বলবে না তুমি? এটাকে পানিশমেন্ট বলছো? আরে এটা তো আমার জন্য পানিশমেন্ট নয়। বরং লাকি পুরস্কার।”

“হোয়াট ডু ইউ মিন?” জোহান এক পা এগিয়ে এলো মিতুলের দিকে।

মিতুল এই বদমাইশটার সাথে আর কোনো কথা বাড়াতে চাইছে না। এখন সুন্দর একটা ঘুম প্রয়োজন ওর। কালকে সকাল সকাল কার্লের সাথে দেখা করতে যাবে একবার। না ঘুমালে চেহারার অবস্থা খারাপ হয়ে যেতে পারে। মিতুল জোহানের সাথে বিবাদ থামানোর জন্য বললো,
“ঠিক আছে, তোমার এই কঠিন শাস্তি মেনে নেবো আমি। কালকে কোনো কথা হবে না আমাদের মাঝে।”

“সেটাই!”

মিতুলের রুম থেকে বের হতে গিয়েও, আবার সামনে পড়ে থাকা শপিং ব্যাগগুলো দেখে থামলো জোহান। ত্যাড়া চোখে তাকিয়ে বললো,
“শপিং করতে যাওয়া হয়েছিল বুঝি?”

মিতুল কিছু বললো না।
জোহান শপিং ব্যাগ গুলো ঢিঙিয়ে চলে গেল।
মিতুল কটমট করে বললো,
“বদমাইশ একটা!”

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here